ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলছে, এক সহযোগীর ‘ড্রেসকোড’ নিয়ে প্রশ্ন করতেই চটে যান তিনি, ভাঙেন বেশ কিছু আসবাব।
ঘটনার সময়েই গুলশান-১ এলাকার অল কমিউনিটি ক্লাব থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি করে বাহিনীটি।
ওই দিন রাতে পরীমনি ও তার সঙ্গীরা কী কী করেছেন তা বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে তুলে ধরেন অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর ইকবাল।
তিনি জানান, পরীমনির গত ৭ জুন রাত সোয়া ১টার দিকে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে অতিথি হিসেবে আসেন। নিয়ম না মানা এবং ক্লাবের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় পরীমনি ও তার সঙ্গে থাকা দুজনকে চলে যেতে বলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা না শুনে ক্লাব বারে প্রায় ১৫টি গ্লাস, ৯টি অ্যাস্ট্রে ও বেশ কিছু হাফপ্লেট ভেঙেছেন।
আগের ঘটনাকে এখন সামনে আনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরীমনি।
রাত সোয়া ১০টার দিকে কয়েকটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি (অল কমিউনিটি ক্লাবে) গিয়েছিলাম। সেটা তো সিসিটিভির ফুটেজে আপনারা দেখেছেন। কিন্তু অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা যদি ঘটিয়ে থাকি, তাহলে সেটা এতদিন পর কেন আসলো। তারা তো আমার মতো ভিকটিম হয়নি, তাদের তো কোনো বাধা ছিল না। সঙ্গে সঙ্গেই তারা অভিযোগ করতে পারতেন। এটা তো খুবই স্পষ্ট।’
ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের ক্লাবে কিছুদিন আগে ছোট একটি অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আপনারা জানেন, সোশ্যাল ক্লাবের টাইম লিমিটেশন আছে। আমাদের ক্লাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাত্র দুই থেকে তিনজন ক্লাবে উপস্থিত ছিলেন, তারাও চলে যাচ্ছিলেন। সে সময় আমাদের ক্লাবের একজন অতিথি ইমার্জেন্সির কথা বলে এই আসতেছি বলে বাইরে গিয়েছিলেন।
‘যাওয়ার পর উনি আর আসতে পারছিলেন না, বিকজ অফ ক্লাবের টাইমিং। সিকিউরিটি গার্ডকে ফোন করে অনুমতি চাচ্ছিলেন যে উনি আবার আসতে চায়। অনুমতি চাওয়াতে আমাদের ক্লাবের অ্যাডমিন সাহেবকে তিনি বলেছেন যে, তার মোবাইল ফোন ও কাগজ রেখে গিয়েছিলেন। তখন অ্যাডমিন তাকে আসতে দেয়ার অনুমতি দেন।’
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জানান, ক্লাবের ওই মেম্বারই পরীমনিসহ তিনজনকে নিয়ে একটু পর ক্লাবে ঢুকতে চান।
আলমগীর ইকবাল বলেন, ‘তখন দুইজন ফিমেল ও একজন মেল এসে উপস্থিত হয়। ক্লাবের কিছু নিয়ম কানুন আছে। সেটি হলো কোনো মেল যদি ক্লাবে আসে, তবে তাকে ড্রেসকোড মেইন্টেইন করতে হবে। কিন্তু সেই মেল ভদ্রলোক হাফ প্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে এসেছেন। তখন আমাদের অ্যাডমিন ও ফুড অ্যান্ড ব্রেভারেজের পরিচালক বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা এটা দেখে বলেছেন যে, আপনি তো ক্লাব রুলস ভায়োলেট করেছেন। আপনি তো হাফ প্যান্ট পরে এখানে আসতে পারেন না। তারপর উনারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। ক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়া উনাদের আচার আচরণ গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তারা (কর্তৃপক্ষ) বলেছেন, রাত অনেক হয়েছে আপনারা চলে যান।’
এরপরই পরীমনি ও তার সঙ্গীরা ভাঙচুর শুরু করে বলে জানান ক্লাব প্রেসিডেন্ট। বলেন, ‘কিন্তু তারা চলে যাচ্ছিলেন না দেখে আমাদের পরিচালক তাদের চলে যেতে বলেন। তারপর আমাদের যে সদস্য, মানে যে সদস্যের মাধ্যমে তারা এখানে এসেছিলেন, সেই সদস্যও তাদের চলে যেতে অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু উনারা যাচ্ছিলেন না দেখে ঐ সদস্যই চলে গেল। তখন তারা ক্ষিপ্ত হয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন; গ্লাস, অ্যাশট্রে ছুড়ে মারতে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রায় ১৫টি গ্লাস উনারা ভেঙেছেন, প্রায় ৯টি অ্যাশট্রে ছুড়ে মেরে ভেঙেছেন এবং বেশ কিছু হাফপ্লেট ছুড়ে ছুড়ে মেরে ভেঙেছেন। উনারা এই প্রথম এসেছেন। এর আগে উনাদেরকে চিনতামও না, জানতামও না। পরে আমরা শুনেছি যে উনাদের একজনের নাম পরীমনি। কিন্তু আমরা তা জানতাম না।’
আলমগীর ইকবাল বলেন, ‘তাদের ক্লাব বন্ধ হলে কোনো সার্ভিস দেয়া হয় না। কিন্তু বিকজ অফ দুজন ফিমেল এসেছে। উনারা বারবার রিকুয়েস্ট করেছে। তখন যারা ছিল তারা উনাদের একটু খানি সার্ভ করেছেন। কিন্তু উনি এসব এনজয় না করে ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ ডেকেছেন। উনারা সেখানে হাফ এন আওয়ার সময় কাটিয়েছেন।’
ভাঙচুর করে পুলিশও ডাকেন তারা
অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর ইকবাল বলেন, ‘এক পর্যায়ে উনারা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশ কল করেন। তখন পুলিশ আসে, পুলিশ এসে দেখতে পান যে, উনি এগুলা ছুড়ে মারছেন। তখন পুলিশ উনাদের জিজ্ঞেস করেন আপনারা এখানে কেন আসছেন, কেন আমাদের কল করছেন? তখন তারা বলে যে, আমাদের সাথে এই হয়েছে ওই হয়েছে। উনারা (পুলিশ সদস্যরা) বলেন যে, এরকম তো কিছু দেখছি না। তখন কেউ ছিলও না। দুইজন ওয়েটার ছিল আর এই তিন চারজন মানুষ ছিল।
‘তারপরে পুলিশ ভাইয়েরা ওয়াকিটকির মাধ্যমে উপরে জানতে চায় যে তারা এখন কী করবে। ওয়াকিটকির আওয়াজ বাইরে যাচ্ছিল। তখন উপরের থেকে নির্দেশ আসে যে, উনারা যদি এমন করে তাহলে উনাদেরকে বের করে দিয়ে আপনারা চলে যান। তখন ঐ আওয়াজ শুনে উনারা কিছুটা ঠান্ডা হোন, আর পুলিশ ভাইদের কথা মত সেখান থেকে চলে যান। তারপর পুলিশ ভাইয়েরাও চলে যান।’
আলমগীর ইকবাল জানান, সাধারণত ক্লাবে অবান্তর কিছু হলে প্রেসিডেন্ট কিংবা সেক্রেটারিকে ইনফর্ম করার কথা। কিন্তু পরীমনি যেহেতু এখানকার অতিথি তিনি সেটা জানেন না। আর এখন অনেক সুযোগ সুবিধা, যে কেউ ৯৯৯ এ কল করতে পারেন। সো উনার মনে হয়েছে ৯৯৯ কল করবেন।
ক্লাব সদস্যকে শোকজ
যে সদস্যের মাধ্যমে পরীমনি ও তার সঙ্গীরা ক্লাবে এসেছিলেন তাকে শোকজ করেছে অল কমিউনিটি ক্লাব।
আলমগীর ইকবাল বলেন, ‘আমরা ক্লাব কর্তৃপক্ষ নিয়ম অনুযায়ী যে সদস্যের মাধ্যমে তিনি (পরীমনি) এসেছিলেন তাকে আমরা শোকজ করেছি। তার বিরুদ্ধে ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, সেটি এখন চলমান রয়েছে। এটিই হলো আমাদের ক্লাবের সংশ্লিষ্টতা। অন্য কোনো ব্যাপারে আমাদের কিছু ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘ক্লাবগুলোর নিয়ম হলো যিনি অতিথি, তিনি ক্লাবেরও অতিথি। ক্লাবের অতিথির বিরুদ্ধে ক্লাব কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়ার বিধান নাই। যার মাধ্যমে এসেছেন তিনি ক্লাবের নিয়ম কানুন জানেন। শুধুমাত্র তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান আছে। সেটি আমরা করতেছি। এর বাইরে অন্য কিছু করার আমাদের এখতিয়ার নেই। আর এমন ভয়ানক কিছু করে নাই যে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
ক্লাবের ওই সদস্য শোকজের জবাবও দিয়েছেন বলে জানালেন আলমগীর ইকবাল।
পরীমনির সঙ্গে আর কে কে এসেছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এক ভদ্রলোক এসেছিলেন হাফ প্যান্ট পরে, আর একজন মহিলা ছিল। এটা রাত প্রায় সোয়া একটা দেড়টার ঘটনা।’
সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ক্লাব প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘না, আমরা কোনো ডায়েরি করিনাই। কেন করিনাই; আমরা মনে করেছি যে, এতে আমাদের ক্লাবেরই সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। এজন্য আমরা জিডি করিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি শুনেছি উনি সেলিব্রেটি। যদিও ব্যক্তিগতভাবে আমি উনাকে চিনি না। যদি উনি সেলিব্রেটি হয়, উনার মান সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব উনার নিজের। উনি উচ্চবংশের, উনি শিক্ষিতা, এটা উনার ডিউটি যে উনার মান সম্মান কীভাবে রক্ষা করবেন। এটা আমার ডিউটি না। আমার ডিউটি আমার মান সম্মান কীভাবে ধরে রাখব। যেমন: নায়ক শাকিব খান আমাদের ক্লাবের মেম্বার। উনি তো কোনো অসংলগ্ন আচরণ করছেন বলে আমার মনে পড়েনা। যার যার মান সম্মান তাকে বজায় রাখতে হবে। সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
পরীমনির বিরুদ্ধে পুলিশের জিডি
অল কমিউনিটি সেন্টারে পরীমনির ভাঙচুরের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ৭ জুন রাতে কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগে তার (পরীমনির) বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
কবে এই জিডি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সম্ভবত ৭ জুন রাতে।’
জিডিতে কী বলা হয়েছে, জানতে চাইলে সুদীপ বলেন, ‘অভিযোগ যে, উনি আনঅথরাইজড ওখানে গেছেন। তারপর ক্লাব মেম্বারসদের যে জায়গা ছিল, ওখানে নাকি বসতে চেয়েছেন, তারপর নাকি ভাঙচুর করেছেন। এইগুলো আরকি।’
আরও পড়ুন:
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক করেন। ছবি: ফেসবুক
বাংলাদেশে আগামী বছর একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সারাহ কুক বলেন, ‘যুক্তরাজ্য কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথে বৈঠকে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য যুক্তরাজ্যের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।'
তিনি বলেন, 'নির্বাচন কমিশন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। যুক্তরাজ্য বিশেষ করে জাতীয় নাগরিক শিক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে, বিশেষ করে দেশের দুর্বল গোষ্ঠীগুলির জন্য এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে। তাই আমাদের এজেন্ডা ছিল নির্বাচন কমিশনের সাথে যুক্তরাজ্যের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করা। যেমনটি আমি বলেছি, জাতীয় নাগরিক শিক্ষা এবং ভোটগ্রহণ কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্যও আমরা কাজ করছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করেছি।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যে যুক্তরাজ্য আগামী বছর বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে সমর্থন করছে।’
রাজধানীর উত্তরার কবি জসীমউদ্দীন রোডে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক মোটরবাইক চালক নিহত হয়েছেন। মোহাম্মদ আরমান মির্জা (২১) নামের ওই তরুণ কলেজ শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পথচারীরা আহত আরমানকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান।
নিহতের খালা নাজনীন আক্তার জানান, ‘খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগে এসে আমার ভাগিনা আরমানের মরদেহ দেখতে পাই। সে আব্দুল্লাহপুরের নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে। গভীর রাতে আরমান মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় জসিম উদ্দিন রোডে বেপরোয়া গতির একটি বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, আরমানের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার পূর্ব হাতিআলা গ্রামে।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টিতব্য লঘূচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে, রাত হতে রাজধানীতে বজ্রসহ মুষলধারে বৃষ্টির ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, ওয়ার্ডভিত্তিক ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (Emergency Response Team) কাজ করে চলেছে। গ্রীন রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল, পল্টন, সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি এলাকার জলাবদ্ধতা ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। তবে, পানি নির্গমনের আউটলেট অংশ এবং খাল-নদীর অংশের পানির লেভেল প্রায় একই হওয়ার ফলে পানি নিষ্কাশনের ধীরগতি বিদ্যমান থাকায় কিছু এলাকার পানি নামতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এ সব এলাকা থেকে অস্থায়ী পোর্টেবল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া, কমলাপুরে স্থাপিত হাই প্রেসার ভার্টিক্যাল পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত পানি নামানোর কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ (01709900888) মাধ্যমে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টি আজ সোমবার সকালেও থামেনি। বৃষ্টির সঙ্গে ছিলো বজ্রপাতও। মুষলধারে হওয়া এই বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। ফলে সড়কে আটকে আছে গণপরিবহন। এতে সাতসকালেও ঘর থেকে কাজে বের হওয়া লোকজন পরেছেন ভোগান্তিতে।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ১০, মিরপুর শেওড়াপাড়া, নিউমার্কেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় পানি জমতে দেখা যায়। এসব এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি পরিমাণ জমলেও আসাদগেট, মগবাজার, মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় ছিল কোমরসমান পানি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আরেকটি লঘূচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘণীভূত হতে পারে।
এদিকে রাজধানীতে সকালে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। শ্যামলী থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তায় আসতে গিয়ে আসাদগেট কোমরসমান পানিতে আটকা পড়েন ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, সকালে বাসা থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বের হলেও বৃষ্টির কারণে সময়মত অফিসের জন্য বের হতে পারিনি। কোনোভাবে যাও বের হয়েছিলাম, তা পথের বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুসমান থেকে কোমরসমান পানির জন্য আটকে থাকতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তায় পানি জমে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। অফিসগামী লোকজনদের পরতে হয়েছে দুর্ভোগে।
এছাড়া শেওড়াপাড়া থেকে ফাহিম নামের এক তরুণ বলেন, বৃষ্টির কারণে গাড়ি পাচ্ছি না। রাস্তায় এত পরিমাণ পানি জমেছে যে, হেঁটে যাওয়ারও কোনো উপায় নেই। রিকশায়ও ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছে।
রোববার সন্ধ্যা ৬টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
প্রসঙ্গত, গতকয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম ছিল। এ অবস্থায় গত শনিবার ও রোববার রাজধানীর আকাশ খানিকটা ঘোলাটে ছিল। তবে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।
রাজধানীর বনানীতে যাত্রা শুরু করলো ভ্রমণ ও পর্যটনভিত্তিক নতুন প্রতিষ্ঠান ট্রিপোলজি। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুই গার্ডেনে অবস্থিত ট্রিপোলজির অফিসে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে এর উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল ব্লগার শিশির দেব। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দেন ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং কোরিওগ্রাফার গৌতম সাহা।
উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল রিবন কাটিং, অফিসিয়াল ফটো সেশন এবং দর্শকদের জন্য বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট সেশন। অনুষ্ঠান ঘিরে ভ্রমণপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় এবং তারা বাংলাদেশের ভ্রমণ শিল্পে ট্রিপোলজির সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ট্রিপোলজির কো-ফাউন্ডার তাজরিন আখতার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বাংলাদেশে ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া। কোম্পানির সিইও ইমতিয়াজ কাইসুল বলেন, “ট্রিপোলজি শুধুমাত্র একটি ট্রাভেল এজেন্সি নয়; আমরা চাই মানুষ যেন ভ্রমণের প্রতিটি ধাপে নিশ্চিন্ত সেবা পায়। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং ও হলিডে প্যাকেজ সবকিছুতেই আমরা সর্বোচ্চ পেশাদার মান নিশ্চিত করতে চাই।”
ট্রিপোলজি বর্তমানে প্রথম বিশ্বের দেশগুলোর ভিসা প্রসেসিংয়ে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছে। পাশাপাশি সব ধরনের দেশি-বিদেশি হলিডে প্যাকেজ, এয়ার টিকিট, হোটেল বুকিং, থার্ড ওয়ার্ল্ড ভিসা প্রসেসিং ও স্টুডেন্ট ভিসা সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, ট্রিপোলজির উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্রমণশিল্পকে আরও গতিশীল করবে।
ঠিকানা: জুই গার্ডেন, হাউস ২/এ, লেভেল-৭, ব্লক এল, রোড ২/১, বনানী-১২১৩, ঢাকা।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩১৩টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩৫৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১০২টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার প্রতিবাদ ও ছয় দফা দাবি বাস্তাবায়নের দাবিতে ফুঁসে ওঠেছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীর ও বাসচালকরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— প্রভাবশালী গোষ্ঠী কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তারা পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে প্রকৌশল পেশায় প্রবেশের পথ সংকুচিত করছে। এ ছাড়া চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল, তাদের পদবি পরিবর্তন ও সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা।
২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা।
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ ও আইনানুগভাবে নিশ্চিত করা।
এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন।
উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ের নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা।
মন্তব্য