নাসির উদ্দিন মাহমুদ ওরফে নাসির ইউ মাহমুদ। চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগের কারণে সবার নজর এখন স্বল্পপরিচিত অথচ প্রভাবশালী এই ব্যবসায়ীর দিকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসির উদ্দিন দেশে আবাসন খাতে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। কুঞ্জ ডেভেলাপারস লিমিটেড নামে একটি আবাসন ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় এ প্রতিষ্ঠানটির আবাসন প্রকল্প আছে।
নাসির মাহমুদ দেশের প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারদেরও একজন। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মাহমুদ বিল্ডার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট লিমিটেড’। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তার ব্যাপক প্রভাব। তিনি জাতীয় পার্টির (এরশাদ) প্রেসিডিয়াম সদস্যদের একজন।
ছাত্রাবস্থায় এরশাদের শাসনামলে তিনি জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ‘নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের’ ছাত্র নেতা ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাকা ফার্স্ট ডিভিশন ফুটবল লীগের সাবেক ফুটবলারও। পরে রাজধানীর উত্তরা ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব দেন।
ষাটোর্ধ্বে নাসির ইউ মাহমুদ দুই সন্তানের জনক।
ঝালকাঠি সদর পৌরসভার এক নং ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান বাড়িতে নাসিরের জন্ম। তার বাবা হারুন অর রশিদ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে অবসরে যান। চাচা বেলায়েত হোসেন এই পৌরসভার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের টিকেটে দুই দফা নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
নাসির পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তিনি মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগে এমএসসি ডিগ্রি নেওয়ার পাশাপাশি এমবিএ করেন।
কুঞ্জ ডেভেলপারস লিমিডেটের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নাসির ১৯৮১-৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ওই আবাসিক হলের স্টুডেন্টস অ্যালামনাই অ্যাসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
ছাত্রজীবন শেষে সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়ায় তার ঠিকাদারি ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে। পিডব্লিউডি ও এলজিইডিসহ দেশের সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও ক্রয়কাজে ঠিকাদার হিসেবে সেবা সরবরাহ করতেন নাসির। এভাবে তিনি দেশের একজন প্রথম সারির ঠিকাদার হিসাবে সরকারি দপ্তরে বিবেচিত হতে থাকেন।
২০০১ সালে জাতীয় পার্টি ভেঙে গেলে তিনি নাজিউর রহমান মঞ্জুরের বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি (বিজেপি) অংশে যোগ দেন, যে দলটি বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলীয় ক্ষমতাসীন জোটের শরিক হয়েছিল। পরে ২০০৮ সালে তিনি এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসেন এবং দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হন।
ঠিকাদারি ব্যবসার পাশাপাশি নাসির ১৯৯৩ সালে যুক্ত হন আবাসন খাতের ব্যবসায়। গঠন করেন কুঞ্জ ডেভেলাপারস লিমিটেড। তার এই আবাসন প্রতিষ্ঠানটি দেশে আবাসান ব্যবসায়ী মালিকদের সংগঠন রিয়েল অ্যাস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশনের (রিহ্যাব) সদস্য।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশে আবাসন খাতের ব্যবসায়িক সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর শাসুল আলিামিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তাকে চিনি। তিনি একাধিকবার উত্তরা ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। ওই ক্লাবে আমি নিজেও একজন সসদ্য। তাছাড়া তিনি রিহ্যাবেরও সদস্য হওয়ায় সেই সূত্রে তাকে তো চিনতামই। তিনি আবাসনখাতের একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা।’
এ ঘটনায় রিহ্যাব কোনো ভাবমূর্তি সংকটে পড়ল কি-না জানতে চাইলে রিহ্যাব সভাপতি বলেন, ‘একজন সদস্যের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ১২শ সদস্যের সংগঠন রিহ্যাব মোটেও ভাবমূর্তি সংকটে ভুগছে না। এখানে দেশের শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত এবং স্বনামধন্য ব্যবসায়ীরা জায়গা পেয়েছেন।’
আরও পড়ুন:
দেশে প্রথমবারের মতো রোববার থেকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। রোববার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় রাজধানীর আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা কেন্দ্র থেকে। সরকার প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে এই টিকা দেবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এই টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। মাসব্যাপী এই টিকা কর্মসূচি চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। দেশে টাইফয়েডের টিকার এটাই প্রথম ক্যাম্পেইন। টিকাটি তৈরি করেছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। সরকার এই টিকা পেয়েছে টিকাবিষয়ক আন্তর্জাতিক মঞ্চ গ্যাভির কাছ থেকে। দেশে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হওয়ার খবর বিস্তারিত তুলে ধরা হলো;
ফেনী প্রতিনিধি জানান: ফেনীতে টাইফয়েড টিকার ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন রোববার সকালে ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।
ফেনী স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেন বেলুন উড়িয়ে এ টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। জেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার ৪৩৭ শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, ফেনীতে টাইফয়েড ভ্যাকসিন ক্যাম্পেইন ৯ মাস হতে ১৫ বছর বয়সি শিশুদের রোববার থেকে প্রতি কর্মদিবসে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট ১১০৫টি কেন্দ্রে স্বাস্থ্য বিভাগ ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থার সহযোগিতায় এই টিকা দেওয়া হবে। এছাড়া টিকা প্রদানের লক্ষ্যে vax epi.gov.bd এর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন চলমান আছে।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রুবাইয়াত বিন করিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসমাইল হোসেন, ফেনী পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোস্তাফিজ রহমান চৌধুরী, ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক ফেনী নাজমুস সাকিব, ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
এ সময় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা কান্তা, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম, সদর উপজেলা মাধ্যমিক সুপারভাইজার কামরুন নাহার, ফেনী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামছুদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. কৃঞ্চপদ সাহা, ফেনী শিশু নিকেতন কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইয়াছিন আরাফাত।
সাড়ে ৯ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দেবে চসিক: মেয়র।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম জানান : শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা দিবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। পর্যায়ক্রমে এ টিকাদান কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার সকালে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। টিকা ক্যাম্পেইন উপলক্ষে নগরীর চন্দনপুরা এলাকার গুল-এজার-বেগম মুসলিম সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ এবং প্রবর্তক মোড়ের আইয়ুব বাচ্চু চত্বরে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রায় দেড় হাজার টাকার এই টিকা আমরা বিনামূল্যে প্রদান করছি। এটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো একটি বৃহৎ জনস্বাস্থ্য উদ্যোগ। শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে টিকাদান কর্মসূচিকে সফল করতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, টাইফয়েড কেবল স্কুলপড়ুয়া শিশুর জন্য নয়, স্কুলবহির্ভূত শিশুরও হতে পারে। তাই কোনো শিশুকে বাদ দেওয়া যাবে না। আমাদের লক্ষ্য, চট্টগ্রামের প্রতিটি শিশু সুস্থ থাকুক।’
টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, ডা. মনিরুল ইসলাম রুবেল, ইউনিসেফ প্রতিনিধি ডা. সরোয়ার আলম প্রমুখ।
চসিক স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার শিশুকে এই টিকার আওতায় আনা হবে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৩১ হাজার স্কুল শিক্ষার্থী এবং প্রায় ৩ লাখ স্কুলবহির্ভূত শিশু। চসিক এলাকাজুড়ে ১,৫৪৬টি স্কুল ও ৭৮৩টি আউটরিচ সাইটে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। স্কুল পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এবং কমিউনিটি পর্যায়ে আগামী ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।’
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান: যশোরের কেশবপুরে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্ধোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার আয়োজনে পৌর শহরের সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার মধ্যেদিয়ে ওই কর্মসূচির উদ্ধোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রেকসোনা খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আলমগীর হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ফিরোজ আহম্মেদ, সমাজসেবা অফিসার রোকনুজ্জামান, আর, এম,ও ডা. সমরেশ কুমার দত্ত, ফোকাল পারসন ডা. মো. তরিকুল ইসলাম ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা প্রমুখ। ৯ মাসের শিশু থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের টাইফয়েড টিকাদানের আওতায় আনা হয়েছে। এর আওতায় কেশবপুর উপজেলায় ৬৯ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। ১২ আক্টোবর শুরু করে ১৮ কর্মদিবস শিশুদের টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১০ কর্মদিবস বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং ৮ কর্মদিবস কমিউনিটি ক্লিনিকে টিকা দেওয়া হবে।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় টাইফয়েড ঠিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে পৌর শহরের রাবেয়া সরকারি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে ঠিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। তিনি বলেন টাইফয়েড রোগ থেকে নিরাময়ের জন্য সরকার শিশুদের সুরক্ষায় মাসব্যাপী টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ টিকার কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই। তিনি অভিভাবকদের তাদের শিশুদের বিনামূল্যে এ টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাক্তার জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমি সুপারভাইজার মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. খোরশেদ আলম, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম প্রমুখ।
মইনুল হক মৃধা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে জানান: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে টাইফয়েড ভ্যাকসিন (টিসিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে টাইফয়েড টিকার উদ্বোধন করেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মারুফ হাসান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ড. মো. শরিফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার ড. মো. রুহুল আমিন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. সুলতান উদ্দিন আহমেদ, মো. চানমিয়া, স্বাস্থ্য সহকারী (টিকাদান) মো. সবুজ মোল্লাসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও কেন্দ্রে ৯-১৫ বছরের শিশুদের ৩৭ হাজার ৯৯৫ জনের মাঝে এ টিকা প্রদান করা হবে। আজ (রোববার) উপজেলার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৫৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এ টিকা প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. মো. মারুফ হাসান তার বক্তব্যে বলেন, কার্যকর টিকা আবিষ্কারের পরে অনেক রোগ পৃথিবী থেকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। অতীতে টিকাদান কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের ইপিআই কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী সবসময় প্রসংশিত হয়েছে।
রোববার থেকে শুরু হওয়া টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনও সফল করার বিকল্প নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আজকের সুস্থ শিশু মানেই আগামীর সুস্থ প্রজন্ম ও ভবিষ্যতের দক্ষ নাগরিক। শিশুদের লেখাপড়া- খেলাধুলায় সফল হওয়ার জন্য সুস্থতার বিকল্প নেই। যে সকল শিশু ইতোমধ্যে টিকা পেতে রেজিস্ট্রেশন করেছে তাদের সঠিকভাবে টিকা দিতে হবে।
একইসাথে, রেজিস্ট্রেশন না করা শিশুদেরও রেজিস্ট্রেশন করিয়ে টিকার আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। টাইফয়েড টিকার উল্লেখযোগ্য কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই এবং টিকাটি হালাল সনদপ্রাপ্ত।
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান: চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় ইপিআই কর্মসূচির আওতায় টাইফয়েড টিকা ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় বেঙ্গুরা কে.বি.কে.আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান, ডা. নির্গাত জাবীন, ডা. রাজশ্রী, ডা. তোফায়েল আহমদ, ডা. মাসুদুল আলম, ডা. শারমিন আকতার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুমি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই ক্যাম্পেইনে উপজেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি মোট ৭২ হাজার ৬৪৩ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৭৬টি কেন্দ্রে ৫২ হাজার ৩৮৭ জন এবং কমিউনিটির ২১১টি কেন্দ্রে ২০ হাজার ২৫৬ জন শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিকা কার্যক্রম চলবে ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত, আর কমিউনিটি কেন্দ্রে ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানান: সারাদেশের ন্যায় নওগাঁতেও শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় শহরের চক এনায়েত মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল। অনুষ্ঠানে শিশুকে টিকা প্রদানের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক টিএমএ মমিন, রংপুর মেডিকেল কলেজের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান আলাল, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক গোলাম আজম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আকন্দ, জেলা শিক্ষা অফিসার শাহাদৎ হোসেন, নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জানানো হয় নওগাঁ জেলায় ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৭৯৫ জন শিশু ও কিশোরকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্য রয়েছে। এপর্যন্ত অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে ২ লাখ ৫৯ হাজার ১৮২ জন। শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন টিকাকেন্দ্র ও পর্যায়ক্রমে কমিউনিটি পর্যায়ে ১৮ দিন এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান: সারাদেশের মতো গাজীপুরের কালীগঞ্জেও শিশুদের টাইফয়েড রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে মাসব্যাপী জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উপজেলার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশুকে বিনামূল্যে একটি করে ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। রোববার সকালে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে স্থাপিত টিকাদান কেন্দ্রে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম কামরুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও এ.টি.এম কামরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। টাইফয়েডের মতো মারাত্মক পানিবাহিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে এই টিকাদান কর্মসূচি এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’ তিনি এই মহৎ উদ্যোগ সফল করতে স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। সকল অভিভাবককে নির্ধারিত সময়ে তাদের সন্তানদের টিকাকেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রিজওয়ানা রশীদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। একটি মাত্র ডোজ টিকা শিশুদের এই রোগের গুরুতর প্রভাব থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দিতে পারে। এই টিকা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কার্যকর।’ তিনি আরও জানান, মাসব্যাপী এই ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন। কোনো যোগ্য শিশু যেন এই টিকার আওতার বাইরে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগ বদ্ধপরিকর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মসূচি কালীগঞ্জের শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং টাইফয়েডজনিত অসুস্থতা ও শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর থেকে জানান: ফরিদপুরে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে সিভিল সার্জন অফিসের উদ্যোগে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে এই কর্মসুচির উদ্বোধন করেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা।
পরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের টাইফয়েডের টিকা প্রদান করে টিকাদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এ সময় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা।
ফরিদপুর সিভিল সার্জন ড. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সুস্মিতা সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিস ইসরাত জাহান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ ঘোষাল, জেলা তথ্য অফিসার মোজাম্মেল হোসেন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন পিয়াল, ফরিদপুর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইকবাল হাসান সেনেটারি ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, ‘শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ও সময়োপযোগী। ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ ২৮ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে একটি শিশুও টিকার আওতার বাইরে না থাকে।’
শিউলি আফরোজ সাথী, মাগুরা থেকে জানান: মাগুরায় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫ -এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় মাগুরা পিটিআই স্কুল প্রাঙ্গণে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আয়োজনে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ড. মো. শামীম কবির।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিবুল হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আফজাল হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আলমগীর কবীর, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. মো. মহসিন উদ্দিন ফকির, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. সুরভী আক্তার, মাগুরা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল হাই এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
বক্তারা বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে জেলার সব শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষার আওতায় আনা হবে।
দেশব্যাপী শুরু হওয়া এই টিকাদান ক্যাম্পেইন চলবে ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। যেখানে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি সকল শিশুকে টিকার আওতায় আনা হবে।
এ বছর মাগুরা জেলার চারটি উপজেলায় মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭৬ জন শিশুকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ৩টি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
ক্যাম্পেইন সফল করতে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
রংপুর ব্যুরো জানান: রংপুরে সাড়ে ৮ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টিকা প্রদান কার্যক্রমের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। রোববার সকালে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহা. আশরাফুল ইসলাম। পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কেএম জালাল উদ্দিন আকবরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা, জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান ইবনে তাজ। এছাড়া টিকা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবিএম আবু হানিফ, অতিরিক্ত সচিব হুজুর আলী, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ড. গাওসুল আজম, উপপরিচালক ড. ওয়াজেদ আলী, ইউনিসেফ প্রধান তৌফিক আহমেদ।
উদ্বোধনী দিনে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা গ্রহণ করেন। কোনো ধরনের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ছাড়াই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিনামূল্যে দ্রুততম সময়ে টিকা গ্রহণ করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান, মেহেজাবিন ইসলাম, মৌমিতা সরকারসহ অন্যরা বলেন, বাসায় অনলাইনে টিকা গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছি। আমরা টিকা গ্রহণ নিয়ে প্রথমে অনেক ভয় পেয়েছিলাম। স্কুলে এসে দ্রুত টিকা নিতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। কোনা ধরনের ব্যথা হয় না। এছাড়া কেউ যদি কোনো কারণে অসুস্থ্য হয়ে যায়, সে জন্য রংপুর সিটি করপোরেশনের অ্যাম্বুলেন্সসহ ডাক্তার রয়েছে। যে সকল বন্ধুরা এখনো টিকা গ্রহণ করেনি, আমরা তাদের দ্রুত টিকা নিয়ে সুস্থ্য থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. কামরুজ্জামান ইবনে তাজ বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনে দুই লাখের বেশি ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে আমাদের স্বেচ্ছাসেবী ও টিকাপ্রদানকারীরা কাজ করছেন। নির্বিঘ্নে এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমি আহ্বান জানাব, নিবন্ধনের মাধ্যমে যেন টিকা গ্রহণ করা হয়। তাহলে পরবর্তীতে বিদেশ ভ্রমণসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে টাইফয়েড টিকা প্রদানের তথ্য কাজে লাগবে।
রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমকে উৎসবমুখর করতে বিভিন্ন স্কুলে শিশুবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে টিকা নিয়েছে। নির্ধারিত বয়সের সকল শিশু যেন টিকা পায় সে লক্ষ্যে নিবন্ধিত কিংবা অনিবন্ধিত শিশুদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে। নগরীতে মাইকিং, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বড় বড় বেলুন ওড়ানো, ট্রাকের মাধ্যমে গম্ভীরার আয়োজন করে প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি করোনার মতো আমরা টাইফয়েড টিকাতেও সাফল্য অর্জন করব। এদিকে রংপুর সদর উপজেলার ধাপেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টাইফয়েড টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ড. শাহীন সুলতানাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত রংপুর জেলার ৮ উপজেলায় স্কুল পর্যায়ে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪০২ জন ও কমিউনিটি পর্যায়ে ২ লাখ ৯ হাজার ৪৫২ জন শিশুকে এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে স্কুল ও কমিউনিটি পর্যায়ে ২ লাখ ১০ হাজার ৭১৯ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।
নাজমুল হাসান, নাটোর জানান: নাটোরে আনুষ্ঠানিকভাবে টাইফয়েডের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের এই টিকা প্রদানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
সিভিল সার্জন ড. মুক্তাদির আরেফীন জানান, ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় নিধার্রিত বয়সি শিশুদের মধ্যে এক হাজার ৫৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪১ জন শিক্ষার্থীকে টিকা প্রদান করা হবে। এছাড়া আগামী ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের এক হাজার ৭৫২টি টিকাদান কেন্দ্রে আরও এক লাখ ৩০ হাজার ৫৪১ জন শিশুকে টিকা প্রদান করা হবে। জেলার মোট চার লাখ ২৯ হাজার ৮৮২ জনের মধ্যে এক লাখ ৭৪ হাজার ৫৬৭ জন শিশু এই টিকা পাবে।
নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে টাইফয়েড টিকা গ্রহণ কার্যক্রম চালু আছে। ইতোমধ্যে সার্কভুক্ত পাকিস্তান এবং নেপালে সরকারি পর্যায়ে টাইফয়েড টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। তিন হাজার তিনশ টাকা মূল্যমানের এক একটি টিকা পরীক্ষিত এবং নিরাপদ বলে জানান সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক।
রুমা প্রতিনিধি জানান: দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির অংশ হিসেবে বান্দরবানের রুমা উপজেলায় শুরু হয়েছে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন–২০২৫’। রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রুমা বাজার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল হাসানের সভাপতিত্বে এতে
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ চিরান।
কর্মসূচির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন- ইপিআই টেকনোলজিস্ট চচমং মারমা, পরিসংখ্যানবিদ উথোয়াইপ্রু খেয়াং ও রুমা বাজার আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক গর্ডেন ত্রিপুরাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রথম দিনে বিদ্যালয়টিতে ৪৫৬ জন শিক্ষার্থীকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হয়।
এই কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি সকল শিশু ও প্রাক–প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ডোজ টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রথম পর্যায়ে ১২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ১২টি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই টাইফয়েদ টিকা একটি করে ডোজ দেওয়া হবে। বিদ্যালয়ে পর্যায়ে ৩৫৬২ জন। আর কমিউনিটি পর্যায়ে এক নভেম্বর থেকে ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর মতে ২১৮৫ জনকে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। এর মধ্যে নিবন্ধিত হয়েছে-৪১৮১জন।
যা বান্দরবান পার্বত্য জেলা ৭টি উপজেলার মধ্যে রুমো উপজেলা দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। টিকাদানের অর্জিত নিবন্ধিত ৭২.০৮ বলে পরিসংখ্যানবিদ উথোয়াইপ্রু খেয়াং জানিয়েছেন।
মেঘনা নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা সারসহ ছিনতাই হওয়া একটি বাল্কহেড থেকে সার জব্দ করেছে পুলিশ। গত শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও বাজার এলাকা থেকে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা হয়নি।
নৌপুলিশের ঢাকা অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ৭ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে ৬ হাজার ৩৪০ বস্তা ডিএপি সার নিয়ে একটি বাল্কহেড সুনামগঞ্জে রওনা করে। এতে সার ডিলারের একজন প্রতিনিধি এবং কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন। ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের মানিকনগরে সারবোঝাই বাল্কহেডটি যাত্রাবিরতি করে। পরদিনও ইঞ্জিন সমস্যার কারণে বাল্কহেডটি প্রথমে বন্ধ রাখা হয়।
পরে বাল্কহেডটি রওনা দিলে কিছু দূর যাওয়ার পর একটি ট্রলার এসে বাল্কহেডটিতে দুজন ওঠে। তারপর ডিলারের প্রতিনিধিসহ শ্রমিকদের ট্রলারে উঠিয়ে নেয়। ট্রলারের সঙ্গে বাল্কহেডটি বেঁধে ঘুরতে থাকে। পরদিন ১০ অক্টোবর ডিলারের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যের নামিয়ে সারবোঝাই বাল্কহেডটি নিয়ে যায়। বিষয়টি অবগত করলে নৌপুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে নবীনগরের কাইতলা এলাকায় গত শনিবার রাতে বাল্কহেডটি জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, রোববার সকাল থেকে সারের বস্তাগুলো গণনা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো আটক করা যায়নি। তাদের আটকে অভিযান চলছে।
নৌপুলিশের তথ্যানুযায়ী, অভিযানে প্রায় ৯১ লাখ টাকার সরকারি ডিএপি সার উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি সার উদ্ধারের পাশাপাশি ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শ্রমিক গ্রেপ্তার ও বাস বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলা থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। রোববার ভোর থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার সব রুটে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
অনেকে আগেই টিকিট কেটে রাখলেও নির্ধারিত সময়ে বাস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই ভোরে বাসস্ট্যান্ডে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বিকল্প যানবাহনের খোঁজে ছুটছেন।
জানা যায়, হালুয়াঘাটের জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হান গত শুক্রবার রাতে বাসে ওঠার সময় পরিবহন শ্রমিক অরুণ ঝন্টুর শরীরে ধাক্কা লাগে। এ ঘটনায় নিজেকে জুলাইযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে রায়হান একাধিকবার দুঃখ প্রকাশ করার পরেও অরুণ ঝন্টু তার প্রতি অশালীন আচরণ ও কটূক্তি করে বাস থেকে নামিয়ে দেন। এরপর রাত ৯টা থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা এলাকার ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনাইটেড সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ইউনাইটেড পরিবহনের শ্রমিক অরুণ ঝন্টুকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবন সংলগ্ন একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাকে ইবি থানায় সোপর্দ করে।
আটকের সময় শিক্ষার্থীরা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা—এ ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ছাত্রলীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
আটক হওয়া শিক্ষার্থীর নাম হুসাইন তুষার। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে সহপাঠীদের হয়রানিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নূর উদ্দীন বলেন, স্যারদের কে আমরা জিজ্ঞেস করি কেন তাদের সেল্টার দেওয়া হয় বা কিভাবে সাহস পায়। এসব ঘটনা ঘটার পেছনে কারণ আমাদের ভিসি স্যার। যিনি কয়েকদিন আগে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বলেছিলেন, 'কে ছাত্রলীগ কে ছাত্রদল এসব আমাদের দেখার বিষয় না। আমাদের কথা ছেলেটা মেধাবী কিনা।' এ কথার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ডে যে ছাত্রলীগের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বা ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এজন্য ছাত্রলীগের কর্মীরা একটু সাহস দেখাতে পারছে। আমরা মনে করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দুর্বলতার কারণেই ছাত্রলীগ এ সুযোগটা পাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি, শুধু চিঠি এবং আশ্বাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন।
ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ’শিক্ষার্থীরা তুষার নামে এক ছাত্রকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা। আপাততে থানার হেফাজতে আছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান জানান, ‘শিক্ষার্থীরা তুষারকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য বলে স্বীকার করেছে। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।’
সাংবাদিক মাহবুব হোসেন সারমাত ও রনী আহম্মেদের ছোট ভাই জুয়েল খানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় প্রেসক্লাব গোপালগঞ্জে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার কোটালীপাড়া সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কোটালীপাড়া সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কালাম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন একটি দৈনিকের সম্পাদক ও প্রকাশক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংবাদিক রনী আহম্মেদ, এফ এম মিরাজুল সৈকত, জিয়াদুল ইসলাম, হৃদয় হাওলাদার ও বুলবুল হোসেন প্রমুখ।
এ সময় উপস্থিত সকল সাংবাদিকরা প্রয়াত মাহবুব হোসেন সারমাত ও সাংবাদিক রনী আহম্মেদের ভাই জুয়েল খানের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার পরিবারের পাশে থেকে সকল ধরনের সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিক মাহবুব হোসেন সারমাত গোপালগঞ্জ শহরে তার নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ১১ অক্টোবর দুপুরে গোপালগঞ্জ আলীয়া মাদ্রাসায় মরহুমের জানাজা শেষে শহরের পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
অন্যদিকে সাংবাদিক রনী আহম্মেদের ভাই জুয়েল খান গত ৯ অক্টোবর রাতে ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ১০ অক্টোবর বেলা ১১টায় কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্বপাড়া গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও বীর প্রতীক ফারুক-ই-আজম বলেছেন, দেশের বৈষম্য ও অধিকার বঞ্চনার আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সেইফ এক্সিট অত্যন্ত জরুরি। আমরা যুদ্ধ করেছি এই দেশের জন্য এখানেই আমাদের থাকতে হবে এবং বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমাদের লড়াই হবে এখানেই, দেশের মাটিতেই। রোববার দুপুরে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে উদ্বোধন করা হয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্প। অনুষ্ঠানে ফারুক-ই-আজম বলেন, বৈষম্য ও অধিকার বঞ্চনার আগ্রাসন বন্ধ করতে হলে সবার জন্য সমান ও নিরাপদ সুযোগ থাকা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘দেশের শিশুদের টাইফয়েড থেকে সুরক্ষা দিতে আজ (রোববার) থেকে এক মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সরকার ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সি প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোর-কিশোরীকে বিনামূল্যে টিকা দেবে। জন্ম সনদহীন শিশুরাও এই টিকার আওতায় থাকবে।
বরিশালে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি জনগণকে রোগ হওয়ার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
বরিশাল জেলায় টিকাদানের মোট লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ ১ হাজার ১২৫ জন, বরিশাল মহানগরীতে ৯৭,৫৯০ জন। জেলার ৪,২৭৫টি কেন্দ্র থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ইতোমধ্যেই ১ লাখ ৫২,৭১৫ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন, যার মধ্যে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সি শিশুরাও অন্তর্ভুক্ত।
প্রথম ডোজে ৪ থেকে ৭ বছর বয়সিদের জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এবং আগামী ১ থেকে ১৩ নভেম্বর সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। সরকারের লক্ষ্য, পথশিশুসহ কেউই এই সুযোগ থেকে বাদ যাবে না।
‘মানুষ মানুষের জন্য’- এই কথার এক জীবন্ত উদাহরণ দেখা গেল কুমিল্লার মুরাদনগরে। সন্তানদের অবহেলায় পরিত্যক্ত এক অসহায় বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন ও এক মানবিক উদ্যোক্তা। গত শনিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের কোম্পানীগঞ্জ বাজারে তখন দোকানপাট বন্ধের প্রস্তুতি চলছে। ঠিক সে সময়ই চোখে পড়ে এক উদভ্রান্ত বৃদ্ধা নারী- চোখে হতভম্বতা, কথায় জড়তা। কেউ জানে না তিনি কে, কোথা থেকে এসেছেন।
পরে জানা যায়, ওই নারীর নাম মমতাজ বেগম (৬০)। এলোমেলোভাবে কথা বলছিলেন, নিজের ঠিকানা ঠিকভাবে জানাতে পারছিলেন না।
এ সময় এগিয়ে আসেন কোম্পানীগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মানবিক ব্যক্তি ফেরদৌস রহমান। রাত প্রায় ১০টার দিকে তিনি বৃদ্ধাটিকে নিয়ে যান মুরাদনগর থানায়।
থানার কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে যোগাযোগ করেন উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সঙ্গে। কিন্তু অফিস বন্ধ থাকায় ফেরদৌস রহমান নিজেই ফোন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুর রহমান-এর কাছে।
ইউএনও তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারের তত্ত্বাবধানে মমতাজ বেগমকে ভর্তি করানো হয়।
একই সঙ্গে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসপাতালে একটি টিম পাঠান তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য। কিছুটা বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের পর চিকিৎসকের সহায়তায় জানা যায়, তিনি মমতাজ বেগম, স্বামী মৃত আয়াত আলী, বাড়ি বীরতলা গ্রাম, ইলিয়টগঞ্জ, দাউদকান্দি, কুমিল্লা।
পরবর্তীতে ইউএনও আবদুর রহমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খানকে হাসপাতালে পাঠান সার্বিক তদারকির জন্য। পাশাপাশি যোগাযোগ করা হয় দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তারের সঙ্গে। তার সহযোগিতায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাধ্যমে মমতাজ বেগমের পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়।
তবে সন্তানদের খবর দেওয়া হলেও তারা সেদিন রাতে হাসপাতালে আসেননি। শুধু জানিয়েছিলেন, সকালে আসব। রাত গভীর হয়, হাসপাতালের বিছানায় একা পড়ে থাকেন মমতাজ বেগম। পাশে ছিলেন এক নারী চৌকিদার।
যে মায়ের স্নেহে সন্তানরা মানুষ হয়েছে, আজ সেই মায়েরই পাশে কেউ নেই। তবু একা নন তিনি- কারণ পাশে আছে মানবিক মুরাদনগর প্রশাসন এবং কয়েকজন দয়ালু মানুষ, যারা প্রমাণ করেছেন, মানবতার চেয়ে বড় কিছু নেই।
মন্তব্য