আবাসিক হলে থাকা যাবে না, তবে সশরীরে পরীক্ষা দিতে হবে। এমন সংবাদে নেত্রকোণা থেকে ঢাকায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান তুষ্টি। ওঠেন পলাশী সরকারি আবাসিক কোয়ার্টারের একটি বাসায়। সেখান থেকেই তার নিথর দেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তুষ্টির মৃত্যুর পর নিউজবাংলাকে মোবাইল ফোনে এমনটাই জানান তার বাবা আলতাফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘গত মাসের শেষে বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় আমার মেয়ে বলেছে, “আব্বা, সামনে মনে হয় ভার্সিটি খুলতে পারে। একটু বেশি বেশি পড়তে হবে। ভালো একটা বাসা নিয়েছি। বাসাটারও নিরাপত্তা আছে”। আমি মেয়েকে বলেছি, তুমি সব কিছু বুঝে নাও।’
কথাগুলো বলতে গিয়ে বাষ্পরূদ্ধ হয়ে আসে আলতাফ হোসেনের কণ্ঠ। বলেন, ‘আমি মেয়েকে বলেছিলাম, আমি সাথে যাবো কি না। মেয়ে বলেছিল, তিন চারজন এক সাথে যাচ্ছি। আপনি গিয়ে কী করবেন। আলতাফ হোসেন বলেন, সুস্থভাবে পড়তে গিয়ে আমার মেয়ে না ফেরার দেশেই চলে গেছে।’
আলতাফ হোসেনের চার সন্তানের মধ্যে তুষ্টি ছিল একমাত্র মেয়ে। প্রতিদিনই মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা হতো তার।
তিনি বলেন, ‘আমার তিন ছেলে এক মেয়ে। সবার বড় ছেলে, এরপর তুষ্টি। তার ছোট আরও দুই ভাই আছে। প্রতিদিন বিকেলে আমি আমার মেয়ের সাথে ফোনে কথা বলতাম।
‘চারটা মেয়ে আমার মেয়ের সাথে থাকতো। এর মধ্যে একটা মেয়ে আজ সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলে, আঙ্কেল, এরকম এ রকম ব্যাপার। ওই মেয়ের সাথেই আমার মেয়ের মিল বেশি ছিল। এরাই কয়েকদিন আগে নতুন বাসা নিয়েছে।’
আলতাফ হোসেন আরও বলেন, ‘বাসা নেয়ার সময় আমার ফোনে তিন হাজার টাকা ছিল। এগুলো আমার মেয়েকে পাঠিয়েছি। আরও লাগবে ভেবে দুইদিন আগে আরও এক হাজার টাকা পাঠিয়েছি। আমার মেয়ের মোবাইলে বিকাশ করা ছিল না। আরেকটা মেয়ের মোবাইলে বিকাশ আছে। তার মোবাইলেই টাকা পাঠায়। সে তুষ্টির বান্ধবী।’
তুষ্টির গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার ৭ নম্বর সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামে। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে।
রোববার ভোর ছয়টার দিকে পলাশী আবাসিক কোয়ার্টারের ১৮ নম্বর বাসার নিচ তলার একটি রুমের বাথরুমের দরজা ভেঙে তুষ্টির মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তুষ্টি যে বাসায় সাবলেট থাকতেন সে বাসায় তিনটি রুম। এর একটি রুমে আরও তিনজনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। বাথরুমটি ছিল রুমের বাইরে।
তুষ্টির সহপাঠী রাহনুমা তাবাসসুম রাফির সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। তিনি বলেন, ‘গতকাল দুপুরে তুষ্টি তোশক আনতে হলে (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল) গিয়েছিল। রুম থেকে নেয়া তোশক হলের গেস্টরুমে রেখে কালো ক্লিপ এবং বেল্ট আনতে আমাকে নিয়ে সে নিউ মার্কেট নিয়ে যায়। সেসময় বৃষ্টি পড়ছিল। সাথে ছাতা না থাকাতে বৃষ্টির পানি পড়েছিল তার শরীরে।
‘তুষ্টির আগে থেকেই অ্যাজমা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা। সে ইনহেলার ব্যবহার করতো। বৃষ্টিতে ভিজলে নাকি এগুলো বেড়ে যায়। তুষ্টি তখন আমাকে বলেছে, রাফি আমার মনে হয় রাতে শরীর খারাপ করবে।’
তার আরেক রুমমেট রাহনুমা বলেন, ‘নিউ মার্কেটের কাজ শেষে হলের গেস্টরুমে রাখা তোশক নিয়ে বিকেল তিনটার দিকে আমরা বাসায় চলে আসি। বিকেল পাঁচটার দিকে আমি ক্যাম্পাসে যাই। যাওয়ার সময় তুষ্টিকেও ডেকেছিলাম। তার শরীর খারাপ লাগছে তাই সে আমার সাথে যায়নি। রাত নয়টার দিকে আমি ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরে আসি। ক্যাম্পাস থেকে আসায় আমিও ক্লান্ত ছিলাম। খাওয়া শেষে ১০টার দিকে শুয়ে পড়ি। বারোটার দিকে ঘুমিয়ে যাই। সেও (তুষ্টি) আমার সাথে শুয়েছিল। তখন সে হয় মুভি দেখছিল, না হয় ফেসবুকে স্ক্রল করছিল। এরপর আর কী হয়েছে আমি জানি না।’
রাহনুমা আরও বলেন, ‘ভোর ছয়টার দিকে সাবলেটের আন্টি এসে বলেন, তোমরা সবাই রুমে তাহলে ওয়াশরুমে কে। পানি পড়ছে, লাইট জ্বালানো। পরে ইতি আপু (আরেক রুম মেট) দেখে, তুষ্টি নেই। অনেকক্ষণ বাথরুমের দরজায় নক করছে। কিন্তু ভিতর থেকে কোন শব্দ নেই৷ আমি দেখি তুষ্টির ফোন তার বেডেই। পরে ঘটনাটা আমি তুষ্টির আব্বুকে জানাই। এরপর আমি আমাদের বন্ধু সাফায়াত আহমেদ রাজুকে ফোন দেয়। সে এসে ভেন্টিলেটর দিয়ে দেখে ভিতরে কারো পা দেখা যাচ্ছে। তারপর সে ৯৯৯ ফোন দেয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন এসে তার মরদেহ নিয়ে যায়।’
তুষ্টির রুমমেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী লুৎফুন্নাহার ইতি বলেন, ‘তুষ্টি মাত্র পাঁচ দিন আগে আমাদের বাসায় আসে। গতকাল বিকেল তিনটায় নিউমার্কেট থেকে এসে বলে, “আপু তোমরা কীভাবে বৃষ্টিতে ভেজো। আমি একটু ভেজার পর গলা চুলকাচ্ছে”। এর আগে আমি জানতাম না তার অ্যাজমা আছে।’
রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, 'রাতে আমরা আড্ডা দিয়ে, হাসি, ঠাট্টা করে ঘুমিয়ে যাই। দুইটা বাজে আমি ঘুম থেকে উঠে কয়েকবার বাথরুমের দরজায় নক করি। কিন্তু তখন দরজা খুলেনি। তবে আমি কলের পানি পড়ার শব্দ পাচ্ছিলাম। বাড়িওয়ালা মনে করে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। ভোর ৬টায় বাড়ির মালিকের ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভাঙে। বাড়ির মালিক বলেন, “বাথরুমে কলের পানি পড়ছে ভেতরে কে?” তখন আমরা তাকিয়ে দেখি তুষ্টি বিছানায় নেই।’
সুরতহাল রিপোর্ট
তুষ্টির সুরতহাল রিপোর্ট নিউজবাংলার হাতে এসেছে। রিপোর্টে দেখা যায়, বাথরুম থেকে উদ্ধার করে যখন তুষ্টির দেহ মর্গে আনা হয় তখন তার পরনে ছিল লাল হাফ হাতা গেঞ্জি এবং নেভি ব্লু রঙের ট্রাউজার। চোখ-মুখ ছিল অর্ধ খোলা অবস্থায়, জিহ্বা দাঁত দিয়ে সামান্য কামড়ানো। বুক, পেট, পিঠ, কোমর হতে পা পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। হাত দুটি ছিল অর্ধমুষ্টি অবস্থায়। বাম হাতের কনুই এবং পিঠের বাম পাশে পুরাতন দাগ ছিল।
ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গ থেকে তুষ্টির মরদেহ বিকেল তিনটার দিকে নিজ বাড়ি নেত্রকোনার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে তুষ্টির নামাজে জানাজা হওয়ার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
লালবাগ থানার ওসি (তদন্ত) খন্দকার হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আমরা স্পটে যাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাকে (তুষ্টিকে) হাসপাতালে নিয়ে আসে। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কিছুই বলতে পারছি না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘একটি ঘটনা শেষ হতে না হতেই আরও একটি ঘটনা ঘটে গেল। আমাদের জন্য অনেক বড় দুসংবাদ। আমরা তার মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করছি।’
সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৬৭টি মামলা করেছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রোববার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানীর মুগদায় মায়ের সঙ্গে অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ পান করে সামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সামিয়া মুগদা মাল্টিমিডিয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও উত্তর মান্ডার এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে।
সামিয়ার ভাই সাহিম জানান, সামিয়া একটু রাগী স্বভাবের ছিল। রাতে মায়ের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিমানে বাসায় রাখা ইঁদুর মারার বিষ পান করে। পরে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মুগদা থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
মন্তব্য