ময়মনসিংহের ভালুকায় অটোরিকশাচালক শামীমের টাকা হাইওয়ে পুলিশের কেড়ে নেয়ার ঘটনা তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে ঘটনার আড়ালেও ঘটনা রয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের খপ্পরে পড়ার আগেই তিনি তিনজন পুলিশ সদস্যকে ভালুকা থানায় নামিয়ে দিয়ে আসেন। এই পুলিশ সদস্যরা তাকে ১০০ টাকা ভাড়ার জায়গায় দেন ২০০ টাকা।
একই রাতে পুলিশের দুই বিপরীত রূপ দেখেন শামীম। পুলিশের কয়েকজন সদস্যের মহানুভবতা যেমন উচ্ছ্বসিত করে তাকে। ঠিক তেমনি বেদনায় নীল করে দেয় আরেকদল পুলিশের রূঢ় আচরণ।
ওই অটোরিকশাচালকের পুরো নাম আফছর আলী শামীম। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ২ নম্বর পুটিজানা ইউনিয়নের গাড়াজান পণ্ডিতবাড়ী এলাকার ছেলে।
স্ত্রী আর তিন মেয়েকে নিয়ে থাকেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা বাজারে। প্রতি রাতে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
ওই রাতের পুরো ঘটনা জানতে নিউজবাংলার প্রতিবেদক ভুক্তভুগী অটোরিকশাচালক শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায় তার আনন্দ আর যন্ত্রণার পূর্বাপর গল্প।
শামীম বলেন, ‘রোজা রাইখ্যা দিনের বেলা গাড়ি (রিকশা) চালাইলে অনেক কষ্ট অয়। এর লাইগ্যা রাইতের বেলা অটো চালাই। রাইতে ৬০০-৮০০ ট্যাহা কামায়্যা সেহরির আগে বাড়িতে আয়্যা পড়ি। এই ট্যাহা তিন মাইয়্যার পড়া, অটোর কিস্তি আর সংসারে খরচ করি।’
তিনি বলেন, ‘সেই দিন রাইতেও অটো লইয়্যা বাইর অইছিলাম। ভালুকার সিডস্টোরে তিন যাত্রী অটোতে উইঠ্যা কইল তারা ভালুকায় রিজার্ভ যাইব। অটো চালাইয়্যা কিছুদূর যাওয়ার পর একটা হোন্ডাতে এক লোক বইস্যা ছিল।
‘তহন আমার অটোর যাত্রী কইল গাড়ি থামাইতে। একজন গাড়িততে নাইম্ম্যা হোন্ডার লগে গেছে গা। আর দুইজনরে ভালুকা থানার মোড়ে নামাই দেই। তারার আলাফ শুইন্যা বুঝবার পারলাম তারা থানার পুলিশ। তারা আমারে ১০০ ট্যাহার ভাড়া ২০০ ট্যাহা দিলো। মনে হইলে পুলিশ অনেক ভালা।’
এবার ভারাক্রান্ত হৃদয়ে শামীম বলেন, ‘ইউটার্ন দিয়া গাড়িডা ঘুরায়্যা যাইবার সময় হাইওয়ে চেকপোস্টের সামনে আমারে আটকাইয়্যা দেয় হাইওয়ে পুলিশ। মনে মনে ভাবছি আল্লায় জানে এইবার কী অয়।
‘একজন পুলিশ অফিসার আইয়্যা আমার গাড়ির চাবি টাইন্না লইয়্যা যায়। বহু অনুনয়-বিনয় কইরা হাত জোড় কইরা কান্নাকাটি করলাম। তবুও চাবিডা দিল না। ওই দিনের সারাদিনের আয় ৬০০ ট্যাহা কাইড়া নিয়া গাড়ির চাবি ফেরত দেয়।
‘এই ট্যাহা দিয়া আমি অটোর কিস্তি মাসে ১৬ হাজার ৫০০ ট্যাহা দেই। মেয়েদের পড়ালেহা আর সংসার চলে। তহন মনডা ভীষণ খারাপ অয়্যা গেলো। তবুও তো আমি নিরুপায়!’
শামীম বলে যান, ‘ভালুকার সিডস্টোর বাসস্ট্যান্ডে এক চা-পান বিক্রেতা আমার অনেক দিনের পরিচিত। কাকু বইল্যা ডাহি। কষ্টের কথাডা কাকুরেই জানাইলাম। তহন আমার কষ্টে কাকুর মনও খারাপ অয়্যা যায়।
‘পরের দিন রাইতে আবার গাড়ি লইয়্যা বাইর অইছি। রাইতে দেড়টার দিকে চা-সিগারেট খেতে কাকুর দোকানে যাই। তহন ভালুকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের গাড়ি লইয়্যা চালক আইতে দেরি করায় তিনি তহন দাঁড়াইয়্যা আছিন।’
এই জনপ্রতিনিধি পুরো কাহিনি শুনে ফেসবুকে তা লিখেন। আর এতে টনক নড়ে পুলিশ সদরদপ্তরের। বরখাস্ত করা হয় ভালুকা ভরাডোবা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই আবু তাহের, নায়েব হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল রেজাউল করিমকে।
এই তিন পুলিশকে গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তকালীন সময়ে তারা পুলিশ লাইনসে উপস্থিত থেকে নিয়মিত রোল কলে হাজিরা দেবেন এবং এই সময়ে তারা কেবল খোরপোশ ভাতা পাবেন।
শামীম বলেন, ‘চেয়ারম্যান কইল, অটোরিকশাটি কার? আমি কইলাম আমার, কইলাম কোথাও যাবেন? তিনি না করলেন। তিনি জানবার চাইল, রাতে গাড়িতে প্যাসেনজার পাও? কইলাম, পাই।
‘হঠাৎ কইরা কাকু চেয়ারম্যানরে কইল, কাইল রাইতে এই অটোরিকশাচালকটার সব ট্যাহা হুদাই কাইড়া নিছে হাইওয়ে পুলিশ। তহন চেয়ারম্যান একটু কাগজে আমার ঠিকানা আর মোবাইল নম্বর লেইখ্যা নিছে।
‘এই ঘটনা লেইখ্যা ফেসবুকে ছাইড়া দিসে চেয়ারম্যান। পরে হুনছি মানুষজন হাইওয়ে পুলিশরে অনেক সমালোচনা করতাছে’- তার কাহিনি নিয়ে তোলপাড়ের কথা শুনেছেন শামীম নিজেও।
হাইওয়ে পুলিশের তিন সদস্যকে বরখাস্তের আদেশে সন্তুষ্ট কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশ সবসময় বিভিন্ন গাড়ির চালকদের কাছ থাইক্যা চাঁদা নিতাছে। আমার মনে কইতাছে এমন ঘটনায় আমিই প্রথম বিচার পাইলাম। চাঁদাবাজ পুলিশকে বরখাস্ত করায় আমি সন্তুষ্ট।’
এমন ঘটনা আছে আরও
চালকদের তথ্য বলছে, শামীমের মতো আরও অনেকেই ভালুকায় হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজির শিকার।
গাড়ি থামার সিগন্যাল দিলেই টাকা দিতে হয়। না দিলেই টুকে দেয়া হয় মামলা। টাকা আদায় করা হয় রীতিমতো দরাদরি করে টাকা আদায় করতে হয।
করোনার কারণে দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চাপ বেড়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। এতে আরও বেশি বেপরোয়া ভালুকা হাইওয়ে পুলিশ।
ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘প্রতিনিয়ত হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজিসহ মামলা দিয়ে হয়রানি চলছেই। হয়ত এ ঘটনার পর কয়েকদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকবে। তবে আবারও রমরমা হবে চাঁদাবাজি। হাইওয়েতে পুলিশের চাঁদাবাজি বন্ধ করা প্রয়োজন।’
গাজীপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার আলী আহম্মদ খান বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত করে তিন পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্তের প্রতিবেদন শেষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য