নারায়ণগঞ্জের সেই ভয়ংকর সাত খুনের সাত বছর আজ। ওই নৃশংস ঘটনার কথা মনে করে আজও শিউরে ওঠে মানুষ। আর স্বজন হারানোর বেদনায় ডুকরে কেঁদে ওঠা পরিবারগুলো কান পেতে অপেক্ষায় আছে বিচারের শেষ রায় শোনার। বিচারিক আদালত, হাইকোর্টের পর বিচারের শেষ রায় এখন ঝুলে আছে আপিল বিভাগে।
মাস্টার মাইন্ড নূর হোসেন ও র্যাব-১১-এর তখনকার সিও-এর পৈশাচিক ওই ঘটনায় তোলপাড় হয় সারা দেশ। সাত বছরেও বিচার না পাওয়ায় স্বজনরা হতাশায় ডুবছে। তাদের একটাই জিজ্ঞাসা, বিচার শেষ হবে কবে?
নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটি বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাত বছর হয়ে গেলেও শেষ রায় হলো না। আমরা রায় কার্যকরের অপেক্ষায় আছি। বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট এ হত্যাকাণ্ডের রায় দ্রুত দিয়েছিল, কিন্ত আপিল বিভাগে রায় না হওয়ায় আমরা হতাশায় আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার অনেকে বলে বেড়ায় নূর হোসেন ফিরে আসবে। তাদের এসব কথা শুনলে আতঙ্ক লাগে। নূর হোসেনের বিচার চাই। সে যেভাবে মানুষগুলোকে অত্যাচার করে মেরেছে তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। ৭ খুনের বিচারের বিচারের রায় কার্যকরের অপেক্ষোয় আছি আমরা সাতটি পরিবার।’
নিহত তাজুল ইসলামের বাবা বলেন, ‘সাত বছর ধরে অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছি। আমার সংসারে ছেলেটাই ছিল উপার্জনক্ষম। তাকে হত্যার পর থেকে তার মা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে। তার ইচ্ছে ছেলে হত্যার বিচার দেখে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবে। কিন্তু এখনও রায় কার্যকর হয়নি। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে হয়তো কার্যক্রম হচ্ছে না। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করব আপিল বিভাগে মামলার শুনানি যেন দ্রুত করা হয়।’
সাত খুনের ঘটনায় নিহত গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নুপুর আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স এখন সাত বছর। জন্মের আগেই তার বাবাকে খুন করা হয়েছে। এখনও খুনিদের শাস্তি হয়নি। সাত বছরে আমাদের কেউ সহযোগিতা করেনি। যার স্বামী নেই, তার কাছে কিছুই নেই। তবু শেষ বিচারের রায় শোনার অপেক্ষায় আছি।’
আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের দুইটি মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুরু থেকে একটি পক্ষ এ মামলার কার্যক্রম বিলম্ব করতে চেয়েছে। কিন্তু বিচারিক আদালত দ্রুত মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ করেছে। হাইকোর্টেও মামলার রায় হয়েছে কিন্তু আপিল বিভাগে মামলার কার্যক্রম বিলম্ব হচ্ছে। আমি মনে করি, রাষ্ট্রপক্ষ গুরুত্ব দিলে আপিল বিভাগে দ্রুত মামলার শুনানি হতে পারে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ের অপেক্ষা করছে সারা দেশের মানুষ।’
সাত খুনের পূর্বাপর
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দুপুরে আদালত থেকে প্রাইভেট কারে বাড়ি ফিরছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম। পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে সাদাপোশাক পরা র্যাব সদস্যরা তাদের অপহরণ করে। আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহীম পেছন থেকে এ চিত্র মুঠোফোনে ভিডিও করলে ওই র্যাব সদস্যরা তাদেরও ধরে নিয়ে যায়। তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীর শান্তির নগর এলাকা থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহগুলো হাত-পা বাঁধা ছিল, পেটে ছিল ফাঁড়া। ১২টি করে ইটভর্তি সিমেন্টের দুইটি করে বস্তা বেঁধে দেয়া হয় প্রতিটি মরদেহের সঙ্গে। মরদেহগুলোর মুখ ছিল ডবল পলিথিন দিয়ে মোড়ানো।
এ ঘটনায় ওই রাতে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী বিউটি বেগম মামলা করেন। পরে আরেকটি মামলা করেন আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল।
এ দুই মামলায় নূর হোসেনসহ র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রায় এক বছর পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুইটি মামলায় নূর হোসেনসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১২৭ সাক্ষীর মধ্যে ১০৬ জন সাক্ষ্য দেয় আদালতে।
২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন আলোচিত ৭ খুন মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে নূর হোসেন, র্যাবের চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, উপ-অধিনায়ক মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও ক্যাম্প ইনচার্জ লে. কমান্ডার (অব.) এম এম রানাসহ ২৬ জনের ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
পরে মামলাটি যায় হাইকোর্টে। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট নূর হোসেন ও র্যাব-১১-এর সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখার আদেশ দেয় হাইকোর্ট। অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সব শেষ আপিল বিভাগে রয়েছে মামলাটি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য