সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের মনমোহন দাসের ভাঙা ঘরে লেগেছে নতুন টিন। সূর্যের আলোয় ঝলমলিয়ে উঠছিল সেটি।
মনমোহন দাসের চোখেমুখে তবু রাজ্যের আঁধার। সঙ্গে চাপা ক্ষোভ আর আতঙ্ক।
এই গ্রামে ১৭ মার্চ তাণ্ডব চালিয়েছে আশপাশের গ্রামের হাজারও লোক। ভেঙে দেয়া হয়েছিল ৮৭টি হিন্দুবাড়ি। এর মধ্যে একটি মনমোহনের। তিনি বলেন, ‘এটা কী হলো? এ রকম তো কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবিনি। হিন্দু-মুসলমান মিলে কত যুগ ধরে আমরা একসঙ্গে বসবাস করে আসছি। কোনো বিভেদ ছিল না। অথচ আজ কী হলো?’
তিনি তবু বাড়িতেই আছেন। তবে বাড়ি ফিরতে এখনও ভয় পান কেয়া চৌধুরী। মনমোহনের পাশের ঘরের রঞ্জনা চৌধুরীর মেয়ে তিনি। পড়েন সুনামগঞ্জ কলেজে।
যেদিন হামলা হয়, সেদিন দুপুরে ভয়ে তাকে সুনামগঞ্জ শহরে মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন রঞ্জনা। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে এখন বাড়ি আসতে চায় না। বাড়ি ফিরতে ভয় পায়। কেবল বলে, তারা যদি আবার আসে।’
হামলার দিন গ্রাম ছেড়ে বোনের বাড়ি চলে যান শাল্লা কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পাস করা পান্না রানী দাস। তিনিও ভয়ে বাড়ি ফিরতে চাচ্ছেন না বলে জানালেন তার বড় বোন সোনালী রানী দাস।
এই গ্রামেরই মায়া দেবীর ছেলে অয়ন। নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। হামলার পর থেকে প্রতি রাতে ঘুমের মধ্যেই ভয়ে কেঁদে ওঠে সে। ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে ওঠে বলে, ‘মা, এরা আবার আইছে।’
ছেলের এমন কান্নায় ভয় পেয়ে যান মা মায়াও। ছেলেকে সান্ত্বনা দেন। তারপর বুকে জড়িয়ে রাখেন।
বুধবার নোয়াগাঁও গ্রামে গিয়ে কথা হয় তাদের সঙ্গে।
সারা দেশ যখন ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালনে ব্যস্ত, সেদিন সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে মিছিল নিয়ে এসে হামলা চালায় কয়েক হাজার সশস্ত্র লোক। তারা আসে আশপাশের গ্রামগুলো থেকে, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের সমালোচনা করে এক যুবকের স্ট্যাটাসের জের ধরে এই হামলা চালানো হয়। হিন্দুধর্মাবলম্বী যে যুবক ওই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তার বাড়ি নোয়াগাঁওয়ে।
আগের রাতেই হামলার ভয়ে ঝুমন দাশ নামের ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসী। তবু সেই আক্রোশে ভেঙে দেয়া হয় গ্রামের অন্তত ৮৭টি হিন্দুবাড়ি। ভাঙচুরের পর প্রতিটি বাড়ি থেকে লুট করে নেয়া হয় মূল্যবান জিনিসপত্র। ভাঙচুর করা হয় সাতটি মন্দির।
হামলার পর থেকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রতিদিনই পরিদর্শনে যাচ্ছেন সেখানে। তারা গ্রামবাসীর প্রতি জানাচ্ছেন সহমর্মিতা, জোগাচ্ছেন সাহস। তবু ভয় কাটছে না গ্রামবাসীর।
নোয়াগাঁও গ্রামে যাওয়ার পর গ্রামবাসীরা রীতিমতো টানাটানি শুরু করে দেন। প্রথমে তারা ভাবেন আগন্তুকেরা সরকারি সংস্থার কেউ হয়তো। অনেকে ভাবেন, সহায়তা এসেছে বোধ হয়।
হামলায় নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নগুলো দেখাতে শুরু করেন সবাই। কেউ নিয়ে আসেন নিজেদের ক্ষতবিক্ষত হাঁড়িপাতিল। কেউবা দেখান ভেঙে চুরমার হওয়া বাদ্যযন্ত্র।
গ্রামের পুরোহিত অসীম চক্রবর্তী নিয়ে যান টিনের একটি ছোট্ট ঘরে। গ্রামবাসীর কাছে এটি ‘বিপদনাশিনী মন্দির’। হামলাকারীরা মন্দিরের মূর্তিগুলো চুরমার করে দিয়েছে।
এই গ্রামেই বাড়ি স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ দাসের। তার ঘরটিও টিনের। চেয়ারম্যান বাড়িতে নেই। তার স্ত্রী দিপালী মজুমদারের সঙ্গে কথা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আলমারি ভেঙে সব সোনাদানা নিয়ে গেছে। ভয়ে বাথরুমে লুকিয়েছিলেন আমার জা। বাথরুমের দরজা ভেঙে তাকে বের করে এনেছে।’
বলতে বলতেই বাথরুমের ভাঙা দরজা দেখান তিনি।
রঞ্জনা চৌধুরী, যার মেয়ে ভয়ে বাড়ি আসতে ভয় পায়, তিনি বলেন, ‘সেদিন বাচ্চারাও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলায় এসেছিল। তারা সবাই আশপাশের গ্রামের। আমাদেরই প্রতিবেশী। হামলার সময় স্বাধীন মেম্বার উঠানের চেয়ার বসে বিড়ি ফুঁকছিল। আমরা হাওর থেকে সব দেখতে পাচ্ছিলাম।
‘আমার ঘরের চুলা ভেঙেছে। হাঁড়ি ভেঙেছে। ঘরে গরু বিক্রির টাকা ছিল, সেটা নিয়ে গেছে। আমাকে একেবারে সর্বস্বান্ত করে গেছে।’
কথা বলার সময় ক্ষোভে বিস্ফোরিত হয়ে ওঠে রঞ্জনা চৌধুরীর চোখ। বলেন, ‘এ রকম লুটপাট করছে জানলে আমি নিজেই লাঠি নিয়ে তাদের ঠেকাতে বের হতাম। তাতে মারা গেলেও শান্তি ছিল। সব হারিয়ে এখন বেঁচে থেকে কি লাভ?’
নোয়াগাঁও হাওরবেষ্টিত শাল্লা উপজেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে মোটরসাইকেলই এখানকার বাহন। হাওরের ফসলরক্ষার জন্য যে বাঁধ তৈরি হয়েছে, সেটিই এখন সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সড়ক না থাকলেও গ্রামে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। গ্রামের পাশেই পল্লী বিদ্যুতের সাব-স্টেশন নির্মিত হচ্ছে। গ্রামে পাকাঘর তেমন নেই। প্রায় প্রতিটি ঘরই টিনের, যার মধ্যে বেশির ভাগ ঘরই ভাঙাচোরা। সবকিছুতে দারিদ্র্যের ছাপ স্পষ্ট।
গ্রামের কিছু তরুণের হাতে স্মার্টফোন থাকলেও বয়স্করা এখনও ইন্টারনেট, ফেসবুক এসবের সঙ্গে পরিচিত নন।
ফেসবুকে যে স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে হামলার কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামের গৃহবধূ ঢলি রানী দাস বলেন, এ কয়দিন হলো তিনি ফেসবুক শব্দটা শুনছেন।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ফেছবুক কিতা জানি না। অনেকে এর কথা কইতে হুনলাম। ঝুমনে ওনো বুলে (ওখানে নাকি) কিতা লেখছে।’
এইটুকু বলে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন ঢলি। ফেসবুক সম্পর্কে কিছু জানতে চান বোধ হয়।
কোনো উত্তর না পেয়ে আবার নিজে থেকেই বলতে শুরু করেন, ‘হামলার ঠিক আগে আমরা পাশের হাওরে গিয়ে লুকিয়েছিলাম। সেখান থেকে হামলার শব্দ শুনেছি। এখনও সেই শব্দ কানে ভাসে। এখনও ভয়ে গা শিউরে ওঠে।’
হামলার পর সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ভাঙা ঘরগুলো পুনর্নির্মাণেও সহায়তা করেছে সরকার।
এখন বিচার চায় গ্রামবাসী।
গ্রামের গৃহবধূ সুধা রানী দাস বলেন, ‘সাহায্য অনেক পেয়েছি। কিন্তু আমরা সাহায্য নয়, বিচার চাই। নিরাপত্তা চাই।’
নোয়াগাঁওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহমর্মিতা জানাতে সিলেট থেকে বুধবার গিয়েছিলেন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এর সংগঠক আব্দুল করিম কিম।
মামুনুলকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ঝুমন দাশের ঘরে যান তিনি। ঝুমন দাশের মুক্তির জন্য তার পরিবারের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মামুনুল হকের সমালোচনা করলে কাউকে কেন গ্রেপ্তার করতে হবে? গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সবারই সমালোচনা করার আধিকার আছে। ঝুমনকে অন্যায়ভাবে জেলে রাখা হয়েছে।’
কিমের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বিশ্বজিত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নোয়াগাঁওয়ে হামলার পর হামলাকালীরা মিছিল নিয়ে শাল্লা সদরের দিকে গিয়েছিল। সেখানে একটি প্রাচীন মন্দিরে হামলার চেষ্টা করেছিল তারা। আমরা সবাই জড়ো হয়ে তাদের প্রতিহত করি। এখানে হামলার ব্যাপারে আগে থেকে জানলে তাদের প্রতিহত করা যেত।’
গ্রাম থেকে বের হওয়ার পথে দেখা হয় একাত্তরের যুদ্ধ দেখা বৃদ্ধ সাবিত্রী বালার সঙ্গে। লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিলেন তিনি।
সাবিত্রী বলেন, ‘একাত্তরের সময় একবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলাম। এইবার আবার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালাতে হলো। স্বাধীন দেশে কেন নিজ বাড়িঘর ছেড়ে ভয়ে পালাতে হয়? আমাদের অপরাধ কি?’
তার পাশে থাকা অনিল দাস বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়ও একবার দিরাইয়ের নাচনি ও চণ্ডীপুরের রাজাকাররা নোয়াগাঁওয়ে হামলা করেছিল। তখন চারজন রাজাকারকে ধরে হত্যা করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। এবারও হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছে নাচনি ও চণ্ডীপুর গ্রামের লোকজন।’
নোয়াগাঁও পরিদর্শনে যাওয়া দলে ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল। তিনি বলেন, ‘এই হামলা একাত্তরের হামলা থেকে ভিন্ন কিছু না। এই হামলায় যতটা না জানমালের ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি হয়েছে মানসিক ক্ষতি, বিশ্বাসের ক্ষতি।’
নোয়াগাঁও থেকে ফেরার পথে পড়ে ধারণ বাজার। এই বাজারের একটি মন্দির একেবারে গুঁড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা। সেটি দেখিয়ে স্থানীয় ছাত্রনেতা অরিন্দম চৌধুরী বলেন, ‘এখন বলা হচ্ছে জলমহাল নিয়ে বিরোধ থেকে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা হয়েছে। জলমহাল নিয়ে বিরোধ হলে এই মন্দিরে হামলা হবে কেন?’
তার মত, এটা স্পষ্টতই সাম্প্রদায়িক হামলা।
হামলার ঘটনার পর দুইটি মামলা হয়। তাতে বুধবার পর্যন্ত ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাশের দিরাই উপজেলার নাচনি গ্রামের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীনকে ৫ দিনের এবং ২৯ জনকে ২ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, ‘এই হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাচ্ছে। এ্ররই মধ্যে ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩০ জনের রিমান্ডও চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরও যাদের নাম পাওয়া যাবে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’
তিনি জানান, নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর নিরাপত্তায় গ্রামেই একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে আছেন ১৫ জন পুলিশ। এ ছাড়া গ্রামে র্যাবও একটি অস্থায়ী ক্যাম্প করেছে।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য