সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু গ্রামে হামলার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি অস্বীকার করেছেন জেলার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে স্ট্যাটাসের জেরে এই হামলা হয়েছে জানিয়ে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জড়িত বাকি সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
একটি মামলার প্রধান আসামি শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হবে বলেও জানান এসপি।
গত বুধবার শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে ৮০টিরও বেশি হিন্দু বাড়িতে হামলা ও লুটপাট হয়। চার দিন পর রোববার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সুনামগঞ্জের এসপি।
এই হামলার পর জানা যায়, গত সোমবার হেফাজত নেতা মামুনুল হক শাল্লা লাগোয়া দিরাই উপজেলায় একটি মাহফিলে বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন।
এর সমালোচনা করে আবার নোয়াগাঁওয়ের এক যুবক স্ট্যাটাস দিয়ে মামুনুলকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দেন। এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বুধবার সকালে দিরাইয়ের তিনটি মসজিদে মাইকিং করে স্থানীয়দের জড়ো করে মিছিল নিয়ে শাল্লার উদ্দেশে রওনা দেয় হামলাকারীরা।
পুলিশ এই জমায়েতের কথা জানত। তবে হেফাজতের স্থানীয় নেতারা তাদের আশ্বাস দেন, কেবল মিছিল করে তাদের সমর্থকরা চলে আসবেন।
কিন্তু তা হয়নি। মিছিলকারীরা রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রওনা হয় আর শাল্লার ওই গ্রামটিতে গেলে তারা উন্মত্তের মতো হামলে পড়ে।
এরপর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা ওঠে।
তবে এসপি দাবি করেন, পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সত্য নয়। তিনি বলেন, ‘এই সংবাদ (উত্তেজনার) পাওয়ার পর শাল্লা থানার ওসি, ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারেন ঝুমন দাস তার ফেসবুক আইডিতে মামুনুল হকের ছবি বিকৃত করে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওসি ঝুমন দাসকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থার গ্রহণের আশ্বাস দিলে জনতা শান্ত হয়ে ফিরে যায়। তারা আর কোনো উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করবে না মর্মে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।’
হামলার পরদিন ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে শাল্লার ওসি, স্থানীয় প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপজেলা চত্বরে সরকারি কর্মসূচিতে ছিলেন বলেও জানান এসপি।
তিনি বলেন, ‘আমি ও জেলা প্রশাসক জেলা সদরের জাদুঘরে অনুরূপ সরকারি প্রোগ্রামে থাকাবস্থায় সংবাদ পাওয়া যায় সকাল আনুমানিক ৮টা ৫০ মিনিটে শাল্লার কাশিপুর ও দিরাইয়ের চন্ডিপুর, নাচনী, চন্দ্রপুর এবং ধনপুর গ্রামের ১৪০০ থেকে ১৫০০ উত্তেজিত জনতা দা, লাঠিসোঁটা নিয়ে ঝুমন দাসের বাড়িতে আক্রমণ করার উদ্দেশে রওনা হচ্ছে।
‘তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে শাল্লা থানার ওসি ও ইউএনও নোয়াগাঁও গ্রামের দারাইন নদীর উত্তর পশ্চিম পারে অবস্থান করে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে পৌঁছান।’
সুনামগঞ্জ পুলিশের প্রধান জানান, দারাইন নদীর উত্তর-পূর্বপাড়ের অরক্ষিত অংশ দিয়ে সাঁতরে কয়েকজন নোয়াগাঁও গ্রামে প্রবেশ করে। তারা ঝুমন দাস, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বকুল চন্দ্র মজুমদারের ঘরসহ বেশ কিছু ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।
এ সময় পুলিশ আশপাশ থেকে নৌকা জোগাড় করে দারাইন নদী পার হয়ে গ্রামে পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা নদী পার হয়ে চলে যায় বলে জানান তিনি।
‘মামুনুলকে নিয়ে স্ট্যাটাসেই এই ঘটনা, শান্ত করার চেষ্টা করেছে পুলিশ’
এসপি বলেন, ১৬ মার্চ সকালে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস তার ফেসবুক আইডি থেকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে স্ট্যাটাস দেন।
এর জেরে দিরাই ও শাল্লা থানার কয়েকটি গ্রামের কয়েক শ মুসলিম মসজিদের মাইকে প্রচার করে জড়ো হয়ে আনুমানিক রাত ৮টার দিকে নোয়াগাঁও গ্রামে মিছিল-স্লোগানসহ প্রতিবাদ জানাতে থাকে বলে জানান তিনি।
ওই রাতেই গ্রামের দারাইন বাজারে শাল্লা থানা থেকে একজন এসআই, একজন এএসআই ও সাতজন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয় বলেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠানের নেতৃত্বে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়- সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন এসপি।
স্বাধীনকে রিমান্ডে চায় পুলিশ
এই হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে দুটি। একটি মামলা করেছেন হবিবপুরের ইউপি চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার। একটি করেছে পুলিশ।
বিবেকানন্দর করা মামলায় প্রধান আসামি শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিলেও জেলা যুবলীগ জানিয়েছে, উপজেলায় ১৪ বছর ধরেই তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই।
আরও পড়ুন: শাল্লায় হামলা: যেভাবে ধরা যুবলীগের স্বাধীন
শনিবার প্রথম প্রহরে স্বাধীনকে মৌলভীবাজার থেকে আটক করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তাকে রিমান্ডে পাওয়ার আশা করছেন এসপি।
তিনি বলেন, ‘আমরা আদালতের কাছে রিমান্ড চাইব। কারণ, তাকে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার রয়েছে। তবে বিষয়টি যেহেতু এখনও তদন্তাধীন, এর বেশি কিছু আপনাদের বলতে পারব না।’
এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়ে এসপি বলেন, ‘জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে সঠিক তদন্ত করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারব বলে আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই।’
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
মন্তব্য