বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মাস্ক পরে হামলা চালায় ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল। এ সময় বিভাগের আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয় কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান বাচ্চুকে। নিয়ে যাওয়া হয় বিভাগের সিসিটিভির হার্ডডিস্ক ড্রাইভ।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা হয় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায়। ঘটনার ২১ দিন পর এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ আলিফ হোসেন হীরা ও শাকিল আহমেদ।
রোববার টেইলারিং ব্র্যান্ড টপ টেনের বরিশাল শোরুমে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায়ও এসেছে এই দুইজনের নাম। শাকিলকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করা হয়। হীরাকে করা হয়েছে মামলার ১০ নম্বর আসামি।
টপ টেন শোরুমের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে হলুদ পাঞ্জাবি পরা এক তরুণের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। পাঞ্জাবি পরা ওই ছেলেকে জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মচারী মারুফ হাসান টিটু বলে শনাক্ত করেন স্থানীয় ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী। তবে তারা কেউই তাদের নাম প্রকাশে রাজি হননি।
আলোচিত এই ঘটনায় ২১ জনের নাম এবং ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত করে কোতোয়ালি মডেল থানায় সোমবার মামলা করেন টপ টেন শোরুমের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ইমরান শেখ। এদের মধ্যে পাঁচজনকে রোববার হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। মামলার ১ নম্বর আসামি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সদর রোডে রোববার সন্ধ্যার ওই ঘটনার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, ঘটনায় যারা জড়িত তাদের পেছনে রাজনৈতিক শক্তি রয়েছে; রয়েছে পুলিশের গাফিলতিও। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মামলার ১৪ জন আসামি বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক আনিসুর রহমান।
আসামিরা হলেন কলেজ এভিনিউ এলাকার মারুফ হাসান টিটু, নিউ সার্কুলার রোডের মুহিদুল ইসলাম মুহিদ, লুৎফর রহমান সড়কের তাজিম হাওলাদার, কলেজ রোড এলাকার সৈয়দ আলিফ হোসেন হিরা, শুভ শীল, সুখ রানা হক, গনপাড়া এলাকার সুজন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার নাজমুল হাসান রনি, হাটখোলা রোড এলাকার নাদিম মাহমুদ হৃদয়, কলেজ রোড এলাকার ফাহিম হোসেন, লুৎফর রহমান সড়কের আল আমিন হোসেন সোহান, কাশিপুর মহুয়া এলাকার মিজান শরীফ, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার নয়নপুর এলাকার ইকবাল হোসেন ও নগরীর কসাইখানা এলাকার নিলয় আহম্মেদ রাব্বি।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলার মামলায় নামধারী ২১ জনের অধিকাংশ বরিশালের প্রভাবশালী তিন ছাত্রলীগ নেতার অনুসারী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক টিটু জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি ফেসবুকের মেসেঞ্জারে সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের সঙ্গে টিটুর বেশ কিছু ছবিও পাঠিয়েছেন নিউজবাংলাকে।
মামলায় গ্রেপ্তার এক নম্বর আসামি রাকিব জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব হোসেন খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রাজিব হোসেন খানের মিছিলের ছবিতে তাকে সামনের সারিতেই দেখা গেছে। গ্রেপ্তার রাকিব বরিশাল সিটি করপোরেশনের যানবাহন ও লাইসেন্স শাখার কর্মচারী।
শাকিল পরিচিত জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিমের অনুসারী হিসেবে। টপ টেনে হামলার পর মুনিমের সঙ্গে শাকিলের ছবি ভাইরাল হয় ফেসবুকে। বিএম কলেজে হামলার ঘটনাতেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শাকিল।
টপ টেনের মামলার ১০ নম্বর আসামি সৈয়দ আলিফ হোসেন হীরাকে বিএম কলেজে হামলার ঘটনায়ও গ্রেপ্তার করেছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক প্রলয় কান্তি। তাকেও সবাই আতিকুল্লাহ মুনিমের অনুসারী হিসেবেই চেনেন। নিউজবাংলার কাছেও ওই নেতার সঙ্গে হীরার প্রচুর ছবি এসেছে।
সোহান, ফাহিম, শুভসহ মামলার আসামিদের অনেকেই জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, আতিকুল্লাহ মুনিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব হোসেন খানের অনুসারী বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল জেলা ছাত্রলীগেরই দুই সহসভাপতি।
এ বিষয়ে জানতে প্রথমে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। পরিচয় দেয়া হলে তিনি জানান, এক অসুস্থ রোগীর সামনে আছেন। একটু পরে ব্যাক করবেন।
এর পর তিনি আর কল ব্যাক করেননি। পরে তাকে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। সাড়া না মেলায় হোয়াটস অ্যাপে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি জবাব দেননি।
ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব হোসেন খান ও সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিমের সঙ্গেও। কিন্তু তারা ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া দেননি।
ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না জানতে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে তিনি প্রশ্ন শুনেই সংযোগ কেটে দেন। পরে তাকে আবার ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
বরিশালের গবেষক ও লেখক আনিসুর রহমান খান স্বপন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কলেজের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার হলে দ্বিতীয়বার একই অপরাধীরা অপরাধ করতে সাহস পেত না এবং শহরে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করতে পারত না।’
তিনি বলেন, ‘দুই মাসের মধ্যেই ঈদ। ঈদের মধ্যেই বরিশালের বাজার জমজমাট থাকবে। এর আগে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়বে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘কারও রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা তাদের অপরাধী হিসেবেই দেখছি। এ ধরনের অপরাধ যারা করেছে তাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।’
আরও পড়ুন: বরিশালে কি আবারও সন্ত্রাসের রাজত্ব
জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী রুনা খান নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বিশেষ করে ছোটপর্দার অভিনেত্রী হিসাবে বেশ পরিচিত তিনি। কিন্তু বড়পর্দাতেও অভিনয় করে নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন অভিনেত্রী। এর মধ্যে পাঁচটি সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। হালদা' সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন রুনা খান।
সর্বশেষ যে ছবিতে কাজ করছেন, সেখানেই উঠে আসবে নায়িকাদের জীবনের আড়ালের কাহিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রুনা খান সিনেমার নানা প্রসঙ্গে নিয়ে কথা বলেছেন। মিডিয়াতে নারীকে উপস্থাপন ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোচনা করেন অভিনেত্রী।
রুনা খান এবারই প্রথম ‘চলচ্চিত্র: দ্য সিনেমা’ নামক সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। এবার বড়পর্দায় তাকে দেখা যাবে নায়িকার ভূমিকায়। আলী জুলফিকার জাহেদীর পরিচালনায় নির্মাণ করা হচ্ছে এ সিনেমাটি। যেখানে নায়িকাদের জীবনের গল্প নিয়ে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করবেন রুনা খান।
অভিনেত্রী বলেন, আমরা যারা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, দর্শকরা শুধু আমাদের পর্দায় দেখেন। কিন্তু পর্দার বাইরেও আমাদের আলাদা জীবন আছে, আছে সুখ-দুঃখের গল্প। এ নিয়েই ‘চলচ্চিত্র: দ্য সিনেমা’ সিনেমার কাহিনি। তিনি বলেন, আমি চাই নারীকে শুধু মানুষ হিসেবেই দেখা হোক। নাটক, সিনেমা কিংবা সংবাদ— সব জায়গায় নারীকে এমনভাবে উপস্থাপন করুক, যেন তারা স্বাভাবিক অধিকার পায়।
রুনা খান বলেন, এক বিশেষ চরিত্র রয়েছে, যা তার মধ্যে পরিবর্তন এনে দিয়েছে। সেটি হলো— ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার ‘নীলা’ চরিত্র। নীলা চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে একজন যৌনকর্মী। এ চরিত্রটি করতে গিয়ে এ পেশার মানুষের জীবনের যে গভীর যন্ত্রণা, অপমান আর বাস্তবতা— তা খুব কাছ থেকে দেখেছি, অনুভব করেছি; আর এ অভিজ্ঞতাই আমাকে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছে।
অভিনেত্রী বলেন, আমরা কি একটু বেশি মানবিক হতে পারি না? যৌনকর্মীদের প্রতিও যদি সহানুভূতি দেখানো যেত! আসলে এ চরিত্র আমাকে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছে, মননশীল করেছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকারের আইনগত সহায়তা কার্যক্রমকে সহজলভ্য করার মাধ্যমে প্রচুর সময় ও অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। এই সেবা যারা পেয়েছেন তাদের ৯০ ভাগ মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আদালতের তুলনায় ১০ ভাগের একভাগ কম সময়ে তারা এই সেবা পাচ্ছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর : রোল অব ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিস ইন ইমপ্লিমেন্টিং নিউ লেজিসলেশন্স’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন,বিচারপ্রত্যাশী মানুষের সময়, শ্রম এবং অর্থ বাঁচাতে সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লিগ্যাল এইডের কাজ চলমান থাকবে। তিনি বলেন, এক টাকা পরিমাণ অর্থ অনুদান না পেলেও আমরা বসে থাকব না, যতদিন মেয়াদ অবশিষ্ট আছে আমরা কাজ করে যাব এবং এমন ব্যবস্থা করে যাব, যেন আমরা চলে গেলেও মানুষ এর উপকার পান।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিচারক ও আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের এ কাজে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা না থাকলেও আপনারা ভবিষ্যতে এ মহৎ কাজ চালিয়ে যাবেন।’
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান,আইন ও বিচার বিভাগ সচিব শেখ আবু তাহের, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. মাইকেল মিলার এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।
এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হাটহাজারীর হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।
সোমবার (২৫ অগাস্ট) দুপুরের দিকে দক্ষিন মাদার্শা ইউনিয়নস্থ হালদা নদীর শাখা খাল কাটাখালির মুখ থেকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, হালদা নদীর উল্লেখিত স্থানে সোমবার দুপুরের দিকে একটি মৃত ডলফিন ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। নৌ পুলিশকে খবর দিলে দায়িত্বরত নৌ পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ওই ডলফিনটি উদ্ধার করে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার শওকত আলি বলেন, হালদা নদী থেকে প্রায় ৫৯ ইঞ্চির একটা মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হযেছে। যার ওজন ৩৭ কেজি। ডলফিনের দেহটি পচে যাওয়ায় দক্ষিণ মার্দাশা রাম দাস মুন্সির হাট এলাকায় সবার উপস্থিতিতে মাটিচাপা দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরীয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সদ্য চালু হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে হামলা করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকাল পাঁচটার পর পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানা যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার বিকেল পাঁচটার পর পর ৫/৬টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। ক্যাম্পের কাছাকাছি জায়গায় এসে প্রথমে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্তে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়। আধা ঘন্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে বিকাল পৌণে ছয়টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারীরা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' পিয়াসের নেতৃত্বে ৫/৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত পক্ষে ৩০/৩৫জন নৌ ডাকাত পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ১৯ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি তবে কোন সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারব না'।
বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ' নৌ ডাকাতরা সম্ভবত চাঁদা তোলার উদ্দেশ্যে নদীতে নেমেছিল। পুলিশ থাকার কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। নৌ ডাকাতের মধ্যে কেউ আহত হয়েছে কিনা আপনারা খবর নিয়ে দেখেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামনে আরো কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ'।
প্রসঙ্গতঃ গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা,স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এদিকে প্রথম থেকে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল নৌ ডাকাত গ্রুপগুলো।
নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিকে ‘মানুষকে বিভ্রান্ত করার কৌশল’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
তিনি বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ও ধর্ম ব্যবসায়ী এ প্রক্রিয়াকে সামনে এনে জনমনে ভুল ধারণা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এ ধরনের কৌশল উপমহাদেশের কোথাও নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা পিআর পদ্ধতির নামে ষড়যন্ত্র করছে, নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায় বা বন্ধ করতে চায় তাদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কুমিল্লা টাউন হল মাঠে কুমিল্লা সদর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন নির্বাচন হবে। দৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, এখন অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বিএনপি একদিকে দাঁড়িয়েছেন, আর বাংলাদেশের সকল ষড়যন্ত্রকারী দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধের শক্তি, বিদেশি প্রভুদের দালাল এজেন্টরা একদিকে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী বাড়ি থেকে আরাফাত রহমান কোকো ও তারেক রহমানসহ বেগম খালেদা জিয়াকে হানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যান। সেখানে তিনি বন্দি ছিলেন।
দ্বি-বার্ষিক এ সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আমিন-অর রশিদ ইয়াছিন। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল কাইয়ুমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া তাহের সুমন।
বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু,সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে র্যাবের অভিযানে মাইক্রোবাসে মিললো ২৫ বস্তা ভারতীয় চকলেট। এসময় ৩ জন চোরা কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় ভৈরব শহরের নাটাল বাংলো সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
আটকৃতরা হলেন, মাইক্রোবাস চালক সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার আলমনগর এলাকার মনা মিয়ার ছেলে খলিল মিয়া (৩৯), একই এলাকার ইসলামপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে আলী হোসেন জাকির (৪৬), ফজলুর রহমানের ছেলে দুলাল মিয়া (৩৫) ।
জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুর ভৈরব প্রান্তে শহরের নাটালের মোড় এলাকায় সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে ২৫ বস্তা ভারতীয় কিটকিটা, ক্যাটভেরিসহ বিভিন্ন চকলেট জব্দ করা হয়। এসময় ৩ জনকে আটক করেছে ভৈরব র্যাব ক্যাম্প সিপিসি -২, র্যাব-১৪।
এ বিষয়ে সিপিসি ২ র্যাব- ১৪, ভৈরব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
মোঃ মুহিত কবির সেরনিয়াবাত জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে একটি মাইক্রোবাস যোগে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চকলেট সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রাজধানী শহরে যাচ্ছে। পরে সেতুর ভৈরব প্রান্তে অভিযান চালিয়ে ২৫ বস্তা ভারতীয় চকলেটসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নীলফামারীর পলাশবাড়ি ইউনিয়নের নটখানায় অবস্থিত ডেনিশ বাংলাদেশ লেপ্রসি মিশন (ডিবিএলএম) হাসপাতালের বর্হিবিভাগে দালালদের উৎপাত বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। সোমবার (২৫আগস্ট) দুপুরে ডিবিএলএম হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন স্থানীয় বাসিন্দা মতিবুল ইসলাম তুফান, দেলোয়ার হোসেন, তৈয়বুর রহমান, ফয়জুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, “ডিবিএলএম এর বর্হিবিভাগে শুধু নীলফামারী জেলা নয় আশপাশ এলাকা থেকেও চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন রোগীরা। কিন্তু দালালের উৎপাতের কারণে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা বিভ্রান্তির মুখে পড়ছেন। আব্দুল জলিল নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতালে নিয়ে রোগীর পকেট খালি করা হচ্ছেন। এতে ডিবিএলএময়ে কম খরচে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।”
মানববন্ধনে অংশ নেয়া মতিবুল ইসলাম তুফান বলেন, “গেল বুধবার সৈয়দপুরের চৌমুহী এলাকা থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা তমিজ উদ্দিনকে ভুল বুঝিয়ে একটি ক্লিনিক হাসপাতালে নিয়ে যান। ডিবিএলএম খোলা থাকলেও তাকে কেন অন্যত্র নেয়া হলো এনিয়ে পরে জলিল ও তমিজ উদ্দিনের মধ্যে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। শুধু তমিজ উদ্দিনই এরকম অনেক উদাহরণ রয়েছে। ডিবিএলএমকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা দালালমুক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র চাই।”
অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল জলিল জানান, “আমি নটখানায় একটি প্রাইভেট চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি। আমার নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আমার নামে যেসব অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে তা মিথ্যে ও ভিত্তিহীন।” এ ব্যাপারে ডিবিএলএম এর সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. পবর রোজারিও জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং বর্হিবিভাগে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
মন্তব্য