যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ‘স্বামীর দেয়া’ আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ হীরা বেগম বুধবার সকালে মারা গেছেন।
গুরুতর দগ্ধ হীরা অভিযোগ করেছিলেন, সামান্য কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে স্বামী তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে বিলের দিকে দৌঁড়ে পালিয়ে যান।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এই পাষণ্ডের বিচার দাবি করছি।’
হীরা উপজেলার চাকই-মরিচা গ্রামের বিল্লাল সরদারের স্ত্রী। অক্টোবরে তাদের বিয়ে হয়।
হীরার ভাই নয়ন সরদার নিউজবাংলাকে জানান, ‘হীরাকে তার স্বামী বিল্লাল ২৬ নভেম্বর ভোরে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। হীরাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেদিনই তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।’
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে বুধবার সকালে হীরার মৃত্যু হয়।
হীরা বেগমের মা উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মজিদা বেগম জানান, ‘বিল্লাল অমানুষের মতো আমার মেয়ে হীরার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
অভয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিলন কুমার মণ্ডল জানান, থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই গৃহবধূর বিল্লালকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে।
নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে মারা যাওয়া সুলতানা জেসমিনের ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকত অবশেষে বাড়ি ফিরেছেন।
শহরের খাস নওগাঁ মহল্লায় সৈকতের নানাবাড়ি এবং জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাড়ির কোথাও তার খোঁজ মিলছিল না। সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত নিখোঁজ থাকার পর রাত ১টার পর বাসায় ফেরেন সৈকত।
নিহত সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু মঙ্গলবার সকালে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সৈকত এই সময়ের মধ্যে কোথায় ছিলেন, কার সঙ্গে ছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। মুখ খোলেননি সৈকত নিজেও।
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ শহরের কালিতলা মহল্লার নওগাঁ পৌরসভা ও চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন। শহরের জনকল্যাণ মহল্লার একটি ভাড়া বাসায় থেকে নিয়মিত অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি।
গত ২২ মার্চ সকালে বাড়ি থেকে অফিসে যাওয়ার পথে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওযোয়ান মাঠের সামনে পৌঁছালে তাকে আটক করে নিয়ে যান র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের প্রায় ২ ঘণ্টা পর দুপুরে জেসমিনকে অসুস্থ অবস্থায় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে র্যাব।
সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। রামেকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে জেসমিনের মৃত্যু হয়।
শনিবার রামেকে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে নওগাঁ সরকারি গোরস্তানে মরদেহটি দ্রুত দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরপরই র্যাবের বিরুদ্ধে জেসমিনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ তোলেন তার স্বজনরা।
রোববার এবং সোমবার বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার শিরোনাম হয়। সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুতে যেই মুহূর্তে তার পরিবারজুড়ে শোকের মাতম চলছে, ঠিক সেই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার ছেলে শাহেদ হোসেন সৈকতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাতের দিকে বাসায় ফেরেন তিনি।
নিহত সুলতানা জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মন্টু বলেন, ‘রোববার রাতে মায়ের শোকে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেশী এক আত্মীয়ের বাড়িতে সৈকত ঘুমিয়েছিল। সোমবার সকাল থেকে তাকে আর দেখিনি। পরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে আমরা চরম দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। ফোনও বন্ধ ছিল। রাত ১টার দিকে বাসায় ফেরে সৈকত। তাকে কোনো চাপ দিতে চাই না আমরা, তাই কই ছিল সেটা জানতে চাইনি।’
সরাসরি দেখা করতে রাজি না হওয়ায় হোয়াইটসঅ্যাপ এ কথা হলে সৈকত বলেন, ‘আমি বাসায় আছি, ঠিক আছি।’
তবে কোথায় ছিলেন, কেন নিখোঁজ ছিলেন, নাকি কোনো ধরনের চাপ আছে এসব প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কিছু বলার মতো মানসিকতা নেই।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘যদি সৈকত বা তার পরিবার কোনো কারণে নিরাপত্তাহীনতায় থাকেন বা কোনো ধরনের আইনি সহায়তার প্রয়োজন হয় তবে, আমরা আইনি সহায়তা দিব। আমাদের লিখিতভাবে জানালে অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে মো. মামুনকে দলবদ্ধভাবে টানা ২ মিনিট পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। ১০ থেকে ১৫ জন মিলে ১০ মিনিটের মতো তাকে টানাহেঁচড়া করে। এক পর্যায়ে টানা ২ মিনিট কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে তাকে হত্যা করা হয়। চিকিৎসকের বক্তব্য, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণই মৃত্যুর মূল কারণ।
রোববার দুপুর ১টার দিকে হাসপাতালের ভেতরে মামুনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মাসুদ রানা অজ্ঞাতদের আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
পুলিশ জানায়, এই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- আশরাফুল, বাদশা ও সুমন। তাদের মধ্যে আশরাফুলকে রোববার এবং বাকি দুজনকে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই শিশু হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
আশরাফুলকে সোমবার আদালতে পাঠিয়ে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড চায়। আদালত তাকে একদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ১০টায় মামুনকে তার স্ত্রী রহিমা বেগম ও মা শাহানারা বেগম শানু শ্যামলীতে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। কিন্তু মাদকাসক্ত কেন্দ্র মামুনকে ভর্তি নেয়নি। পরে মামুন তার স্ত্রী ও মাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন এবং তিনি ওই এলাকায়ই থেকে যান। পরে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের ভেতরে সাইকেল চুরির চেষ্টাকালে মামুনকে দলবদ্ধভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, চোর সাব্যস্ত করে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে দায়িত্বরত আনসার সদস্য এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক ও চালকের সহকারীরা মিলে মামুনকে হত্যা করেছেন।
মাসুদ রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আনসার সদস্য ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেসের চালক ও হেলপাররা চোর বলে ধাওয়া দিয়ে ধরে পিটিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। এই ঘটনায় আনসার সদস্য হীরা ও মাহবুব জড়িত। তারা এখনও হাসপাতালে ডিউটি করছেন।
‘আমার ভাই কোনো অপরাধ করে থাকলে তার বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। একজন মানুষকে এভাবে কেন ওরা পিটিয়ে মারবে? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
মামলার এজাহারে আনসার সদস্যদের নাম উল্লেখ করেননি কেন- এমন প্রশ্নে মাসুদ বলেন, ‘আমাকে থানা থেকে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় যে এখানে স্বাক্ষর করেন। আমি কিছু না বুঝেই স্বাক্ষর করেছি। আমি তো এতো কিছু বুঝি না।’
তবে আনসার সদস্য হীরা ও মাহবুব এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের আনসার সদস্যদের প্রধান প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) সুজন চক্রবর্তী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় মাহবুব ঘুমাচ্ছিলেন। তখন তার ডিউটি ছিল না। আর হীরা ছিলেন টহল ডিউটিতে। তারা কেউই ঘটনাস্থলে ছিলেন না।’
আনসারের তদন্ত কমিটি
মামুনকে পিটিয়ে মারার ঘটনাস্থলের ছিলেন আনসার সদস্যরা। তারা মামুনকে কেন তাদের হেফাজতে নেননি? এটা তাদের দায়িত্বে অবহেলা কীনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর আনসারের উত্তর জোন কমান্ডার মো. আম্বার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করতে পারব না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।
‘আনসার সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল কীনা বা তারা কে কোথায় ছিলেন এটা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।’
সুরতহাল প্রতিবেদন ও চিকিৎসকের তথ্যে গরমিল
মামুনের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন শেরেবাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক এস এম আল-মামুন। তিনি মামুনের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, ‘সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করার সময় উপস্থিত লোকজন ও মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি যে, অজ্ঞাতনামা লোকজন ভিকটিমকে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেয়। যার ফলে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। আমিও তাদের সঙ্গে একমত।’
সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মামুনের মাথায় কোনো ফোলা চিহ্ন নেই, মাথা স্বাভাবিক।
তবে ময়নাতদন্ত করা চিকিৎসক জানিয়েছেন, মামুনের মাথার পেছনের অংশ ফোলা ছিল। এছাড়া শরীরের বাকি অংশ অনেকটাই স্বাভাবিক।
সুরতহাল প্রতিবেদনে এই ভুল তথ্য দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিদর্শক এস এম আল-মামুন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি সুরতহাল প্রতিবেদন কোথায় পেলেন? ভাই, থানায় আসেন; আপনার সঙ্গে কথা বলি।’
আপনি কি মামুনের মাথার পেছনে ফোলা দেখতে পাননি নাকি ইচ্ছে করে লিখেননি- এমন প্রশ্ন করার পর তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মৃত্যু
মামুনের ময়নাতদন্ত করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক কে এম মঈন উদ্দিন।
মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মামুনের ময়নাতদন্ত করে দেখলাম তার মাথায় প্রচুর আঘাত। মাথায় আঘাতের কারণে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এই রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে শক্ত কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাইনি। সম্ভবত হাত দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
‘মামুনের মাথার পেছনের অংশ ফোলা ছিল। তবে মাথা থেতলানো বা ক্ষতচিহ্ন নেই। মামুনের সারা শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। হার্টও স্বাভাবিক ছিল।’
যেভাবে হত্যা
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ জন মামুনকে হাসপাতালের বাইরে থেকে ধরে গেটের ভেতরে আনে। সব মিলিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো ঘটনাটি ঘটে। তারা প্রথমে মামুনকে ধরে এনে টানাহেঁচড়া শুরু করে। এরপর ২ মিনিটের মধ্যে দলবদ্ধভাবে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে মামুনকে হত্যা করে।’
তবে ভিডিও ফুটেজে আসনার সদস্যদের মারতে দেখা যায়নি বলে দাবি করেন তিনি।
মামলার সবশেষ অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দ্রুতই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’
পুলিশ নিজেই এজাহারের বক্তব্য লিখে দিয়ে তাতে স্বাক্ষর নিয়েছে এবং নিহতের ভাই কিছু না বুঝেই তাতে স্বাক্ষর করেছেন- বাদীর এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘সব কিছু জেনেশুনেই মামুনের পরিবার মামলা করেছে। এখন তারা যদি এমন অভিযোগ করে থাকে সেটা তাদের বিষয়।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে গত ৭ মার্চ ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানি হলো।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মৃত্যু হয় দগ্ধ মোহাম্মদ হাসানের (৩২), যিনি নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
হাসানের ভাই রাহাতুল জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর গ্রামে। তার ভাই
হাসান ফেরি করে স্কুল ব্যাগ ও ভ্যানিটি ব্যাগ বিক্রি করতেন। ঘটনার দিন ফুটপাত দিয়ে গুলিস্তানের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন এস এম আইয়ুব হোসেন জানান, সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় হাসান নামে একজনের মৃত্যু হয় আইসিইউতে। তার শরীরের ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচজন চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন:বাংলা বর্ণমালা থেকে সাতটি বর্ণ বাদ দেয়ার গুজব রটনাকারীকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পিএইচডিধারী এই ব্যক্তিকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের নাম দিয়ে একটি ম্যাসেজের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাংলা একাডেমি থেকে জানানো হয়, এমন কোনো ম্যাসেজ তাদের বা সেলিনা হোসেনের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়নি।
‘এমন ঘটনায় আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করি। প্রাথমিক তদন্তে অপপ্রচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।’
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোমাধ্যম ফেসবুকে একটি মেসেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। ওই স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে, ‘প্রিয় সুধী, আগামী ২০২৪ সালে বাংলা স্বরবর্ণ থেকে ঈ, ঊ, ঋ এবং বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণ থেকে ঞ, ণ, ঢ়, ৎ বাদ দেয়া হবে।’
মেসেজের নিচে প্রেরক হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘সেলিনা হোসেন। সভাপতি। বাংলা একাডেমি।’
ওই পোস্টটি দেয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বর থেকে আসা মেসেজের ওপর ভিত্তি করে। তবে যে নম্বর থেকে মেসেজটি এসেছে, সে নম্বরে একাধিকবার ফোন কল করলেও কেউ ধরেননি।
১৫ মার্চ বিষয়টি গুজব বলে জানান বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি এমন কিছু জানি না। এমন কোনো সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি নেয়নি। এটি গুজব।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আনসারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বর্ণ বাদ দেয়ার সুযোগ বাংলা একাডেমির নেই। আসলে বাংলা একাডেমি তো কোনো বর্ণ বাদ দেয়ার বা সংযুক্ত করার কর্তৃপক্ষও না।’
বাংলা ভাষায় স্বরবর্ণ সবমিলিয়ে ১১টি। ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ৩৯। এর আগে ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে বহুদিন ধরে প্রচলিত ‘ঈদ’ শব্দের বানান পরিবর্তন করে ‘ইদ’ লিখে আলোচিত হয়।
আরও পড়ুন:দুই ছাত্রীর মাকে অপদস্ত করার অভিযোগ ওঠার পর বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাকে বদলি করে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বদলি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বগুড়ার অতিরিক্তি জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়াকে কেন্দ্র করে বিচারকের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে সহপাঠীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, “এই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে বগুড়ার জজ আদালতের এক বিচারকের মেয়ে। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকে। সোমবার ওই বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়ার কথা ছিল। তবে নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
“ওই রাতেই বিচারকের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মাধ্যমে মেসেঞ্জারে তার সহপাঠীদের বস্তির মেয়ে উল্লেখ করে পোস্ট দেয়। সে পোস্টে উল্লেখ করে, ‘তোরা বস্তির মেয়ে। আমার মা জজ। তোদের মায়েদের বল আমার মায়ের মতো জজ হতে।’
“ওই পোস্টে বিচারকের মেয়ের চার সহপাঠী পাল্টা উত্তর দেয়। এ নিয়ে ওই বিচারক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকের ডাকে ওই ৪ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। সে সময় ওই বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জেলে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় দুই অভিভাবককে ওই বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।”
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষিকা বলেন, ‘বিচারকের মেয়ে ও কিছু শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে বিচার বসানো হয়। এ সময় বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জেলে দেয়ার হুমকি দিলে দুইজন অভিভাবক নিজে থেকেই পা ধরে ক্ষমা চান। তাদেরকে কেউ বাধ্য করেনি বা পা ধরতে বলেনি।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানদের সঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীদের সন্তানদের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব কাজ করে।
‘যতটুকু জেনেছি সোমবার বিচারকের মেয়ের ঝাড়ু দেয়ার কথা ছিল। তবে সে তিন মাস আগেই স্কুলে আসায় এই পরিবেশ হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি। এজন্য সে ঝাড়ু দিতে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে কাজটি সম্পন্ন করে। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে ক্রিটিসাইজ করে। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।’
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়। তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। কিন্তু অভিভাবকদের মাফ চাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। অভিভাবকেরা ভয় পেয়ে এভাবে মাফ চেয়েছেন। তাদেরকে কেউ বাধ্য করেনি।’
এদিকে অভিভাবকদের লাঞ্ছনা ও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার বিদ্যালয়ে আসেন। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দেন।
একইসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিনকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
আরও পড়ুন:অবশেষে তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এলো মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ। সেখানে বলা হয়েছে, ইমাদ পরিবহনটি মেয়াদোত্তীর্ণ, চালকের মধ্যম যান চলাচলের লাইসেন্স থাকলেও চালিয়েছে ভারী যানবাহন। বৃষ্টিভেজা সড়কে বেপারোয়া গতিতে গাড়ি চালানোই দুর্ঘটনার কারণ।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এসব তথ্য তুলে ধরেন তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব কুমার হাজরা। এ সময় ওই এক্সপ্রেসওয়ে দুঘর্টনা রোধে ১৪টি সুপারিশও তুলে ধরা হয়।
তবে কাগজে-কলমেই তদন্ত প্রতিবেদন না রেখে বাস্তবায়নের দাবি যাত্রী-চালকদের। আর প্রশাসনও দুঘর্টনারোধে কঠোর ভূমিকার আশ্বাস দিচ্ছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরা বলেন, ‘বেপরোয়া গতির কারণে গত বছরের ১৭ নভেম্বর ইমাদ পরিবহনটির রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করেন গোপালগঞ্জ বিআরটিএ অফিস। শুধু তাই নয়, পরিবহনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয় এ বছরের ১৮ জানুয়ারি। তারপরেও সদর্পে চলছিল ইমাদ পরিবহন। এ কারণে গত ১৯ মার্চ সকাল ৮টায় মাদারীপুরের কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে ঘটে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা।
‘এ ছাড়া চালকের পেশাদার লাইসেন্স মধ্যম থাকলেও চালিয়েছেন ভারী যান। অন্যদিকে দুঘর্টনার দিন বৃষ্টিভেজা রাস্তা থাকার কারণে চালকের অসচেতনার কারণে দুঘর্টনা ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে মৃত্যুর মিছিল কমাতে তদন্ত প্রতিবেদনে ১৪টি সুপারিশ দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, চালক ও সংশ্লিষ্ট সকলের লাইসেন্স এবং একটি গাড়ির সকল বৈধ কাগজপত্র নিশ্চিত করে মহাসড়কে গাড়ি চালানো নিশ্চিত করতে হবে, এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী দ্রুতগতিসম্পূর্ণ গাড়ির চালক ও যাত্রীদের সিটবেল্ট পরিধান করতে হবে, গাড়ির ইন্টেরিয়র নরম বস্তু দিয়ে করা, এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে গার্ড রেইল স্থাপন করতে হবে। এই রাস্তায় কমপক্ষে তিন লেন ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এ ছাড়াও মহাসড়কে চলাচলকারী সকল পরিবহনের হালনাগাদ তথ্য সম্বলিত ডেটাবেইজ রাখতে হবে।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্যে লোকবল ও টহল গাড়ি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করতে হবে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ করে রাতে, ভোরে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গাড়ির গতি অপেক্ষাকৃত কম রাখতে হবে। দুঘর্টনা কমাতে সড়ক ও মহাসড়কের সিটি টিভি, ট্র্যাকার, অনলইন মনিটরিং জোরদার করতে হবে।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) পল্লব কুমার হাজরা, কমিটির সদস্য মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মনিরুজ্জামান ফকির, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন।
গত রোববার ভোর ৪টার দিকে খুলনার ফুলতলা থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। পরে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে বাসটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে রওনা হয়। বাসটির চালক সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারায়। এতে বাসটি ছিটকে পড়ে যায়।
এরপর এক্সপ্রেসওয়ের আন্ডারপাসের দেয়ালের সঙ্গে সজোড়ে ধাক্কা লেগে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক জাহিদ হাসান, তার সহকারী ইউসূফসহ ১৭ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসার জন্য ১২ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে বাসটির সুপারভাইজার মিনহাজসহ আরও এক যাত্রীর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে ইমাদ পরিবহন লিমিটেড কোম্পানির মালিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের নামে একটি মামলাটি করেছেন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ নগরীর নিরালা রেস্ট হাউজ নামের আবাসিক হোটেল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা করেছে।
২৩ বছর বয়সী গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম রাকিবুল ইসলাম রাকিব। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন নতুন চরচাষী গ্রামের বাসিন্দা।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. মাছুম আহম্মদ ভূঞা।
তিনি জানান, গত ১৮ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রেস্ট হাউজের এক কর্মী ওই কক্ষটি পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখে বাথরুমে গলাকাটা অবস্থায় এক তরুণীর মরদেহ পড়ে আছে। পরে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্ট হাউজ মালিক মো. মুসাকে আটক করে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে পুলিশ একটি হত্যা মামলা করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা থেকে হত্যাকারী রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে আসামি রাকিব। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি সমাজসেবা কার্যালয়ে আউট সোর্সিংয়ের কাজ করতেন।
গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় ঢাকার আগারগাঁও অফিস থেকে মিরপুর সেহড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে আসার সময় এক যৌনকর্মী তরুণীর সঙ্গে কথা হয় রাকিবের। তখন তিনি ওই তরুণীকে পাঁচ হাজার টাকা দেয়ার শর্তে ময়মনসিংহ নিয়ে এসে নিরালা রেস্ট হাউজে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে থাকেন।
শর্তের টাকা নিয়ে ১৫ মার্চ ওই তরুণীর সঙ্গে রাকিবের ঝগড়া হয়। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে বাইরে থেকে চাকু কিনে এনে তরুণীর গলাকেটে হোটেলের শৌচাগারে ফেলে পালিয়ে যায় রাকিব।
পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা বলেন, ‘সোমবার গ্রেপ্তার রাকিবকে আদালতে তোলা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য