কলেজছাত্রকে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করার অভিযোগটি আদালতে মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। ওই অভিযোগে করা মামলার আসামি ইসরাত জাহান পাখিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহিত দেয়া হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
খালাস পাওয়ার বিষয়ে পাখি নিউজবাংলাকে বলেছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় একের পর এক মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো। অথচ মামলার রায় নিয়ে কোনো প্রতিবেদন না হওয়াটা দুঃখজনক।’
পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল আকন ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর মামলা করেন। জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ওই মামলা করা হয়।
মামলায় বলা হয়, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করার সুবাদে পাখি দীর্ঘদিন ধরে তাকে ফেসবুকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে সাত-আটজন অপরিচিত লোক নাজমুলকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
সেখানে একটি নীল কাগজে তাকে সই করতে বাধ্য করা হয়। পরে তাকে শহরে ছেড়ে দেয়া হয় বলেও উল্লেখ করা হয় মামলায়। সে সময় কোনো না কোনোভাবে এ ঘটনা কেউ ভিডিও করে রাখে। সেই ভিডিও ক্লিপ আদালতে উপস্থাপনও করা হয়।
ভিডিওতে দেখা গেছে, নাজমুল ও পাখি পাশাপাশি দুটি চেয়ারে বসা। পেছনে দাঁড়ানো এক লোক নাজমুলের ঘাড়ের দুই পাশ ধরে আছে। অন্য পাশ থেকে এক ব্যক্তি পাখি ও নাজমুলের মুখে মিষ্টি জাতীয় কিছু তুলে দিচ্ছেন। সেখানে নাজমুলকে চুপচাপ দেখা গেলেও পাখি সরব ছিলেন।
তবে পাখি শুরু থেকে বলে আসছিলেন যে পুরো ঘটনাটি মিথ্যা ও সাজানো। তার দাবি ছিল যে নাজমুল তার স্বামী।
মামলা হওয়ার ১০ দিন পর ১৩ অক্টোবর একই আদালতে নাজমুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন পাখি। সেই মামলায় ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় নাজমুলের সঙ্গে পাখির বিয়ের কাবিনসহ প্রেমঘটিত একাধিক প্রমাণ সংযুক্ত করা হয়।
পুলিশ চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর গত মার্চ মাসে পটুয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান নাজমুলের করা মামলাটি খারিজ করে দেন। এর আগে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য নাজমুলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়।
পাশাপাশি পাখির করা মামলায় তাদের কাবিনের সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকাও পাখিকে দেন নাজমুল।
পাখি নিউজবাংলাকে বলেন, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে মির্জাগঞ্জ উপজেলার একটি ছাত্র সংগঠনের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে নাজমুলের সঙ্গে তার পরিচয়। একই এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাচমেট হওয়ার কারণে প্রস্তাব গ্রহণ করেন তিনি।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকায় চাকরির জন্য আসেন নাজমুল। পাখি তখন ঢাকার সংসদ ভবন এলাকার এসিপিআর নামের একটি রিসার্চ সংগঠনে কর্মরত ছিলেন। তখন নাজমুল আর পাখি স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একই অফিসে চাকরি নেন। একপর্যায়ে নাজমুল সিভি জমা দিলে সেখানে অবিবাহিত লেখা থাকলে কর্মকর্তাদের বলেন যে ‘আমরা সবেমাত্র বিয়ে করেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকতা হবে।’
এ ঘটনার পর সাত দিন নাজমুল পাখির সঙ্গে একত্রে বসবাস করেন।
পাখি বলেন, ‘আমার সঙ্গে সম্পর্কের আগে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আমার সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যেই আরও একটি মেয়ের সঙ্গে নাজমুল নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তোলে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে এসব বিষয় যখন প্রমাণ নিয়ে আমি তার কাছে হাজির হই, তখন সে সব অস্বীকার করে ফোন বন্ধ করে রাখে।
'এর মধ্যে আমরা ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় কাবিনের কাজ শেষ করি। কাবিননামায় নাজমুল নিজে উপস্থিত থেকে আমার সঙ্গে সই করেছে। অথচ ওই ২৭ তারিখের ঘটনা উল্লেখ করে পটুয়াখালী আদালতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে আমার জীবনটাকে সামাজিকভাবে বরবাদ করে দিয়েছে।'
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, ২৭ সেপ্টেম্বর নাজমুল আর আমি যে ঢাকায় অবস্থান করেছি, সেটি মোবাইল ট্রাকিংয়ে স্পষ্ট পেয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এসব কাগজপত্র বিচারক দেখে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।’
নাজমুলের বক্তব্য
ঘটনাটি অনেক পুরোনো, সবাই ভুলে গেছে, তাই এটি নিয়ে নাড়াচাড়া না করার অনুরোধ করেছেন নাজমুল। তিনি বলেন, ‘আমার মামলা আমি তুলে নিয়েছি। এটার সমাধান হয়ে গেছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মামলাটি দীর্ঘ না করে তুলে নিয়েছি। এটি শেষ। সবাই ভুলে গেছে। আমরাও ভুলে গেছি। নতুন করে এটি নিয়ে আপনারা আর কোনো নিউজ কইরেন না।’
আপনি তো একটি মেয়ের বদনাম করলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ভাই অনেক সময় অনেক কিছু দেখে বোঝা যায় না। আবার সব কিছু বোঝানোও যায় না। আমাদের মধ্যে সমাধান হয়ে গেছে। তাই বলছি, এটি নিয়ে আপনারা আর নাড়াচাড়া কইরেন না। তার সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। সে তার মতো, আমি আমার মতো। সব শেষ।’
নাজমুলের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘কিছুদিন মামলাটি চালানোর পর বাদীপক্ষ আর কনটেস্ট করতে চায়নি। যে কারণে মামলাটি আমি ছেড়ে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় এবার এক নারীকে অর্ধনগ্ন করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় অভিযুক্তরা ওই নারীর দ্বিতীয় স্বামীকেও অর্ধনগ্ন করেন। একই সঙ্গে তাদের ঘর থেকে নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিস লুট করে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গত ২৬ জুলাই সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
তবে ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও দরিদ্র পরিবারটি ভয়ে মামলা করেনি। আতঙ্কিত হয়ে বর্তমানে তারা নিজেদের বাড়ি থেকে সরে গিয়ে অনত্র বসবাস করছেন বলে জানিয়েছে পরিবারটি।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি গত ২৬ তারিখের ঘটনা। ধামাচাপার বিষয় নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ঘটনা আমাকে বলেছেন। ওই নারীর স্বভাবচরিত্র জানতে হবে।’
৪১ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ ও তার পরিবারের ভাষ্য মতে অভিযুক্তরা হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের ছোট ভাই ৩২ বছরের আবু বক্কর ছিদ্দিক তানভির, একই ওয়ার্ডের ৩২ বছরের ওমর ফারুক, ৩০ বছরের রাজন ও আজু মিয়ার বাড়ির ২৫ বছরের মো. আলতাফ।
গৃহবধূর ১৮ বছরের মেয়ে অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই দিন রাত ১২টার দিকে পরিবারের সব সদস্য ঘরেই ছিলেন। এ সময় তানভির, ফারুক, রাজন, আলতাফ ও তাদের অনুসারীরা আমাদের ঘরের দরজায় লাথি মারে। দরজা খুলে দিলে তারা ঘরে ঢুকে কামাল আঙ্কেলকে (গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী) বেধড়ক মারধর করে ৮ হাজার টাকা ও ৩টি মোবাইল ছিনিয়ে নেন।
‘এরপর হামলাকারীরা দুই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তারা গোয়ালঘর থেকে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা দামের বাছুরসহ একটি গাভী লুট করে নিয়ে যান। একপর্যায়ে আমাকে ও আমার বোনকে তারা তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। না পেরে তারা আমার মাকে অর্ধনগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে চলে যান। এরপর থেকে ভয় ও আতঙ্কে আমরা ওই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবার সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর মা কামাল আঙ্কেলকে বিয়ে করেন। আমার বাবা বৃদ্ধ হওয়ায় আমরা তাকে ছেড়ে যাইনি। কামাল আঙ্কেল, মা, বাবা, ভাই-বোন আমরা সবাই একসঙ্গে বসবাস করছি। তিন মাস আগে কামাল চাচার সঙ্গে আমার মায়ের বিয়ে হয়, কিন্তু সামাজিকভাবে বিষয়টি কাউকে জানানো হয়নি।’
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পর স্থানীয়রা আমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন, মেরে ফেলার হুমকি দেন। প্রাণে বাঁচতে কামাল, আমার মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ভাড়া বাসায় উঠেছি। ভয়ে আমরা কারও কাছে অভিযোগ করিনি। অভিযোগ করলে তারা আমাদের মেরে ফেলবে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবু বক্কর ছিদ্দিক তানভির বলেন, ‘ওই নারী একই বাড়িতে দুই স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন। এ কারণে স্থানীয়রাসহ আমরা তাদের ধরে বিষয়টি ইউপি সদস্যদের জানাই। ভিডিও ধারণ, টাকা, মোবাইল ও গরু লুটের সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
এ বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ঘটনা শোনার পর পুলিশ সেখানে গিয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার আমাদের বলেছেন, ওই নারীর চরিত্র খারাপ। তিনি দুই স্বামী নিয়ে একই ঘরে বাস করেন।
‘আমরা ওই নারীকে থানায় আসতে বলেছি। তার কাছ থেকে শুনে ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা হয়। সে ভিডিও ৪ অক্টোবর ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে আলোড়ন হয়। এ ঘটনায় আন্দোলনের মুখে সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করে।
বেগমগঞ্জের ওই নারী সে সময় নয়জনের নামে দুটি মামলা করেন। একটি নির্যাতনের মামলা, অন্যটি পর্নোগ্রাফি আইনে করা। পরে ধর্ষণের অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়। ধর্ষণের মামলায় একই আদালত গত ৪ অক্টোবর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
ইউরোপের ছেলেদের ফুটবলের পাশাপাশি গত ৫ বছরে দ্রুত উত্থান ঘটেছে নারী ফুটবলেরও। দর্শকপ্রিয়তায় নারী ফুটবল যে এখন আর পিছিয়ে নেই, সেটার সবশেষ নিদর্শন দেখা গেছে রোববার রাতে নারী ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।
ওয়েম্বলিতে জার্মানির বিপক্ষে ইংল্যান্ডের নারী ইউরোর ফাইনাল দেখতে রেকর্ড ৮৭ হাজার ১৯২ জন দর্শক মাঠে হাজির হন। পুরুষ ও নারী ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের কোনো ম্যাচে দর্শক উপস্থিতির এটা নতুন রেকর্ড।
পাঁচ বছর আগে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দর্শক উপস্থিতি থেকে এই রেকর্ড প্রায় দ্বিগুণ।
এবারের আসরে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ১-০ গোলের জয়ের ম্যাচে ৬৯ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত ছিলেন। সেটাও ছিল রেকর্ড। নারীদের আন্তর্জাতিক ম্যাচে এর আগে সর্বোচ্চ ৪১ হাজার দর্শকের উপস্থিতি ছিল।
পুরুষদের ইউরো চ্যাম্পিনশিপের ফাইনালে সর্বোচ্চসংখ্যক দর্শক উপস্থিতির সংখ্যা ৭৯ হাজার ১১৫। ১৯৬৪ সালের ফাইনালের ওই ম্যাচে স্পেন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন মুখোমুখি হয়েছিল।
এ বছর কোনো ফুটবল ম্যাচে সর্বোচ্চ উপস্থিতির তিনটি রেকর্ডই নারী ফুটবলের। এ বছর নারী চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনা বনাম ভলফসবুর্গের খেলায় ৯১ হাজার ৬৪৮ জন দর্শক উপস্থিত ছিলেন বার্সেলোনার মাঠ কাম্প ন্যুয়ে।
দ্বিতীয় রেকর্ডটিও কাম্প ন্যুয়েই। ৯১ হাজার ৫৫৩ জন দর্শক উপস্থিত হন নারীদের এল ক্লাসিকো ম্যাচ বার্সেলোনা বনাম রিয়াল মাদ্রিদের খেলা দেখতে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চটি ছিল ইউরোর ফাইনালে।
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সাংসদ শিবলী সাদিক ও তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে জমি দখল নিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের করা সংবাদ সম্মেলনকে পরিকল্পিত রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় আদিবাসী নেতারা।
জেলা প্রেস ক্লাবে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে আদিবাসী নেতারা এ দাবি করেন।
এ সময় এমপি শিবলী সাদিকের ‘বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে পাঁচ শতাধিক আদিবাসী মানববন্ধন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন স্থানীয় আদিবাসী নেতা শ্যামল মার্ডি। এ সময় বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চিত্ত রঞ্জন পাহান, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েম সবুজ, এমপি শিবলী সাদিকের ব্যক্তিগত সহকারী শ্রীমন এস সরেন ও আদিবাসী সালেমান মার্ডিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ঘোষণা দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ছয়জন আদিবাসীকে দিয়ে এমপি শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করায়।
এমপি শিবলী সাদিকের পরিবার সম্প্রতি প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদ নির্মাণ করছেন। এ ছাড়া নিজস্ব জায়গায় তার একক প্রচেষ্টায় আফতাবগঞ্জ হাট, দুটি কলেজ, হাইস্কুল, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, পুলিশ ফাঁড়ি, ইউনিয়ন পরিষদ ভবনসহ অনেক অবকাঠামো নির্মাণের চেষ্টায় রয়েছেন। আজ তাদেরকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সমাজে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি অংশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দিনাজপুর-৬ আসন নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট এ চারটি উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপজেলা চারটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান ও তার ছেলে বর্তমান এমপি শিবলী সাদিক ছাড়া কেউ এগিয়ে আসেননি।
এমপি শিবলীর চেষ্টায় চার উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বয়স ও সময়ের তুলনায় অনেক দ্রুত তার সাংগঠনিক দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তা অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এমপি শিবলী সাদিক ও তার দলকে জনগণের কাছে হেয় করতে ও বিএনপি-জামায়াতকে দিনাজপুর-৬ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে একটি মহল ষড়যন্ত্রে মেতেছে।
সেই কুচক্রী মহল নিজেরাই হিন্দু, আদিবাসীদের জমি দখল, কয়লা পাচার, নিয়োগ বাণিজ্যসহ কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যে জড়িত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গত শনিবার ছয়জন আদিবাসী তাদের জমি দখলের অভিযোগ এনে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সেখানে জমির দাগ, খতিয়ান, মৌজা কিছুরই উল্লেখ নেই। কারও জমি নিজ দখলে থাকলে তার কাছে সেই জমির দলিল, পর্চা, খাজনা ও খারিজ থাকবে।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে দলিলের কোনো তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনে ‘স্বপ্নপুরী’র নামে ৭৭ দশমিক ৬১ একর জমি দখলের অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এখন পর্যন্ত স্বপ্নপুরীর মোট জমির পরিমাণ ৫৬ একর।
মিথ্যা ওই সংবাদ সম্মেলনে স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেনকে ভূমিদস্যু হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেলোয়ার হোসেন নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৩৪ বছরে চেয়ারম্যান হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্মেলনে তার যে সমর্থকদের গুণ্ডা বাহিনী আখ্যায়িত করা হয়েছে তারা সকলেই সমাজের প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানিত ব্যক্তি।
সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নেতা শ্যামল মার্ডি বলেন, ‘দেলোয়ার হোসেনের অত্যাচারে শত শত আদিবাসী জনগোষ্ঠী এলাকা ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার যে অভিযোগ তারা করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। আফতাবগঞ্জ এলাকা থেকে একজন আদিবাসীও এলাকাছাড়া নেই বা তারা ভারতে যাননি।’
এর আগে শিবলী সাদিক ও তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৭৭ দশমিক ৬১ একর জমি দখলের অভিযোগ ওঠে।
দখল করা জমিগুলো পিকনিক স্পট ‘স্বপ্নপুরী’র বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কয়েকজন। জমিগুলো ফেরত চাওয়ায় তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে ভারতে চলে যেতে চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
শনিবার দুপুরে দিনাজপুর প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের খালিপপুর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছয় প্রতিনিধি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
তারা হলেন গণেশ হেমরম, উকিল হেমরম, রবেন মার্ডি, লুইস হাসদা অখিল হেমরম, সলেমন মার্ডি ও খুকুমনি হেমরম।
আরও পড়ুন:দেশে এখন ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১১৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৭৮৪ জন এবং নারীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৩৫ জন। সেই হিসাবে, দেশে ভাসমান পুরুষ নারীর চেয়ে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বুধবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমসহ অন্যরা উপস্থিতি ছিলেন।
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভাসমান জনসংখ্যা ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৪৩৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে সর্বনিম্ন ৬৯২ জন।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৫ হাজার ২১৬ জন, বরিশালে ২ হাজার ১৭৭ জন, খুলনায় ১ হাজার ৩২৫ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ৩০৩ জন, রংপুরে ১ হাজার ৭৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ৮৯৩ জন ভাসমান বসবাস।
ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবিএস বলছে, যাদের বসবাসের জন্য ঘর-বাড়ি নেই এবং যারা রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, মাজার, ফুটপাত, সিঁড়ি, ওভার ব্রিজের নিচে, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট, মার্কেটের বারান্দা ইত্যাদি স্থানে অস্থায়ীভাবে থাকেন তারাই এই ক্যাটগরিতে পড়েছেন।
আরও পড়ুন:নারীদের ঋতুস্রাব শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর এটি বন্ধ হয়ে যায়।
ঋতুস্রাব থেমে যাওয়ার এ সময় কিছু লক্ষণের কারণে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এ সময়কালকে বলা হয় মেনোপজ। সাধারণত ৫০ বা তার বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে মেনোপজ শুরু হয়।
মেনোপজের উপসর্গগুলো সবচেয়ে তীব্র হয় যদি হটাৎ করেই বা অল্প সময়ের ব্যবধানে মেনোপজ হয়ে যায়। মেনোপজের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো-
# পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যাওয়া।
# অনেক বেশি ব্লিডিং বা অনেক কম ব্লিডিং হওয়া।
# ভ্যাসোমটর সিম্পটমস, যেমন হটাৎ করেই খুব গরম লাগতে থাকা, অনিদ্রা ইত্যাদি দেখা যায়।
# হরমোনের পরিবর্তন
একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, মেনোপজের কারণে যুক্তরাজ্যে কর্মজীবী নারীদের ১০ জনের মধ্যে একজন কারণে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।
দেশটিতে ৪ হাজারেরও বেশি নারীর ওপর জরিপ করে দেখা যায়, ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সীরা পেরিমেনোপজ বা মেনোপজে সম্মুখীন হন। তাদের মধ্যে ১৪ শতাংশ কাজের সময় কমিয়ে এনেছেন, ১৪ শতাংশ খণ্ডকালীন চাকরিতে চলে গেছেন ৮ শতাংশ পদোন্নতির জন্য আবেদনই করেননি।
ঘুম না হওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, যোনিপথে শুষ্কতা, যৌন জীবনে সমস্যাসহ দৈনন্দিন কাজে প্রভাব পড়ার মতো জটিল সমস্যাও দেখা দেয়। ফলে প্রায়ই মুড সুইং হতে পারে। এই সমস্যাগুলো প্রভাব ফেলে কর্মজীবনেও।
এই গবেষণাটিকে ‘ফসেট সোসাইটি’ সমর্থন করে যা ‘মেনোপজ অ্যান্ড দ্য ওয়ার্কপ্লেস’ নামে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এই প্রতিবেদনগুলো সরকারকে হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (এইচআরটি) ওষুধের ঘাটতি কমানোর ব্যাপারে বার্তা দেয়। ওষুধটি মেনোপজের লক্ষণগুলো কমাতে ব্যবহার করা হয়।
এ ওষুধগুলো অনেকক্ষেত্রেই আত্মহত্যা প্রবণ নারীদের এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব সাজিদ জাভিদ এপ্রিলে ঘোষণা করেন, তিনি স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে এইচআরটি সরবরাহ করবেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্যে এইচআরটি প্রেসক্রিপশনের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে যদিও এর মজুতে ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার তরুণীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
তার বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের এক নারী।
বাদীর অভিযোগ, আসামি তার কিশোরী মেয়েকে বিভিন্ন সময় এদিক-ওদিক নিয়ে যায়। তার মেয়ের সঙ্গে আসামির প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে গ্রামে গুঞ্জন ওঠে। মেয়েকে রক্ষায় তিনি এই মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলা হয়েছিল গত ২১ জুন। তবে আসামি তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বুধবার।
ওসি জানান, ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত) ২০০৩ এর ৭ ও ৩০ ধারায় এই মামলা হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, বাদীর কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ওই তরুণী বিভিন্ন সময় ঘুরতে চলে যেতেন। এ নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন ওঠে যে তারা সমকামী। কিশোরীর মা এরপর থেকে মেয়েকে ওই তরুণীর সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেন। তবে মেয়ে তা অমান্য করে গত ২০ জুন ওই তরুণীর সঙ্গে ফের বের হয়ে যায়। সে ফিরে না আসায় ২১ জুন তার মা গিয়ে তরুণীর নামে অপহরণের মামলা করেন। সেদিনই অবশ্য কিশোরী বাড়ি ফিরে আসে।
ওসি আরও জানান, অভিযোগ তদন্তের পর বুধবার ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, ওই কিশোরী ও তরুণীকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (২য়) বিচারক তরিকুল ইসলামের আদালতে তোলা হয় বুধবার বিকেলে। দুজনই আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন।
পিপি আরও জানান, জবানবন্দি রেকর্ড শেষে কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় ও তাকে মা-বাবার হেফাজতে থাকার অনুমতি দেয়া হয়। আর আসামি তরুণীকে পাঠানো হয় কারাগারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য