ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাজারে কচুর লতি বিক্রি করে ভাইরাল অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্সের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছে একটি পক্ষ। এ অধ্যাপক বলছেন, কৃষি খামার করার কারণেই তিনি প্রতিপক্ষের অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন।
গত শুক্রবার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বাবুলের বাজারে কচুর লতি বিক্রি করতে নিজেই বসেছিলেন প্রিন্স। এক ব্যক্তি সেখানকার কয়েকটি ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে সেটি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে যেতে থাকে। এতে সব মহলের প্রশংসায় ভাসেন তিনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
এরই মধ্যে ওই ইউনিয়ন থেকে নিউজবাংলার প্রধান কার্যালয়ে অধ্যাপক প্রিন্সের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ আনে একটি পক্ষ। গড়ে তোলা কৃষি খামারে গারো সম্প্রদায়ের অনেকের জমি ওই অধ্যাপক তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে দখল করেছেন বলে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে খোঁজখবর করে নিউজবাংলা। মঙ্গলবার দিনব্যাপী অনুসন্ধানে কথা বলা হয় জমি বিক্রেতাদের সঙ্গে।
জমি বিক্রেতাদের একজন হরেং সাংমা। তিনি একসময় ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিলেন। জমি দখল করে নেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ লোকমুখে জানতে পারি আমাদের ইউনিয়নের জামাই অধ্যাপক প্রিন্স কৃষি খামার করতে জমি খুঁজছেন। তখন আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার কাছে জমি বিক্রি করতে আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি নগদ টাকা দিয়ে জমি কেনেন। তিনি জমি দখল করেননি।’
স্বপন মারাক নামে আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে আট একর জায়গায় এত বড় বাগান কেউ গড়ে তুলতে পারেনি। প্রিন্স বাগান করতে চাইলে আমি ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মোট ৫ একর জায়গা তার কাছে বিক্রি করেছি। জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ প্রিন্সের শ্বশুরের প্রতিপক্ষরাই ছড়িয়ে দিচ্ছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, তারাও এমন অভিযোগ শুনেছেন যে অধ্যাপক প্রিন্সের গড়ে তোলা লটকন বাগানের জমিগুলো তার না। নূরুল ইসলাম নামে একজনের জমি দখলে নিয়েছেন তিনি।
নূরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আট কাঠা জমি হরেং সাংমার কাছ থেকে কিনেছিলাম। কয়েক বছর আগে আর্থিক সমস্যায় পড়ে প্রিন্সের কাছে দুই কাঠা জমি বিক্রি করি। তিনি নগদ টাকাও দিয়েছেন। আসলে তাদের অনেক শত্রু রয়েছে। তারা বেনামে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে দিচ্ছেন।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ২০০৬ সাল থেকে জমি কিনতে শুরু করি। ২০১৪ সালে কৃষি খামারের কার্যক্রম শুরুর সময় আমি অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। বাগানের ভেতর থাকার জন্য টিনের ঘর করেছি। তখন টিনের চালে প্রতিদিন ইটপাটকেল ছোড়া হতো। কিন্তু আমি ঘাবড়ে যাইনি। এগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়েছে। আমার স্ত্রী-সন্তান ঢাকায় থাকে। এ জন্য আমাকে নারী কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িয়ে দিতে গোপনে চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমি সব সময় সচেতন থাকার কারণে সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।’
ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্সের শ্বশুর শহীদুজ্জামান আকন্দ হবি এ উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নে বাবুগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
অধ্যাপক প্রিন্স বলেন, ‘আমার শ্বশুর মারা গেলেও সব শত্রুরা মারা যায়নি। শ্বশুরের একমাত্র ছেলে ঢাকায় থাকেন। এদিকে আমি একা এখানে এত বড় বাগান করি, এটি প্রতিপক্ষের সইছে না। এ জন্যই আমাকে হয়রানি করতে চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তারা পারবে না। কারণ, জমির সব দলিল আমার কাছে রয়েছে।’
প্রিন্স বলেন, তিনি তার প্রতিপক্ষের নাম বলবেন না। তবে, তারা তাকে সরিয়ে দিতে চায়, কেননা তাতে বনের জমিসহ গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের জমি দখলে নিতে পারবে।
বরিশালের ঝালকাঠির রাজাপুরে প্রিন্সের দাদার বাড়ি। তবে বাবার চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতেন প্রিন্স। ২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন তিনি। এরপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি ব্যবসায় এমবিএ করেন ২০০৮ সালে। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ও ২০১৮ সালে পিএইচডি করেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষিকাজের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ প্রিন্সের। এ জন্য ঢাকায় নাগরিক জীবন ছেড়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙামাটিয়া ইউনিয়নের হাতিলেইট গ্রামে তার শ্বশুরের এলাকায় আট একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। নাম দিয়েছেন ‘কিষাণ সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরের ছয় মাস ছুটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য চাষ করছেন তিনি এখানে।
খামারে আছে তিন প্রজাতির ড্রাগন ফলের ৫ হাজার গাছ। এ ছাড়া মাহালিশা, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, বাউ-৪, কাঁচামিঠা, তাইওয়া গ্রিন, কাটিমন, পালমার, মল্লিকাসহ ১০ প্রজাতির আমগাছ। চায়না থ্রি, মঙ্গল বারিসহ তিন প্রজাতির লিচু ছাড়াও মিসরীয় শরিফা, স্ট্রবেরি, চেরি, থাই পেয়ারা, আম, লেবু, জাম্বুরা, লটকন, মাল্টা, সফেদা, আতাফল, কতবেল, আমলকী, ডেউয়া, ডুমুর, কাঠবাদাম, জামরুল, থাই জাম্বুরা, লটকন, মাল্টা ও কলাসহ বিভিন্ন ফলের গাছ সারিবদ্ধভাবে লাগানো রয়েছে।
বাগানের ভেতরে ৫০ শতাংশ আয়তনের একটি পুকুরে তিনি চাষ করছেন দেশি প্রজাতির মাছ। পুকুরপাড়ে রাজহাঁস আর চীনা হাঁসের ছোট্ট একটি খামারও রয়েছে। পুকুরপাড়ে একটি শেডে কিছু গবাদিপশুও লালন-পালন করছেন তিনি। এর পাশেই করেছেন ধানের ক্ষেত।
এ কৃষি খামারে উৎপাদিত বিষমুক্ত খাদ্যপণ্য বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। এ কাজে সহায়তা করেন কয়েকজন শ্রমিক। এর মধ্যে শ্রমিক সংকট দেখা দিলে স্থানীয় বাজারে নিজেই পণ্য নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন তিনি৷
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য