ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার জমিতে, এ নিয়ে ব্যাপকভাবে চালু একটি প্রচার হচ্ছে, নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ দান করেছেন এই জমি। তবে এর ঐতিহাসিক কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নবাব পরিবারের জমি দান নিয়ে দুটি মত প্রচলিত আছে। প্রথমটি হলো, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর ৬০০ একর জমির ওপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় মতটি উল্টো। সেটি হলো, দান করার মতো জমি নওয়াব পরিবারের ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তার অধিকাংশই সরকারি খাসজমি।
তবে তথ্য বলছে, ১৯২১ সালে দেশের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্মের ছয় বছর আগে ১৯১৫ সালে মারা যান সলিমুল্লাহ। আর তার মৃত্যুর আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
তবে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আলোচনার সময় নওয়াব সলিমুল্লাহর ভূমিকার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মেলে।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ঘোষণার পর যখন পরিকল্পনা রদ করা হয়, তখন ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ।
তবে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যদিও এর তিন বছর পর ১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশন ইতিবাচক মত দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইনসভা পাস করে ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং ১৩) ১৯২০।’
এটিই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইনি ভিত্তি। আর ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
এবার ১০০ বছর পূর্তিতেও আবার সেই পুরোনো আলোচনা উঠে এসেছে যে, নওয়াব সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দিয়েছিলেন কি না।
এই মতটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক যে ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ আছে, তাতেও খুব জোরালোভাবে তুলে ধরছেন কেউ কেউ। বলা হয়, ‘কলকাতা কমিশন রিপোর্টে’ নাকি সলিমুল্লাহর জমি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে।
তবে এই কমিশনের রিপোর্ট পুরোটা পড়েও এই তথ্যের কিছুই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান খান।
‘এটা শুধুই গল্প’
সিদ্দিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলা হয়ে থাকে, নবাব সলিমুল্লাহ ৬০০ একর জমি দিয়েছেন। আমি নিজেই এটা নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি৷ কেউ কেউ বলেছে, কলকাতা কমিশন রিপোর্টের মধ্যে এটি উল্লেখ আছে। আমি সেই রিপোর্টটিও আদ্যোপান্ত দেখেছি। কোথাও এ ধরনের কোনো তথ্য নেই।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠা হয়, তখন সলিমুল্লাহ বেঁচেই ছিলেন না। জমি দান করার বিষয়টা একটা গল্প।’
তিনি জানান, ১৯০৫ সালে পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশ যখন হয়, সে সময় এখন যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত যে জায়গাগুলো আছে, এগুলো সরকার আগেই অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল।
‘সাধারণত অধিগ্রহণ করলে যাদের জমি তাদের টাকাপয়সা দিতে হয়। সেভাবেই সরকার এই জায়গাগুলো দখল করে নিয়েছিল। তাই যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এ জায়গাগুলো সলিমুল্লাদের ছিল না৷ ফলে ৬০০ একর জমি দেয়া এটি একটি গল্প’- বলেন ইসলামের ইতিহাসের এই অধ্যাপক।
সলিমুল্লাহকে নিয়ে চলা প্রচার খতিয়ে দেখতে কাজ করা এই অধ্যাপক বলেন, ‘এ ধরনের মিথ বা গল্প তৈরি করে সলিমুল্লাহকে বড় করতে হবে না। এটা ছাড়াও সলিমুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক ভূমিকা রেখেছেন৷’
কী ভূমিকা, তার ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘লর্ড হার্ডিঞ্জ বা সরকারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজি করানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রয়াসটা ওনারই ছিল৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রারম্ভিক পর্যায়ে নাথান কমিশন গঠন এবং যত দিন তিনি জীবিত ছিলেন এটিকে এক্সপাডাইস করা এটিই হলো ওনার বড় কন্ট্রিবিউশন। এটিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই৷ ওনার নামে হলের যে নামকরণ, প্রারম্ভিক পর্যায়ের তার অবদানকে বিবেচনা করেই এটি করা হয়েছে।’
একই বিভাগের অন্য অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘নবাব সলিমুল্লাহ সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি দেননি। তিনি পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য জমিগুলো দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সরকার দলিল ছাড়াই এ জমিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়। তবে স্বাধীনতার অনেক পরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কাছ থেকে কিছু জায়গার দলিল নিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো তথ্যই নেই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পার হলেও কাদের জমির ওপর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত, সেটি নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কোনো তথ্য নেই কোনো বিভাগে। যদিও শিক্ষার্থীদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে আছে নানা মত।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানও কিছু বলতে পারেননি। নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মত থাকবে। ভালো করে গবেষণা করে এটি বের করতে হবে।’
তবে এই গবেষণার উদ্যোগ কেউ নেবে কি না, এই বিষয়টি কেউ বলতে পারেননি।
সরদার ফজলুল করিম ও অধ্যাপক রাজ্জাকের কথোপকথন
সরদার ফজলুল করিম রচিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ: অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক-এর আলাপচারিতা ও অন্যান্য’ শীর্ষক বইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির মালিকানা নিয়েও আলাপচারিতা আছে।
সরদার ফজলুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সলিমুল্লাহ হল নিয়ে জানতে চান জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে।
প্রশ্ন করা হয়, ‘স্যার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলমান ছাত্রদের প্রথম ছাত্রাবাসের নাম যে সলিমুল্লাহ হল রাখা হলো, এর কারণ কী? এতে নওয়াব পরিবারের কি কোনো আর্থিক কন্ট্রিবিউশন ছিল?’
উত্তরে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আদৌ কোনো কন্ট্রিবিউশন ছিল না। আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী লেখাপড়ায় ব্রিলিয়ান্ট ছিল। তারা আহসান মঞ্জিলের টাকায় লেখাপড়া করেছে। তারা সলিমুল্লাহর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করত। ঢাকা ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার প্রায় ১০ বছর পরে তার একটা মৃত্যুবার্ষিকীতে তার নামে একটা ছাত্রাবাস করার প্রস্তাব তারা করেন।’
এই বইয়ে উল্লেখ আছে, “আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কোনো মুসলমান ধনীর কাছ থেকেই ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডাইরেক্টলি কোনো ফাইন্যান্সিয়াল কন্ট্রিবিউশন পায় নাই’।”
‘সলিমুল্লাহ হল যে তৈরি হলো তা পুরোই সরকারের টাকায়। নওয়াব পরিবারের টাকায় নয়; জায়গাতেও নয়। রমনায় যে জায়গায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি, তা পুরোটাই খাসমহল এবং সরকারের জমি। সেটেলমেন্ট রিপোর্টে তাই আছে।’
ঢাকার নওয়াবদের ভূসম্পত্তির উৎস কী?- এমন প্রশ্নে আব্দুর রাজ্জাক বলন, ‘ঢাকার নওয়াবদের জমিজমা এসেছে প্রধানত একটি সূত্রে থেকে। ঢাকার স্থানীয় মুসলমানরা কোনো কোনো সম্পত্তি নওয়াব আবদুল গণি ও আহসানউল্লাহকে ওয়াক্ফ করে দিয়ে যেত। ঢাকার নবাবদের জমির উৎস এই।
‘তা-ও বেশ কিছু জায়গাজমি নয়। এটার ভেরিফিকেশন তো সোজা। ইন্টারেস্টেড যে কেউ ঢাকা কালেক্টরেটে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। কাজেই নবাব পরিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি দেবে, এমন জমি কোথায় ছিল? আহসান মঞ্জিলের কোনো জমি ছিল না।’
ভিন্ন মত, তবে তথ্য সুনির্দিষ্ট নয়
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মনে করেন, সলিমুল্লাহ জমি দান করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল যে ক্যাম্পাস, সেটা ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এ জমিকে সুরক্ষা দিতে পারেনি। কাঁটাবনে যে মসজিদটি আছে, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা৷ এটি জবরদখল করা জায়গা৷
‘জবরদখল জায়গা হওয়ার জন্যই এখানে কোনো জুমার নামাজ হতে পারে না। এলিফ্যান্ট রোডের দোকানদাররা ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়বে বলে একটা বেড়ার ঘর বানিয়ে নামাজ পড়েছিল৷ তারপর এটিকে জামায়াতে ইসলামী দখল করে মিশন মসজিদ বানিয়ে ফেলেছে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাহস হয়নি ওদের উৎখাত করার৷
‘বেইলি রোড, মিন্টো রোড, এখন যেখানে মন্ত্রী-সচিবরা থাকেন, এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িগুলো ছিল। ’৪৭-এ এগুলোও বেহাত হয়ে যায়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কখনো সাহস হয়নি এগুলো দখল করার।’
তবে সলিমুল্লাহর জমি দানের তথ্যটি কোথায় পেয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি এই অধ্যাপক।
আর জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাসের যে অনুসন্ধান, সে বিষয়ে প্রশ্ন করার আগেই ‘ধন্যবাদ’ বলে ফোন রাখেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার এই কার্যালয়গুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
প্রশাসনিক ভবনে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান, উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের দপ্তরে তালা লাগানো আছে।
দপ্তর থেকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার সকাল থেকে দপ্তরে আসেননি।
এই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। সে সময় শেষ হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে দাবি বাস্তবায়নের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী তিন দপ্তরে তালা দিয়েছি।’
শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবি হলো- গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য কার্যালয়ে উপাচার্যের উপস্থিতিতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও কিছু অছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলায় নেতৃত্ব দানকারী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সাময়িক বহিষ্কারপূর্বক সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার ও জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শান্তি নিশ্চিতকরণ এবং হামলায় মদদ দানকারী প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, ঢাকাস্থ গেস্ট হাউজ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পদে পদোন্নতির জন্য আবেদনকৃত শিক্ষকদের অবিলম্বে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মোতাবেক বিভিন্ন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান ও অনুষদসমূহে ডিন নিয়োগ এবং ইতোমধ্যে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে যেসকল বিভাগে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের প্রত্যাহার করা, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত অবৈধ শর্ত আরোপ করে জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্ণ করার মাধ্যমে যে সীমাহীন বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে দ্রুততম সময়ে সেসবের নিষ্পত্তিকরণ, ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা রহিত করে পূর্বের নীতিমালা বহাল রাখা এবং ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করা।
ওই সাত দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্য শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্প্রতি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের পারিবারকে হয়রানি ও অসম্মানজনক আচরণের অভিযোগ উঠেছে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন, তার স্বামী ও সন্তানকে হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম আব্দুস সালাম ওরফে সেলিম।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, প্রক্টর, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের প্রতিও অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১৪ এপ্রিল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ছেলে সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তার স্বামী। এ সময় মেইন গেট অতিক্রমকালে উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তাদেরকে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে চরমভাবে অপমান করেন। স্বামীর সামনে তাকেও অপমানজনক কথাবার্তা বলেন সালাম।
সহযোগী অধ্যাপক জয়শ্রী সেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সম্মানার্থে আমি এতদিন ধৈর্য ধরে ছিলাম। ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর একটা বিচার করবে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় তারা বিষয়টি নিয়ে কোন সম্মানজনক সমাধানের ব্যবস্থা করে নাই। এটা শিক্ষক সমাজের জন্য অপমান ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
তিনি বলেন, ওইদিন আমার স্বামী সন্তানকে নিয়ে তার মায়ের বাসায় যাচ্ছিলেন। এ সময় মেইন গেটে নিরাপত্তা কর্মকর্তা তাকে থামিয়ে অকারণে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে প্রক্টরের কাছে মৌখিকভাবে জানালেও কোনো সম্মানজনক সমাধান পাইনি।
অভিযুক্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা সালাম বলেন, প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের সাথে কথা বললে আসল সত্য সামনে আসবে। ইদের পর বহিরাগতদের চাপে মেইনগেটে অনেক ভিড় থাকে। ম্যামের স্বামী বাইক নিয়ে ঢোকা বা বের হওয়ার সময় বাইকের হর্ন বাজিয়ে মেইনর গেটে উপস্থিত দারোয়ানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে মেইনগেট খুলে দিতে বলেন। ছোট গেট দিয়েও তিনি বাইক নিয়ে যেতে পারতেন। তার স্বামীর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করিনি। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। বিষয়টা সঠিক তদন্ত করা হোক।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সাথে কথা বলা হচ্ছে। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব করে যাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, অভিযোগপত্রটি হাতে পেয়েছি। শিক্ষকের বিষয় যেহেতু সেনসিটিভ। অভিযোগটি শিগগিরই উপাচার্যের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং তিনিই যা ব্যবস্থা নেয়ার নেবেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের হাউস টিউটরের পদ ছাড়লে আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মু. আলী মুর্শেদ কাজেম।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠান।
পদত্যাগপত্রে মুর্শেদ কাজেম উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে সৃষ্ট অচলাবস্থার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা, পদোন্নতিতে অযাচিত শর্তারোপ ও জৈষ্ঠতা লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সম্মানিত সাধারণ শিক্ষকদের উত্থাপিত সব ন্যায্য দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করে বর্তমানে উক্ত পদে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করছি।
এ ছাড়া বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে এরই মধ্যে প্রায় ১৩ জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। এবার নতুন করে পদত্যাগ করছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরাও।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মের ছুটি পিছিয়ে ঈদুল আজহার সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের কনফারেন্স কক্ষে বুধবার দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রণব কুমার পান্ডে।
জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্মাবকাশ ৫ থেকে ৯ মে এবং ১৬ থেকে ২৪ জুন ঈদ-উল-আযহার ছুটি পূর্বনির্ধারিত ছিল, কিন্তু চলমান তাপদাহের কারণে পানি সংকটের আশঙ্কা এবং শিক্ষার্থীদের এতদসংক্রান্ত নানাবিধ অসুবিধার কথা বিবেচনা করে ছুটিসমূহ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুনর্বিন্যস্ত ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ ৯ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত এবং অফিসসমূহ ৯ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ৩০ জুন থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত ২ মে ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। একইসঙ্গে বিভাগসমূহ প্রয়োজনবোধে ৬ জুন পর্যন্ত অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে বলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডি থেকে আরও এক সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগকারী শিক্ষক হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানো এক পদত্যাগপত্র থেকে বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়।
পদত্যাগপত্রে আনিছুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাস কমিটির সদস্য আবু ওবায়দা রাহিদ অনুমতি ছাড়াই আমাদের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নির্মিতব্য সংরক্ষিত কক্ষে অবৈধভাবে প্রবেশ করে আসন বিন্যাস পরিকল্পনা করেন এবং তা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঠিয়ে দেন। অনুমতি ছাড়া ল্যাবে প্রবেশ ও আসন পরিকল্পনা করার কথা জানতে চাইলে তিনি আমার সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করেন।
‘পরবর্তী সময়ে ঈদ ছুটি শেষে অনুমতি নেয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তিনি ক্যাম্পাসে গোল চত্বরে শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে বিভিন্নভাবে অপমানসূচক কথাবার্তা বলতে থাকেন। বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলে স্লেজিং করতে থাকেন। ওই সময় উপস্থিত তিন শিক্ষক তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তিনি আমার দিকে বারবার তেড়ে আসতে থাকেন।’
পদত্যাগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘পরবর্তী সময়ে সমঝোতা বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও একজন অধ্যাপকের সামনে তিনি আমাকে মারতে উদ্যত হন এবং আমার পরিবার নিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন, কিন্তু ঘটনার তিন দিন পার হয়ে গেলেও ওই সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, ‘একজন সহকারী প্রক্টর নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে আমাকে অপদস্থ করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। তাই আমি এ দায়িত্ব পালনে বিব্রতবোধ করছি। পাশাপাশি আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচারের দাবি জানিয়ে আমি সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।’
এর আগে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল হোসেন মজুমদার, ০৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মাহবুবুল হক ভুঁইয়া, ১৮ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সহকারী প্রক্টর কামরুল হাসান ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক কুলছুম আক্তার স্বপ্না পদত্যাগ করেন।
এ ছাড়াও ১৯ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় ‘অ্যাজেন্ডা বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে ডিন নিয়োগ’ দেয়ার কারণ দেখিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যের পদ থেকে অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান পদত্যাগ করেন। সবশেষ ২০ মার্চ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অর্ণব বিশ্বাস, ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয় চন্দ্র রাজবংশীসহ মোট চার হলের চারজন হাউজ টিউটর পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ প্যানেলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলরদের ভোটে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সিরাজগঞ্জের রাশিদাজ্জোহা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. খাদেমুল ইসলাম।
ড. খাদেমুল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (১৯৯২) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ১৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে পদার্থবিদ্যার প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান।
খাদেমুল চাকরিতে থাকা অবস্থায় প্রেষণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Plasma Physics-এ Ph.D. (২০০৫) ডিগ্রি অর্জন করেন। তা ছাড়া তিনি অস্ট্রেলিয়ার University of Melbourne থেকে Learners’ Assesment System-এর ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ নেন, যা বাংলাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষায় সংস্কার বিষয়ে অবদান রাখতে সহায়তা করে।
পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যলয় থেকে এম.এড. (২০১৭) এবং মালয়শিয়ার University of Nottingham থেকে Master of Education (প্রথম পর্ব) শেষ করেন। তিনি ২০১৭ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান।
ড. খাদেমুল দেশে ও বিদেশে পদার্থবিজ্ঞানের অনেক সম্মেলনে অংশ নিয়ে সেখানে বিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক জার্নালে তার উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছে।
খাদেমুল প্রায় পাঁচ বছর ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটে ‘পরীক্ষা মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ’ এবং জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) ১০ বছর ‘প্রশিক্ষণ বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি আমেরিকার University of Alabama ও নিউ ইয়র্কে University of Fordham থেকে Secondary School Mangement বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
তিনি শিক্ষাক্রম, শিক্ষার্থী মূল্যায়ন ও দক্ষতাভিত্তিক প্রশ্ন প্রণয়ন বিষয়ে সারা দেশে Resource Person হিসেবে কাজ করেন। ড. খাদেমুল পদার্থবিজ্ঞানের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শাখা Plasma Physics-এ জোহান্সবার্গের University of the Witwatersrand থেকে Post-Doctoral গবেষণা (২০০৮) সম্পন্ন করেন। এর অব্যবহিত পূর্বে তিনি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় গাজীপুর জেলার বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অধ্যক্ষ হিসেবে (২০২০-২০২১) দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ঢাকার ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হন ২০২১ সালে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে গোসলে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে আহ্বায়ক এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মুহিতকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. সোহাদ হকের এ মৃত্যুকে অপমৃত্যু দাবি করে এর কারণ চিহ্নিত করে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য কমিটিকে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি কমিটিকে তদন্ত কাজ সম্পন্ন এবং সুইমিংপুলের ব্যবস্থাপনায় কোনো অবহেলা বা ত্রুটি আছে কি না, তা চিহ্নিত করে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এই কমিটি গঠন করেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ্ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এবং তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শরিফ উল ইসলাম এবং বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন।
এর আগে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন সুইমিংপুলে গোসল করতে নেমে পানিতে তলিয়ে যান মোহাম্মদ সোয়াদ।
পরে আশেপাশের শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে বেলা সোয়া ২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জামিল নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে পুলে সোয়াদ তলিয়ে যায় সেটির গভীরতা ছিল ৮ থেকে ১০ ফিট। এটাতে কেউ ডুবে মারা যাবে, এটা স্বাভাবিকভাবে কারোর চিন্তায়ই আসবে না। পানির তলে গিয়ে ওপরের দিকে লাফ দিলেই ওপরে উঠে আসার কথা!’
তিনি বলেন, ‘আমরা শতাধিক ছাত্র ছিলাম, কিন্তু কেউই খেয়াল করিনি যে সে ডুবে গেছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য