ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার জমিতে, এ নিয়ে ব্যাপকভাবে চালু একটি প্রচার হচ্ছে, নওয়াব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ দান করেছেন এই জমি। তবে এর ঐতিহাসিক কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নবাব পরিবারের জমি দান নিয়ে দুটি মত প্রচলিত আছে। প্রথমটি হলো, নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহর ৬০০ একর জমির ওপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দ্বিতীয় মতটি উল্টো। সেটি হলো, দান করার মতো জমি নওয়াব পরিবারের ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তার অধিকাংশই সরকারি খাসজমি।
তবে তথ্য বলছে, ১৯২১ সালে দেশের প্রথম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্মের ছয় বছর আগে ১৯১৫ সালে মারা যান সলিমুল্লাহ। আর তার মৃত্যুর আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
তবে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আলোচনার সময় নওয়াব সলিমুল্লাহর ভূমিকার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মেলে।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ঘোষণার পর যখন পরিকল্পনা রদ করা হয়, তখন ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ।
তবে ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যদিও এর তিন বছর পর ১৯১৭ সালে গঠিত স্যাডলার কমিশন ইতিবাচক মত দিলে ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইনসভা পাস করে ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং ১৩) ১৯২০।’
এটিই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইনি ভিত্তি। আর ১৯২১ সালের ১ জুলাই ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
এবার ১০০ বছর পূর্তিতেও আবার সেই পুরোনো আলোচনা উঠে এসেছে যে, নওয়াব সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দিয়েছিলেন কি না।
এই মতটি বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক যে ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ আছে, তাতেও খুব জোরালোভাবে তুলে ধরছেন কেউ কেউ। বলা হয়, ‘কলকাতা কমিশন রিপোর্টে’ নাকি সলিমুল্লাহর জমি দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ আছে।
তবে এই কমিশনের রিপোর্ট পুরোটা পড়েও এই তথ্যের কিছুই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান খান।
‘এটা শুধুই গল্প’
সিদ্দিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলা হয়ে থাকে, নবাব সলিমুল্লাহ ৬০০ একর জমি দিয়েছেন। আমি নিজেই এটা নিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি৷ কেউ কেউ বলেছে, কলকাতা কমিশন রিপোর্টের মধ্যে এটি উল্লেখ আছে। আমি সেই রিপোর্টটিও আদ্যোপান্ত দেখেছি। কোথাও এ ধরনের কোনো তথ্য নেই।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠা হয়, তখন সলিমুল্লাহ বেঁচেই ছিলেন না। জমি দান করার বিষয়টা একটা গল্প।’
তিনি জানান, ১৯০৫ সালে পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশ যখন হয়, সে সময় এখন যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত যে জায়গাগুলো আছে, এগুলো সরকার আগেই অধিগ্রহণ করে নিয়েছিল।
‘সাধারণত অধিগ্রহণ করলে যাদের জমি তাদের টাকাপয়সা দিতে হয়। সেভাবেই সরকার এই জায়গাগুলো দখল করে নিয়েছিল। তাই যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এ জায়গাগুলো সলিমুল্লাদের ছিল না৷ ফলে ৬০০ একর জমি দেয়া এটি একটি গল্প’- বলেন ইসলামের ইতিহাসের এই অধ্যাপক।
সলিমুল্লাহকে নিয়ে চলা প্রচার খতিয়ে দেখতে কাজ করা এই অধ্যাপক বলেন, ‘এ ধরনের মিথ বা গল্প তৈরি করে সলিমুল্লাহকে বড় করতে হবে না। এটা ছাড়াও সলিমুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক ভূমিকা রেখেছেন৷’
কী ভূমিকা, তার ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘লর্ড হার্ডিঞ্জ বা সরকারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজি করানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রয়াসটা ওনারই ছিল৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রারম্ভিক পর্যায়ে নাথান কমিশন গঠন এবং যত দিন তিনি জীবিত ছিলেন এটিকে এক্সপাডাইস করা এটিই হলো ওনার বড় কন্ট্রিবিউশন। এটিকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই৷ ওনার নামে হলের যে নামকরণ, প্রারম্ভিক পর্যায়ের তার অবদানকে বিবেচনা করেই এটি করা হয়েছে।’
একই বিভাগের অন্য অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, ‘নবাব সলিমুল্লাহ সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি দেননি। তিনি পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য জমিগুলো দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সরকার দলিল ছাড়াই এ জমিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়। তবে স্বাধীনতার অনেক পরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের কাছ থেকে কিছু জায়গার দলিল নিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো তথ্যই নেই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পার হলেও কাদের জমির ওপর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত, সেটি নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। কোনো তথ্য নেই কোনো বিভাগে। যদিও শিক্ষার্থীদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে আছে নানা মত।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানও কিছু বলতে পারেননি। নিউজবাংলার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মত থাকবে। ভালো করে গবেষণা করে এটি বের করতে হবে।’
তবে এই গবেষণার উদ্যোগ কেউ নেবে কি না, এই বিষয়টি কেউ বলতে পারেননি।
সরদার ফজলুল করিম ও অধ্যাপক রাজ্জাকের কথোপকথন
সরদার ফজলুল করিম রচিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ: অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক-এর আলাপচারিতা ও অন্যান্য’ শীর্ষক বইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমির মালিকানা নিয়েও আলাপচারিতা আছে।
সরদার ফজলুল করিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সলিমুল্লাহ হল নিয়ে জানতে চান জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে।
প্রশ্ন করা হয়, ‘স্যার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলমান ছাত্রদের প্রথম ছাত্রাবাসের নাম যে সলিমুল্লাহ হল রাখা হলো, এর কারণ কী? এতে নওয়াব পরিবারের কি কোনো আর্থিক কন্ট্রিবিউশন ছিল?’
উত্তরে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আদৌ কোনো কন্ট্রিবিউশন ছিল না। আবদুল্লাহ সোহরাওয়ার্দী লেখাপড়ায় ব্রিলিয়ান্ট ছিল। তারা আহসান মঞ্জিলের টাকায় লেখাপড়া করেছে। তারা সলিমুল্লাহর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করত। ঢাকা ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার প্রায় ১০ বছর পরে তার একটা মৃত্যুবার্ষিকীতে তার নামে একটা ছাত্রাবাস করার প্রস্তাব তারা করেন।’
এই বইয়ে উল্লেখ আছে, “আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কোনো মুসলমান ধনীর কাছ থেকেই ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডাইরেক্টলি কোনো ফাইন্যান্সিয়াল কন্ট্রিবিউশন পায় নাই’।”
‘সলিমুল্লাহ হল যে তৈরি হলো তা পুরোই সরকারের টাকায়। নওয়াব পরিবারের টাকায় নয়; জায়গাতেও নয়। রমনায় যে জায়গায় ঢাকা ইউনিভার্সিটি, তা পুরোটাই খাসমহল এবং সরকারের জমি। সেটেলমেন্ট রিপোর্টে তাই আছে।’
ঢাকার নওয়াবদের ভূসম্পত্তির উৎস কী?- এমন প্রশ্নে আব্দুর রাজ্জাক বলন, ‘ঢাকার নওয়াবদের জমিজমা এসেছে প্রধানত একটি সূত্রে থেকে। ঢাকার স্থানীয় মুসলমানরা কোনো কোনো সম্পত্তি নওয়াব আবদুল গণি ও আহসানউল্লাহকে ওয়াক্ফ করে দিয়ে যেত। ঢাকার নবাবদের জমির উৎস এই।
‘তা-ও বেশ কিছু জায়গাজমি নয়। এটার ভেরিফিকেশন তো সোজা। ইন্টারেস্টেড যে কেউ ঢাকা কালেক্টরেটে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। কাজেই নবাব পরিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি দেবে, এমন জমি কোথায় ছিল? আহসান মঞ্জিলের কোনো জমি ছিল না।’
ভিন্ন মত, তবে তথ্য সুনির্দিষ্ট নয়
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন মনে করেন, সলিমুল্লাহ জমি দান করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল যে ক্যাম্পাস, সেটা ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এ জমিকে সুরক্ষা দিতে পারেনি। কাঁটাবনে যে মসজিদটি আছে, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা৷ এটি জবরদখল করা জায়গা৷
‘জবরদখল জায়গা হওয়ার জন্যই এখানে কোনো জুমার নামাজ হতে পারে না। এলিফ্যান্ট রোডের দোকানদাররা ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়বে বলে একটা বেড়ার ঘর বানিয়ে নামাজ পড়েছিল৷ তারপর এটিকে জামায়াতে ইসলামী দখল করে মিশন মসজিদ বানিয়ে ফেলেছে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাহস হয়নি ওদের উৎখাত করার৷
‘বেইলি রোড, মিন্টো রোড, এখন যেখানে মন্ত্রী-সচিবরা থাকেন, এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়িগুলো ছিল। ’৪৭-এ এগুলোও বেহাত হয়ে যায়৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কখনো সাহস হয়নি এগুলো দখল করার।’
তবে সলিমুল্লাহর জমি দানের তথ্যটি কোথায় পেয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি এই অধ্যাপক।
আর জাতীয় অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাসের যে অনুসন্ধান, সে বিষয়ে প্রশ্ন করার আগেই ‘ধন্যবাদ’ বলে ফোন রাখেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন:মঙ্গল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রকাশনা প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাসে মহাসমারোহে বাংলা বর্ষবরণ পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাড়ম্বরে পালিত হয় বাংলা নববর্ষ-১৪৩১।
বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিমের নেতৃত্বে জবি ক্যাম্পাস থেকে সকাল সাড়ে নয়টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার ঘুরে ভিক্টোরিয়া পার্ক হয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসে।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী, জবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ‘রিকশাচিত্র’কে মূল প্রতিপাদ্য করে এবং ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন/ মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানকে সামনে রেখে এ বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে।
শোভাযাত্রায় রিকশাচিত্রের পাশাপাশি সংকটাপন্ন প্রাণী প্রজাতির মধ্যে কুমিরের মোটিফ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও লক্ষীপেঁচা, ফুল, মৌমাছি, পাতা, বাঘের মুখোশ এবং গ্রামবাংলার লোক কারুকলার নিদর্শনসমূহ শোভাযাত্রায় স্থান পায়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটির আয়োজনের দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদ।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে সকাল সোয়া দশটার দিকে আলোচনা সভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া সত্ত্বেও সীমিত অবকাঠামো ও স্বল্প পরিসর নিয়েও সকলের সহযোগিতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যায়ের মূল প্রাণ হচ্ছে শিক্ষার্থী। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারছে।
‘পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ববঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান ও তারপর বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধুর এই অবদান যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের চিন্তা চেতনায় ধারণ করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করতে পারি। পারিবারিকভাবেই নারী-পুরুষের সমতা, নারীকে মানুষ ভাবার মানসিকতার শিক্ষা দিতে হবে, নতুন প্রজন্মকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে লিখতে হবে, বলতে হবে।’
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি প্রমুখ।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠান ও নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও বিকেলে জবি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠির পরিবেশনা এবং জবি ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হয়।
এ সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলে আনন্দে নেচে গেয়ে উদ্বেলিত ও উৎফুল্ল হয়ে বর্ষবরণকে আনন্দবহ করে তোলেন।
প্রকাশনা প্রদর্শনী
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহিদ রফিক ভবনের নীচতলায় দিনব্যাপী ‘প্রকাশনা প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ, জার্নাল, সাময়িকী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বার্তাসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রকাশিত বিভিন্ন গ্রন্থ স্থান পায়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাইটশৈলা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ-২০১১ এর শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঈদুল ফিতরের পরদিন শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সকাল ১১টায় গান-বাজনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে নানা অনুষ্ঠান। দুপুরে ছিল ভুরিভোজের আয়োজন। বিকেলে ছিল আলোচনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাইটশৈলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন। সভাপতিত্ব করেন নবগঠিত বিদ্যালয় পরিচালনা অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মাহবুব উল আলম খান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষিকা রেহেনা জাহান খান, সিনিয়র শিক্ষকমণ্ডলী এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অনেকে।
প্রসঙ্গত, ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের সাইটশৈলা গ্রামে বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৩ সালে। এটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও সময় পরিক্রমায় প্রয়োজনের তাগিদে এটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের বাবা অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (৯ এপ্রিল)।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৫১ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৫৬ সালে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ইউনেস্কো দিল্লির বিজ্ঞান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফলিত রসায়ন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির সভাপতি।
অধ্যাপক ড. ফজলুল হালিম চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১ আগস্ট বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির কুমিল্লা জেলার কুঞ্জ শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল আজিজ চৌধুরী একজন শিক্ষাবিদ, মাতা আফিফা খাতুন।
বরেণ্য এ অধ্যাপকের মেয়ে হয়েছেন বাবার মতো গুণী। অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও বিবিএ প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিজেদের আইডিতে প্রবেশ করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। পাশাপাশি তাদের আসন বিন্যাসও দেখতে পারবেন।
এছাড়াও যেসব ভর্তিচ্ছুর ছবি বা সেলফি কর্তৃপক্ষের গাইডলাইন অনুযায়ী আপলোড করা হয়নি, তাদেরকেও সোমবারের মধ্যে সংশোধিত ছবি বা সেলফি আপলোডের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাছিম আখতার সোমবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক নাছিম আখতার বলেন, ‘২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহের সুযোগ আজই (সোমবার) শেষ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জন্য ২৩ মার্চ এটি উন্মুক্ত করা হয়।
‘যেসব আবেদনকারীর ছবি বা সেলফি অথবা উভয়টি জিএসটির ফটো গাইডলাইন অনুযায়ী গৃহীত হয়নি, তারা সোমবার রাত ১০টার মধ্যে অবশ্যই জিএসটির ফটো গাইডলাইন অনুসরণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ছবি বা সেলফি অথবা উভয়টি আপলোড সম্পন্ন করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে হবে। না হলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে না।’
উপাচার্য অধ্যাপক নাছিম আখতার জানান, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন প্রক্রিয়া ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে শেষ হয়েছে। এবার মোট ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৪৬টি আবেদন জমা পড়েছে।
এ বছর প্রায় ২১ হাজার আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৪৬। এবার প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বে গড়ে ১৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৯টি, মানবিক শাখার ‘বি’ ইউনিটে ৯৪ হাজার ৬৩১টি ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ‘সি’ ইউনিটে ৪০ হাজার ১১৬টি আবেদন জমা পড়েছে।
আগামী ২৭ এপ্রিল শনিবার (এ ইউনিট-বিজ্ঞান), ৩ মে শুক্রবার (বি ইউনিট-মানবিক) এবং ১০ মে শুক্রবার (সি ইউনিট-বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দুপুর ১২টা থেকে ১টা এবং অন্য দুই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার সব তথ্য গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে (https://gstadmission.ac.bd) পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বীর হলের সিট ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সোমবার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছে।
এর আগে রোববার ইমতিয়াজ হোসেনের পক্ষে হলের সিট বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
রিটে বুয়েটের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করে ইমতিয়াজের হলে সিট ফেরত দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। সোমবার ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ নিজেই রিটের পক্ষে শুনানি করেন।
জানা যায়, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েট ক্যাম্পাসে ২৭ মার্চ বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে নেতা-কর্মীদের একটি দল প্রবেশ করে। এর প্রতিবাদে ২৯ মার্চ বেলা আড়াইটা থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেনকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল (আবাসিকতা) বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
পরে ২৯ মার্চ রাতে বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের নির্দেশে ইমতিয়াজ হোসেনের হলের আসন বাতিলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. ফোরকান উদ্দিন।
একইসঙ্গে জানানো হয়, সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে সুপারিশ দেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এদিকে ১ এপ্রিল বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই বলে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। ইমতিয়াজ হোসেন রাব্বীর করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেয়। ২০১৯ সালে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে যে প্রজ্ঞাপন জারি করে তা স্থগিত করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে অসহায়-ছিন্নমূল ৭০০ পরিবারের মাঝে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডু। পুরো রমজান মাসজুড়ে অসহায়-ছিন্নমূল মানুষের মাঝে সেহেরি বিতরণ করছেন তিনি।
রোববার ওই ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এ উপলক্ষে সজল কুন্ডু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুরকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। আবহমানকাল থেকে এখানে সব ধর্মের মানুষ একত্রে বসবাস করছে। এই সম্প্রীতি আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য। 'ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই উক্তি আজ দেশের সর্বমহলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে ধর্মীয় উৎসব পালন করছে। আমাদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ নাই। সবসময় আমাদের এই ভাতৃত্বের বন্ধন অটুট থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যেকোনো সংকটে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্বদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। আগামী ২০৪১ সালের উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মী অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে থাকা ভাসমান সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের পক্ষ থেকে এই উপহার বিতরণ করেছেন।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের সুইমিংপুল সংলগ্ন মাঠে বিতরণের এ আয়োজন করা হয়। আয়োজন শেষে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছে নতুন কাপড় তাদের ঈদের খুশি এনে দিয়েছে।
ঈদ উপহার পেয়ে টিএসসির এক সুবিধাবঞ্চিত শিশু রাব্বি বলেন, আমাদের সবাইকে অনেক সুন্দর সুন্দর কাপড় দিয়েছে। অনেক খুশি লাগছে আমার। এবার ঈদের দিন এই পাঞ্জাবিটা পরে ইদ করবো আমি৷
এই আয়োজনের দায়িত্বে থাকা শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমাম বাসেত বলেন, প্রত্যেক বাগান মালিই তার বাগানের ফুলগুলোর যত্ন করে। ওরা আমাদের বাগানের ফুল, আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ ওদের যত্ন নেয়া। আমাদের সভাপতি শয়ন ভাই সবসময় ওদের খোঁজ খবর রাখেন।
এসময় সেখানে অন্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন, রেজাউল করিম রিয়াদ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মাউনজিরা বিশ্বাস সুরভী, নাট্য ও বিতর্ক উপসম্পাদক সাইফ আকরাম, মানবসম্পদ উপসম্পাদক মিজানুর রহমান, গণযোগাযোগ উপসম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ তিতাস প্রমুখ।
মনিরুল
মন্তব্য