× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

ফ্যাক্ট চেক
সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয় হবে ছোট কফি শপ
google_news print-icon

সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয়, হবে ছোট কফি শপ

সোহরাওয়ার্দীতে-রেস্তোরাঁ-নয়-হবে-ছোট-কফি-শপ
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। এ জন্য কাটা পড়ছে কিছু গাছ। ছবি: সাইফুল ইসলাম
গণপূর্তের প্রকৌশলী বলছেন, কোনো রেস্টুরেন্ট তৈরি হচ্ছে না। সাতটি ভাস্কর্য এলাকায় একটি করে ছোট কফি শপের মতো থাকবে, যেখানে পাওয়া যাবে শুকনা খাবার।

সরকারের যে মহাপরিকল্পনার কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেটে ফেলা হচ্ছে শতাধিক পুরানো গাছ, কী আছে সেই মহাপরিকল্পনায়? সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পরিকল্পনায় কোনো রেস্তোরাঁ নেই। আছে কফি শপ ধরনের হালকা স্থাপনা।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে।

এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ২৩ বছরের মুক্তিসংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত ভাস্কর্য, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে ভাস্কর্য, ইন্দিরা মঞ্চ, জলাশয় ও ফোয়ারা, ভূগর্ভস্থ ৫০০ গাড়ির পার্কিং ও শিশুপার্ক। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য পুরো উদ্যানজুড়ে সাতটি ফুড কোর্ট ও টয়লেট নির্মাণ করা হবে। আর মনোরম পরিবেশের জন্য বানানো হবে নান্দনিক ওয়াকওয়ে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাঠামোগত কাজ করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামিম আখতার নিউজবাংলাকে বলেন, তৃতীয় পর্যায়ের আওতার সাতটি ভাস্কর্য স্থাপনের জায়গাগুলোতে নকশার কাজ চলছে।

উদ্যানের নির্দিষ্ট সাতটি জায়গায় নান্দনিক ওয়াকওয়ে ও পানির ফোয়ারা থাকবে।

রেস্টুরেন্ট ও টয়লেটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রেস্টুরেন্ট যে অর্থে বলা হচ্ছে, আসলে তেমনটা না। সাতটি ভাস্কর্য এলাকায় একটি করে ছোট কফি শপের মতো ফুড কোর্ট থাকবে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেহেতু বড় এলাকা, এখানে তো দর্শনার্থীদের জন্য টয়লেট লাগবেই।

সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয়, হবে ছোট কফি শপ

যেসব গাছ কাটা হচ্ছে, তার বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় আরও ১ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। সেগুলো কোথায় এবং কখন রোপণ করা হবে জানতে চাইলে শামিম আখতার বলেন, ‘গাছগুলো উদ্যানের ফাঁকা জায়গায় লাগানো হবে। তবে নিয়ম হলো, প্রকল্পের সব কাজ শেষ হলে তারপর গাছ লাগানো হয়, সে অনুযায়ী প্রকল্প কাজ শেষ হলে আমরা গাছগুলো লাগাব।’

প্রকল্পটি ২০২২ সালে শেষ হবে বলে জানান শামিম আখতার।

রেস্তোরাঁ, টয়লেট পরিকল্পনায় ছিল না

২০১০ সালের হাইকোর্টের রায়ের পর সোহরাওয়ার্দী ‍উদ্যান ঘিরে নেয়া হয় মহাপরিকল্পনা। তখন আদালতের নির্দেশে দেশবরণ্য শিক্ষক, স্থপতি, পরিবেশবিদ ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে কীভাবে সাজানো হবে, সেই কমিটি তার একটি পরিপল্পনা করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে দিয়েছিল। পরিকল্পনায় রেস্তোরাঁ ও টয়লেট নির্মাণের কোনো বিষয় ছিল না বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছে কমিটির একাধিক সদস্য।

ওই কমিটিতে যারা ছিলেন, তাদের একজন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নিয়ে কমিটির গৃহীত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুসরণ করে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। সেখানে কোনো রেস্তোরাঁ বা টয়লেট আমরা রাখিনি। পরিকল্পনাটি মন্ত্রণালয়ে জমা হবার পর সেটা কী হল তা আমার জানা নাই।’

সে সময় নিরীক্ষা কমিটির সদস্য ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের ডিজাইনে কোনো খাবার দোকান বা টয়লেট ছিল না। আদালত সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছিল যে, সাতটি জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হোক এবং অন্যান্য সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হোক। আমরা সেভাবেই নকশা করেছিলাম। সেখানে খাবার দোকান টয়লেট রাখার প্রশ্নই আসে না।’

পরিকল্পনায় বদল ঘটল কীভাবে জানতে চাইলে ইকবাল হাবিব বলেন, ‘আমরা নকশা ডিজাইন করে দিয়েছি। এরপর মন্ত্রণালয় কীভাবে কী করেছে, তা জানা নাই।’

সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয়, হবে ছোট কফি শপ
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে পরিবেশবাদী কিছু সংগঠন। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর পর থেকে দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়েছে। উদ্যানের ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংরক্ষণ করে তা মানুষের সামনে উপস্থাপনের বদলে প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে অপ্রয়োজনীয় ফুড কোর্টসহ নানান স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। আঁকাবাকা ওয়াকওয়ে করা হচ্ছে গাছ কেটে। কিন্তু গাছগুলো রেখেই ওয়াকওয়ে করা যেত। এই কর্মকাণ্ড পরিবেশ ও উদ্যান আইনের পরিপন্থি।’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে সরকারের মহাপরিকল্পনার নকশার তদারকি করছেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক স্থপতি মো. আসিফুর রহমান ভূঁইয়া।

পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো একটা কারণে আগের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছিল। এরপর আমি ও আমার টিমের দায়িত্ব পাই। আমরা বুঝতে পারছি না, এতো কিছু থাকতে হঠাৎ উদ্যানের ফুড কোর্ট ও টয়লেট নিয়ে সমালেচনা হচ্ছে কেন? আমাদের টার্গেট হলো, আমরা দেশি-বিদেশি পর্যটক এখানে নিয়ে আসব। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা দিয়ে উদ্যানটি সাজানোর চেষ্টা করেছি।

‘এখানে ফুড কোর্ট যে অর্থে বলা হচ্ছে, বিষয়টা তেমন না। পুরো উদ্যানে সাতটি আলাদা স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সাতটি স্পটকে দৃষ্টিনন্দন করতে যতটা করা দরকার, ততটাই করা হয়েছে, কোনো বাড়াবাড়ি করা হয়নি। সাতটি স্পটে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে, সেখানে মানুষের বসার ব্যবস্থা থাকবে। এর পাশেই একটি করে শেড নির্মাণ করা হবে যেন বৃষ্টির সময় মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। আর ওই শেডের নিচেই টয়লেট ও ছোট কফি শপের মতো থাকবে, যেখানে শুকনা খাবারের ব্যবস্থা থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য।’

সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয়, হবে ছোট কফি শপ
গাছ কাটা রোধে অভিনব উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। একেকটা গাছের নামকরণ করা হয়েছে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে।

দর্শনার্থীদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা না থাকলে তারা প্রয়োজনে কোথায় যাবে প্রশ্ন রেখে স্থপতি আসিফুর রহমান বলেন, ‘যারা রেস্তোরাঁ আর টয়লেট নিয়ে সমালোচনা করছেন, তারা না জেনে না বুঝেই করছেন। টয়লেট আর ফুড কোর্ট তো কোনো বাড়তি স্থাপনা না, বরং এটা উদ্যানের অনুষঙ্গ। এখানে কোনো অসঙ্গতি থাকলে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের অনুমোদন দিতেন না।’

গাছ কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসিফুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো স্থপতিই গাছ কাটতে চান না, আমার ক্ষেত্রেও তাই। আমরা একটি আধুনিক সবুজ উদ্যান বানাতে চাইছি। আমরা অনেক হিসেব-নিকেশ করে এক একটি গাছ কাটছি। যেটা একবারেই রাখা সম্ভব নয়, শুধু সেটাই কাটছি। আমাদের কাজ শেষ হলে দেশের বোটানি বিশেষজ্ঞরা উদ্যানে গাছ লাগানোর বিষয়ে কাজ করবেন। তাই উদ্যানকে ধ্বংস করা হচ্ছে এই দাবি একদমই অমূলক।’

এ বিষয়ে জানতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

অমান্য হচ্ছে আদালতের নির্দেশনা

রেসকোর্স ময়দান বা বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঐতিহাসিক স্থানসমূহকে চিহ্নিত করা এবং সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে ২০০৯ সালের ২৫ জুন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বাদী হয়ে জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করেছিলেন।

সোহরাওয়ার্দীতে রেস্তোরাঁ নয়, হবে ছোট কফি শপ

২০১০ সালের ৭ জুলাই রায় প্রকাশ করা হয়, যাতে রায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ঐতিহাসিক সাতটি স্থানকে চিহ্নিত করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। স্থানগুলো হলো: ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গর্ভনর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ভাষণের স্থান, ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান, ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ দল থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের স্থান, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের স্থান, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষরের স্থান, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ প্রদানের স্থান এবং ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণ প্রদানের স্থান।

হাইকোর্ট সেই রায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে অংশে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, সেটিকে ‘স্বাধীনতা চত্বর বা লিবার্টি স্কয়ার’ নামকরণ করার জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিল।
সেইসাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে সকল প্রকার স্থাপনা অপসারণ এবং স্থাপনা অপসারণের পর চিহ্নিত স্থানগুলোতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও বিবেচনাপ্রসূত দৃষ্টিনন্দন ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং সংরক্ষণের নির্দেশও দিয়েছিল হাইকোর্ট।

রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আলাদতের পরিষ্কার নির্দেশনা ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাতটি চিহ্নিত জায়গায় স্মৃতি ভাস্কর্য ছাড়া অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এমনকি উদ্যানের জায়গা থেকে শিশুপার্ক ও শাহবাগ থানাকেও উচ্ছেদের কথা বলা হয়েছিল। সে জায়গায় নতুন করে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর রেস্টুরেন্ট টয়লেট বানাবে এটা তো আদালত অবমাননা করা হচ্ছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে আইনি নোটিশ দেব।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ফ্যাক্ট চেক
Tribute to memorial on 11th anniversary of Rana Plaza tragedy

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।

ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।

একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র‌্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন:
সাভারে যুগান্তরের সাংবাদিকের ওপর রাসায়নিক নিক্ষেপ
সাভারে গোডাউন খুলতেই বিস্ফোরণ, দগ্ধ তিন
টেইলার্সে এসি বিস্ফোরণে আটজন আহত
ধামরাইয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরোহীর মৃত্যু
সাভার থেকে চুরি হওয়া শিশু নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
Chittagong Coxs Bazar train stopped due to engine and coach derailment

ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ট্রেন বন্ধ

ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ট্রেন বন্ধ ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ডুলাহাজারা স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন ও দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

কক্সবাজারের চকরিয়ায় কক্সবাজারগামী একটি ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা স্টেশনে এ দুর্ঘটনার পর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ। খবর ইউএনবির

কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ডুলাহাজারা স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন ও দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি জানিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
The victims live with the painful memories of Rana Plaza

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক এসেছেন সেদিনের সেই স্মৃতিকে মনে করে। ছবি: নিউজবাংলা
শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ৯ তলা ভবনের পুরোটাই ধসে পড়ে আহত হয়েছেন অনেক শ্রমিক। পঙ্গুত্ব নিয়ে বছরের পর বছর ধরে মানবেতর দিনযাপন করছেন তাদের অনেকে।

শারীরিক যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছেন কেউ কেউ। যারা বেঁচে আছেন এখনও তাদের তাড়া করে দুঃসহ সেদিনের স্মৃতি। পুনর্বাসন আর ক্ষতিপূরণের আশায় বুক বেঁধে আছেন রানা প্লাজার সেই ক্ষতিগ্রস্তরা।

শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনার ৫টি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় ২ সহস্রাধিক শ্রমিক।

কী ঘটেছিল সেদিন, সে কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আহত শ্রমিক শিলা বেগম। তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল সকালে কারখানায় আসার পর মালিকপক্ষ ছুটি দিয়ে দেয়। আবার পরদিন ২৪ এপ্রিল বিকেলে শিপমেন্ট আছে জানিয়ে কারখানায় বাধ্যতামূলক আসার কথা জানিয়ে মাইকিং করে। না আসলে ওভারটাইমের টাকা কেটে নেয়ার কথা বলে মালিকপক্ষ।

তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল সকালে কারখানায় সব শ্রমিক আসার পর সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারটের চালু করা হয়। এরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো কারখানা ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ওই সময় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি বিশাল আকৃতির বীমের নিচে আটকে পড়ে আছি।

শিলা বেগম বলেন, উদ্ধারকারীরা এরপর আমাকে বাঁচাতে পারলেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। অপারেশনের পর এত বছর ধরে নানা শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। ওই সময় সরকার ও বিদেশি বায়ারদের সামান্য সহযোগিতা পেলেও তা চিকিৎসার পেছনেই শেষ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সরকার কিংবা মালিকপক্ষ দীর্ঘ ১১ বছর হয়ে গেলেও আমাদের কোনো খোঁজ রাখেনি। এ রকমভাবে বেঁচে থাকার চাইতে সেদিন মরে গেলেও অনেক শান্তি পেতাম। অন্তত এত কষ্ট বয়ে বেড়াতে হতো না। অর্থাভাবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হতো না। আমরা দ্রুত আমাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চাই।

মনির হোসেন নামে ষষ্ঠ তলায় কাজ করা আরেক শ্রমিক বলেন, ঘটনার দিন আমিসহ আরও সাতজন ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছিলাম। পাশেই আরও দুই-তিনজন আটকে পড়ে বাঁচার আকুতি করছিল। সেই দৃশ্য আমি কোনদিনও ভুলতে পারব না। ওই ঘটনায় আমার কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের অনেক জায়গায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হই।

তিনি বলেb, রানা প্লাজা ভবন ধসের ১১ বছর পার হয়ে গেলেও আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। সাহায্য হিসেবে যে অর্থ পেয়েছিলাম তা চিকিৎসার পেছনেই খরচ হয়ে গেছে। শুধু ২৪ এপ্রিল আসলেই আমাদের খোঁজ করে সাংবাদিকরা। তা ছাড়া আর কেউ আমাদের খবরও নেয় না। আমরা দুঃসহ যন্ত্রণার জীবন নিয়ে বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি।

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা
সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছেন শ্রমিকরা। ছবি: নিউজবাংলা

গুরুতর আহত ইয়ানুর আক্তার নামে এক শ্রমিক বলেন, আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই রানা প্লাজায় চাকরি নিয়েছিলাম। চতুর্থ তলার একটি কারখানায় হেলপার পদে কাজ করতাম। ছয় ভাই-বোন ও মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সেদিনের ঘটনা আমার জীবন থেকে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভবনের নিচে চাপা পড়ার কারণে আমার হাত ও পায়ে ছয়টি অপারেশন করতে হয়েছে। এরপর থেকে কাজ তো দূরের কথা স্বাভাবিক কাজও করতে পারি না। তারপরও পরিবারকে বাঁচাতে কাজ খুঁজে যাচ্ছি। যখন যা পাই তাই করি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার ১১ বছর পার হয়ে গেল এখনও আমাদের পুনর্বাসনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রতিবছর এই দিনে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে আসি আমাদের দুঃখের কথাগুলো জানানোর জন্য। কিন্তু মিডিয়ায় সেগুলো প্রচার হলেও তা কেউ শোনে না বলে আমার মনে হয় না। আমাদের চোখের পানির মূল্য যেন কারও কাছে নেই। অভিশপ্ত এই জীবন নিয়ে বাঁচা আর সম্ভব হচ্ছে না। একে তো শারীরিক যন্ত্রণা। তার উপর মাঝে মধ্যেই সেই ভয়ানক স্মৃতি মনে হলে ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বাংলাদেশে এই যে, এত বড় ঘটনা ঘটল। বিশ্বের মধ্যে এত বড় ট্র্যাজেডি। এই ঘটনায় আইন অনুযায়ী গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং তাদের ব্যাপারে কোনো আওয়াজ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেই।

তিনি বলেন, শুধু ভবন মালিক রানা শাস্তি পাচ্ছে, রানা জেলে আছে। কিন্তু যারা যারা গার্মেন্টসের মালিক তারা সবাই বাইরে। তারা হয়তো তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। অথচ ওই কারখানাতে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করত। তারা হয়ত বড় ব্যবসা করছে। মালিকরা ব্যবসা করছে। শুধু এটাতে ভিকটিম হয়েছে যারা শ্রমিক তারা। চিকিৎসা, বিচারের ও পুনর্বাসনের দাবিতে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ১১ বছরেও এর কোনো প্রতিকার হয়নি। উপরন্তু অনেক ঘটনা আছে, মামলা আছে সেসব মামলায় কিন্তু দ্রুত শাস্তি হয়, বিচার হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা হয়। কিন্তু এই রানা প্লাজার এত বড় ঘটনার পরেও আমরা দেখছি, বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি এবং এটার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পায়নি। আদৌ হবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই।

গার্মেন্টস খাতে এর প্রভাব পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা গার্মেন্টস সেক্টরে প্রভাব পড়বে অবশ্যই। গার্মেন্টসের মালিকরা চাচ্ছে যে, গার্মেন্টসে যদি কাজ করতে এসে কোনো শ্রমিক মারা যায় তাহলে এর জন্য তার কোনো শাস্তি হবে না। বিচারের আওতায় আনা হবে না। এর আগেও তাজরিনসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মানে মানুষের যে বিচার পাওয়ার যে অধিকার সেই জায়গাটা কিন্ত হারিয়েছে। শ্রমিকরা কর্মস্থলে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারছে না।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা যারা আমাদের প্রডাক্টটা ব্যবহার করে তারাও কিন্তু আওয়াজ তুলছে। এখনও চলছে যাতে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হয়। কিন্তু আওয়াজ ওঠার পরও আমরা দেখছি যে যথাযথ ব্যবস্থা কিন্তু নেয়া হচ্ছে না। যার কারণে এই ধরনের পরিস্থিতি হলে আমাদের দেশের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টে কিন্তু এই প্রভাবটা পড়বে।

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
Prime Ministers red carpet reception in Thailand

প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা

প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংককে পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। ছবি: বাসস
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংকক পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ০৮ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। খবর ইউএনবির

বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অফ অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেয়া হয়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এ সফর।

১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এ প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর এটি।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অফ ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা নথি সই হবে।

‘দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আরও ২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ জানান, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।

২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নথি সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।

সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এ অধিবেশনে একত্রিত করবে।

আরও পড়ুন:
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না: প্রধানমন্ত্রী
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির দিকে চোখ রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
মুজিবনগর দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
Istiska prayer in Pabna for rain

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ তীব্র গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য বুধবার সকালে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন পাবনাবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে মাওলানা আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

অতি তীব্র দাবদাহ, সঙ্গে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাবনাসহ এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন। অনাবৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আম, লিচু ও ফসল।

তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পাবনা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকার দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করেছেন পাবনাবাসী।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাবনা ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক ও মসজিদে আত তাকওয়ার পেশ ইমাম মাওলানা আবদুস শাকুর।

তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রার্থনাও করা হয়।

নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার পাবনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে এ তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহে পুড়ছে জীবন, পুড়বে আরও
এবার ভারি বর্ষণের কবলে সৌদি আরব, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট
বৃষ্টি হয়তো হবে, তবে গরম কমবে না
আমিরাতে ৭৫ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, নিহত অন্তত ১
তীব্র গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টি

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
There will be no gas in Shanirakhra Jurain from noon

শনির আখড়া-জুরাইনে দুপুর থেকে গ্যাস থাকবে না

শনির আখড়া-জুরাইনে দুপুর থেকে গ্যাস থাকবে না ফাইল ছবি
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।

গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।

এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।

আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।

মন্তব্য

ফ্যাক্ট চেক
Arafat Islam is the new director of RABs media wing

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন পরিচালক আরাফাত ইসলাম

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের নতুন পরিচালক আরাফাত ইসলাম কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। ছবি: র‌্যাব
কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র‌্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

বাহিনীটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, (এনডি), বিপিএম (সেবা), এনইউপি, পিসিজিএম, বিএন অদ্য ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।

‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার। তিনি ১৯৯৫ সালে ৩৫তম বিএমএ লং কোর্সের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চে কমিশন লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন নৌ বাহিনীতে ছোট ও মাঝারি বিভিন্ন জাহাজের অধিনায়ক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কমান্ডার আরাফাত ইসলাম দেশ ও বিদেশে নৌবাহিনীর বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র‌্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন:
বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার উদ্ধার
ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে উদ্ধার ৬ বন্যপ্রাণী
ময়মনসিংহে তিন হাসপাতাল এক ক্লিনিক সিলগালা
ডিসি এসপি র‌্যাবের সিও পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি
নওগাঁয় ৭২ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেপ্তার

মন্তব্য

p
উপরে