আদালতের কাঠগড়ায় ‘রক্তমাখা পোশাক’ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক আসামির ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ওই আসামির পাশে ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকেও দেখা যায়। ফেসবুকে বেশ কিছু পোস্টে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো দুজনকেই ‘ছাত্রনেতা’ দাবি করে ‘রক্তমাখা পোশাক’কে তাদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে দাবি করা হয়েছে।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ওই দুই জনের বিষয়ে পুলিশসহ আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার মামলায় আখতার হোসেনকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়ে গত বুধবার আদালতে তোলে পুলিশ।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক মামুনুর রশীদ এ আবেদনের শুনানি শেষে আখতারকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই আবেদনের শুনানির সময় কাঠগড়ায় আখতারের পাশে দাঁড়ানো আরেক তরুণ অন্য একটি মামলার আসামি বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, আখতারের পাশে দাঁড়ানো তরুণের নাম শাহারুম ইসলাম রিফাত। ফুলবাড়িয়া এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় তিনি গণপিটুনির শিকার হয়েছিলেন। এ কারণে তার আঙুলে ব্যান্ডেজ ও ট্রাউজার্সে রক্ত লেগে ছিল।
ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, শাহবাগ থানার ছিনতাই মামলার আসামি শাহারুম আলম রিফাত রাস্তায় গণপিটুনির সময় নিজের কাছে থাকা ছুরি দিয়ে নিজের আঙুল কেটে ফেলেন। তবে আঘাত গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর পুলিশ তাকে বুধবার আদালতে তোলে। শাহারুম পুলিশের হেফাজতে নিজেই হেঁটে সেদিন কাঠগড়ায় ওঠেন বলেও দাবি করেন জাফর হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো আসামির রিমান্ড আবেদনকালে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। কোনো আসামিকে কাঠগড়ায় তোলা বা না তোলার নির্দেশের বিষয়টি পুরোপুরি ম্যাজিস্ট্রেটের এখতিয়ার।
শাহারুমের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলার বাদি শাহবাগ থানার আওতাধীন বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেটের সামনে ঘোরাঘুরির সময় পুলিশকে দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন শাহারুম। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাকে ধরে ফেলে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় শাহারুম নিজের কাছে থাকা ছুরিতে হাতের আঙুল কাটে। ছুরি দেখে ব্যবসায়ীরা আরও উত্তেজিত হয়ে তাকে পিটুনি দেয়।’
শাহারুমের সঙ্গে রাতুল নামে আরেক তরুণ ছিলেন, তবে তিনি পালিয়ে যান বলে জানান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সহায়তায় আমরা শাহারুমকে ছুরিসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসি। রাতেই তার বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতুলকে ধরার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হলেও তাকে ধরতে পারিনি।’
শাহারুমের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। তিনি ঢাকায় বংশাল এলাকার আনন্দবাজারের সেক্রেটারিয়েট রোডের একটি বাড়িতে থাকেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক ফারুক মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করে ১৪ এপ্রিল রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে কোর্টে পাঠানো হয় শাহারুমকে। তবে করোনার কারণে সেদিন শেষপর্যন্ত রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই শুনানি হবে। তাকে আপাতত কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।’
আসামির আঙুল কাটা থেকে শুরু করে তার চিকিৎসার সব বিষয় লিখিতভাবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
রক্তাক্ত পোশাকে শাহারুমকে কেন আদালতে পাঠানো হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ‘আসামিকে যে অবস্থায় পাওয়া গেছে, সেই অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এখানে তার কোনো কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজন তো দেখি না। যেভাবে পেয়েছি, সেভাবেই পাঠিয়েছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় চোর, ছিনতাইকারী বা যে কোনো ধরনের অপরাধী গণপিটুনির শিকার হলে পুলিশ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উদ্ধার করে। পরে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আদালতে হাজির করা হয়।
‘অনেক সময় ছেঁড়াফাটা পোশাক বা রক্তমাখা পোশাক পরা অবস্থাতেই আসামিদের কাঠগড়ায় নিয়ে যেতে হয়। আসামিদের পোশাক বদলের সময় ও সুযোগ থাকে না। এ বিষয়ে আইনি কোনো বাধ্যবাধকতাও নেই।’
তিনি বলেন, ‘তবে অনেক সময় থানা বা পুলিশের হেফাজত থেকে কোনো আসামিকে কোর্ট হাজতে আনার পর শরীর থেকে রক্ত বের হলে বা দৃশ্যমান জখম অথবা যে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা গোচরীভূত হলে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পরামর্শে কোর্টের হাজতেই আসামির পোশাক বদল করা হয়ে থাকে। তারপর এজলাসের কাঠগড়ায় হাজির করানো হয়।’
অন্যদিকে, কোর্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, যেসব মামলার আসামিদের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তার আগাম কোনো নির্দেশনা থাকে না, সেসব মামলার আসামিদের বাহ্যিক, শারীরিক কিংবা মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে তারা যত্নশীল থাকেন না। কাজেই কার পোশাকে কী লেগে আছে সেটা অনেক সময় লক্ষ্য করা হয়ে ওঠে না।
আখতারকে নির্যাতনের অভিযোগে কর্তৃপক্ষ কী বলছে
ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনকে নির্যাতন ও হাতে দড়ি বেঁধে কাঠগড়ায় তোলার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
আখতারকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করছে পুলিশ। ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শাহবাগ থানার একটি মামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা আখতারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তার ওপর কোনো নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। প্রকৃতপক্ষে রাস্তায় লোকজনের হাতে পিটুনির শিকার, গ্রেপ্তারকৃত এক ছিনতাইকারীর সঙ্গে একই দিন একই সময়ে কোর্টের কাঠগড়ায় তার দাঁড়ানোর ঘটনাটিকে কেউ কেউ ভিন্ন দিকে নেয়ার চেষ্টা করছেন।’
মামলাটির তদন্ত করছেন ডিবির রমনা জোনাল টিমের উপ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আখতারকে আমরা গতকালই (বুধবার) মাত্র রিমান্ডে পেয়েছি। এর আগে গ্রেপ্তারের পরেও তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
হাতে দড়ি বেঁধে আদালতে তোলার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন দুই মামলার আসামিকে (আখতার ও শাহারুম) এক সঙ্গে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল। তাদের কারো হাতই দড়ি বাঁধা ছিল না। তবে দুজনেরই একটি হাতকড়া ছিল এবং সেই হাতকড়া দড়িতে বাঁধা ছিল। আদালতে একাধিক আসামিকে একসঙ্গে যখন নেয়া হয় তখন এ ধরনের ব্যবস্থা খুব সাধারণ ঘটনা।’
পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেয়ার মামলায় আখতার হোসেনকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন আইনজীবী শিশির মনির। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, আখতারকে নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তিনি পাননি।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির এই বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ সব কথা বলেছেন। তিনি এ সময় ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে উল্লেখ করে তিনি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফুলের তোড়া পাঠিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আজ গণতন্ত্রের মা, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন। তিনি এ দিনটি উদযাপন করেন না, তবে দল থেকে সারাদেশে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আজ বিকেলে ম্যাডামের (বেগম জিয়া) জন্য ফুলের তোড়া পাঠিয়েছেন। তাঁর কর্মকর্তারা এটি বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে পৌঁছে দেন।
বিকেল প্রায় ৪টায় প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব সজীব এম খায়রুল ইসলাম ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় গিয়ে তাঁর একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারের হাতে ফুলের তোড়াটি হস্তান্তর করেন।
এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলায়েত হোসেন, বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এবং চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত উইংয়ের কর্মকর্তা মাসুদ রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চীনের রাষ্ট্রদূতের কার্যালয় থেকেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের জন্য জন্মদিনের ফুলের তোড়া পাঠানো হয়।
বেগম খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি ৮১ বছরে পা রেখেছেন।
ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে পুরস্কৃত করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
বৃহষ্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর রেল ভবনে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের উদ্যোগে এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে ধূমপান ও তামাকমুক্ত রেল পরিষেবা গড়ে তুলতে রেল স্টেশনে তামাক সচেতনতা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য আরএনবি ও জিআরপি (পুলিশ) এবং রেলওয়ের ২২ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে সম্মাননা পদক ২০২৫ প্রদান করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে রেলওয়ে কর্মীদের উৎসাহিত করে দেশের সকল স্টেশন ও ট্রেনকে ধূমপান ও তামাকমুক্ত করার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন-
মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার, উপসচিব (বাজেট অধিশাখা), রেলপথ মন্ত্রণালয়; মোঃ জাকির হোসেন, পরিচালক ট্রাফিক (পরিবহণ), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আনসার আলী, উপ-পরিচালক (টিসি), বাংলাদেশ রেলওয়ে; গৌতম কুমার কুণ্ডু, বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশী), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (লালমনিরহাট), বাংলাদেশ রেলওয়ে; ফারহান মাহমুদ, এডিসিও (চট্টগ্রাম), বাংলাদেশ রেলওয়ে; মোহাম্মদ আমিনুল হক, এসিও-১ (ঢাকা), বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে “বাংলাদেশ রেলওয়েকে তামাকমুক্ত করার উদ্যোগ” শীর্ষক প্রকল্পের বেজলাইন ও এন্ডলাইন সার্ভের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও এর বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্ক এর নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আফজাল হোসেন। এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা/কর্মচারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার যাত্রীসেবার মানের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অনুষ্ঠানে তার বিস্তারিত আলোচনা করেন তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের অপব্যবহার রোধে ভূমিকা পালনকারী সাবেক ও বর্তমান সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তারা। তাঁরা রেলওয়ের প্রতিটি স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনে ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানান। এ লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, কঠোর নজরদারি এবং আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যাত্রী ও কর্মীদের মধ্যে ইতিবাচক আচরণ গড়ে তোলার ওপর তাঁরা গুরুত্বারোপ করেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “রেলপথ জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। তাই ধূমপানমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে আমরা কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখাবো না।”
অনুষ্ঠানে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ধূমপান ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা পরিষদের সভা আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এতে সভাপতিত্ব করেন।
দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস্য ভূমি। এটা কিন্তু খুব কমই প্রতিকার নিতে পারছি আমরা। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমারও দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে জনগণেরও সচেতনতা প্রয়োজন। ফেনীতে অনুষ্ঠিত অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পাইলট প্রকল্প হিসেবে এটি ফেনী থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি, বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
ফেনী জেলা প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো: পারভেজ হাসান বিপিএএ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব, সাংবাদিক আবু তাহের, ফেনী আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট নুরুল আমিন খান, ফেনী সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজিব তালুকদার, ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুলতানা নাসরিন কান্তা, ফেনী জেলা জামায়াতের আমীর মুফতি আব্দুল হান্নান, ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, বৃহত্তর নোয়াখালীর ভূমি বিষয়ক সার্চ অফিসার সরোয়ার উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফাহমিদা হক প্রমূখ।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন জেলার ভূমি বিভাগ, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ছাত্র প্রতিনিধি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে রয়েছে, কিন্তু এই পদক্ষেপটি আমরা গত সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উত্তরাধিকার হিসেবে গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, গত সরকারের সময়ে প্রকাশিত জিডিপি, ব্যক্তিগত আয়, মাতৃস্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সূচকগুলো বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাস্তবিক অর্থে,স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
উপদেষ্টা আজ বুধবার (১৩ আগষ্ট) প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) কনফারেন্স রুমে নাগরিক উদ্যোগ ও পিপলস হেলথ মুভমেন্ট আয়োজিত "বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণ ও দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে সতর্ক পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন"- শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরিসংখ্যান বহন করলেও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। আগামী ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা গ্রহণের সময় আসবে, এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে তা অনুযায়ী নিয়ম মেনে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে শুল্ক ও জিএসপি সুবিধার প্রভাব কোথায় বৃদ্ধি পাবে এবং কোথায় হ্রাস পাবে, তা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বিদেশ থেকে স্বল্পমূল্যে গরুর মাংস আমদানি করলে দেশীয় গবাদিপশুর বাজারে প্রভাব পড়বে এবং লাখ লাখ খামারি, বিশেষ করে গরীব মহিলারা যারা গরু লালন-পালন করে উদ্যোক্তা হিসেবে অবদান রাখছেন, তাদের ক্ষতি হবে।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বিদেশ থেকে মাংস আমদানি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। কারণ, আমদানি করা মাংসের মাধ্যমে জুনোটিক রোগ প্রবেশের ঝুঁকি রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, সাগরের সি উইড ও কুচিয়া রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি হ্রাস করতে হবে এবং দেশীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এসময় আরো বক্তৃতা করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের জেনেভা ভিত্তিক লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ও সিনিয়র রিসার্চার সানিয়া রিড স্মিথ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ মাসুদ, অ্যাডভোকেট তাসলিমা জাহান প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কো-অর্ডিনেটর বারাকাত উল্লাহ মারুফ।
তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আরও সক্রিয় হয়ে অপতথ্য ও গুজবের বিরুদ্ধে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের নীতি, উন্নয়ন কর্মসূচি ও সাফল্যের প্রচারে তথ্য অধিদপ্তর প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই দায়িত্ব নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করতে হবে।
বুধবার তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘তথ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম অধিকতর দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে’ আয়োজিত আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর।
তথ্য সচিব বলেন, সরকার যেসব জনমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করছে, সেগুলো জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য অধিদপ্তরের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা সরকারের বার্তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেন, তারাই প্রথম চালিকাশক্তি। এখন ডিজিটাল মাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় থাকা সময়ের দাবী।
বর্তমানে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অপতথ্য ও গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন মাহবুবা ফারজানা। তিনি বলেন, অপতথ্যের বিরুদ্ধে আপনাদেরই দক্ষ শক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ, সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও উন্নয়ন কার্যক্রম দ্রুত প্রচার করতে হবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, শিক্ষিত ও দক্ষ। অপতথ্য ছড়ানো গোষ্ঠী ছোট এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা অশিক্ষিত বা সরকারের কাজ সম্পর্কে অবগত নয়। সে তুলনায় আপনারা অনেক বেশি যোগ্য।
তথ্য সচিব বলেন, নিউজ ও কনটেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে শুধু পরিসংখ্যান নয়, মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তনের দিকগুলোও তুলে ধরতে হবে। এজন্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট, ছোট ভিডিও, লাইভ কভারেজ এবং সময়োপযোগী গল্প বলার কৌশল প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ।
তরুণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে মাহবুবা ফারজানা বলেন, আপনারা ইয়াং স্টার। আপনারা অবশ্যই পারবেন। প্রচার-প্রচারণার মান উন্নয়ন করুন। লেখার মান, বলার মান উন্নত করুন। প্রতিটি সংবাদ যেন সরকারের সাফল্যের জীবন্ত চিত্র হয়।
তথ্য সচিব আরও বলেন, সংবাদ শুধু নয়, তথ্য হচ্ছে বিশ্বাসের ভিত্তি। সত্যনিষ্ঠ খবর প্রচার করতে হবে। তথ্যের মাধ্যমে আস্থা গড়ে তুলেই বৈষম্যহীন দেশ গড়তে চাই।
মন্তব্য