কোভিড ১৯ মোকাবিলায় নাগরিকদের ঘরের ভেতরে থাকার আহ্বান জানিয়ে উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা মুসেভেনি একটি আবেগময় ভাষণ দিয়েছেন, এমন একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এ গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়া এই পোস্টে দাবি করা হয়, মুসেভনি জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে কোভিড ১৯ এর সংক্রমণকে যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বাংলায় অনূদিত এই ‘ভাষণে’ মুসেভেনিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘সৃষ্টিকর্তার অনেক কাজ আছে— পুরো দুনিয়াটা দেখভাল করার দায়িত্ব তাঁর। তিনি শুধুমাত্র উগান্ডার বোকা মানুষদের দেখাশুনার জন্যে এখানে বসে নেই।
‘যুদ্ধাবস্থায় কেউ কাউকে ঘরের মধ্যে বসে থাকতে বলে না। আপনি ঘরে থাকলে সেটা আপনার নিজের চয়েস। সত্যি কথা বলতে কী, আপনার যদি একটা বেজমেন্টও থাকে নিজেকে লুকিয়ে রাখার জন্যে তাহলে যুদ্ধের ধ্বংসলীলা যতদিন না শেষ হয় ততদিন আপনি সেখানেই লুকিয়ে থাকবেন।’
এই পোস্টে মুসেভেনিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘যুদ্ধের সময় স্বাধীনতা খর্ব হয়। আপনি ইচ্ছে করেই স্বাধীনতাকে বিসর্জন দেন শুধুমাত্র নিজের বেঁচে থাকার জন্যে। এ সময় আপনি ক্ষুধার জন্যে কারো কাছে নালিশ করেন না। এ সময় আপনি কায়মনোবাক্যে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্যে, বেঁচে থাকলে খেতে পারবেন।
‘যুদ্ধের সময় আপনি আপনার ব্যবসা খোলা রাখার জন্যে তর্ক করেন না। আপনি আপনার দোকান বন্ধ করে দেন (তবে সেই সময়টুকু যদি আপনি পান), এবং জীবন বাঁচানোর জন্যে দৌড়ে পালান। আপনি সারাক্ষণ প্রার্থনা করেন যেন যুদ্ধটা তাড়াতাড়ি শেষ হয় এবং আপনি আপনার ব্যবসাটা আবার চালু করতে পারেন, যদি না আপনার দোকানের সমস্ত মালপত্র লুট হয়ে যায় বা মর্টারের আঘাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।’
করোনার সময় সব কিছু বন্ধ রাখার বিষয়ে মুসেভেনিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘যুদ্ধের সময় একটি দিন বেঁচে থাকতে পারলে আপনি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। এ সময় আপনার সন্তানরা স্কুলে যেতে পারলো না বলে আপনি দু:খ করেন না। আপনি সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেন যাতে সরকার আপনার সন্তানদেরকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্যে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত না করে এবং তাদের স্কুলমাঠেই (যেটি এখন সেনা ক্যাম্প) তাদেরকে প্রশিক্ষণের জন্যে নিয়ে না যায়।
‘পৃথিবীতে এখন একটি যুদ্ধ চলছে — এমন একটি যুদ্ধ যেখানে বন্দুক ও গুলির ব্যবহার নেই, যে যুদ্ধের কোনো সীমানা নেই, যে যুদ্ধ কোনো সীমানা নিয়েও বাধে নাই, কোনো পবিত্র ভূমি নিয়েও না। এই যুদ্ধে কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিও নেই; এ যুদ্ধ থামানোর জন্যে কোনো জাতিসংঘও নেই।
‘এই যুদ্ধের সৈন্যদের কোনোপ্রকার দয়ামায়া নেই। শিশু, মহিলা বা প্রার্থনার স্থান, কোনোকিছুর প্রতিই এই সৈন্যদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। কোনো শাসকগোষ্ঠীকে পরিবর্তন করার ইচ্ছা এদের নেই। মাটির নিচের মূল্যবান খনিজসম্পদ লুন্ঠনের কোনো খায়েশ এদের নেই। ধর্ম, গোষ্ঠী বা আদর্শগত প্রভুত্ব বিস্তারের কোনো লিপ্সাও এদের নেই। ’
করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা প্রসঙ্গে ফেসবুক পোস্টে মুসেভেনিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘শুধু একটাই খায়েশ এদের, আর তা হলো মৃত্যু ঘটানো, মৃতদের আত্মা নিয়ে তাদের ঘরে তোলা, যেমন করে কৃষক ফসল ঘরে তোলেন। এরা ততক্ষণ পর্যন্তু তাদের এ মহোৎসবে মেতে থাকবে যতক্ষণ না পুরো পৃথিবীটা একটা মৃত্যুকূপে পরিণত হবে। এদের উদ্দেশ্য সাধনের ক্ষমতা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকার কোনো কারণ নেই। কোনোরকম যুদ্ধাস্ত্র ছাড়াই পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশে এরা ঘাঁটি গেড়েছে। এদের গতিবিধি বা আক্রমণ কোনো রীতিনীতি বা প্রটোকল দ্বারা আবদ্ধ নয়। এ যুদ্ধের সৈনিকরাই হচ্ছে করোনা ভাইরাস যাকে আমরা সংক্ষেপে কোভিড ১৯ বলি।
‘তবে আশার কথা হচ্ছে, এই সৈন্যদেরও একটা দুর্বলতা আছে এবং এদেরকে হারানো সম্ভব। এর জন্যে যা দরকার তা হলো — আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা, নিয়মনুবর্তিতা এবং ধৈর্য। কোভিড ১৯ সামাজিক এবং শারিরীক দূরত্বে টিকে থাকতে পারে না। এটা সংস্পর্শ/সংঘর্ষকে পছন্দ করে। এটি আমাদের সামাজিক বা শারিরীক দূরত্বের কাছে পরাজয় বরণ করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কাছেও হার মানে। আপনার হাত জীবাণুমুক্ত থাকলে এরা একেবারেই অসহায়।
‘আসুন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি এবং কোভিড ১৯-কে পরাজিত করি। কষ্ট হলেও একটু ধৈর্যধারণ করি। বেশিদিন লাগবে না আমরা আবার স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারব, আমাদের মন যা চায় তা করতে পারব! এই জরুরি মুহূর্তে আমরা জরুরি সেবা প্রদানে রত থাকি এবং অন্যদেরকে ভালোবাসি!’
ফ্যাক্ট চেক
উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা মুসেভেনি জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এসব বলেছেন বলে দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন ফেসবুক পোস্টে। তবে ওই ভাষণের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যসূত্র নেই। প্রতিটি পোস্টের শেষে ‘সংগৃহিত’ শব্দের উল্লেখ আছে।
বাংলাভাষী ফেসবুক ব্যবহারকারীরা মূল পোস্টের লেখা কপি করে তাদের নিজস্ব টাইমলাইনে শেয়ার করছেন।
এই ‘ভাষণ’ এর সত্যতা যাচাইয়ে উগান্ডাসহ আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের গত কয়েক মাসের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করেছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম দফায় দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। পরে কয়েক দফা বাড়িয়ে ২ জুন পর্যন্ত ছিল এ অবস্থা। তবে এরপর আর্থিক বিপর্যয় সামাল দিতে শিথিল করা হয় বিধিনিষেধ। এমনকি উগান্ডার অর্থনীতির অন্যতম উৎস পর্যটন খাতেও বিধিনিষেধ এখন অনেকটাই শিথিল।
উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৭৫১ জন, মারা গেছেন ৩৩৫ জন। উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কোনো নির্দেশনাতেও নাগরিকদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়নি।
তাহলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা মুসেভেনির এই ভাষণটি কবেকার? অথবা আদৌ কি তিনি এ ধরনের কোনো ভাষণ দিয়েছেন?
এর অনুসন্ধানে প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি কাগুতা মুসেভেনির নামেই একটি ওয়েবসাইটের খোঁজ পেয়েছে নিউজবাংলা। yowerikmuseveni.com নামের ওই ওয়েবসাইটে ১৯৮৬ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মুসেভেনি ও তার দল দ্য ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্টের (এনআরএম) দৈনন্দিন সব ধরনের কর্মকাণ্ডের সংকলন রয়েছে।
এই ওয়েবসাইটে জাতির উদ্দেশে মুসেভেনির দেয়া ভাষণসহ সব ধরনের বক্তব্যও রয়েছে। এতে দেখা গেছে, উগান্ডায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোভিড ১৯ ইস্যুতে মোট ১৩টি বক্তব্য ও ভাষণ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এরপর সুনির্দিষ্টভাবে এ বিষয়ে তিনি আর কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা ভাষণ দেননি।
কোভিড ১৯ নিয়ে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি জাতির উদ্দেশে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচটি ভাষণ দিয়েছেন। এই ভাষণের তারিখগুলো হলো, গত বছরের ৪ জুন, ২০ মে, ১৪ এপ্রিল, ২৫ মার্চ ও ১৮ মার্চ। এর বাইরে গত বছরের ২৭ আগস্ট তিনি জাতির উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন। এছাড়া, করোনাভাইরাস ইস্যুতে বিভিন্ন গাইডলাইন তুলে ধরে তিনি বক্তব্য দিয়েছেন সাত বার।
কোভিড ১৯ নিয়ে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির মোট ১৩টি ভাষণ ও বক্তব্য বিশ্লেষণ করেছে নিউজবাংলা। তবে এর কোনোটিতেই বাংলাভাষী ফেসবুক ব্যবহারকারীরা যে কথিত ভাষণের অনুবাদ দিয়েছেন, সে ধরনের কোনো কথা নেই।
ইদি আমিনকে উৎখাত করে উগান্ডার ক্ষমতায় আসা মুসেভেনি গত বছরের ৪ মে একটি বক্তব্য দেন, যার সঙ্গে ফেসবুকে ভাইরাল কথিত ভাষণের সামান্য কিছু মিল রয়েছে। মুসেভেনি সেই বক্তব্যে বলেন, ‘আমি বিষয়টি বুঝি কারণ আমি আমিনবিরোধী (ইদি আমিন) যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছি। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধে লড়েছি। ১৯৮৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান আর বিদ্রোহীদের উৎখাতের লড়াইয়েও অংশ নিয়েছি।’
মুসেভেনি বলেন, ‘২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে বাড়ি না ফিরে বাজারেই আশ্রয় নেয়া বিক্রেতা নারীদের ছবিটি দেখেছি আমি। আমার মনে পড়ে গেছে আশির দশকের যুদ্ধের সময় ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে বন-জঙ্গল আর মরু অঞ্চলে তাঁবু খাটিয়ে থাকা লুয়েরো ট্রায়াঙ্গলের ১০ লাখ অসহায় মানুষের কথা। ১৯৮৬ সালের যুদ্ধ জয়ের আগ পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি তারা। লুয়েরো ট্রায়াঙ্গলের যুদ্ধের সেই স্মৃতি, সেই আত্মত্যাগ আর স্বেচ্ছাসেবার উদ্দীপনাকে আবারও জাগিয়ে তোলার জন্য, সুযোগসন্ধানী ও স্বার্থপরতার সংস্কৃতিকে লজ্জায় ফেলে দেয়ার জন্য স্বাগত জানাচ্ছি।’
প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রশ্নে বলতে চাই, এনআরএম (ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স মুভমেন্ট) সব সময় বুদ্ধি দিয়ে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। আমরা কখনো আত্মঘাতী যুদ্ধ করি না। আত্মঘাতী যুদ্ধ এক ধরনের রাজনৈতিক হঠকারিতা। যে কোনো যুদ্ধে জয়ী হতে হলে সে জয় যেন দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাও নিশ্চিত করতে হয়। আর সে জন্য লড়াই হতে হয় কৌশলী।
‘একই সূত্র করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। মহামারি স্থায়ীভাবে নিয়ন্ত্রণে আমাদের কৌশল হলো ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করা। আর সংক্রমণ এড়াতে হলে জনগণকে সচেতন হতে হবে সবচেয়ে আগে। শুধু এ লক্ষ্যেই ৩৫টি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তবে এই সংক্রমণ এড়ানোর লক্ষ্য অর্জন যেন আত্মঘাতী পদক্ষেপ হয়ে না দাঁড়ায়, তাও খেয়াল রাখা দরকার। গণহারে সংক্রমণ আর আত্মঘাতী হওয়া এক সঙ্গে ঠেকানো কীভাবে সম্ভব?’
ওই বক্তব্যের বাকি অংশে লকডাউন মেনে চলার আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। আর লকডাউন শিথিলের পর গত বছরের ৪ জুন এ বিষয়ে সবশেষ তিনি যে ভাষণ দেন, সেখানে বেশিরভাগ অংশ জুড়েই ছিল বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের আহ্বান।
আরও পড়ুন:স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: বাসস
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সমন্বয়ের কোনো সমস্যা নেই। এটি কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি সার্বিক সমস্যা।’
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মো. আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বক্তব্য দেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোট ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সরকার দেবে এবং বাকি ৪৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কিছু নির্দেশনা প্রকাশ করে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিসরের কায়রোতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ১৬৬ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় বিশ্রাম কক্ষ রাখা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে পরিষেবা পান সেজন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বুথ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রাস্তা ও সেতু নির্মাণের সময় বন্যার বিষয়টি বিবেচনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স (তৃতীয় পর্যায়) নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে সত্যজিৎ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে বাকি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সগুলোর নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি উপকূলীয় এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি সোলার সিস্টেম রাখার জন্য একটি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেগুলোর সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে বলেন, যাতে করে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।
মিরপুরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য ১১৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে নারীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব করতে না চাইলেও মাঝে মাঝে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে বিলম্ব হয়।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল- অতিরিক্ত ২৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত); ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাশিনাথপুর-দাশুরিয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘি সীমান্ত জাতীয় মহাসড়কের যথাযথ মান উন্নয়ন; ৩৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি মৎস্য খামারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়); ২৩২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারের উন্নয়ন; অতিরিক্ত ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো, উন্নত দক্ষতা ও তথ্যের প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টিকে থাকার সামর্থ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা (প্রথম সংশোধিত)।
আরও পড়ুন:কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য।
দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হয়ে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমি কারও অন্যায় আবদার শুনব না। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে নয়, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হব। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। আমি শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানাই।’
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের লোক নই। আমি কোনো ধরনের গ্রুপে যেতে চাই না। এ বয়সে আমার কোনো গ্রুপিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাকে যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে পাঠিয়েছেন, আমি সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই।’
উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু না হওয়া প্রসঙ্গে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-ট্রেইনারদের নিয়ে এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আশা করি, সেবায় প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম জায়গায় অবস্থান করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা উপাচার্য হিসেবে তার একমাত্র অ্যাজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।
এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”
তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”
ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।
‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।
আরও পড়ুন:ঈদের পর সমাধান করা হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে এক মাসের জন্য আন্দোলন থামালেন বেতন-ভাতা বাড়ানো ও বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনকারী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে দাবিগুলো করেছেন সেগুলো যৌক্তিক। চিকিৎসকরা হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখে। তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে। তারা কাজে যোগদান করুক।’
বিষয়টি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন তো লাগবেই। তবে ঈদের পর হয়তো বলতে পারব, কতদিনের মধ্যে বেতন বাড়বে।’
এর আগে গত শনিবার (২৩ মার্চ) চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আগামী মাসে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব পাবে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
ওই সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, শেখ তামিমের সফরে জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় উভয় দেশ।
কাতারের আমিরের সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে সূত্রটি বলেছে, সফরকালে এসব এমওইউ ও চুক্তি সই করা হবে।
ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারের আমিরের দুই দিনের সফরটি হতে পারে আগামী ২১ থেকে ২২ এপ্রিল।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমিরের বৈঠকের পর যেসব এমওইউ ও চুক্তি সই হবে, সেগুলো নিয়ে দুই পক্ষ এখন কাজ করছে। সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছে।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের সম্মেলন এলডিসি-৫-এর পার্শ্ববৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠকে কাতারের কাছে বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর একই বছরের ৪ মার্চ বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কাতার।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলে কাতার।
আরও পড়ুন:দেশের সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে আজকের বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
সিনপটিক অবস্থান নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা আছে, সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা সোমবার সকালে ছিল ৮৫%।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য