ধামরাইয়ের যশোমাধবের রথের খ্যাতি দেশজুড়ে। প্রতিবছর হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম এই রথযাত্রায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় অংশ নেন।
তবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে গত বছর বন্ধ ছিল প্রায় ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রা। কেবল ধর্মীয় আচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এর আগে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই রথটি পুড়িয়ে দেয়ায় ওই সময় রথযাত্রা বন্ধ ছিল।
শুরুর পর চলতি বছর তৃতীয়বারের মতো রথযাত্রা স্থগিত হলো বলে জানিয়েছে যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদ।
ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রার আদ্যোপান্ত নিউজবাংলাকে জানান যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন।
জগন্নাথ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর দ্বাপর যুগের অবতার কৃষ্ণের এক বিশেষ রূপ। কৃষ্ণের এই রূপকে তার দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে পূজা করা হয়। ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় (বস্তার অঞ্চল), পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার, অসম, মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যে এবং বাংলাদেশে জগন্নাথের পূজা প্রচলিত।
ধামরাই উপজেলার এই জগন্নাথ রথ বা যশোমাধব রথ জগন্নাথের প্রতি উৎসর্গ করা একটি রথমন্দির। প্রতিবছর রথযাত্রার দিন একটি সুবিশাল ছয়তলা রথে মাঝে সুভদ্রা, তার ডানে বলরাম ও বাঁয়ে জগন্নাথরূপী কৃষ্ণের প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় এখানে।
রথটি হিন্দু দেবদেবীর নানা ছবিতে সজ্জিত থাকে। জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি যাওয়া উপলক্ষে প্রতিবছরই আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথ টানা হয়। চাকার ওপর স্থাপন করা বিশেষ রথের ভেতর দেবতার প্রতিমা বসিয়ে নেয়া হয় ধামরাই বাজার থেকে পৌর এলাকার কায়েতপাড়ার মাধব মন্দিরে। সারা দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা এই রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে আসেন। আয়োজন করা হয় মাসব্যাপী মেলারও। রথ নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন-
‘রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,
মূর্তি ভাবে আমি দেব—হাসে অন্তর্যামী।’
তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আটকে গেছে যশোমাধবের রথের চাকা। ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে রথযাত্রার দিন হলেও এবারও হচ্ছে না অনুষ্ঠান। প্রতিবছর রথযাত্রা উপলক্ষে পুরো ধামরাই বাজার এলাকায় সাজ সাজ রব থাকলেও এ বছর নেই কোনো আড়ম্বর। কর্মব্যস্ততাও নেই যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটিরও।
নন্দ গোপাল বলেন, ‘লোকমুখে জানা যায়, একসময় ধামরাই এলাকার রাজা ছিলেন শ্রীযশোপাল। সেই সময় সাভারের শিমুলিয়া থেকে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে ধামরাইয়ের কাশবন ও দুর্গম এলাকা পার হয়ে পাশের এক গ্রামে যাচ্ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে কায়েতপাড়ায় এসে একটি মাটির ঢিবির সামনে থেমে যায় তাকে বহনকারী হাতি। রাজা শতচেষ্টা করেও হাতিটিকে সামনে নিতে পারেন না। তখন তিনি হাতি থেকে নেমে স্থানীয় লোকজনকে ওই মাটির ঢিবি খনন করার নির্দেশ দেন। সেখানে পাওয়া যায় একটি মন্দির। পাওয়া যায় বেশ কিছু মূর্তিও। এর মধ্যে শ্রীবিষ্ণুর মূর্তির মতো দেখতে শ্রীমাধব মূর্তিও ছিল। তখন রাজা ভক্তি করে সেগুলো সঙ্গে নিয়ে যান। সে রাতেই শ্রীমাধবকে স্বপ্নে দেখেন রাজা যশোপাল। দেবতা তাকে নির্দেশ দেন পূজা করার। আর বলে দেন, রাজার নামের সঙ্গে মাধবের নাম জুড়ে নিতে। এরপরেই রাজা যশোপালের নাম হয়ে যায় যশোমাধব। পরে ধামরাই সদরে ঠাকুরবাড়ি পঞ্চাশ গ্রামের বিশিষ্ট পণ্ডিত শ্রীরাম জীবন রায়কে তিনি ওই মাধব মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। এখনও সেই মূর্তির পূজার প্রচলন রয়েছে। সময়টি ছিল চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি। সেই থেকেই শুরু হয় যশোমাধবের পূজা।’
যেভাবে বানানো হয় রথ
নন্দ গোপাল আরও বলেন, ‘বাংলা ১০৭৯ সাল থেকে ধামরাইয়ের রথযাত্রা ও রথমেলা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। কালের পরিবর্তনে কখন বাঁশের রথটি কাঠের রথে পরিণত হয় তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। বাঁশের রথের পর বাংলা ১২০৪ থেকে ১৩৪৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলার সাটুরিয়া থানার বালিয়াটির জমিদাররা বংশানুক্রমে এখানে চারটি রথ তৈরি করেন।
‘১৩৪৪ সালে রথের ঠিকাদার ছিলেন নারায়ণগঞ্জের প্রয়াত সূর্য নারায়ণ সাহা। এ রথ তৈরি করতে সময় লাগে এক বছর। ধামরাই, কালিয়াকৈর, সাটুরিয়া, সিঙ্গাইর থানার বিভিন্ন কাঠশিল্পী যৌথভাবে নির্মাণকাজে অংশ নিয়ে ৬০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন রথটি তৈরি করেন।’
‘তিনতলা রথটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় চার কোণে চারটি প্রকোষ্ঠ ও তৃতীয় তলায় একটি প্রকোষ্ঠ ছিল। বালিয়াটির জমিদাররা চলে যাওয়ার পরে রথের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন টাঙ্গাইলের রণদা প্রসাদ সাহার পরিবার।’
মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রথটি
১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল ধামরাই গণহত্যার দিনই এই রথ পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি হানাদাররা। পুড়িয়ে দেয়ার আগে রথটির কাঠের তৈরি তিনতলাবিশিষ্ট ৪০ ফুট প্রস্থ, ৭৫ ফুট উচ্চতা, ৯টি প্রকোষ্ঠ, ৩২টি চাকা ও ৯টি মাথাবিশিষ্ট কাঠামো ছিল। সৌন্দর্যশৈলীর নানা কারুকার্য খচিত ছিল রথটিতে।
যেভাবে পুনরায় শুরু হয় রথযাত্রা
যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে এই রথ না থাকায় উৎসব বন্ধ ছিল এক বছর। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোট আকারে একটি বাঁশ ও কাঠের রথ নির্মাণ করে উৎসব পালন করে। ১৯৭৪ সালে বৃহৎ রথের আদলে ছোট পরিসরে কাঠের রথ নির্মাণ করে পুনরায় রথ উৎসবের নবযাত্রা শুরু হয়।
সবশেষ ২০১৩ সালে পুরোনো রথের আদলে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রথ তৈরি করে দেয় তৎকালীন সরকার। ৪০ জন শিল্পী ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে ৩৭ ফুট উচ্চতা ও ২০ ফুট প্রস্থের কারুকার্যখচিত বর্তমান রথটি নির্মাণ করেন।
লোহার খাঁচার ওপর সেগুন ও চাম্বল কাঠ বসিয়ে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় সব শৈল্পিক নিদর্শন। এতে রয়েছে লোহার তৈরি ১৫টি চাকা। রথের সামনে রয়েছে কাঠের তৈরি দুটি ঘোড়া ও সারথি।
এ ছাড়া রথের বিভিন্ন ধাপে প্রকোষ্ঠের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কাঠের তৈরি দেব-দেবীর প্রতিমা। প্রতিবছর রথযাত্রার আগে রং চড়ানো ও সাজসজ্জার কাজ করে এটিতেই অনুষ্ঠিত হয় রথ উৎসব।
নন্দ গোপাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে গত বছরের পর এ বছরও সীমিত পরিসরে রথযাত্রা উপলক্ষে কায়েতপাড়া মন্দিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু ধর্মীয় পূজা-অর্চনা করা হবে। ১১ জুলাই রাতে অধিবাস পূজা হবে। আর বিকেলে প্রশাসনের নির্দেশ পেলে মাসির বাড়ি নেয়া হবে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামকে। তবে রথের মেলা এ বছরও বসছে না।’
রথযাত্রার আনু্ষ্ঠানিকতার বিষয়ে ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিক রহমান বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলমান লকডাউনের মধ্যে সব জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই কারণে রথযাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। মন্দিরের ভেতরেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজার কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য