ধামরাইয়ের যশোমাধবের রথের খ্যাতি দেশজুড়ে। প্রতিবছর হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেশের প্রাচীন ও বৃহত্তম এই রথযাত্রায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় অংশ নেন।
তবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে গত বছর বন্ধ ছিল প্রায় ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রা। কেবল ধর্মীয় আচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এর আগে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই রথটি পুড়িয়ে দেয়ায় ওই সময় রথযাত্রা বন্ধ ছিল।
শুরুর পর চলতি বছর তৃতীয়বারের মতো রথযাত্রা স্থগিত হলো বলে জানিয়েছে যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদ।
ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রার আদ্যোপান্ত নিউজবাংলাকে জানান যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন।
জগন্নাথ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর দ্বাপর যুগের অবতার কৃষ্ণের এক বিশেষ রূপ। কৃষ্ণের এই রূপকে তার দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে পূজা করা হয়। ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় (বস্তার অঞ্চল), পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খন্ড, বিহার, অসম, মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যে এবং বাংলাদেশে জগন্নাথের পূজা প্রচলিত।
ধামরাই উপজেলার এই জগন্নাথ রথ বা যশোমাধব রথ জগন্নাথের প্রতি উৎসর্গ করা একটি রথমন্দির। প্রতিবছর রথযাত্রার দিন একটি সুবিশাল ছয়তলা রথে মাঝে সুভদ্রা, তার ডানে বলরাম ও বাঁয়ে জগন্নাথরূপী কৃষ্ণের প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় এখানে।
রথটি হিন্দু দেবদেবীর নানা ছবিতে সজ্জিত থাকে। জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি যাওয়া উপলক্ষে প্রতিবছরই আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথ টানা হয়। চাকার ওপর স্থাপন করা বিশেষ রথের ভেতর দেবতার প্রতিমা বসিয়ে নেয়া হয় ধামরাই বাজার থেকে পৌর এলাকার কায়েতপাড়ার মাধব মন্দিরে। সারা দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা এই রথযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে আসেন। আয়োজন করা হয় মাসব্যাপী মেলারও। রথ নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন-
‘রথযাত্রা, লোকারণ্য, মহা ধুমধাম,
ভক্তেরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম।
পথ ভাবে আমি দেব রথ ভাবে আমি,
মূর্তি ভাবে আমি দেব—হাসে অন্তর্যামী।’
তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আটকে গেছে যশোমাধবের রথের চাকা। ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে রথযাত্রার দিন হলেও এবারও হচ্ছে না অনুষ্ঠান। প্রতিবছর রথযাত্রা উপলক্ষে পুরো ধামরাই বাজার এলাকায় সাজ সাজ রব থাকলেও এ বছর নেই কোনো আড়ম্বর। কর্মব্যস্ততাও নেই যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটিরও।
নন্দ গোপাল বলেন, ‘লোকমুখে জানা যায়, একসময় ধামরাই এলাকার রাজা ছিলেন শ্রীযশোপাল। সেই সময় সাভারের শিমুলিয়া থেকে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে ধামরাইয়ের কাশবন ও দুর্গম এলাকা পার হয়ে পাশের এক গ্রামে যাচ্ছিলেন তিনি। এরই মধ্যে কায়েতপাড়ায় এসে একটি মাটির ঢিবির সামনে থেমে যায় তাকে বহনকারী হাতি। রাজা শতচেষ্টা করেও হাতিটিকে সামনে নিতে পারেন না। তখন তিনি হাতি থেকে নেমে স্থানীয় লোকজনকে ওই মাটির ঢিবি খনন করার নির্দেশ দেন। সেখানে পাওয়া যায় একটি মন্দির। পাওয়া যায় বেশ কিছু মূর্তিও। এর মধ্যে শ্রীবিষ্ণুর মূর্তির মতো দেখতে শ্রীমাধব মূর্তিও ছিল। তখন রাজা ভক্তি করে সেগুলো সঙ্গে নিয়ে যান। সে রাতেই শ্রীমাধবকে স্বপ্নে দেখেন রাজা যশোপাল। দেবতা তাকে নির্দেশ দেন পূজা করার। আর বলে দেন, রাজার নামের সঙ্গে মাধবের নাম জুড়ে নিতে। এরপরেই রাজা যশোপালের নাম হয়ে যায় যশোমাধব। পরে ধামরাই সদরে ঠাকুরবাড়ি পঞ্চাশ গ্রামের বিশিষ্ট পণ্ডিত শ্রীরাম জীবন রায়কে তিনি ওই মাধব মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। এখনও সেই মূর্তির পূজার প্রচলন রয়েছে। সময়টি ছিল চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথি। সেই থেকেই শুরু হয় যশোমাধবের পূজা।’
যেভাবে বানানো হয় রথ
নন্দ গোপাল আরও বলেন, ‘বাংলা ১০৭৯ সাল থেকে ধামরাইয়ের রথযাত্রা ও রথমেলা উৎসব পালিত হয়ে আসছে। কালের পরিবর্তনে কখন বাঁশের রথটি কাঠের রথে পরিণত হয় তার সঠিক ইতিহাস জানা যায়নি। বাঁশের রথের পর বাংলা ১২০৪ থেকে ১৩৪৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা জেলার সাটুরিয়া থানার বালিয়াটির জমিদাররা বংশানুক্রমে এখানে চারটি রথ তৈরি করেন।
‘১৩৪৪ সালে রথের ঠিকাদার ছিলেন নারায়ণগঞ্জের প্রয়াত সূর্য নারায়ণ সাহা। এ রথ তৈরি করতে সময় লাগে এক বছর। ধামরাই, কালিয়াকৈর, সাটুরিয়া, সিঙ্গাইর থানার বিভিন্ন কাঠশিল্পী যৌথভাবে নির্মাণকাজে অংশ নিয়ে ৬০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন রথটি তৈরি করেন।’
‘তিনতলা রথটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় চার কোণে চারটি প্রকোষ্ঠ ও তৃতীয় তলায় একটি প্রকোষ্ঠ ছিল। বালিয়াটির জমিদাররা চলে যাওয়ার পরে রথের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন টাঙ্গাইলের রণদা প্রসাদ সাহার পরিবার।’
মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রথটি
১৯৭১ সালের ৯ এপ্রিল ধামরাই গণহত্যার দিনই এই রথ পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি হানাদাররা। পুড়িয়ে দেয়ার আগে রথটির কাঠের তৈরি তিনতলাবিশিষ্ট ৪০ ফুট প্রস্থ, ৭৫ ফুট উচ্চতা, ৯টি প্রকোষ্ঠ, ৩২টি চাকা ও ৯টি মাথাবিশিষ্ট কাঠামো ছিল। সৌন্দর্যশৈলীর নানা কারুকার্য খচিত ছিল রথটিতে।
যেভাবে পুনরায় শুরু হয় রথযাত্রা
যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে এই রথ না থাকায় উৎসব বন্ধ ছিল এক বছর। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা ছোট আকারে একটি বাঁশ ও কাঠের রথ নির্মাণ করে উৎসব পালন করে। ১৯৭৪ সালে বৃহৎ রথের আদলে ছোট পরিসরে কাঠের রথ নির্মাণ করে পুনরায় রথ উৎসবের নবযাত্রা শুরু হয়।
সবশেষ ২০১৩ সালে পুরোনো রথের আদলে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রথ তৈরি করে দেয় তৎকালীন সরকার। ৪০ জন শিল্পী ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে ৩৭ ফুট উচ্চতা ও ২০ ফুট প্রস্থের কারুকার্যখচিত বর্তমান রথটি নির্মাণ করেন।
লোহার খাঁচার ওপর সেগুন ও চাম্বল কাঠ বসিয়ে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় সব শৈল্পিক নিদর্শন। এতে রয়েছে লোহার তৈরি ১৫টি চাকা। রথের সামনে রয়েছে কাঠের তৈরি দুটি ঘোড়া ও সারথি।
এ ছাড়া রথের বিভিন্ন ধাপে প্রকোষ্ঠের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কাঠের তৈরি দেব-দেবীর প্রতিমা। প্রতিবছর রথযাত্রার আগে রং চড়ানো ও সাজসজ্জার কাজ করে এটিতেই অনুষ্ঠিত হয় রথ উৎসব।
নন্দ গোপাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনার কারণে গত বছরের পর এ বছরও সীমিত পরিসরে রথযাত্রা উপলক্ষে কায়েতপাড়া মন্দিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু ধর্মীয় পূজা-অর্চনা করা হবে। ১১ জুলাই রাতে অধিবাস পূজা হবে। আর বিকেলে প্রশাসনের নির্দেশ পেলে মাসির বাড়ি নেয়া হবে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরামকে। তবে রথের মেলা এ বছরও বসছে না।’
রথযাত্রার আনু্ষ্ঠানিকতার বিষয়ে ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিক রহমান বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলমান লকডাউনের মধ্যে সব জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই কারণে রথযাত্রাও বাতিল করা হয়েছে। মন্দিরের ভেতরেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজার কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
মন্তব্য