× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

ইভেন্ট
আমাগো নাম দিয়েন না লজ্জা লাগে
google_news print-icon

‘আমাগো নাম দিয়েন না, লজ্জা লাগে’

আমাগো-নাম-দিয়েন-না-লজ্জা-লাগে
ঈদের বকশিস নিতে মসজিদের বাইরে ছিন্নমূল মানুষের অপেক্ষা। ছবি: নিউজবাংলা
রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় গত একমাস ধরেই রাতের তারাবি নামাজের পর ছিন্নমুল মানুষদেরকে মসজিদের আশেপাশে ভিড় করতে দেখা যায়। উদ্দেশ্য একটাই, বকশিসের টাকা সংগ্রহ। ঈদের দিন বকশিস পাওয়া যায় আরও বেশি।

‘বাজান সকাল থাইকান বসে আছি। আইতে একটু লেট কইরা ফালাছিলাম তাই বকশিস পাই নাই। নাতনিডাও আমার সাথে আইয়া বইছিল। ওর মনডি খারাপ। আপনে কি নিউজ করবার জন্য জিগাইলেন। আমাগো নাম দিয়েন না। লজ্জা লাগে।’

কথাগুলো বলছিলেন সিদ্ধেশ্বরী জামে মসজিদের পাশে বসে থাকা জাহানারা বেগম (ছদ্মনাম)। সকালে ঈদের জামাতের পর মুসল্লিরা রাস্তায় বসে থাকা জাহানারা বেগমের মত আরও অনেককে বকশিস দিয়ে থাকেন। যার যেমন মানসিকতা ও সাধ্য তাই দান করেন জাহানারা বেগমদের।

রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় গত একমাস ধরেই রাতের তারাবি নামাজের পর ছিন্নমুল মানুষদেরকে মসজিদের আশেপাশে ভিড় করতে দেখা যায়। উদ্দেশ্য একটাই, বকশিসের টাকা সংগ্রহ। মানুষের বাসায় কাজ করার পাশাপাশি এই টাকা দিয়েই ঈদ পালন করেন তারা।

জাহানারা বেগমের নাতনি রাজধানীর একটি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ঈদ উপলক্ষে দান থেকে একটা জামা পেয়েছে সে। জামাটা গায়ের চেয়ে কয়েক সাইজ বড়; হাতে পরেছে কিছু পুরান চুড়ি।

ঈদে নাতনির জন্য কিছু কিনতে পেরেছেন কি না জানতে চাইলে জাহানারা বলেন, ‘না বাজান। যেই বাড়িতে কাজ করি হ্যাতেরা একটা জামা দিছে। কিন্তু সেটাও নাতনির পরনে একটু বড় হইয়া গ্যাছে। কী আর করুম। বলছি এইডাই পর। টাকা তুলবার পারলে পরে কিনা দিবনে।’

এমনই আরেকজন শিউলি আক্তার (ছদ্মনাম)। একটা বাসায় কাজ করেন। মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা পান। তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। ঈদের দিন সকালে একটু সেমাই রান্না করেই অবস্থান নেন মগবাজারের শাহ আলী মাজার মসজিদ পাশে।

বললেন, ‘অনেকেই ট্যাকা দিসে। এইখানে নাকি আরও আগে থাইক্যা ট্যাকা দিতাছে। আমার দেরি হয়ে গেছে। আগে আসলে আরও বেশি পাইতাম।’

মালিবাগ থেকে মগবাজার মূল রাস্তার উপর দিয়ে উঠে গেছে ফ্লাইওভার। এই ফ্লাইওভারের নিচে বসতি গড়ছে অনেক ছিন্নমূল মানুষ। মানুষের বাসায় কাজ করে অথবা ভিক্ষা করে দিননিপাত করেন তারা।

‘আমাগো নাম দিয়েন না, লজ্জা লাগে’

কথা হয় সাত বছর বয়সী জ্যোৎস্নার সঙ্গে। ফ্লাইওভার এর নিচে পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। মা গেছে বাইরে।

জ্যোৎস্না বলল, ‘সকাল থাইক্যা মা নাইতো। একটা জামা রাইখ্যা গেছিল। এই যে লাল রঙয়ের। এইডা পরছি।

মা কই জানতে চাইলে জ্যোৎস্না বলে, ‘মা তো টাকা আনতি গেছে। সকাল থিকা দেখি নাই।’

রাজধানীতে শুক্রবার ছিন্নমূলদের এভাবেই কেটেছে ঈদের সকাল-বিকেল। ঈদের বকশিস অনেকের জন্য ধরা দিয়েছে আয়ের অন্যতম উপলক্ষ হয়ে। সঙ্গে ভালো খাবার তাদের কাছে বাড়তি পাওনা।

রিকশাচালক হযরত আলী একাই থাকেন ঢাকাতে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া মেয়ে বৃহস্পতিবার ফোন দিয়ে বাবাকে বাড়ি ফিতে বলেছে। তবে বাড়ি ফেরার মত পুঁজি তার হয়নি।

নিউজবাংলাকে হযরত বলেন, ‘আমার মায়াডা সিক্সে পড়ে। লালমনিরহাট বাড়ি আমার। কিছু কিনে দিবার পারি নাই। পাঁচশ টাকা ওর মাকে পাঠায়ছি। এই টাকায় কি হয়। দুইমাস ধরে ছিড়া লুঙ্গি পিন্দা আছি মামা। কি করুম কোন। লকডাউনে তো সব শ্যাষ। বাড়িত যামু তয় গাড়ি নাই। মেলা ট্যাকা লাগে। সকাল থিকাই রিকশা নিয়ে বের হয়েছি।’

ঢাকায় হযরত আলীর মত মানুষের সংখ্যা নেহাত কম না। তাদের নির্দিষ্ট ঘড়বাড়ি নেই। ফুটপাথ বা ফ্লাইওভারের নিচে কোনোভাবে রাত যাপন করেন।

ঢাকায় ছিন্নমূল মানুষদের নিয়ে সাজেদা ফাউন্ডেশনের ‘আমরাও মানুষ’ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে। ওই প্রকল্পের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ সালে ঢাকা শহরের দেড় কোটি মানুষের মধ্যে বর্তমানে অনুমানিক ২০ থেকে ২২ হাজার লোক ফুটপাতে বসবাস করে। তাদের অনেকে ৩০ থেকে ৩৫ বছর ধরে ফুটপাতে বসবাস করছে।

আরও পড়ুন:
আরেক বিষণ্ন ঈদ
ফিরতি যাত্রায় দেরির সুপারিশ
ঈদ জামাতে করোনামুক্তির প্রার্থনা
‘অসহায় মানুষ যেন ঈদের আনন্দ বঞ্চিত না হয়’
ঈদে উষ্ণতম শুভেচ্ছা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ইভেন্ট
Tensions on the border Push in continued despite the protest of Bangladesh

সীমান্তে উত্তেজনা: বাংলদেশের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পুশ-ইন অব্যাহত

সীমান্তে উত্তেজনা: বাংলদেশের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পুশ-ইন অব্যাহত

‘বাংলাদেশি’ ট্যাগ দিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে শিশু, নারী-পুরুষদের ঠেলে দিচ্ছে (পুশ-ইন) ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ নিয়ে প্রতিবেশী এই দুই দেশের অভিন্ন সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

বিএসএফের পুশ-ইন করা মানুষের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও পরিচয় না জানাও অনেকে রয়েছেন। বিষয়টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও জনসম্পৃক্ততায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানো হলেও সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক সূত্র জানায়, শুধু বৃহস্পতিবারই (২২ মে) একশর বেশি মানুষ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পাঠানো হয়েছে। পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, মৌলভীবাজার, ফেনী, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়ির সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।

সরকারি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ থেকে ১৫ মের মধ্যে ভারতে থেকে অন্তত তিন শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয়েছে।

বিজিবি ও সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মতে, ভারতের দিক থেকে ‘পুশ-ইন’ কিংবা ‘পুশ-ইনের চেষ্টা’ ক্রমেই বাড়ছে। এ ছাড়া সীমান্তে চলাচলের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএসএফ, যা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে বলে জানা যায়।

অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য ভারত ও বাংলাদেশ আইনি কাঠামোর পাশাপাশি চুক্তি করলেও সেসব উপেক্ষা করেই পুশ-ইন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন এবং দুই দেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পরিপন্থী।

বিএসএফের পুশ-ইনের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, কিছু বাংলা ভাষাভাষী ব্যক্তিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানোর পর আটক করেছে বিজিবি। তারা কোনো পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট দেখাতে পারেননি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ দাবি করছেন যে তারা এর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন।

আইজিপি জানান, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা তাদের পরিচয় যাচাইয়ের পর পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আটকদের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাদের চোখ বেঁধে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে এনে নির্জন সীমান্ত এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়েছে।

বিজিবি তাদের আটক করে পরিচয় জানতে ও যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

গত বুধবার (২১ মে) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং নির্ধারিত পদ্ধতির বাইরে যাতে কিছু না ঘটে, তার জন্য ঢাকার পক্ষ থেকে চেষ্টা চলছে।

নির্ধারিত কার্যপ্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তারা (ভারত) তাদের অবস্থান কিছুটা জানিয়েছে, আমরাও আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করছি যে এটা সঠিক নয়।’

উপদেষ্টা জানান, ভারত একটি তালিকা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যাচাই করছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হলো, প্রত্যেকটি ঘটনা পৃথকভাবে খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রকৃত বাংলাদেশি হিসেবে প্রমাণ থাকলেই কেবল তাদের গ্রহণ করা হবে।

সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, যেকোনো প্রত্যাবাসনই কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমেই হওয়া উচিত।

মন্তব্য

ইভেন্ট
All government office banks open today 

সকল সরকারি অফিস-ব্যাংক আজ খোলা 

সকল সরকারি অফিস-ব্যাংক আজ খোলা 

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি নিশ্চিত করতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আজ শনিবারও সরকারি অফিস খোলা রয়েছে।

সরকারি অফিসের পাশাপাশি দেশের সকল ব্যাংকও খোলা আছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে ৬ মে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করার কারণে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সরকারি চাকরিজীবীরা ঈদের ছুটি উপভোগ করবেন। এই টানা ছুটি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই মূলত ১৭ ও ২৪ মে—এই দুই শনিবার অফিস চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সাধারণত সপ্তাহের এই দিনগুলোতে সরকারি অফিস বন্ধ থাকে, তবে এবার তা পরিবর্তন করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ছুটিকালীন সময়ে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে ১৭ ও ২৪ মে—এই দুই শনিবার সব অফিস যথারীতি চালু থাকবে। এছাড়া, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবাগুলো যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, বন্দর, পরিচ্ছন্নতা, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা, ডাক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট যানবাহন ও কর্মীরা ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।

একইভাবে, চিকিৎসা সেবা, হাসপাতাল এবং ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহনে নিয়োজিত কর্মী ও যানবাহনও এই ছুটির বাইরে থাকবে। সরকারি দপ্তরের ব্যতিক্রমধর্মী এ উদ্যোগের ফলে টানা ছুটির সুবিধা যেমন মিলবে, তেমনি দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোর কার্যক্রমও নির্বিঘ্নে চলবে।

মন্তব্য

ইভেন্ট
Meherpur khameris are in doubt about getting big beef prices 

বড় গরুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় মেহেরপুরের খামারিরা 

বড় গরুর দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় মেহেরপুরের খামারিরা 

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু কেনাবেচা নিয়ে ব‍্যস্ততা বেড়েছে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পালনকারীদের মধ্যে। ক্রেতারা খুঁজছেন বাজেটের মধ্যে পছন্দের কোরবানির পশু। আর মধ‍্যস্বত্বভোগী ব‍্যবসায়ীরা চাইছেন বাড়তি মুনাফা। বিপরীতে গরু পালনকারী প্রান্তিক চাষি ও খামারিরা চাইছেন ন‍্যায‍্য মূল্য, যাতে করে সব খরচ বাদ দিয়ে থাকে বাড়তি মুনাফা।

ত্রিমুখী চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছে আকারে বড় গরু পালনকারী প্রান্তিকচাষিরা। কেননা, গোখাদ‍্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে আকারে বড় গরু পালন করতে প্রতিদিন একটা বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়তি পরিচর্যার খরচ। কেননা, গরমে বৈদ্যুতিক লোডশেডিং বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকারে বড় পশুগুলোর স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

তেমনি একজন বড় গরু পালনকারী চাষি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার করমদী গ্রামের হাউশ আলী। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ঈদের সময় বিক্রির জন্য আকারে বড় একটি পশু পালন করে আসছেন, যাকে ঘিরে থাকে পরিবারের অনেক স্বপ্ন। নিজের সন্তানের মতো করে লালন-পালন করা পশুটি কোরবানির ঈদে বিক্রি করে কাঙ্ক্ষিত মূল‍্য পেলে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা মেলে।

সেই স্বপ্ন ধারণ করে দুই বছর আগে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গরু কিনেছিলেন। সেই গরুটির নাম রাখা হয়েছে রাজাবাবু। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা এই পশুটির বতর্মান ওজন ১ হাজার কেজির বেশি হবে। স্থানীয় বাজারে এতবড় পশুর চাহিদা না থাকায় তাকে নেওয়া হবে ঢাকার পশু হাটে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন পালনকারী। ৯ ফুট লম্বা আর ৮ ফুট উচ্চতার রাজাবাবুর দাম তিনি হাঁকিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। বড় আকারের গরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে দেখতে আসেন অনেকেই। সাদা কালো বর্ণের গরুটির খাবারের তালিকায় প্রতিদিন থাকে, কাঁচা ঘাস, গমের ভূষি, ভাত ও শুকনা খড়সহ অন্যান্য সামগ্রী। গড়ে বতর্মানে প্রতিদিন ১ হাজার ৫০০ টাকার খাবার খাচ্ছে রাজাবাবু।

প্রচণ্ড গরম আর ন‍্যায‍্য দাম পাওয়া নিয়ে হাউশ আলীর মতো দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বড় গরু পালনকারী সব চাষি ও খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ‍্যমতে, এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এই জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

বড় গরু পালনকারী রিপন হোসেন বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদে আমি একটি গরু লালন-পালন করেছিলাম। যার ওজন হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ কেজি। ভালো দাম পাব বলে আমি ঢাকার হাটে নিয়ে গিয়েছিলাম বেচতে। সেখানে গিয়ে বিপদ। কেউ গরুর ন‍্যায‍্য মূল‍্য দিতে চায় না। সবাই কম দাম বলে। শেষে আমি রাগ করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে গরু ফেরত এনে স্থানীয় হাটে বিক্রি করেছি। আমি ভাবলাম আমার যা লস হইছে হোক। লাভ করলে আমার এলাকার লোক করুক।’

আরেক চাষি ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বড় বড় তিনটি গরু ছিল। বিশ দিন আগে একটা গরু গরমে স্ট্রোক করে মরে গেছে। আরেকটি অসুস্থতাজনিত কারণে জবাই করে মাংস বিক্রি করেছি। মূলত বড় গরু আমরা কষ্ট করে পালন করি ঠিকই। কিন্তু ভালো দাম পাই না। যার কারণে যাদের বাড়ি কিংবা খামারে আকারে বড় গরু আছে, তারাই বতর্মানে চিন্তার মধ‍্যে আছেন।’

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. সুব্রত কুমার ব্যানার্জী বলেন, ভৌগোলিক কারণে এই জেলায় প্রাকৃতিক গোখাদ্যের কমতি নেই। তাই বাজারে গোখাদ্যের দাম বাড়লে এখানকার চাষি ও খামারিদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ার কথা না। তা ছাড়া এ বছর কোরবানির ঈদ উপলক্ষে মেহেরপুরের ৩০ হাজার খামারি ৪৫ হাজার গরু ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি ছাগল প্রস্তুত করেছেন। এগুলোর আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে প্রায় ১১০০ কোটি টাকা। এই জেলার পশুর চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ১৯৩টি। বাকি উদ্বৃত্ত পশু চলে যাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

মন্তব্য

ইভেন্ট
Fruit Bagging Mango cultivation is expected to trade Tk 1000 crore

ফ্রুট ব্যাগিং: আম চাষে ৪ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা

ফ্রুট ব্যাগিং: আম চাষে ৪ হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের আশা

বরেন্দ্র জেলা নওগাঁ। এ জেলা ধানের জন্য বিখ্যাত হলেও বর্তমানে এটি আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। জেলায় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করছেন চাষিরা। রোগ বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে এই পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে লাভবান হচ্ছেন জেলার শত শত চাষি।

জানা যায়, সাধারণত গৌরমতি, আমরুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগোতে ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়। এতে কীটনাশক ব্যবহারের দরকার পড়ে না। প্রাকৃতিক উপায়ে রোগমুক্ত এ আমের চাহিদাও তাই বেশি। এ বিশেষত্বের কারণে এখানকার আম বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক আম চাষিরা।

নওগাঁর পোরশা উপজেলার বন্ধুপাড়া এলাকার আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে ঝুলছে ব্যাগ। আর তার মধ্যেই সুরক্ষিত পরিপুষ্ট আকর্ষণীয় গৌরমতি, আম রুপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো জাতের আম। এই আমের চাহিদা রয়েছে দেশসহ বিদেশে। কীটনাশক না দিয়ে পরিবেশসম্মতভাবে আম চাষ করার এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি।

ফ্রুট ব্যাগিংয়ের পাশাপাশি আমের ব্র্যান্ডিং ও এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করে। এটি হলো কোনো পণ্যকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয়, নাম এবং গুণগত বৈশিষ্ট্যসহ বাজারজাত করার কৌশল। এর মাধ্যমে পণ্যটি ভোক্তাদের কাছে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বা গুণগত মানের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ঠিক তেমনিভাবে নওগাঁর আম ব্র্যান্ড বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরা যেতে পারে।

নওগাঁর আম শুধু দেশে নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ বছর আরও বড় পরিসরে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে চীন সরকারিভাবে আম আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর প্যাকেজিং, উৎসভিত্তিক পরিচয় ও সনদিকরণের অভাবে এই আম বিদেশে গিয়ে হয়ে যায় বাংলাদেশি আম। নওগাঁ নামটি আড়ালে থেকে যায়। নওগাঁ নামটি স্বীকৃতি পায় না। ফলে এর স্থানীয় পরিচয় হারিয়ে যায়। এতে করে সঠিক মূল্যায়ন এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে জেলার স্বতন্ত্র ভূমিকা প্রতিফলিত হয় না।

পোরশার সফল আম চাষি রায়হান আলী জানান, চলতি বছর ৬০ বিঘা জমিতে প্রায় ৩ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন। এসব আম কীটনাশকমুক্ত। আবার পোকামাকড়ের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও রক্ষা পাবে। ফলন ভালো হবে। বেশিদিন গাছে আম সংরক্ষণ করা যাবে এবং আমের গায়ের রং ভালো ও ঝকঝকে পরিষ্কার থাকবে। এসব আম বিদেশে রপ্তানি করার আশায় তিনি ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ করেছেন। আর এতে বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।

রায়হান আলী বলেন, পোকামাকড় ও বিরূপ আবহাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আম রক্ষা করতে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এছাড়াও ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি আম সংরক্ষণ করার একটি সহজ ও উপযুক্ত পন্থা। যা আমের গুণগত মান ও রং সতেজ রাখতে খুবই কার্যকর।

তার আমবাগানে কর্মরত শ্রমিক শরিফুল ইসলাম, কাদের ও সোলায়মান আলী জানান, লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে এই বাগানে কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালানো হয়। সারা বছর ১৫-২০জন শ্রমিক এই আম বাগানে কাজ করেন। তারা সবাই এই উপার্জন দিয়েই সংসার চালান।

সাপাহারের আমচাষি সোহেল রানা বলেন, নিরাপদ আমে খরচ কিছুটা বেশি হলেও লাভজনক। ফ্রুট ব্যাগিং করা আম দেরিতে পরিপক্ব হওয়ায় বাজারে ভালো দাম পাওয়া যায়। প্রতি বছর সুপার শপে নিরাপদ আমের চাহিদা বেড়েই চলেছে। এ বছর তিনি ১ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন বলে জানান।

পত্নীতলার আমচাষি মঞ্জুর এলাহী বলেন, আম রফতানির আগে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। আমে যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে না পারে, সেজন্য প্রথমে ফ্রুট ব্যাগিং এর কাগজ দিয়ে প্রতিটি আমের শরীর জড়িয়ে দেয়া হয়। বাগান থেকে আম রফতানির ১৫ দিন আগে থেকে গাছে কীটনাশক স্প্রে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর আম পেড়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় মোড়কজাত করা হয়। এতে আম নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি আমের গায়ের রং সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

পোরশা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, আধুনিক ও পরিবেশসম্মত আম চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফ্রুট ব্যাগিং মূলত ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ থেকে আমকে রক্ষা করে। তাই এতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। এতে আমের পচন রোধ হয়। ফলে কৃষক কীটনাশক মুক্ত আম বেশি দামে দেশে ও বিদেশে বিক্রি করে বেশি লাভবান হতে পারেন।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাটি ও জলবায়ুর বিশেষত্বের কারণে দেশের অন্য অঞ্চলের তুলনায় নওগাঁর আম বেশি সুস্বাদু। যেটাকে নিজেদের ভাগ্য বদলের চাবিকাঠি হিসেবে নিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। অন্য জেলাগুলোয় যখন আমের মৌসুম শেষের পথে তখনও এখানে প্রচুর আম রুপালি আম পাওয়া যায়। এজন্য প্রতি বছর জেলায় আমের বাগান উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।

তিনি বলেন, স্বাদে সেরা হওয়ায় দেশীয় সুপার শপে নওগাঁর নিরাপদ আমের কদর বেশি। নিরাপদ আম উৎপাদনে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে রফতনিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে চাষিদের ফ্রুট ব্যাগিংয়ের ব্যাগসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৫০ লাখ ফ্রুট ব্যাগিং করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫ গুণ বেশি। চলতি বছর জেলায় কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: বাসস

মন্তব্য

ইভেন্ট
The Chief Advisor can hold a meeting with advisors after the ECNEC meeting

একনেক সভা শেষে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা

একনেক সভা শেষে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সমসাময়িক বিষয়ে আলোচনা করতে উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (২৪ মে) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘একনেক সভার পরই প্রধান উপদেষ্টা উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন।’ তবে এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভিন্ন জল্পনার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল তার সরকারি বাসভবন যমুনায় বৈঠকে অংশ নেবে।

বৈঠকে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিজেদের পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন এবং দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানাবেন

মন্তব্য

ইভেন্ট
Dudhkumar

বৃষ্টিতেই দুধকুমার নদীর নির্মাণাধীন বাঁধে ধস

বৃষ্টিতেই দুধকুমার নদীর নির্মাণাধীন বাঁধে ধস

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতেই ধসে গেছে দুধকুমার নদীর ডানতীর রক্ষা বাঁধ। বন্যার আগেই বাঁধ ধসে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কুড়িগ্রাম জেলার দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন শিরোনামে ২০২১ সালের ১০ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা বিভিন্ন প্যাকেজে বর্তমানে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন হচ্ছে।

সেই প্রকল্পের আওতায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নদীভাঙন রোধে নদীর ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করে কুড়িগ্রাম পাউবো। ৫০০ মিটার তীর রক্ষা বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ১০ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা। ঢাকার মগবাজারের (টি আই পিভিএল জেড) আই জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে।

এটি ২০২২ সালের মাঝামাঝি শুরু হয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার কথা থাকলেও কাজ এখনো চলমান। এর মধ্যেই প্রকল্পটির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই গত কদিনের বৃষ্টিপাতে ইসলামপুর সামাদের ঘাট এলাকায় বাঁধের ১২ মিটার অংশ ধসে নদীতে বিলীন হয়ে গিয়েছে।

বন্যা মৌসুম শুরু না হতেই অল্প বৃষ্টিতে বাঁধ ধসে যাওয়ায় ভাঙনের আতঙ্কে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নদী থেকে বালু তুলে সেই বালু দিয়েই ব্লক তৈরি করেছেন। এটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় মিশানো হয়নি। বালু তোলার কারণে বাঁধের নিচে মাটি না থাকায় অল্প বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধসে গেছে। এছাড়া দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি তাদের মনমতো কাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর রহমান জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম; কিন্তু কাজ শেষ না হতেই অল্প বৃষ্টিতেই বন্যা আসার আগে বাঁধ ধসে পড়েছে। দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ মেরামত না করলে বন্যায় নদী ভাঙন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করছেন লুৎফরসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

নদী থেকে বালু তোলা বিষয়টি স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, তীর থেকে নিয়মানুযায়ী ২০০ মিটার দূর থেকে বালু তুলেছেন তারা। তবে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন তীরের কাছ থেকে বালু তোলায় বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। ধসে যাওয়া স্থান মেরামত করা হচ্ছে। তবে, কাজের অনিয়মের কথা অস্বীকার করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী রাফিয়া আখতার জানান, বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের মেরামতের দায়িত্ব ওই প্রতিষ্ঠানের। বাঁধের ধসে যাওয়া অংশের কাজ আবার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

সূত্র: ইউএনবি

মন্তব্য

ইভেন্ট
BNP is meeting with the chief adviser today

আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি

আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি

দেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও নানা গুঞ্জনের মধ্যে আজ (শনিবার) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য শুক্রবার (২৩ মে) দিবাগত রাতে ইউএনবিকে জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনের অংশ হিসেবেই বিএনপি এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করুক বিএনপি তা চায় না। কারণ তা নতুন করে দেশে রাজনৈতিক সংকট ডেকে আনবে বলে মনে করেন তিনি।

তবে এই বৈঠকে তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নিজেদের পর্যবেক্ষণগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন এবং দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এ বছরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে জানান ওই নেতা।

এর আগে, গতকাল (শুক্রবার) বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা সোমবার (১৯ মে) থেকেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সময় চেয়ে আসছি, কিন্তু এখনও তা নির্ধারণ করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ আমরা চাইনি; আমরা শুধু কয়েকজন বিতর্কিত উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছি।

‘ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছি। তিনি রোডম্যাপ না দিয়ে পদত্যাগ করতে চাইলে সেটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, কিন্তু আমরা সেটি চাইনি।’

এর আগের দিন (বৃহস্পতিবার) বিএনপি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করা হলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য হতে পারে তারা।

সেদিন এক সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষতা ও সুনামের স্বার্থে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও নবগঠিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে যেসব উপদেষ্টা ‘বিতর্কিত’, তাদের অবিলম্বে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলন এবং বুধবার সেনাপ্রধানের একটি অফিসার সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে সরকারের কার্যক্রম ও নির্বাচনের বিষয়ে করা মন্তব্যে হতাশ হয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস পদত্যাগের কথা ভাবছেন।

মন্তব্য

p
উপরে