ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ (এফআইআর) দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।
সোমবার পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার উল্টোডাঙ্গা থানায় এই অভিযোগ করেন বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি কল্যাণ চৌবে। শুধু তাই নয়, পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
গত নভেম্বরে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৫ কিলোমিটারের পরিবর্তে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে বিএসএফের কাজের দায়িত্ব বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্ধিত এলাকায় বিএসএফের জওয়ানরা প্রবেশ করে কাউকে তল্লাশি, গ্রেপ্তার বা কোন কিছু বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আসাম ও পাঞ্জাবেও বিএসএফের কাজের পরিধি বাড়ানো হয়।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য চিঠি লেখেন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হয়। বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজপথে নামেন অনেকে।
অভিনেত্রী অপর্ণা সেনও প্রতিবাদে সরব হন। কলকাতা প্রেসক্লাবে নভেম্বরের সংবাদ সম্মেলনে বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন বিএসএফের কাজের পদ্ধতি নিয়েও।
বিজেপির অভিযোগ, অপর্ণা সংবাদ সম্মেলনে বিএসএফকে খুনি, ধর্ষক বলে অপমান করেছেন। এ জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অসম্মান করার জন্য সাত দিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলে অপর্ণাকে আইনজীবীর নোটিশ পাঠায় বিজেপি। দুমাস হয়ে গেলেও চিঠির কোনো জবাব দেননি অপর্ণা।
বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে বলেন, ‘বিএসএফ নিয়ে তার মন্তব্য প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অপর্ণা সেন তার মন্তব্য প্রত্যাহার করেননি, ক্ষমা চাননি, চিঠির কোনো জবাব দেননি। সেজন্য তার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজের (আরসিডিএস) প্রতিনিধি দল সোমবার সেনাবাহিনী সদর দপ্তরে বাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
সাক্ষাতের সময় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন আরসিডিএসের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট এয়ার ভাইস মার্শাল গ্যারি টুনিক্লিফ সিভিও।
সাক্ষাৎকারের সময় কুশলাদি বিনিময়ের পর সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশে সফরের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান এবং সামরিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
সোমবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী প্রধানের আমন্ত্রণে প্রতিনিধি দলটি ঢাকা সেনানিবাসে নৈশভোজে অংশ নেয়।
নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেলসহ ব্রিটিশ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ ফরেন সার্ভিস একাডেমি, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং ব্রাকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
২০ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ১৪ মে ঢাকায় আসেন। আগামী ২১ মে ভারতের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
আরও পড়ুন:মূল অপরাধ যেহেতু বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে, সেহেতু ভারতে বিচারের আগে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে ঢাকা ফেরত চাইবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার ফরেন এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের প্যারালাল সেশন-১ এ যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আনিসুল হক।
বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট (জিআইইউ) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে একটি গণমুখী বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।
‘জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে করোনা মহামারির সময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আইন ও বিচার বিভাগ ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থা চালু করে। এই পদক্ষেপ করোনাকালে জরুরি সমস্যা মোকাবেলা এবং কারাগারে বন্দিদের বাড়তি চাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নের যাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সপ্তম ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে একটি সমন্বিত কর্মপদ্ধতি নিয়েছে এবং মন্ত্রণালয়গুলোর ম্যাপিং, আর্থিক কৌশল, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন, ডেটা গ্যাপ বিশ্লেষণ, জাতীয় কর্মপরিকল্পনা, এপিএ-তে এসডিজি অর্ন্তভুক্তিসহ অনেক কাজ সম্পন্ন করেছে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার একটি জনকেন্দ্রিক আধুনিক গণতন্ত্র গ্রহণ করেছে। ফলে দেশে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা শক্তিশালীসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। আর এসব উন্নয়ন বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে।’
সম্মেলনে বক্তব্য শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন। তবে মানি লন্ডারিং আইন যেহেতু বিশ্বের সব জায়গায় কঠোরভাবে মানা হচ্ছে, তাই টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।
‘আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে তাকে ফিরিয়ে আনা। এবং যে মুহূর্তে তাকে ফিরিয়ে আনা হবে, তখন থেকে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে সেই অভিযোগের বিচার করে তার পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোর সময় যে ব্যাপারটা ছিল, তখন আমরা যাদের সঙ্গে কোলাবরেট করেছিলাম তাদের জন্য টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
‘এখন পি কে হালদারের পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনাটা আরও সহজ হবে বলে আমার বিশ্বাস। কারণ সারাবিশ্বে মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর আইন করা হয়েছে। তা আমাদের দেশেও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় সঠিকভাবে পদক্ষেপ নিলে অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’
‘আমি এ ব্যাপারে অ্যাডভান্স কিছু বলতে চাই না। নিশ্চয়ই আমরা তাদের সঙ্গে আলাপে বসব। আমাদের এখানে যেহেতু মূল অপরাধটা করা হয়েছে, আমরা তাকে আগে চাইবো সেটাই স্বাভাবিক।’
এসডিজি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার প্যারালাল সেশন-১ এ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবগণ তাদের স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগের এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
এই সেশনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। সঞ্চালনা করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোসাররফ হোসেন ভূঁইয়া। আলোচক ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ে ট্রেনের বগির টয়লেট থেকে একজন বীর মুক্তিযদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেসের একটি বগির টয়লেট থেকে মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া নিউজবাংলাকে মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৭৪ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম আব্দুল আজিজ শেখ। তিনি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার লক্ষনদিয়া গ্রামের মৃত আমীর উদ্দিন শেখের ছেলে বলে জানা গেছে।
রেল পুলিশের ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরিবারের বরাতে পুলিশ জানায়, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা সংক্রান্ত কাজের জন্য সোমবার রাত ৮টার দিকে দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে দিনাজপুরের ফুলবাড়ির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন আজিজ শেখ। ট্রেনটি মঙ্গলবার সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে ট্রেনের একটি বগির টয়লেটে মরদেহ দেখতে পেয়ে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়।
দুপুরের দিকে পুলিশ বিজিবির সহযোগিতায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আব্দুল আজিজের ছেলে রাশেদ শেখ মিঠু মুঠোফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাবা সর্বশেষ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চাকরি করতেন। সেখান থেকে অবসর ভাতা তোলেন তিনি। এজন্য প্রায়ই ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে ফুলবাড়ী যেতে হয় তাকে। সোমবার ট্রেনে করে সেখানেই যাচ্ছিলেন তিনি।’
দিনাজপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘মৃত আব্দুল আজিজের সঙ্গে থাকা ভোটার আইডি কার্ড দেখে তার পরিচয় আমরা শনাক্ত করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ পড়ে ঘাবড়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কিছু পত্রিকা আছে তারা একদিন ভালো লিখলে পরের সাতদিন লিখবে খারাপ।’ পত্রিকায় কী লিখল, তা দেখে নয়, দেশের মানুষ ও উন্নয়নের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়নে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক সময় পত্রিকা পড়ে আপনারা অনেকে ঘাবড়ান। এই পত্রিকা এই সমালোচনা করেছে। বাংলাদেশের কিছু পত্রিকা আছে, তারা সব কিছুতে একদিন ভালো লিখলে পরের সাতদিন লিখবে খারাপ। এটা তাদের চরিত্র। আমি চিনি সবাইকে।’
নিজেকে দেশের প্রবীণ রাজনীতিক একজন বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘হাই স্কুল থেকে তো রাজনীতি করি। সবাইকে আমার চেনাই আছে। সব পরিবারকেও চেনা আছে। এটা তাদের চরিত্র। কাজেই ওই পত্রিকা দেখে ঘাবড়ানোর কোনো দরকার নেই। আর পত্রিকা পড়েও সিদ্ধান্ত নেয়ার দরকার নেই।’
টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নেব দেশের মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে, দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে। এই কথাটা সব সময় মনে রাখতে হবে। কারণ, আমি সেইভাবেই চলি।
‘আর সেইভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছি বলেই আজ দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। আমি যদি ভয়ে ভয়ে থাকতাম, ও কী লিখলো, ও কী বললো, ও কী করলো, তাহলে কোনো কাজ করতে পারতাম না। নিজের বিশ্বাস হারাতাম।’
কর্মকর্তাদের নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলারও পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আমি বলব অনেক সময় আপনাদের অনেকের মুখেই শুনি এই পত্রিকা লিখেছে। ওটা নিয়ে কখনও ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ওটা নিয়ে চিন্তাও করবেন না। নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলবেন। সেটাই আমি চাই। তাহলে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।’
কারও নাম উল্লেখ না করে এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারাই বেশি কথা বলে, তারাই সমালোচনা বেশি করে, যারা ইমার্জেন্সি সরকারের পদলেহন করেছে, চাটুকারি করেছে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। যাই হোক কে, কী বললো সেটা নিয়ে আমি কখনও ঘাবড়াইও না, চিন্তাও করি না। দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষের জন্য যেটা করা ন্যায়সঙ্গত সেটাই করি।’
আরও পড়ুন:স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় সহকারী কর কমিশনার রাজিব রানা মল্লিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-১ এর বিচারক জুয়েল দেব তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাজিব রানা মল্লিক বর্তমানে ঢাকার কর অঞ্চল-১৪ তে কর্মরত।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী শুভাশিস শর্মা।
তিনি বলেন, ‘আসামি রাজিব রানা মল্লিকের সঙ্গে ২০১০ সালে বিবাদী প্রিয়া মুহুরীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে বলেন রাজিব। কিন্তু এই প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় প্রিয়াকে রাজিবসহ তার পরিবারের লোকজন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন রাজিব। এ অবস্থায় বাবার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন প্রিয়া।’
শুভাশিস জানান, সর্বশেষ গত ৪ মার্চ রাজিব শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রিয়াকে মারধর করেন। এ সময় ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে আর বাড়িতে নিয়ে যাবেন না বলেও হুমকি দেন। এ ছাড়া ৫ লাখ টাকা না দিলে বেশি যৌতুক নিয়ে আরেকটা বিয়ে করবেন বলেও জানান রাজিব।
এ ঘটনার দুদিন পর গত ৬ মার্চ প্রিয়া মামলা করলে আদালত সমন জারি করে।
আইনজীবী বলেন, ‘সমন জারির পর মঙ্গলবার রাজিব আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।’
আরও পড়ুন:এবি ব্যাংক থেকে ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় জামিন নিতে আসেন এরশাদ আলী।
হাইকোর্ট তাকে জামিন না দিয়ে পুলিশকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজহারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতের আদেশের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর আসামির পক্ষে ছিলেন শেখ মো. জাকির হোসেন।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ৮ জুন এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক রিকশাচালক থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এরশাদ আলীর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার মালিকানাধীন এরশাদ গ্রুপ ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টিতে এবি ব্যাংকের ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক এরশাদ আলীকে।
এ ছাড়া এবি ব্যাংকের সাবেক এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী ও শামীম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ইভিপি ও শাখা ম্যানেজার এ বি এম আবদুস সাত্তার, এভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার আবদুর রহিম, এসভিপি ও সাবেক রিলেশনশিপ ম্যানেজার আনিসুর রহমান, ভিপি শহিদুল ইসলাম, এভিপি মো. রুহুল আমিন, ইভিপি এবং হেড অব সিআরএম ওয়াসিকা আফরোজী, ভিপি, সিএমআরের সদস্য মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এসইভিপি ও হেড অব সিআরএম সালমা আক্তার, এভিপি ও সিআরএম সদস্য এমারত হোসেন ফকির, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার তৌহিদুল ইসলাম, এসভিপি ও সিআরএমের সদস্য শামীম এ মোরশেদ, ভিপি ও সিআরএমের সদস্য খন্দকার রাশেদ আনোয়ার, এভিপি ও সিআরএমের সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সাবেক ভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য মাহফুজ-উল ইসলামকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে একে অন্যের সহায়তায় জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে জাল কার্যাদেশ প্রস্তুত করে ছয়টি জাল কার্যাদেশের বিপরীতে ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
মামলায় উল্লিখিত এবি ব্যাংক কাকরাইল শাখার কর্মকর্তারা প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাতটি অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে আরও ১০ কোটি টাকা ঋণ দেন, তা তুলে আত্মসাৎ করেন। সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:বগুড়ার শাজাহানপুরে উদ্ধার হওয়া মৃত শিশুর নাম সামিউল বলে জানিয়েছে পুলিশ। সে ওই উপজেলার সাজাপুর পূর্বপাড়া তালিমুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থী ছিল।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, গত সোমবার সামিউলের সৎবাবা ফজলু মাদ্রাসা থেকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সামিউলকে নিয়ে গিয়েছিলেন।
আট বছর বয়সী সামিউলের মায়ের নাম সালেহা বেগম। শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। মাদ্রাসার নথিতে সামিউলের বাবার নাম জাহাঙ্গীর।
মঙ্গলবার বিকেলে সামিউলের নাম পরিচয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রউফ।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মানিকদিপা উত্তরপাড়া বটতলা গ্রামের একটি লাউক্ষেত থেকে সামিউলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পরে খোঁজখবরে বেরিয়ে আসে নাম-ঠিকানা।
সামিউলের মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুবেল মণ্ডল বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যায় ফজলু নামে সামিউলের সৎবাবা তাকে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যান। সামিউলকে নিয়ে তিনি ঘুরতে বের হয়েছিলেন। ফজলু মাঝে মধ্যেই মাদ্রাসায় এসে সামিউলের খোঁজখবর নিতেন। সামিউলই জানিয়েছিল লোকটি তার সৎবাবা।’
শাজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রউফ বলেন, ‘নিহত সামিউলের মা থানায় এসেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে কাউকে এখনও আটক করা হয়নি। খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।’
সকালে শাজাহানপুর থানার ওসি মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানিয়েছিলেন, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তার সঙ্গে কী ঘটেছিল এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য