মানিকগঞ্জের একটি গ্রামে চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট দেখে ঢাকা ফেরার পথে ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ।
ওই ঘটনার ১০ বছর পূর্তিতে শ্রদ্ধাভরে নির্মাতাকে স্মরণ করেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
গুণী এ নির্মাতাকে এখনই সবেচেয়ে বেশি দরকার ছিল বলেও অভিমত দেন জয়া।
নিজের ফেরিভায়েড ফেসবুক পেজে শুক্রবার দুপুরে এক স্ট্যাটাসে এ অভিমত ব্যক্ত করেন অভিনেত্রী।
তিনি লেখেন, ‘দেখতে দেখতে ১০ বছর হয়ে গেল তারেক মাসুদের অবাঞ্ছিত মৃত্যুর। ইতিহাসের ছায়ায় ঢেকে থাকা বাংলাদেশের গল্প চলচ্চিত্রে তুলে আনতে মগ্ন ছিলেন তিনি। সে গল্প শোনানোর সাহস করেছিলেন বিশ্বজনকে।’
তিনি লেখেন, ‘পৃথিবী এখন ধীরে ধীরে আমাদের সামনে খুলছে। এখনই তাকে দরকার ছিল সবচেয়ে বেশি। আর এ সময়েই তিনি নেই। শ্রদ্ধা।’
মানিকগঞ্জের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে এটিএন নিউজের সাবেক প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীরও।
তথ্যচিত্র আদম সুরত, প্রামাণ্যচিত্র মুক্তির গান ও চলচ্চিত্র মাটির ময়নাসহ তারেক মাসুদ তৈরি করেছেন ইতিহাসনির্ভর বেশ কিছু ডকুফিল্ম ও চলচ্চিত্র।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলো।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আজ এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বার বার চোখ মুছছিলেন।
এরপর প্রসিকিউসনের আবেদনে আগামীকাল এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, আসামী পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।
এরপর গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে গ্রেফতার ৬ জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের চকরঘুনাথ বালুদিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চোরেরা বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষের তালা কেটে আটটি সিলিং ফ্যান ও শিক্ষার্থীদের খেলাধূলার জন্য রাখা ফুটবলও নিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের আলমারির তালা ভেঙে কাগজপত্রও তছনছ করেছে। আজ বুধবার সকালে থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে। এদিকে সেলিং ফ্যান চুরি হওয়ায় আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে ভোগান্তির শিকার হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরি নেই। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যালয়ে এসে দেখি, অফিস কক্ষ ও পাশের শ্রেণিকক্ষের দরজার হ্যাজবল কাটা রয়েছে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখি, দুই ঘরের আটটি ফ্যান খুলে নিয়ে গেছে। অফিস কক্ষের ভেতরে রাখা স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা করার চারটি ফুটবলসহ অন্যান্য জিনিত্রপত্রও চুরি হয়েছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিদ্যালয়ে ফ্যান না থাকায় সবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুন আক্তার বলে, আমাদের শ্রেণিকক্ষের চারটি ফ্যান চুরি হয়েছে। গরমের মধ্য ক্লাসে বসে থাকতে গা ঘেঁমে যাচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মজনু বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাকে বিদ্যালয়ের চুরির ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। দুটি কক্ষের মোট ৮ টি ফ্যান ও কিছু খেলাধুলার সামগ্রি চুরি হয়েছে। বিদ্যালয়টি নতুন জাতীয়করণ হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ে কোন নৈশপ্রহরি নেই।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের সংকটে একের পর এক রোগীর মৃত্যু ঘটছে। দ্বীপ উপজেলা হওয়ায় মূল ভূখণ্ডে দ্রুত চিকিৎসার জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্সই একমাত্র ভরসা। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও ড্রাইভার না থাকায় জরুরি সময়ে রোগীরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না। ঘাটেই পড়ে আছে দুটি নৌ এম্বুলেন্স।
সম্প্রতি প্রসব জটিলতায় ভোগা এক নারী এবং হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত এক বৃদ্ধ নৌ-অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বহুবার লিখিত ও মৌখিকভাবে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল করার দাবি জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জন শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন।
একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “প্রতিবার মৃত্যু ঘটলেই আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান আসে না। দ্বীপে থাকা মানে যেন মৃত্যুকে বরণ করার জন্য অপেক্ষা করা।”
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রায় ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। এখানে রয়েছে মাত্র ৫০ শয্যার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার-নার্স, নেই কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে প্রতিমাসে ৬০ থেকে ৭০ জন গুরুতর রোগীকে নিতে হয় জেলা সদর হাসপাতালে। আরও শতাধিক মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজের উদ্যোগে সদর হাসপাতালে যান। কিন্তু এই দীর্ঘ যাত্রা হয়ে ওঠে জীবন-মরণ ঝুঁকির আরেক নাম। বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেয়া রয়েছে দুটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে দুটি অ্যাম্বুলেন্সই বিকল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর।
জানা গেছে, রোগীদের জন্য ২০১৯ সালে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে আনা হয়েছিল একটি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু অল্পদিন চলার পরই সেটি বিকল হয়ে পড়ে আছে নদীর পাড়ে। পরে ২০২২ সালে জাইকার সহায়তায় আসে আরেকটি আধুনিক নৌ অ্যাম্বুলেন্স। প্রথম বছর সেটি মানুষের মনে আশার আলো জাগালেও চালক, জ্বালানি আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটিও এখন দুই বছর ধরে অচল অবস্থায় বাঁধা আছে নদীর তীরে। কোটি টাকার এই দুই নৌ অ্যাম্বুলেন্সে আজ মরিচা ধরছে, অথচ হাতিয়ার অসহায় মানুষগুলো প্রতিদিন কাঠের নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন।
দ্বীপের বাসিন্দা আয়াত খান জুয়েল বলেন, আমাদের পেশা হচ্ছে মাছধরা ও কৃষি। ট্রলারে করে নদী পার হয়ে যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে মাইজদী নেয়া যায় না। অন্যদিকে সময়মতো ট্রলারও পাওয়া যায় না। আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আমরা গরিব মানুষ তাই বাধ্য হয়েই ট্রলারে যাই। সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স আমাদের কাজে আসেনি।
নলচিরা ঘাটের বাসিন্দা আবু সালেহ বলেন, নোয়াখালীর দ্বীপ এলাকার মানুষের জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্স শুধু একটি যান নয়, বরং জীবন বাঁচানোর শেষ ভরসা হতে পারত। কিন্তু সেই ভরসা ভেঙে পড়েছে। অনেক মা ঘাটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, অনেকে নদীর ঢেউয়ের সঙ্গে জীবন হারিয়েছেন। যদি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সচল থাকত, তাহলে হয়তো আজ অনেক প্রাণ আমাদের মাঝে বেঁচে থাকত।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের শুধু নাম আছে, সেবা নেই। অথচ রাতে যখন কোনো রোগী আসে, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাঠের নৌকায় উঠতে হয়। নদীর ঢেউ আর আঁধারের ভেতর সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো যায় না। আর সেই দেরির কারণেই হারিয়ে যায় অসংখ্য জীবন।
তিন বছর নৌ অ্যাম্বুলেন্স চালানো স্পিডবোট চালক জাকের হোসেন কালু বলেন, আমি দিনে পাঁচ-সাতজন রোগী পার করেছি। কত মা আমার বোটেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন, কত মানুষের কান্না দেখেছি আমি। কিন্তু কোনো বেতন-ভাতা না থাকায় সেই কাজটিই ছেড়ে দিতে হয়েছে। এখনো বুক ভরে আফসোস করি, যদি থাকতে পারতাম? হয়তো অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানসী রানী সরকার বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক যে একটি নৌ-অ্যাম্বুলেন্স অনেক আগেই বিকল হয়ে গেছে, আরেকটি চালকের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে আছে। আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে আবারও এই জীবন বাঁচানোর সেবা চালু করা সম্ভব হবে। যা দ্বীপের হাজারো অসহায় মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারে।
নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি দৈনিক বাংলাকে বলেন, হাতিয়ার নৌ এম্বুলেন্স ড্রাইভার না থাকায় বন্ধ থাকে। মাঝমাঝে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চলে। আইএসও প্রজেক্ট চালু হলে এটার সুরাহা হবে। তবে কবে নাগাদ এ সেবা সচল হবে, তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা তিনি দিতে পারেননি।
রাজধানীর জোয়ার সাহারা মৌজায় দুটি মসজিদ ও একটি মন্দিরের জন্য জমি বরাদ্দ প্রদান করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রেলভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উক্ত মসজিদ ও মন্দিরের পরিচালনা কমিটির নিকট বরাদ্দপত্র তুলে দেন ঢাকার বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার মো: মহিউদ্দিন আরিফ।
বরাদ্দপ্রাপ্ত মসজিদ ও মন্দিরের মধ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন জোয়ার সাহারা মৌজায় খিলক্ষেত রেলওয়ে জামে মসজিদের জন্য ০.২০১১ একর (৮৭৬০ বর্গফুট), একই মৌজায় আন-নূর-জামে মসজিদের জন্য ০.০৫৫২ একর (২৪০৫ বর্গফুট) এবং খিলক্ষেত থানাধীন একই মৌজায় খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের জন্য ০.০৫৬২ একর (২৪৫০ বর্গফুট) জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত প্রতীকী মূল্যের বিনিময়ে এসব জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
বরাদ্দপত্র হস্তান্তরের জন্য আয়োজিত এ অনু্ষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারি ড. শেখ মইনউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফাহিমুল ইসলাম, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো: আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মসজিদ ও মন্দির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, খিলক্ষেত এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকল ধর্মেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কথা বলা হয়েছে। কেউ এই সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে তাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রেলওয়ের জমি মসজিদ ও মন্দিরকে বরাদ্দ দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রোল মডেল। তারপরও বিভিন্ন সময়ে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা উপাসনালয়গুলোকে যারা অপবিত্র করতে চায় তাদের ধর্মীয় কোন পরিচয় নেই, তারা দুষ্কৃতকারী, ক্রিমিনাল। তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বেহাত হয়ে যাওয়া দেবোত্তর সম্পত্তি যেগুলো নিয়ে আদালতে কোন মামলা-মোকদ্দমা নেই এরূপ সম্পত্তি উদ্ধারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বাংলাদেশ রেলওয়ের এই উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করেন। বরাদ্দপত্র হস্তান্তর শেষে একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিফিং শেষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ২৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) ২০২৫ তারিখে জনাব নেপাল কান্তি দেব, সহকারি কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নরসিংদী -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নরসিংদী, জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন হাজীপুর বউ বাজার ও হাজীপুর পশ্চিমপাড়া, দত্তপাড়া (পূর্ব ও পশ্চিম), নরসিংদী এলাকার ৫টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৩টি বেকারীর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ৩/৪" জি আই পাইপ ৬০ ফুট, ৩/৪'' এম এস পাইপ ৫০ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এ সময়, সর্বমোট ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা অর্থ দণ্ড প্রদান করা হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব সিমন সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ, জোবিঅ -মুন্সীগঞ্জ আওতাধীন মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ সদর, মুন্সীগঞ্জ এলাকার ৩টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, মেসার্স তন্মম ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মুক্তারপুর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, আলমদিনা বোর্ড মিলস লি., (গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৩৭) মেসার্স বিসমিল্লাহ বোর্ড মিলস লি.(গ্রাহক সংকেত: ৩৭০-০০৫১) ঠিকানা: মিরেশ্বর, পঞ্চসার, মুন্সীগঞ্জ, মেঘনা ফেব্রিক্স লি.(গ্রাহক সংকেত ৩৮০/৮৭০-০০৩৫) ঠিকানা: সরকারপাড়া, মুন্সীগঞ্জ -এর সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ০১ টি আবাসিক রেগুলেটর, প্লাস্টিক হোজ পাইপ ২৫০ ফুট এবং ৩/৪" এমএস পাইপ ৩ ফুট অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ৪,৪০,০০০/- টাকার গ্যাস সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ লাইন সম্পূর্ণ উচ্ছেদ / অপসারণকরতঃ বিতরণ লাইনের উৎস পয়েন্ট হতে কিল করা হয়েছে। এছাড়া, স্থায়ী বিচ্ছিন্নকৃত শিল্প গ্রাহক মেসার্স তন্ময় ফিশিং নেট ইন্ডা. লি.; এর গ্রাহক আঙিনা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে, পার্শ্ববর্তী বাড়ির আবাসিক রাইজার হতে হোজ পাইপের মাধ্যমে ০১ টি বয়লারে গ্যাস ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়। ততপ্রেক্ষিতে, প্রায় ২৫০ ফুট হোজ পাইপ জব্দ করা হয়েছে এবং আবাসিক রাইজারটি কিলিং/ক্যাপিং করা হয়েছে। গ্রাহকের পূর্বে বিচ্ছিন্নকৃত ভাল্পপিট এর চাবিতে ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে ট্যাগিং করে স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এছাড়া, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক ভিজিল্যান্স বিভাগ -নারায়ণগঞ্জ -এর বিশেষ অভিযানে, জোবিঅ-ভৈরব ও জোবিঅ -নরসিংদী আওতাধীন এলাকার ৮টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, বেলাবো ফিলিং স্টেশন, এমডি জব্বার জুট মিলস গ্রাহকের হাউজ লাইন ভূমির নিচে পরিলক্ষিত হয় যা দৃশ্যমান করার জন্য গ্রাহককে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়। রাজা ফুড প্রোডাক্টস, রাজা সোপ, বাবুল কেমিক্যাল ওয়ার্কস, খাজা বেকারি, ফাইন মুড়ি ফ্যাক্টরি, মেসার্স বাবুল কেমিক্যালস, শিল্পী টেক্সটাইল, সোবহান টেক্সটাইল এন্ড প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শনকালে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়নি।
মন্তব্য