হঠাৎ আলোচনায় চলে আসা নায়িকা পরীমনি জ্বরে আক্রান্ত। ১৫ জুন পরীমনি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে (ডিবি) কথা বলতে যাওয়ার দিন থেকেই জ্বর জ্বর ভাব ছিল তার। বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি জ্বরে আক্রান্ত তিনি।
পরীমনির ঘনিষ্ঠ সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘পরীমনির সঙ্গে গতকাল রাতে কথা হয়েছে। তখন তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। তার শ্বাসকষ্টেরও সমস্যা আছে। উদ্বিগ্ন হয়ে গেলে তার এ সমস্যা বেড়ে যায়।’
বনানীতে পরীমনির বাসার নিচে শুক্রবারও ছিল সংবাদমাধ্যমের আনাগোনা। সুযোগ পেলে পরীমনির সঙ্গে কথা বলতে চান তারা।
পরীমনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গেও তার কথাবার্তা হচ্ছে না। নিউজবাংলাকে চয়নিকা বলেন, ‘আমার শুটিং ছিল। গতকাল শেষ করেছি। আমারও ঠাণ্ডা লেগেছে।’
এই নির্মাতা জানান, ডিবিতে কথা বলতে যাওয়ার দিনই পরীমনির জ্বর ছিল।
বিশ্ব সুন্দরির পর চয়নিকার অন্তরালে নামের একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করার কথা পরীমনির। নিউজবাংলাকে চয়নিকা জানিয়েছিলেন, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষে ওয়েব সিরিজটির শুটিং শুরু করতে চান তিনি।
পরিকল্পনাটি আগের মতোই আছে কি না জানতে চাইলে চয়নিকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে এটি পেছাতে পারে। কারণ, পরীর নিরাপত্তার একটা ব্যাপার আছে। কিন্তু পরীমনি কাজ করতে চান। শুটিংয়ে দ্রুতই ফিরতে চান।’
বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তোলার পর পরীমনিকে নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই গত বুধবার পরীমনির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
সেদিন রাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনি। সেখানে জানান, তিনি অল কমিউনিটি সেন্টারে গিয়েছিলেন সত্যি, কিন্তু অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটানটি।
পরীমনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনা অন্য দিকে ঘোরানোর জন্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব করা হচ্ছে।’
এরপর থেকেই আর সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসছেন না ঢাকাই সিনেমার হালের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সেলিম ও শফিউল আলম নামে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে গত ইউপি নির্বাচনের সৃষ্ট বিরোধের জের রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়ায় এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম ওই এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। অপরজন শফিউল আলম একই এলাকার আবু সালামের ছেলে।
নিহত সেলিমের পিতা নুর মোহাম্মদ জানান, স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম ও সেলিমের মধ্যে গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মানিকপুর উত্তরপাড়া বাজার এলাকার নবীন ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায় নিহতদের ওপর।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত সেলিমকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন শফিউল আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নেয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শফিউল আলমের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেনে সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক।
প্রসঙ্গত, বিগত ইউপি নির্বাচনে বর্তমান মেম্বার জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে সেলিম ও শফিউল আলমের বড় ভাই শামসুল আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের দিন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে এই জোড়া হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নিহত দুজনই একটি হত্যা মামলার আসামি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷ নিহত প্রকৌশলীর নাম জাং জি বিন। তিনি চীনের নাগরিক।
পুলিশ জানায়, পঞ্চবটিতে বিসিক শিল্পনগরীর ভেতরে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবনের একতলায় তার রাখার ফাঁকা জায়গার পাশে কাঠের ওপর দাঁড়িয়ে কাজের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন ওই প্রকৌশলী৷ এমন সময় ওই ফাঁকা জায়গা দিয়ে তিনি আন্ডারগ্রাউন্ডে পড়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়৷ পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ওই প্রকৌশলীকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে৷
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম বলেন, নিহত জাং জি বিন প্রকৌশলী হিসেবে নির্মাণাধীন ভবনটিতে কর্মরত ছিলেন৷ চায়না এই নাগরিক রাজধানীর মুগদা এলাকায় থাকতেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ দুবাইয়ের পথে রয়েছে। জাহাজটিতে রয়েছেন জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়া ২৩ জন নাবিক। তাদের মধ্যে ২১ জন নাবিক ওই জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন। বাকি দু’জন এডেন উপসাগর হয়ে ওমান উপকূলের সামনে দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছে বিমানযোগে দেশে ফিরবেন।
জাহাজটির মালিক পক্ষের একটি সূত্রে জানা গেছে, নাবিকরাই এমন ইচ্ছা পোষণ করেছেন।
কেএসআরমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম জানান, নাবিকরা তাদের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। ২১ নাবিক জাহাজে ও বাকি দুজন বিমানে বাংলাদেশে আসবেন। অন্যরাও চাইলে উড়োজাহাজে আসতে পারেন। যদি তারা আমাদের সিদ্ধান্ত দেন। তবে ২১ নাবিক জানিয়েছেন তারা ওই জাহাজে করেই দেশে ফিরবেন।
দীর্ঘ ৩৩ দিন জিম্মি থাকার পর শনিবার জাহাজটি মুক্ত হয়। এরপর সোমালিয়ার ডেরা থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয় জাহাজটি।
মেরিন ট্রাফিক তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, জাহাজটি আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছবে ২০ এপ্রিল রাত ১০টায়। কিন্তু জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল জাহাজটি আরব আমিরাতে ভিড়বে। কারণ জাহাজটি চলার গতি অনেক কম।
কর্তৃপক্ষ জানায়, জাহাজটি আরব আমিরাতে পৌঁছার পরপরই দুই নাবিক বিমানযোগে বাংলাদেশে আসবেন। বাকিরা জাহাজে করে বাংলাদেশে আসবেন প্রায় এক মাস পর।
সোমালিয়ার একদল জলদস্যু গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আব্দুল্লাহ নামের জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৫৭৬ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। এর ৩২ দিন পর অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে শনিবার রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।
আরও পড়ুন:হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি নেয়ার অভিযোগে করা মামলায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার শাহাবাগ থানা পুলিশ। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মুন্সী রুহুল আসলাম সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার কিছু অবজারভেশনসহ রুলটি খারিজ হয়ে যায়, যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে।
পরবর্তীতে এ কর্মকর্তা অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় জাল রায় প্রস্তুত করে বিচারপতিদের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই স্বাক্ষর দেন। তিনি রিট শাখাসহ আরডি শাখার কর্মরত অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় মামলার রেকর্ড থেকে মূল রায় সরিয়ে জাল রায় ঢুকিয়ে রাখেন। সংশ্লিষ্ট রিট শাখার অনুলিপি বিভাগ থেকে জাল রায়ের নকল সংগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অন্যায় সুবিধা নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
পুলিশ আরও জানায়, তবে ফেনী পিটিআইয়ের পরিদর্শক (বিজ্ঞান) মো. জাকির হোসেন আগেই রেকর্ড থেকে মূল রায়ের একটি সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। ২০২২ সালের ২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর মূল রায়ের সার্টিফাইড কপির ফটোকপিসহ এ সংক্রান্ত একটি জালিয়াতির অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হলে তিনি বিচারপতি নাইমা হায়দার, জাকির হোসেন ও জিনাত হকের সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন। এ বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করে ২০১৬ সালের মামলার রুল ডিসচার্জ করে দেন। একইসঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টারকে অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার নির্দেশ দেন।
এর ফলে শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম পেনাল কোডের ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
এরপর গত ১৫ এপ্রিল বাদি হয়ে হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। আদালত ঢাকার শাহাবাগ থানায় মামলা নথিভুক্তর আদেশ দেন। মামলার পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় যায়।
শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার বলেন, ‘শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
হাওরবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় আতঙ্ক অতিবৃষ্টি আর আকষ্মিক বন্যা। প্রতিবছর বৈশাখ আসার আগেই পাহাড়ি ঢল আর বন্যার আতঙ্কে থাকেন এই অঞ্চলের কৃষকরা। ফসল রক্ষায় অনেক সময়ই অপরিপক্ব ধান গাছে কাস্তে চালাতে হয় তাদের।
চলতি মৌসুমে হাওরের লাখ লাখ হেক্টর জমিতে সবুজ ধানের গালিচায় সোনালী রং ধরে গেছে। আর সে সুবাদে বৈশাখের শুরুতেই কৃষকরা ধান কাটতে নেমে পড়েছেন হাওরে। প্রকৃতি প্রতিকূল হয়ে ওঠার আগেই পুরো ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি হাওরে এক ফসলি বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন দেখে বেজায় খুশি কৃষকরা। তারা আশা করছেন, অনুকূল আবহাওয়ার সুবাদে এবার তারা শতভাগ ধান গোলায় তুলতে পারবেন।
কৃষি অফিস বলছে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের হাওরে ১০ লাখ কৃষক বোরো ধানের আবাদ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার সুনামগঞ্জে ২৬২ হেক্টর বেশি জমিতে ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানগুলো বর্তমানে হাওরে কাচা-পাকা অবস্থায় রয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার বরদল গ্রামের কৃষক মন্তাজ মিয়া বলেন, ‘আমি বিআর-৯২ ধান লাগিয়েছিলাম। মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা পানির সংকট ছিল। তবে এতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে। আর চার থেকে পাঁচ দিন আবহাওয়া ভালো থাকলে আমার জমির ধান কাটা শেষ করতে পারব।’
সুনামগঞ্জ সদরের গৌরারং ইউনিয়নের কৃষক আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ধানের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে ধান এখন পাকা ও আধপাকা অবস্থায় রয়েছে। এই সময়ে শিলাবৃষ্টি হলে আমরা মারা পড়বো। আশা করছি আনন্দের সঙ্গেই আমরা সব ধান ঘরে তুলতে পারব।’
শাল্লা উপজেলার আঙ্গারুয়া গ্রামের কৃষক আজমান গণি বলেন, ‘সঠিক সময়ে হারভেস্টার মেশিন ও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া গেলে ফসল কাটা ও মাড়াই সহজ হবে। শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা না হলে খুশি মনে ধান কাটা যাবে। কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া সঠিক সময়ে ঘরে ধান উঠাতে পারাটা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ৫ মে’র মধ্যে হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা পরামর্শের জন্য কৃষকদের পাশে রয়েছেন। হারভেস্টার মেশিনগুলো প্রস্তুত রয়েছে।
‘সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর বোরো ধান আবাদের লক্ষমাত্রা ছিলো ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জন হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার ৯ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ টন চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকা।’
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে ১৭, ১৮ ও ১৯ এপ্রিল পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পাথরসহ সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারও বন্ধ থাকবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামা পারভীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় ।
এদিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বুধবার দুপুরে ৩ দিন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের লোকসভা নির্বাচন কারনে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আজ (বুধবার) থেকে শুক্রবার বন্দর দিয়ে দুই দেশের মাঝে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সময় অফিস যথারীতি খোলা থাকবে।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কর্মকর্তা অমৃত অধিকারী জানান, দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের সঙ্গে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাওয়া-আসাও বন্ধ থাকবে।
হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই বন্দর দিয়ে পার হতে আসা যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে, জরুরি চিকিৎসার জন্য যাতায়াতকারী মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বেশি বেশি অবান্তর কথা বলেন বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, ওবায়দুল কাদের বিএনপির ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার যে তালিকা চেয়েছেন তা সরকারের কাছেই আছে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখেছি, ওবায়দুল কাদের সাহেব বিএনপির কাছে তালিকা চেয়ে তারস্বরে চিৎকার করছেন। তিনি কিসের তালিকা চাইছেন? এর আগেও তো তালিকা দেয়া হয়েছিল। আর তালিকা তো তাদের কাছেই রয়েছে। আইন, আদালত, থানা, পুলিশ তো তাদেরই কব্জায়।
‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের স্নায়ু শিথিল, মস্তিষ্ক অলস ও হৃদয় দুর্বল হওয়ার কারণে বেশি বেশি অবান্তর কথা বলেন। সরকার অসংখ্য মানুষকে গুম, খুন ও অপহরণ করেছে। জাতিসংঘ গুমের একটি তালিকা দিয়েছিল। বিনাভোটের সরকার আজ পর্যন্ত তার কোনো জবাব দিতে পারেনি।’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দলটির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীকে গুমের ১২ বছর পূর্ণ হলো আজ (বুধবার)। আজও তাকে ফিরে পাওয়ার অধীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তার স্ত্রী-সন্তান-পরিবারসহ দেশের অগণিত নেতাকর্মী।
‘শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানীতে ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ তুলে নিয়ে যায় ইলিয়াস আলীকে। এরপর গাড়িটি পাওয়া গেলেও হদিস মেলেনি তাদের। একথা আজ জনগণের সামনে স্পষ্ট যে, এই ফ্যাসিবাদী সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে আপোসহীন সংগ্রাম আর টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত আগ্রাসনের প্রতিবাদে সিলেট অঞ্চলে গড়ে উঠা গণ-আন্দোলনে নেতৃত্বের কারণে ইলিয়াস আলী রাষ্ট্রযন্ত্র ও দেশি-বিদেশি অপশক্তির গাত্রদাহের প্রধান কারণ ছিলেন। ইলিয়াস আলী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। তার জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষাকাতর সরকার রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে তাকে গুম করেছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার তাদেরই অত্যন্ত সচেতনভাবে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে, আয়নাঘরে আটক করে রাখা হচ্ছে। ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার প্রমাণ অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয় ভারতে। সেখানে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে দেয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুম-খুন-ক্রসফায়ার বাহিনী র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে গুমের মাত্রা কিছুটা কমলেও এখনও গুম হচ্ছে। তবে গুমের প্যাটার্ন চেঞ্জ হচ্ছে। সেটা হলো আগে যারা গুম হতো তারা আর ফেরত আসতো না। এখন যারা গুম হচ্ছেন তারা ৫ দিন ৭ দিন এমনকি এক মাস পরেও কেউ কেউ ফেরত আসছে। অথবা লাশ পাওয়া যাচ্ছে। গুম বাহিনী এখন স্বল্প সময়ের জন্য গুম করছেন। এই স্বল্প সময়ের গুম হওয়াটাও খুবই ভয়ংকর।’
রিজভী বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল বুধবার আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য