হঠাৎ আলোচনায় চলে আসা নায়িকা পরীমনি জ্বরে আক্রান্ত। ১৫ জুন পরীমনি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে (ডিবি) কথা বলতে যাওয়ার দিন থেকেই জ্বর জ্বর ভাব ছিল তার। বৃহস্পতিবার থেকে পুরোপুরি জ্বরে আক্রান্ত তিনি।
পরীমনির ঘনিষ্ঠ সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘পরীমনির সঙ্গে গতকাল রাতে কথা হয়েছে। তখন তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। তার শ্বাসকষ্টেরও সমস্যা আছে। উদ্বিগ্ন হয়ে গেলে তার এ সমস্যা বেড়ে যায়।’
বনানীতে পরীমনির বাসার নিচে শুক্রবারও ছিল সংবাদমাধ্যমের আনাগোনা। সুযোগ পেলে পরীমনির সঙ্গে কথা বলতে চান তারা।
পরীমনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গেও তার কথাবার্তা হচ্ছে না। নিউজবাংলাকে চয়নিকা বলেন, ‘আমার শুটিং ছিল। গতকাল শেষ করেছি। আমারও ঠাণ্ডা লেগেছে।’
এই নির্মাতা জানান, ডিবিতে কথা বলতে যাওয়ার দিনই পরীমনির জ্বর ছিল।
বিশ্ব সুন্দরির পর চয়নিকার অন্তরালে নামের একটি ওয়েব সিরিজে কাজ করার কথা পরীমনির। নিউজবাংলাকে চয়নিকা জানিয়েছিলেন, সব ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষে ওয়েব সিরিজটির শুটিং শুরু করতে চান তিনি।
পরিকল্পনাটি আগের মতোই আছে কি না জানতে চাইলে চয়নিকা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে এটি পেছাতে পারে। কারণ, পরীর নিরাপত্তার একটা ব্যাপার আছে। কিন্তু পরীমনি কাজ করতে চান। শুটিংয়ে দ্রুতই ফিরতে চান।’
বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তোলার পর পরীমনিকে নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই গত বুধবার পরীমনির বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
সেদিন রাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন পরীমনি। সেখানে জানান, তিনি অল কমিউনিটি সেন্টারে গিয়েছিলেন সত্যি, কিন্তু অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটানটি।
পরীমনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনা অন্য দিকে ঘোরানোর জন্যই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব করা হচ্ছে।’
এরপর থেকেই আর সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসছেন না ঢাকাই সিনেমার হালের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি নেটওয়ার্ক পরিচালনার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি দম্পতি হলেন চট্টগ্রামের আজিম ও মানিকগঞ্জের বৃষ্টি (ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে)। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি ওয়েবসাইটে পর্নো কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গত রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে বান্দরবানে যৌথ অভিযান চালিয়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) এবং এলআইসি শাখা তাদের গ্রেপ্তার করে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কীভাবে তারা কাজ করতেন
২৮ বছর বয়সী বৃষ্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে ‘বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল’ হিসেবে পরিচয় দিলেও বাস্তবে তিনি আন্তর্জাতিক পর্ন সাইটে সক্রিয় পারফর্মার। ২০২৪ সালের ১৭ মে তার প্রথম ভিডিও প্রকাশিত হয় এবং এখন পর্যন্ত তার আপলোড করা ১১২টি কনটেন্টে ২৬৭ মিলিয়নের বেশি ভিউ রয়েছে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক মনিটরিং সূত্রে জানা গেছে।
বৃষ্টি ও আজিম বিদেশি প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি টেলিগ্রাম, টুইটার (এক্স) ও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ ব্যবহার করে তাদের ভিডিওর প্রচারণা চালাতেন। শুধু অক্টোবরের শুরুর দুই সপ্তাহেই ৫০টির বেশি ফেসবুক পেজ থেকে তাদের কনটেন্টের লিংক প্রচার করা হয়েছে।
আজিম ও বৃষ্টির পরিচয়
আজিম চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে একাধিক গণমাধ্যম জানায়, তিনি আগে থেকেই অপরাধচক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুলিশের নথি অনুসারে, গত ২৫ আগস্ট তিনি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হলেও দ্রুত জামিনে মুক্ত হন।
বৃষ্টি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাসিন্দা। পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি ঢাকায় চলে যান এবং পরবর্তীতে অনলাইনভিত্তিক এডাল্ট কনটেন্ট প্রোডাকশনে জড়ান। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এলেও বর্তমানে তাদের জীবনযাত্রা সামাজিক মাধ্যমে বিলাসবহুল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাব ও অর্থ আয়ের কৌশল
তদন্তে দেখা গেছে, বৃষ্টির নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল খোলা হয়েছে, যা তারা দু’জনে যৌথভাবে পরিচালনা করেন। ওই চ্যানেলে নিয়মিত পেইড ভিডিও বিক্রি করা হতো। পাশাপাশি তারা আয়ের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে তরুণ-তরুণীদের এই কাজে যুক্ত হওয়ার প্রলোভন দেখাতেন। বৃষ্টির ফেসবুকে প্রায় ৪৯ হাজার এবং ইনস্টাগ্রামে ১২ হাজার অনুসারী রয়েছে।
আইনের চোখে অপরাধ
বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি তৈরি, প্রচার ও সংরক্ষণ ফৌজদারি অপরাধ। সিআইডি বলছে, এই দম্পতি শুধু অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না, বরং দেশে বসে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন এবং অন্যদেরও এই চক্রে যুক্ত করছিলেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সিআইডি দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করবে বলে জানা গেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। ইতোমধ্যে শীর্ষ ৪৫টি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বাপি)।
অ্যান্টিবায়োটিক, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও ভ্যাকসিনসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দাবি করে বাপি বলছে, সামগ্রিকভাবে এই ঘটনার অর্থনৈতিক প্রভাব প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাপির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, ১৮ অক্টোবর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দেশের ওষুধ শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মিভূত হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি পুরো খাতকে বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে।
ডা. জাকির বলেন, দেশে বর্তমানে ৩০৭টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এর মধ্যে সক্রিয়ভাবে উৎপাদনে আছে প্রায় ২৫০টি কোম্পানি। বাপির প্রাথমিক জরিপ অনুযায়ী, শুধু শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানিরই প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। অন্য কোম্পানিগুলোর ক্ষতির হিসাব যুক্ত হলে মোট ক্ষতির পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।
তিনি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া কাঁচামালের মধ্যে ছিল অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যান্সার জাতীয় ওষুধ তৈরির উপকরণ। শুধু তাই নয়, কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পুনরায় আমদানি করা সময়সাপেক্ষ। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি সময়সূচিও প্রভাবিত হবে।
বাপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ওষুধ শিল্প দেশের অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ ১৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হয়, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশও রয়েছে। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে উৎপাদন চেইনে বড় ধরনের ধাক্কা লাগবে।
তিনি বলেন, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশই আসে চীন, ভারত ও ইউরোপ থেকে। এসব কাঁচামালের একটি বড় অংশ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা সাধারণত আকাশপথে আমদানি করা হয়। কার্গো ভিলেজে আগুন লাগায় এসব দামি কাঁচামাল ধ্বংস হয়ে গেছে। অন্যদিকে, বিকল্প হিসেবে অন্য এয়ারপোর্টে নামানো পণ্যগুলোকেও নিয়ে উদ্বেগ আছে, কারণ সেগুলোকেও নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়।
আরও জটিলতা দেখা দিয়েছে নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদন নেওয়া পণ্যগুলো নিয়ে। ডা. জাকির হোসেন বলেন, এই পণ্যগুলো পুনরায় আনা অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে একাধিক অনুমোদন নিতে হয়। ফলে এই দিক থেকেও বড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বাপির ধারণা, এই ক্ষতির প্রভাব সরাসরি কাঁচামালের বাইরে গিয়েও বিস্তৃত হবে। ‘একটি র-ম্যাটেরিয়াল হারালে সেই উপকরণে নির্ভরশীল প্রতিটি ফিনিশড প্রোডাক্টের উৎপাদনই অনিশ্চয়তায় পড়ে। ফলে সামগ্রিকভাবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে বলে আমরা অনুমান করছি’— বলেন ডা. জাকির হোসেন।
তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতি দ্রুত তদন্ত, ক্ষতিপূরণের কার্যকর ব্যবস্থা এবং বিকল্প কার্গো ব্যবস্থাপনা জোরদার করার আহ্বান জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসাইনকে এক মাস আগে হত্যার পরিকল্পনা করেন অভিযুক্ত বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির। অভিযুক্ত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে মঙ্গলবার রাজধানীর বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তার দাবি, প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বর্ষা ও মাহির।
ওসি বলেন, ‘প্রায় ৯ বছর ধরে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন মাহির রহমান। সম্প্রতি মেয়েটি তার টিউশন শিক্ষক জোবায়েদ হোসেনের প্রতি আকৃষ্ট হন। বিষয়টি মাহিরকে জানালে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। পরে মেয়েটি জোবায়েদের প্রতিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং মাহিরকে সঙ্গে নিয়ে তাকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।’
তিনি আরো জানান, গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুজনে মিলে হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন। সেদিনই দুটি সুইচগিয়ার কেনা হয়। পরিকল্পনা ছিল, দুই দিক থেকে আক্রমণ করে জোবায়েদকে হত্যা করা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রোববার সন্ধ্যার আগে টিউশনিতে যাওয়ার পথে আরমানিটোলার নূরবক্স রোডের রৌশান ভিলার নিচে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন মাহির রহমান। এ সময় তার সঙ্গে ছিল বন্ধু ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। আর পুরো ঘটনাটি সমন্বয় করেন ওই ছাত্রী।
ওসি রফিকুল বলেন, ‘প্রথমে মেয়েটি হত্যার কথা অস্বীকার করলেও মাহিরের মুখোমুখি করলে সত্য প্রকাশ পায়। তারা দুজনই স্বীকার করেছেন, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা শুরু করেন এবং ১৯ অক্টোবর তা বাস্তবায়ন করেন।’
ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই শিক্ষার্থীর বাসায় পড়াতে গিয়েছিলেন জোবায়েদ। বাসার গেট দিয়ে ঢুকে সিঁড়িতে ওঠার সময় সুইচগিয়ার দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে রাতেই পুলিশ মেয়েটিকে হেফাজতে নেয়। পরদিন প্রধান আসামি মাহির রহমান ও তার সহযোগী ফারদিন আহম্মেদ আয়লানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মেহেরপুরে মায়ের সাথে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় বিষধর সাপের কামড়ে আলিফ নামের ৯ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে সাপে কাটলে প্রথমে ওঝা ও পরে হাসপাতালে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে তার মৃত্যু হয়।
আলিফ সদর উপজেলার খোকসা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মানিক হোসেনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে খোকসা গ্রামের আলিফ অন্যান্য দিনের মত সোমবার দিবাগত রাতে মায়ের সাথে বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। রাত ১০টার দিকে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তার কানে সাপে কামড়ে দেয়। এসময় শিশু আলিফের চিৎকারে তা মা জেগে উঠে এবং সাপটি দেখতে পায়। দ্রুত পরিবারের সদস্যরা আলিফকে উদ্ধার করে প্রথমে ওঝার স্বরনাপন্ন হয়ে ঝাড়ফুক দেওয়া শেষে রাতেই আবার নেওয়া হয় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য জেনারেল হাসপাতাল মেহেরপুরে। হাসতাপালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার ভোরে আলিফের মৃত্যু হয়। রাতেই সাপটিকে মেরে ফেলে হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরে এক শিশুকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগে আবু হানিফ (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে খানপুর এলাকার ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আবু হানিফ খুলনার বাগেরহাটের খন্তাকাটা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও খানপুর এলাকার ইতু ভিলার বাড়ির দারোয়ান। গ্রামের বাড়িতে তার তার দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রী বসবাস করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের খানপুর এলাকার ইতু ভিলা ভবনের ভাড়াটিয়া ও গার্মেন্ট কর্মীর ১১ বছর বয়সী শিশুকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠে ভবনের দারোয়ান (নিরাপত্তাকর্মী) আবু হানিফের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে শিশুটি তার মাকে এ বিষয়ে জানালে তিনি সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের জানান। এ ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে কয়েকজন স্থানীয় যুবক তাকে খানপুর জোড়া ট্যাঙ্কি এলাকায় নিয়ে পিটুনি দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হলে তাকে খানপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ভগ্নিপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম অভিযোগ করেন, দুপুরে এলাকার স্থানীয় যুবক অভি সহ আরও কয়েকজন বাসায় এসে আমার স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। পরে আমাকে ধরে নিয়ে খানপুর জোড়া ট্যাংকির নিচে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমার শ্যালক আবু হানিফকে আটকে মারধর করার দৃশ্য দেখতে পাই। এ সময় অভির লোকজন আমাকেও চড়-থাপ্পড় মারে এবং আমার লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা আমার শ্যালক হানিফকে অটোরিকশায় করে অন্যত্র নিয়ে যায়। পরে রাতে খবর পেয়ে খানপুর হাসপাতালে গিয়ে আমার শ্যালকের লাশ দেখতে পাই।
এ বিষয়ে খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় কয়েকজন যুবক হানিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে তার হাতে-পায়ে ক্ষত থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলায় তারা হানিফকে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। রাত ৮ টার দিকে হানিফের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগ তুলে এলাকার কয়েকজন যুবক হানিফকে মারধর করেছে বলে জানতে পেরেছি। পরে তার মৃত্যু হলে আমরা লাশ হাসপাতালে পেয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ওই শিশুকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার কোন অভিযোগ আমরা এখনো পাইনি। তাছাড়া এটা তদন্তের বিষয়। তদন্ত শেষে নিশ্চিত করে এ বিষয়ে বলা সম্ভব হবে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শুনানি করবেন।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। অন্য চারজন হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১৬ অক্টোবর একটি আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আরেকটি আবেদন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
মন্তব্য