গুলশানের ক্লাব অল কমিউনিটি সেন্টারে ঘুরতে গিয়ে ভাঙচুরের যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি খণ্ডন না করে চিত্রনায়িকা পরীমনি অভিযোগ করেছেন, ঢাকা বোট ক্লাবের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অংশ হিসেবে এটিকে সামনে আনা হয়েছে।
গত ৯ জুন ঢাকা বোটক্লাবের ঘটনা মামলার তদন্ত চলাকালেই উল্টো পরীর বিরুদ্ধে অভিজাত অন্য ক্লাবটিকে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ উঠার পর তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন।
তবে গত ১৩, ১৪ ও ১৫ জুনের মতো এবার লাইভে বক্তব্য দিতে রাজি হননি পরী। শর্ত দেন বক্তব্য দেবেন, তবে সেটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না।
তিনি অল কমিউনিটিতে গিয়ে কী করেছেন, না করেছেন, তার ব্যাখ্যা-বর্ণনা না দিয়ে পরী ‘এতদিন পর’ বিষয়টিকে সামনে আনার ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে প্রশ্ন রাখেন।
তিনি বলেন, ‘এতদিন সবাই চুপ ছিল। এতদিন পর আমি যখন অভিযোগ করলাম, বিষয়টা সবার সামনে আনলাম, তখন কেন সবাই আমার পেছনে লাগছে বলেন। এতদিন পরে। এটা তো স্পষ্ট বোঝাই যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এতদিক থেকে এত চাপ, আমি সত্যি টায়ার্ড এবার। তারা অ্যারেস্ট হয়েছে, সুবিচারের জন্য আমার পক্ষে কে লড়বে না লড়বে সেটাই এখনও ঠিক করে উঠতে পারছি না। সেখানে আমাকে উল্টো ব্লেম করা হচ্ছে নানা দিক থেকে। সেটা আসলে ভিত্তিহীন। চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।’
পরীমনিকে নিয়ে তোলপাড় গত রোববার থেকে। গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম-সব জায়গায় নানা আলোচনা। এর শুরুটা করেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টিমুখ এই নায়িকা নিজেই।
রাত আটটার দিকে হঠাৎ করেই নিজের ভ্যারিফাইড পেজে স্ট্যাটাস দেন পরী। অভিযোগ করেন, তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে, দেয়া হয়েছে হত্যার হুমকি।
মুহূর্তেই স্পটলাইট গিয়ে পড়ে তার ওপর। এরপর রাত ১০টায় গণমাধ্যমের সামনে আসেন। ঢাকা বোট ক্লাবে কী কী হয়েছে, তার মতো করে বর্ণনা দেন। অভিযোগ করেন, পুলিশের কাছে গেলেও মামলা নেয়া হয়নি।
তবে পর দিন সকালে মামলা হয় সাভার থানায়। গ্রেপ্তার হন বোট ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন মাহমুদ, পরী যার সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন, সেই যুবক অমি এবং আরও তিন জন।
তবে নাসির উদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পরীর বিরুদ্ধে আনেন পাল্টা অভিযোগ। তিনি জোর করে তাকে মদ খাইয়ে দিয়েছেন, এমন দাবির বিপরীতে বলেন, পরীই তাদের ক্লাবে গিয়ে জোর করে মদ খেতে চেয়েছে, তিনি বাধা দিয়েছেন বলে তার ওপর হামলাও হয়েছে।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে বুধবার হঠাৎ করেই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় গত ৮ জুন প্রথম প্রহরে তাদের থানায় একটি সাধারণ ডায়েরির কথা।
৭ জুন গভীর রাতে পরীমনি গুলশানের অভিজাত ক্লাব অল কমিউনিটিতে গিয়েছিলেন কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে। সেখানে তিনি ভাঙচুর করেছেন, এমন অভিযোগ এনে ক্লাব কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে পুলিশের সঙ্গে। জরুরি নম্বর ৯৯৯ এ কল পেয়ে সেখানে যান কর্মকর্তারা। তবে আগেই সেখান থেকে চলে যান পরী।
পরে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ক্লাবের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। একটি ভিডিও ফুটেজও তারা গণমাধ্যমকে দিয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে পরীমনি ক্লাবে ঢুকছেন, আর বের হয়ে গাড়িতে উঠছেন। তবে গাড়িতে উঠার সময় তিনি যেভাবে হাঁটছেন, তাতে পুরো নিয়ন্ত্রণ তার ওপর আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
পরী এই ঘটনাটির বিষয়ে না বলে ঢাকা বোট ক্লাবের ‘সত্যটা’ সামনে আনার ওপরই জোর দিচ্ছেন।
বলেন, ‘সত্যি তো সত্যি। একদিন পরে হোক দুই দিন পরে হোক, এটা তো আসেই সবার সামনে। চলেন সবাই মিলে চেষ্টা করি, আসলে ঘটনাটা কী।’
অল কমিউনিটি সেন্টারে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি গিয়েছিলাম। সেটা তো সিসিটিভির ফুটেজে আপনারা দেখেছেন। কিন্তু অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা যদি ঘটিয়ে থাকি, তাহলে সেটা এতদিন পর কেন আসল। তারা তো আমার মতো ভিকটিম হয়নি, তাদের তো কোনো বাধা ছিল না। সঙ্গে সঙ্গেই তারা অভিযোগ করতে পারতেন। এটা তো খুবই স্পষ্ট। সবাই এটা বুঝতে পারছে ভাই।’
তিনি বলেন, ‘এখন যেটা নিয়ে কথা বলছি সেটাই ইস্যু হয়ে যাচ্ছে। আপনারা দয়া করে কোনোভাবেই মূল ঘটনাকে কোনোভাবেই এদিক ওদিক সরতে দিয়েন না। প্লিজ আপনারা পাশে থাকেন। একটা সত্যিকে সামনে আনতে দেন। আমি মনোবল হারাতে চাই না আর। প্লিজ আমাকে হেল্প করেন। আমার কিন্তু জ্বর।’
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ব্রিজের নিচের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে বাঁধ অপসারনে স্বস্তি প্রকাশ করেছে দুর্ভোগে থাকা পানিবন্দি অর্ধশতাধিক পরিবার।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে উপজেলা সহকারি কমিশিনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ কান্দি ইউনিয়নের লেবুবাড়ি গ্রামে এক অভিযান চালিয়ে ব্রিজের নিচের এই বাঁধ অপসারণ করেন।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল আজম, কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের নিচে অবৈধভাবে পাকা দেওয়াল দেওয়ায় পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পরে অর্ধশতাধিক পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানিবন্দী একাধিক ভূক্তভোগী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে আছি প্রভাবশালী ঘের মালিকদের কাছে। ভয়ে আমরা কিছু বলতেও সাহস পাইনি। বাধ্য হয়ে বাঁধ অপসারনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন জানাই।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, ব্রিজের নিচে পাকা দেয়াল দিয়ে পানি আটকিয়ে বর্ষা মৌসুমে জলাভূমিকে ঘের বানিয়ে মাছ চাষ করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। এতে জলাভূমির মাঝে বসত করা প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। মাছের ঘেরের কারনে এ সকল বাড়ির পাড়গুলো দিন দিন ভেঙে পড়ছিল। বর্ষার পানি কমে গেলেও ব্রিজের নিচে পাকা বাঁধ থাকার কারনে জলাভূমির পানি না কমায় দূর্ভোগে পরে ঘেরের ভিতরে বসবাস করা পরিবারগুলো।
অভিযান পরিচালনাকারী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: মাসুম বিল্লাহ বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাগুফতা হক স্যারের নির্দেশনায় সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ব্রিজের নিচে পানি আটকিয়ে রাখা পাকা ইটের দেওয়াল ভেঙ্গে দেওয়া হয়। জনদুর্ভোগ রোধে উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই তৎপর রয়েছে।
নওগাঁর বদলগাছীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে শিশুদের নিয়ে প্রাণবন্ত ‘শিশু সমাবেশ’। শনিবার (১১ অক্টোবর ২০২৫) সকালে বদলগাছী কারিগরি ও বাণিজ্যিক কলেজ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিসম)-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর রহমান।সম্মানিত বক্তা ছিলেন ফটোসাংবাদিক মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং সোহানি ইসলাম সমাপ্তি, বিসম অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিনিধি। অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা সমাজকল্যাণ সংস্থা-এর প্রকাশনা সম্পাদক আলেয়া বেগম আলো।
ফটোসাংবাদিক সাজ্জাদ বলেন, “শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ— তাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পরিবার ও সমাজকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ত্ব করেন মিস অন্নি ইসলাম, অ্যাক্রেডিটেড মেডিয়েটর ও কিউনিটি মেডিয়েশন সেন্টারের যুগ্ম সম্পাদক।মডারেটর ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন জনাব এস. এন. ঘোষামী, সিনিয়র অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও বিসম-এর চেয়ারম্যান।অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিশুদের হাতে জাতীয় পতাকা, খাতা ও শিক্ষাসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বক্তারা শিশুদের দেশপ্রেম, নৈতিকতা ও স্বপ্নমুখী জীবনের গুরুত্ব সম্পর্কে অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রেস ক্লাব এলাকায়। পুলিশের বাধার মুখে সেখান থেকে সরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে সেখানে সরে গিয়ে ওই স্থান থেকেই তারা লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, জনদুর্ভোগ এড়াতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি এখন থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলবে। প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকেই কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শীর্ষ নেতারা এরইমধ্যে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়েছেন। যারা এখনো প্রেস ক্লাবে আছেন, তাদের অনুরোধ করছি মিছিলসহ শহীদ মিনারে চলে আসতে। আমরা এখান থেকেই আমাদের আন্দোলন পরিচালনা করব এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে লাগাতার আন্দোলনকে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
অধ্যক্ষ আজিজী বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি না হবে, আমরা শহীদ মিনার ছাড়ব না, ঢাকার রাজপথও ছাড়ব না। আলোচনার মাধ্যমে, সহযোগিতার মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন নিয়েই বিজয়ী বেশে আমরা শ্রেণিকক্ষে ফিরব।
অন্যদিকে প্রেস ক্লাব এলাকা থেকে শিক্ষক নেতাদের সরাতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই আবার প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টাও করেন। তবে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পিআর পদ্ধতি এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেয়া কোনকিছু এদেশের মানুষ গ্রহণ করে না।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে ডিআরইউ মিলনায়তনে এক 'স্মরণসভা'য় তিনি এসব কথা বলেন। ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।
তিনি বলেন, বিএনপি বিরুদ্ধে অপ্রচার চলছে, বিএনপি নাকি সংস্কার চায় না। বিএনপি সংস্কারের পক্ষে। আপনারা অপ্রচারে কান দিবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, পিআর পদ্ধতির বিষয়ে জনগণ বোঝে না, সেই পদ্ধতি নিয়ে কয়েকটি দল আন্দোলন করছে। এর কারণ হচ্ছে নির্বাচন বিলম্বিত করা, জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করা।
শিক্ষা উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট।
রোববার সকাল ১০ টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে এই অবস্থান শুরু করেন শিক্ষকরা। সারা দেশ থেকে আসা ব্যাপকসংখ্যক শিক্ষকের অবস্থানের কারণে ওই সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া জাতীয় প্রেসক্লাব, সচিবালয় ও মেট্রোরেলের প্রবেশ পথে সাধারণ মানুষের চলাচলও চরমভাবে বিঘ্ন হচ্ছে।
প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জোটের মহাসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানিয়েছেন। দাবি আদায়ে অবস্থান থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা আসতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের শিক্ষক সমাবেশে লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিত ছিল। ওইদিন শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসিকের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ।
সূত্রমতে, শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে নতুন করে বাড়িভাড়া ভাতা ও মেডিকেল ভাতার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাবনা গত ৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ নির্ধারণে নতুন প্রস্তাব করা হয়। একইসঙ্গে কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ এবং চিকিৎসা ভাতা এক হাজার টাকার প্রস্তাব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি৷
উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় মূলত আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের শান্তি ও সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য যে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ব্যক্তি বা গ্রুপকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্নকরণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করার বিষয় আলোচনা হয়েছে৷
উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যাতে কোনো আইন বহির্ভূত কাজ না করে সে বিষয়েও নির্দেশনা প্রদান করার আলোচনা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা।
তিনি বালেন, গত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের আসন্ন নির্বাচনে যথাসম্ভব দায়িত্ব প্রদান করা থেকে বিরত থাকা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশিক্ষণ যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা।
আপনারা জানেন, এ প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২৮টি ব্যাচে তিনদিন মেয়াদি প্রশিক্ষণ সারা দেশে (জেলা, মহানগর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান) ১৩০টি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে একটি ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং আরেকটি (২য়) ব্যাচের (৬,৫০০ জন) প্রশিক্ষণ চলমান রয়েছে। নির্বাচনের জন্য পুলিশের চূড়ান্ত
(৪র্থ পর্যায়ের) প্রশিক্ষণ গত ৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে শুরু হয়েছে এবং আগামী ১৫ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে সব ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আনসার ভিডিপি সদস্যদের জন্য ‘প্রাক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে প্রতি কেন্দ্রে ১৩ জন হারে আনুমানিক ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রের জন্য মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। তন্মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার জনকে অস্ত্রসহ ও ৪ লাখ ৫০ হাজার জনকে নিরস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ হবে। তাছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে। এর জন্য ৩১৫৭ জন রিক্রুট সিপাহিকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারের নির্বাচনে বিজিবির ১১০০ প্লাটুনে ৩৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। ইতোমধ্যে ৬০% নির্বাচনি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রায় ৮০ হাজার সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।
তিনি বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সীমানা পুনর্নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল যেটা আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি এখন শান্ত ও ভালো রয়েছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফ্যাসিস্টের লোকজন শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে, সেজন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীও এতে ইন্ধন জুগিয়েছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় তৎপরতার কারণে তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে। সবার সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। শুধু বাহকদের নয়, মাদকের গডফাদারদের আটক করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১-এ প্রসিকিউশনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, প্রথমে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবে প্রসিকিউশন। এরপর নিজেদের যুক্তি তুলে ধরবেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী। শেষ পর্যায়ে যুক্তি খণ্ডন করবে প্রসিকিউশন বা রাষ্ট্রপক্ষ। এ ধাপ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হবে।
এর আগে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। জবানবন্দিতে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন এবং বিরোধী পক্ষকে দমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল শেখ হাসিনার সরকার।
মন্তব্য