ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের সাড়া জাগানো জুটি ওমর সানী ও মৌসুমীকে নিয়ে মৃত্যুর গুজব কে ছড়িয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিনেতা।
এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর আগে অনেকবার তার মৃত্যুর গুজব কারা ছড়িয়েছিল এবং সবশেষ নায়ক আলমগীরকে নিয়ে মৃত্যুর গুজব কারা ছড়িয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওমর সানী।
এসব গুজবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ওমর সানী মনে করেন ইউটিউব কন্টেন্টের ক্ষেত্রে একটা নীতিমালা থাকা উচিত।
এ বিষয়ে সোমবার রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওমর সানী।
সেখানে তিনি লিখেন, ‘ইউটিউব চ্যানেলের প্রতি একটা নীতিমালা থাকা উচিত, তথ্য মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে থাকা উচিত, তা কি হচ্ছে? কত হাজার গুঞ্জন হলে নীতিমালা করবেন?
‘আমাকে মেরেছে কয়েকবার। মৌসুমীকে মেরেছে, এটিএম সাহেবকে মেরেছিল অনেকবার; আরও অনেককে মেরেছে। মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং কাল্পনিক গল্প। আজ জলজ্যান্ত আমাদের চলচ্চিত্রের বটবৃক্ষ আলমগীর সাহেবকে মারলেন। না উনি মারা যাননি; বেঁচে আছেন।’
এ অভিনেতা লিখেন, ‘কয়েক দিন আগে দেখলাম সাইডলাইনে বসে থাকা একটা মেয়েকে তার অসুস্থতা ও অসহায়ত্ব নিয়ে তাকে নায়িকা বানিয়েছেন। আসলে উনি নায়িকা নয়। আরও অনেক গল্প।’
এ রকম মিথ্যা কনটেন্ট বানিয়ে তারকাদের বিক্রি করা হচ্ছে উল্লেখ করে ওমর সানী লিখেন, ‘একটা নীতিমালা হওয়া উচিত। কোনো কন্ট্রোল নেই। আমাদের বিক্রি করে দেদার পয়সা কামাচ্ছে তারা।
‘যারা এগুলো করছে তারা কী মানুষ নাকি? যাই হোক তথ্যমন্ত্রী এবং রাষ্ট্র মহোদয়কে বললাম।’
সালেক মিয়ার পায়ে ঘা হয়েছে। খুব চুলকায় সেখানে। সালেকের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার মোল্লারগাও ইউনিয়নে। ৫ থেকে ৬ দিন পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল তার বাড়ি। তবুও বাড়ি ছেড়ে যাননি তিনি। পানিতে থাকতে থাকতেই পায়ে ঘা হয়ে গেছে তার।
সালেক বলেন, ‘শুধু আমার না, আমাদের বাড়ির আরও কয়েকজনের এমন হয়েছে। বাচ্চাদের হাতে-পায়ে ফোঁড়া উঠেছে। তাতে চুলকানি লেগেই থাকে।’
নগরের ছড়ার পাড় এলাকার একটি বস্তিতে থাকেন সুনাফর আলী। ৪ সদস্যের পরিবারে সবার ডায়রিয়া।
সুনাফর আলী বলেন, ‘এই কয়দিনে পচা পানির মধ্যে ছিলাম। খাবার পানিও পাইনি। এখন পানি নামলেও বাসার সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
সিলেটে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে বাড়তে শুরু করেছে পানিবাহিত রোগ। বেশিলবাগই ডায়রিয়া ও চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পানি আরও কমলে রোগবালাই আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস।
তবে আক্রান্ত বেশিরভাগই এখন পর্যন্ত বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগির চাপ এখনও তেমন বাড়েনি বলেও জানা গেছে।
আক্রান্তরা বাসায় চিকিৎসা নেয়ায় রোগির সঠিক তথ্যও নেই সংশ্লিস্টদের কাছে। তাই নগরের অনেকে রোগে আক্রান্ত হলেও সিটি করপোরেশনের কাছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ দিকে বন্যা পরবর্তী সময়ে রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জেলায় ১৪০টি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছে সিভিল সার্জন অফিস। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও নগরে গঠন করা হয়েছে আরও ৩টি টিম।
সিলেটের সিভিল সার্জন এস এম শাহরিয়ার বলেন, ‘বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ বেড়েছে। আমাদের হিসেবে এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৪৫০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি চর্ম রোগে ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন। গোয়ানঘাট উপজেলায় রোগীর সংখ্যা বেশি।’
তিনি বলেন, ‘পানিবাহিত রোগ যাতে না ছড়াতে পারে এজন্য আমাদের মেডিক্যাল টিম ইউনিয়ন পর্যায় থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়ও কাজ করছে। তবে বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।’
সিলেটে বন্যাকবলিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৪০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে জানিয়ে জেলার এই প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, এর মধ্যে সিলেট সদরে ১০টি, দক্ষিণ সুরমায় ৮টি, বিশ্বনাথে ১১টি, ওসমানীনগরে ৯টি, বালাগঞ্জে ৭টি, ফেঞ্চুগঞ্জে ১০টি, গোলাপগঞ্জে ১৬টি ও বিয়ানীবাজারে ১৬টি টিম গঠিত হয়েছে।
এ ছাড়া জকিগঞ্জে ১০টি, কানাইঘাটে ১২টি, গোয়াইনঘাটে ১০টি, জৈন্তাপুরে ১১টি এবং কোম্পানিগঞ্জে ৭টি করা হয়েছে। এর বাইরে জেলা সদরে ৩টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এসব দলে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট অনেকেই আছেন। প্লাবিত এলাকার সবখানেই যেন স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতিটি টিমকে নির্দেশনা দেয়া আছে।’
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগ বৃদ্ধির শঙ্কা থাকে। তবে এজন্য আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের জন্য নগরের শাহী ঈদগাহ এলাকায় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে নগরের রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সিলেট সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
পচা ও দুর্গন্ধ যুক্ত পানির কারণে চর্মরোগ ও ডায়রিয়া বেশি ছড়াতে পারে জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তিনটি টিম মাঠে আছে, প্রয়োজনে আরও গঠন করা হবে। এ ছাড়া নগরে পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পানি পুরো নেমে যাওয়ার পর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার দল গঠন করে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গ নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো এবং ময়লা দুর্গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের বেসরকারি ফলে আওয়ামী লীগ ১০টি এবং বিএনপি ৪টি পদে জয়ী হয়েছে।
বুধবার দিনভর ভোট গ্রহণ শেষে রাতে গণনা করা হয়, তবে রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করবে বার কাউন্সিল।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল বড় জয় পেয়েছে। প্যানেলটি বার কাউন্সিলের ১৪ পদের মধ্যে ১০টিতে (সাধারণ ৪ ও আঞ্চলিক ৬ পদ) জয়ী হয়।
সাধারণ পদে সাদা প্যানেলের জয়ীরা হলেন সৈয়দ রেজাউর রহমান, মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা, মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বাদল ও মো. রবিউল আলম বুদু।
আঞ্চলিক পদে জয়ী ছয়জন হলেন আব্দুল বাতেন, মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন খান, এ. এফ. মো. রুহুল আনাম চৌধুরী মিন্টু, আনিস উদ্দিন আহমেদ সহীদ, একরামুল হক ও আব্দুর রহমান।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে সাধারণ পদে জয়ীরা হলেন জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজল। আঞ্চলিক পদে জয়ী হলেন এএসএম বদরুল আনোয়ার (চট্টগ্রাম)।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে প্রতি তিন বছর পর নির্বাচন হয়। অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে এ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হন। আর নির্বাচিত ১৪ সদস্যের মধ্য থেকে একজনকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়।
আরও পড়ুন:জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাসহাঁটিয়া গ্রামের প্রান্তি কৃষক হাশেম আলী। কষ্টার্জিত জমানো টাকায় ১২ বিঘা জমিতে লাগিয়েছিলেন বোরো ধান। গত শনিবারের আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে তার স্বপ্নের ধান। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি।
শুধু হাশেম আলী নন। মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ও ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের কাপাসহাঁটিয়া, শেখ সাদি, টুপকারচর, ফকিরপাড়া, বেলতৈল, বাগবাড়ি, পূর্ব কাপাসহাটিয়া, তালুকপাড়াসহ ২০ গ্রামের আশপাশের কয়েক হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত শত শত কৃষক।
শনিবার রাতে উজানের ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকস্মিক বন্যায় এই ২০ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার জমির পাকা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দিশাহারা এসব কৃষক যে যেভাবে পারছে ধান কাটার চেষ্টা করছে। কিন্তু শ্রমিক আর নৌকা সংকটের কারণে বেশির ভাগ ক্ষেতের ধান ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। আবার উৎপাদন খরচ না উঠায় অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন ধানের আশা।
কৃষক হাকিম আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পানিতে তলানো ধান কাটার জন্যে দেড় হাজার টাকা দিয়েও কামলা পাওয়া যাইতাছে না। যাগর একটু টাকা-পয়সা আছে, খালি তারাই ধান কাটতাছে। যাগর টাকা নাই তারা আর ধান কাটতে পারতাছে না। আমরা খুব কষ্টে আছি।’
কৃষক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘তলায় থাকা ধান কাটার পর রাস্তা পর্যন্ত যে আনমু, এহন নৌকা পাওয়া যাইতাছে না। এডা নৌকা আনবের গেলে এক ঘণ্টার জন্যে ১০০০ হাজার টাকা দেওয়া লাগে। কামলা খরচ দিয়ে, নৌকা খরচ দিয়ে ধান কাইটে পুষাইতাছে না। তাই বেশির ভাগ ধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাইতাছে।’
কাপাসহাঁটিয়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি সাত বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন। পানিতে ডুবে গেছে পুরো জমির ধান। দিনে দেড় হাজার টাকা মজুরি দিয়ে শ্রমিক আর ঘণ্টায় হাজার টাকার চুক্তিতে নৌকা ভাড়া নিয়ে দুই বিঘার ধান কেটে রাস্তায় তুলেছেন। বাকি ধান এখনও পানির নিচে ডুবে আছে।
কৃষক আকবর আলী বলেন, ‘আমরা যে ক্ষতির শিকার হয়েছি, এহন যদি সরকার আঙ্গরে সাহায্য না করে তাইলে সারা বছর না খায়ে থাকা লাগব।’
ঝাউগড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হিল্লোল সরকার বলেন, ‘প্রতি বছর সাধারণত ধান কাটা শেষে আষাঢ়ের মাঝামাঝিতে বন্যা আসে। এ বছর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ যমুনার পানি ঢুকে পড়ে। বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুত না থাকায় এ এলাকার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।’
মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, উপজেলায় এ বছর ২০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ঝাউগড়া ও ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নেই আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর।
জামালপুর কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক শাখাওয়াত ইকরাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিমজ্জিত ধান কাটতে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দেয়া ছাড়াও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ডাকাত আখ্যা দিয়ে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।
বারৈয়ার পৌরসভার হাটবাজার এলাকায় বুধবার সন্ধ্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে। পুলিশ-র্যাব সদস্য এমনকি স্থানীয়রা কেউ এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, ‘র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়েছে কি না জানি না। তবে র্যাব নিজস্ব গতিতে অভিযান চালাচ্ছে। এখনও মামলা হয়নি।’
বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৯টার দিকে বারৈয়ার বাজারে দেখা যায়, র্যাব-পুলিশের অন্তত বিশটি গাড়ি সেখানে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। ছোট ছোট কিছু দোকান বাদে বেশির ভাগই বন্ধ। এ সময় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বুধবারের ঘটনা কী ঘটেছে সেটি তারা জানেন না।
ঘটনাস্থলে কথা হয় পুলিশের মিরসরাই সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার লাবিব আব্দুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখানে রয়েছি। পরিস্থিতি যাতে অন্যদিকে মোড় না নেয়, সে জন্যই আমরা এখানে আছি।’
তবে উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা এ বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
এর আগে বুধবার মাগরিবের নামাজের পর চিহ্নিত দুই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে র্যাব সদস্য শামীম কাউসার, সিপাহি মোখলেসুর রহমান ও সোর্স মো. পারভেজ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
র্যাব-৭-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের প্রথমে বারৈয়ারহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে। গুরুতর আহত দুজনকে রাতেই হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পাঠানো হয়।
হামলার বিষয়ে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে আমাদের অভিযানের পরিকল্পনা ছিল। র্যাবের এই অভিযানের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা জানতো যে র্যাব সদস্যরা রেকি করতে আসবেন।
‘তারা আগে থেকেই হামলার পরিকল্পনা করে রেখেছিল, কারণ শুধু জনগণ পেটালে খালি হাতেই মারত। তাদের মাঝখান থেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছি।’
তবে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা র্যাবের সহযোগী পারভেজ জানান, তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে এ হামলা চালায় একটি মহল। হামলার নেতৃত্বে তানভীর নামের একজনের কথা জানান তিনি।
তবে র্যাবের ফেনী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক আব্দুল্লাহ আল জাবের ইমরান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের সদস্যদের ডাকাত বলে হামলা করেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
আরও পড়ুন:লিবিয়ার বন্দিশালায় আটক ১৬০ বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন।
তাদের বহনকারী বুরাক এয়ারলাইনসের একটি বিমান বৃহস্পতিবার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউল হক।
তিনি বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে লিবিয়া থেকে ১৬০ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের বহন করা বুরাক এয়ারের ফ্লাইট ইউজেড-২২২ ঢাকায় অবতরণ করেছে।’
লিবিয়ার বন্দিশালায় আটকদের মধ্য থেকে এই ১৬০ বাংলাদেশি দেশে এসেছেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায়। তাদের বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে লিবিয়ার বুরাক এয়ারের ফ্লাইটটি ভাড়া করেছিল আইওএম।
স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল পৌনে ৪টায় লিবিয়ার মেতিগা বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
এর আগে লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান মেতিগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকারীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বিদায় জানান।
আরও পড়ুন:জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরির লোভ দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুক্তিপাড়া ও ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে বুধবার রাত ১টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওই দুই যুবক হলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার গড়চাপড়া গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী রাশেদুজ্জামান শান্ত ও সদর উপজেলার পিরোজখালী গ্রামের ৩০ বছর বয়সী বিল্লাল হোসেন।
ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাব্বুর রহমান নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, শান্ত দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে এনএসআইয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ে তিনি চাকরি দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
সম্প্রতি এনএসআইয়ের জুনিয়র ফিল্ড অফিসার ও এরিয়া অফিসার পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে শান্ত কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেন।
এরপর আলমডাঙ্গা উপজেলার কাবিলনগর গ্রামের আব্দুল লতিফ বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় শান্ত ও বিল্লালসহ দুই থেকে তিনজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মামলা করেন।
পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মুক্তিপাড়ায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে শান্তকে গ্রেপ্তার করে। তার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় ১৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। পরে ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তার সহযোগী কাঠমিস্ত্রি বিল্লালকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি মাহাব্বুর বলেন, ‘শান্ত আব্দুল লতিফের ছেলে আব্দুর সবুরকে চাকরি দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর শান্ত ও বিল্লালের কাছ থেকে আরও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
‘শান্ত আগে বিজিবির বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন। সরকারি চাকরি দেয়ার নামে তিনি প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন:জায়গা স্বল্পতার সমস্যা মেটাতে অস্থায়ীভাবে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি করপোরেশন।
আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বাস টার্মিনালটি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন সিটি সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে তিনি বিষয়টি জানান।
জেলা বাস মালিক গ্রুপের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় পাঁচ বছর আগেও অভ্যন্তরীণ রুটে ৯০টি বাস ছিল। বর্তমানে সেই বাসের সংখ্যা ১৯০টি এবং দূরপাল্লার রুট মিলিয়ে এই টার্মিনালে বাস আছে তিন শতাধিক। তবে এত বাস রাখার জন্য যথেষ্ট জায়গা নেই এই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে।
জায়গা না পেয়ে বাস রাখা হয় টার্মিনাল সংলগ্ন বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সামনের সড়কে। এতে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে সড়ক। বিঘ্নিত হচ্ছে যান চলাচল।
পাশাপাশি বাস মালিক ও শ্রমিকরা রয়েছেন চুরির আতঙ্কে। খোলা জায়গায় বাস রাখায় বিভিন্ন সময় ব্যাটারিসহ নানা যন্ত্রাংশ চুরির মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ।
সাদি পরিবহনের চালক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাস টার্মিনালের যে বর্তমান অবস্থা, তাতে বাস রাখা অনেক কষ্টের। বাস একবার টার্মিনালের মধ্যে ঢুকালে বের করতে জান-পরান বের হয়ে যায়। জরুরি ট্রিপ থাকলে তো ভোগান্তির শেষ নাই। তাই বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর বাস রাখতে হয়। টার্মিনালে যে জায়গা রয়েছে, তার থেকে দ্বিগুণ জায়গা প্রয়োজন। তাহলে ভোগান্তি কমে যাবে।’
তুফান মেল পরিবহনের চালক সুমন বলেন, ‘রাস্তার ওপরে গাড়ি রাখলে নানা সমস্যা হয়। অনেক বাসের ব্যাটারি চুরি হইছে। বাইরে বাস রাখাটা রিস্ক। শুনছি ট্রাক টার্মিনালের জন্য যে জায়গা করছিল ওই জায়গায় বাস স্ট্যান্ড নেবে। বাস স্ট্যান্ডের চাইতে ট্রাক টার্মিনালের জায়গা বড়। সব বাস রাখাও সম্ভব হবে। এইটা হইলে ভোগান্তি মনে হয় কমবে।’
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, ‘দিন দিন কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসের সংখ্যা বাড়ছেই। পদ্মা সেতু চালু হলে নতুন অনেক কোম্পানির বাস এই টার্মিনালে থাকবে। এখন যে বাস রয়েছে সেই বাসগুলোকেই জায়গা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। টার্মিনালের সামনে যানজটও অনেক বেড়েছে।
‘জনগণের ভোগান্তি তো হচ্ছেই, বাস মালিকরাও ভোগান্তিতে রয়েছে। এমন অবস্থায় মেয়র সেরনিয়াবাত জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে কাশিপুরে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ট্রাক টার্মিনালে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
কিশোর জানান, যন্ত্রাংশের দোকানগুলোও সেখানে স্থানান্তর করা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যেই বাস টার্মিনাল ট্রাক টার্মিনালে স্থানান্তর হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘বর্তমানে যেখানে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রয়েছে সেখানে বাস রাখার জন্য জায়গার স্বল্পতা রয়েছে। মেয়র মহোদয় ট্রাক টার্মিনালে বাস টার্মিনাল স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অস্থায়ীভাবে সেখান থেকেই বাস চলাচল করবে। বাসগুলো আর ঝুঁকি নিয়ে বাইরে কোথাও রাখতে হবে না। সব বাসই ট্রাক টার্মিনালে রাখা সম্ভব।
‘তা ছাড়া সিটি করপোরেশনের প্ল্যান অনুযায়ী বর্তমানে যেখানে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল রয়েছে সেখানে নগর ভবন এবং গড়িয়ারপারে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণের কথা রয়েছে। গড়িয়ারপারে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল স্থায়ীভাবে স্থানান্তর হলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য