কী পাখি?
ময়না, ক্লাস টু-তে পড়ে।
টু?
কথা শিখেছে তো। পুরো বাক্য বলতে পারলেই ক্লাস থ্রি-তে উঠবে।
দশ বছর হয়ে গেছে এই বিজ্ঞাপনের। সেই ময়না পাখিটা এখন কোন ক্লাসে পড়ে? রাখির কাছে জানতে চেয়েছে তার এক অনুসারী।
মজার এই প্রশ্নটি পেয়ে একটু স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন রাখি। তার মনে পড়ে যায়, ২০১০ সালের সেই দিনগুলোর কথা। অভিনয় ও মডেলিংয়ে তখন তিনি স্পট লাইটের নিচে।
এবার স্মৃতি খোঁজা বাদ দিয়ে হাসতে হাসতে রাখি বলেন, ‘তখন তো ক্লাস টু-তে পড়ত। এখন নিশ্চই সে হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েট হয়ে গেছে।’
২০১০ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার হওয়ার তিন বছর পর অর্থাৎ ২০১৩-তে রাখি চলে যান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ২০১৭-তে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে রিসার্চ করেছেন। এখন চাকরি করছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাখি মাহবুবকে পাওয়া গেল ইনস্টাগ্রাম লাইভে। সেখানে ৩০ মিনিট কথা বলেছেন তিনি। দিয়েছেন বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর।
কথার শুরুতে তিনি জানিয়ে দিলেন কেন তিনি অস্ট্রেলিয়া গেলেন। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ভাই এক বোন, বাবা, চাচা- সবাই অস্ট্রেলিয়াতে থাকেন। আমি যখন অভিনয় শুরু করি তখন এ লেভেল দিচ্ছিলাম। সেটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে আর থাকতে পারিনি। উচ্চশিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় আসতে হয়।’
রাখি এখন থাকেন অস্ট্রেলিয়ার পার্থে; তার বোনের সঙ্গে। সেখানে বেশে ভালো সময় কাটাচ্ছেন তিনি। ইনস্টা লাইভে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, দেশে কবে ফিরবেন। উত্তরে রাখি জানিয়েছেন, ইট ডিপেন্ডস।
লাইভের অধিকাংশ সময় কথা হয়েছে পড়ালেখা নিয়ে। রাখি তার ফলোয়ার এবং ভিডিও চ্যাটিংয়ে উন্নত দেশগুলোতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে কথা বলেন।
অভিনয়ে ফেরা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন কয়েকজন। তাদের উত্তর দিতে গিয়ে রাখি বলেন, ‘দেশে ফিরে অভিনয় শুরু করার পরিকল্পনা নেই। তবে যদি ভালো কাজের অফার আসে, সে ক্ষেত্রে ভেবে দেখতে পারি।’
অস্ট্রেলিয়ায় কিছু শর্টফিল্ম করেছেন রাখি। সেখানকার প্রোডাকশনে ভয়েস দেয়াসহ টিভি বিজ্ঞাপনেও কাজ করার কথা জানান তিনি।
রাখি এখন নিয়মিত তার ভক্ত-পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলতে চান, দেখা করতে চান এবং সেটা অনলাইনের মাধ্যমে।
রাখি বলেন, ‘আপনারা কবে সময় দিতে পারবেন, সেটা আমাকে জানালে আমি অবশ্যই চেষ্টা করব আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে।’
অনলাইনের মাধ্যমে এই যোগাযোগ হতে পারে সপ্তাহে একবার বা মাসে একবার। এই সিদ্ধান্ত তিনি নিতে বলেছেন তার অনুসারী ও ভক্তদের।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংর্ঘষের ঘটনায় নিহত তিনজনের লাশ আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে জেলার মিয়াপাড়া পৌর কবরস্থান হতে ইমন তালুকদার ও রমজান কাজির লাশ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু হয়। পরে তাদের লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। অন্যদিকে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কবরস্থান থেকে সোহেল রানা মোল্লার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
লাশ কবরস্থান থেকে উত্তোলন কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সী ও রন্টি পোদ্দার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গোপালগঞ্জ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইমএন্ড অপস) সহ গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর সাজেদুর রহমান, এস আই মুরাদ, এস আই শহিদুল ইসলাম, এপিবিএন পুলিশ ও বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবারের সংঘর্ষে নিহত চারজনের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন ও সৎকার করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় মারা যান রমজান মুন্সি। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ময়না তদন্ত শেষে আপনজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই মুরাদ হোসেন ও এস আই শহিদুল ইসলাম উক্ত রমজান কাজী ও ইমন তালুকদার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান। ময়না তদন্ত শেষে লাশ পুনরায় দাফন কর হবে। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ পুনরায় তাদের কবরস্থানে কবর দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ রিপোট লেখা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে।
গোপালগঞ্জে কাটেনি জনমনের আতঙ্ক
গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ জন নিহত হন। নিহত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনের নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় পৃথক ৪টি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলার প্রতিটিতে অজ্ঞাত দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। মামলাগুলোয় মোট আসামি ৬ হাজার।
সদর থানার ৪ উপপরিদর্শক পৃথক পৃথকভাবে মামলার বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় গোটা জেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে জনমনে কাটেনি আতঙ্ক। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ও পড়েছে ঘটনার রেশ। সোমবার কারফিউ বা ১৪৪ না থাকলেও দোকানপাট খোলেনি। নেই তেমন লোকজনের আনাগোনা। তবে অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ লোকজনের চলাচল কিছুটা বেড়েছে।
তিন জেলায় পলিথিনবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৮১০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় কয়েকটি কারখান বন্ধও করে দেওয়া হয়।
সোমবার (২১ জুলাই)পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বরের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৬(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে পিরোজপুর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযানে তিন জেলায় ৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২টি মামলায় সর্বমোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি ৮১০ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন, ২টি ওজন মাপার যন্ত্র, ৩টি পলিথিন উৎপাদন মেশিন এবং ১টি বৈদ্যুতিক মিটার জব্দ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গাজীপুরে অভিযানে একটি অবৈধ পলিথিন কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অভিযানের অংশ হিসেবে কয়েকটি সুপারশপসহ স্থানীয় দোকানমালিক ও সাধারণ জনগণকে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করা হয় এবং ভবিষ্যতে আইন লঙ্ঘন না করার জন্য সতর্ক করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পলিথিন দূষণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হয়।
রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে বহু হতাহতের ঘটনায় ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ স্থগিত করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইহসানুল মাহবুব জোবায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘উত্তরায় মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার পর পুরো জাতি শোকাহত। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা খাগড়াছড়ির কর্মসূচি শেষে ফেনীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে অনেক নেতাকর্মী ফেনীর সমাবেশস্থলে পৌঁছেও গিয়েছিলেন। তবে এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করা সমীচীন নয়।’
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা এরমধ্যে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আগামীকাল নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত ও ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। বিমানটির পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মান বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, সকল প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শিশুশ্রম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সোমবার (২১ জুলাই) ঢাকার একটি হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত শিশুশ্রম নিরসনে কার্যক্রম বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভায় সচিব একথা বলেন।
শ্রম সচিব বলেন, ঢাকা শহরে অনেক পথ শিশু আছে যারা বিভিন্ন নেশায় আকৃষ্ট হয়। আমাদের রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের স্কুলমূখী করানো। সরকার ১৯৯০ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। সরকার পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হয়। আমরা চাই শিশুরা স্কুলে যাবে কাজে নয়।
শ্রম সচিব মতবিনিময় সভায় বলেন, আজ সভায় উপস্থিত ৪৮ টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থকে শিশু শ্রম নিরসনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে। বিভিন্ন এনজিও , উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং সরকারের সমন্বিত উদ্দ্যোগ ও আন্ত:সমন্বয় পারে শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে।
শ্রম সচিব আরও বলেন, আমরা গত ১৯ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করেছি। আমরা শিশুশ্রম প্রতিরোধ বিষয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে তরুন সমাজকে সম্পৃক্ত করেছি। শিশুশ্রম প্রতিরোধে লিড মিনিস্ট্রি হিসেবে আমাদের মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৪৩ টি সেক্টরকে ঝুকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। এছাড়াও দিবসটিতে বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে শিশুশ্রম প্রতিরোধ করার জন্য।
শিশুশ্রম নিরসন বিষয়ে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মিজ জাহেদা পারভীন বলেন, সংবিধানে সামাজিক নিরাপত্তার বিধান রয়েছে। এই বিধান বাস্তবায়ন করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসমূহের সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছে। শিশুশ্রম নিরসনে ইতিমধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিশুশ্রম নিরসনে সরকার, আইএলও, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, শ্রমিক ও মালিক পক্ষসহ সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের শিশুশ্রম নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশেষ তাগিদ দেওয়া হবে। দারিদ্র্যই শিশুশ্রমের মূল কারণ। প্রতিটি শিশুর জন্মগত অধিকার হচ্ছে নিরাপদ শৈশব ও শিক্ষার সুযোগ পাওয়া। এই অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দা মুনিরা সুলতানা বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা। আইএলও সরকার, শ্রমিক ও মালিক পক্ষ নিয়ে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশ শিশুশ্রম বিষয়ক কনভেনশন-১৩৮ এবং কনভেনশন -১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে। আইএলও কর্তৃক ২০০৪ সাল থেকে ১২ জুন ''বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস'' পালন করা হয়। বাংলাদেশে শিশুশ্রম নিরসনে আইএলও এর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বলেন, আমরা ২০১৮ সাল থেকে শিশুশ্রম নিয়া কাজ করছি। কর্মজীবী শিশুদের জন্য স্কুল চালু করা হয়েছে। আমরা চাই শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ। আমরা শিশুশ্রম বন্ধে কাজ করছি। শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে আমরা সামাজিক আন্দোলন করছি। আমরা চাই শিশুশ্রম শুন্যে নেমে আসুক। আমরা শিশুদের নিয়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। আমরা এতিম শিশুদের নিয়াও কাজ করছি।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা আখতার।
মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম, উপসচিব এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জার্মান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন, ইউনিসেফ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি এবং অ্যাকশন এইড ও কারিতাসসহ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক উপলক্ষ্যে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শোকের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
ফলে, আগামী ২২ জুলাই (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠেয় উদ্বোধন অনুষ্ঠান একদিন পিছিয়ে ২৩ জুলাই (বুধবার), সকাল ১১:০০ ঘটিকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-তে অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে সত্তরের অধিক আহত ভর্তি আছেন। ক্রমাগত অ্যাম্বুলেন্সে করে রোগী আসছে। হাসপাতালের সামনে ভিড় করেছেন দগ্ধদের স্বজনেরা। পাশাপাশি উৎসুক জনতার ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো।
এ ছাড়া, হাসপাতালে চলছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কার্যক্রম। বর্তমানে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পজিটিভ ডোনার থাকলেও নেগেটিভ ব্লাডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালে ক্রমাগত রোগী আসছেন। এজন্য অনেক রক্ত প্রয়োজন।
তানভীর হাসান সিক্ত নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তদাতারা ছুটে আসছেন। পর্যাপ্ত ডোনার মজুত থাকায় আপাতত পজিটিভ রক্ত প্রয়োজন নেই। তবে, নেগেটিভ রক্ত সংকট। তাই, আমরা নেগেটিভ ব্লাড ডোনারদের রক্ত দিতে আহ্বান জানাই। এছাড়াও, অনেক ডোনার নাম্বার দিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
ইনস্টিটিউটের ভর্তি তালিকায় এই ৭০ জনের মধ্যে কয়েকজনের নাম হাতে এসেছে। তারা হলেন—শামীম ইউসুফ (১৪), মাহিন (১৫), আবিদ (১৭), রফি বড়ুয়া (২১), সায়েম (১২), সায়েম ইউসুফ (১৪), মুনতাহা (১১), নাফি (১০), মেহেরিন (১২), আয়মান (১০), জায়েনা (১৩), ইমন (১৭), রোহান (১৪), আবিদ (৯), আশরাফ (৩৭), ইউশা (১১), পায়েল (১২), আলবেরা (১০), তাসমিয়া (১৫), মাহিয়া, অয়ন (১৪), ফয়াজ (১৪), মাসুমা (৩৮), মাহাতা (১৪), শামীম, জাকির (৫৫), নিলয় (১৪), সামিয়া।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীদের ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে। সেখানেও অনেক ভিড়। ভিড়ের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
দগ্ধদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানও দগ্ধদের দেখতে হাসপাতালে আসেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের সামনে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে, এই হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেছেন, এখন পর্যন্ত এখানে ৬০ জনের মতো ভর্তি করা হয়েছে, আরও ১০–১৫ জন ভর্তি করার মতো সক্ষমতা এখানে আছে। এরপর ঢাকা মেডিকেল প্রস্তুত আছে। এরপর যারা আসবেন, সেসব রোগীদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হবে।
আইএসপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
রাজধানীর উত্তরায় বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমানের দুর্ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম মারা গেছেন। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকালে ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর শাহজাহান শিকদার এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ও ৬টি অ্যাম্বুলেন্স কাজ করছে।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর)। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে।
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির বিমানটিকে ঘনবসতি থেকে জনবিরল এলাকায় নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে আজ সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়। দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাবার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতালা একটি ভবনে অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় তৌকিরসহ ১৯ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। আহত সকলকে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হচ্ছে।
অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে হতাহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, বিমান বাহিনীপ্রধান সরকারি সফরে দেশের বাইরে থাকায়, সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।
সেনাবাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সামরিক বাহিনীর এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন ।
সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র্যাব এবং ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি উত্তরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে।
দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মন্তব্য