তারা দুজন পৃথিবীর দুই প্রান্তের বাসিন্দা। আছে বয়সের ব্যবধানও। জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতির ফারাক আছে। সত্যরঞ্জন রক্ষিত আর কাঞ্চির প্রেমে তা এত দিন কোনো বাধাই হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
কিন্তু এবার ভিন্ন এক বাধার মুখোমুখি এই প্রেমিক যুগল।
গুরুতর অসুখে ভুগছেন কাঞ্চি। সত্যরঞ্জন শিল্পী মানুষ। টাকাপয়সা কোনোকালে সঞ্চয় করা হয়ে ওঠেনি। ফলে স্ত্রী কাঞ্চির চিকিৎসার খরচ জোগাতে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
তবে আরও অসংখ্য প্রেমময় হাত এগিয়ে এসেছে তাদের দিকে। অসুস্থ কাঞ্চির চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে এগিয়ে এসেছেন দুই বাংলায় তাদের পরিচিতজনেরা। ‘প্রেমিকার জন্য গান’ নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন তারা।
সত্যরঞ্জন রক্ষিত গান করেন, লেখালেখি করেন। ছবিও আঁকেন। ফেসবুক বন্ধুদের অনেকের কাছে তিনি ‘কুয়াশা মূর্খ’ নামে পরিচিত। ফেসবুকের মাধ্যমেই একদিন পরিচয় হয় কাঞ্চির সঙ্গে। কাঞ্চি স্লোভেনিয়ার নাগরিক। তার পুরো নাম ওলগা জেহাফ। প্রায় সাত বছর আগে অনলাইনে তাদের পরিচয়।
২০১৬ সালে একটি স্ট্রিট শো করতে ভারতের কেরালায় যান সত্য। স্লোভেনিয়া থেকে সেখানে আসেন কাঞ্চি। এই তাদের প্রথম দেখা। এরপর দুজন মিলে ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, শহর থেকে শহরে।
বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশে আসেন কাঞ্চি। এরপর গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেন সত্য ও কাঞ্চি। প্রেমে, অভিমানে, আড্ডায় ভালোই কাটছিল তাদের সংসার।
পটুয়াখালীতে নিজের গ্রামের বাড়িতে ‘মহানন্দালয়’ নামে একটি খামার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন সত্য। দুজন মিলে সেখানে কৃষিপণ্য উৎপাদনে মনোযোগী হন।
এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন কাঞ্চি। প্রথমে তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। মাসখানেক আগে ভর্তি করা হয় ঢাকার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে প্রায় এক মাস চিকিৎসা নিচ্ছেন কাঞ্চি। এবার তার কিডনিতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
স্ত্রীর দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সত্য। এ অবস্থায় তিনি ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, প্রেমিকার চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় গান গাইবেন।
সত্যের এই ফেসবুক পোস্ট ছুঁয়ে যায় তার বন্ধু-পরিচিতজনদের মন। কাঞ্চির চিকিৎসার সহায়তায় ‘প্রেমিকার জন্য গান’-এর আয়োজন করেন তার বন্ধুরা। এই বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলাতেও ‘প্রেমিকার জন্য গান’ নিয়ে রাস্তায় নামেন বন্ধুরা।
কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এলাকায় গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেন তারা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়ও ‘প্রেমিকার জন্য গান’-এর আয়োজন করে একদল তরুণ। এ ছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমেও অর্থ সংগ্রহ করছেন কেউ কেউ।
সত্যরঞ্জন বলেন, ‘আমি আগে স্ট্রিট শো করতাম। এ কারণে দুই বাংলার অনেকের সঙ্গেই আমার পরিচয় রয়েছে। আমার সেসব বন্ধুরাই গান গেয়ে ও বিভিন্ন চ্যারিটির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার সংগঠন “উজান মানুষের গান”-এর ব্যানারে ও বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে এক যুগের বেশি সময় মানুষের পাশে, মানবতার সঙ্গে থেকেছি। আমি নিজের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কারও কাছে আবেদন করছি না, তবে প্রেমের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
স্ত্রীর চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসা সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সত্য।
সিলেটে সত্যর এক বন্ধু ফেসবুকের মাধ্যমে কাঞ্চির জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
মানুষের কাছে হাত না পেতে বৃদ্ধ বয়সে জীবন সংগ্রামে প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন একাই। জয় পরাজয় বুঝেন না, বাঁচার জন্য খেতে হবে। ঘরে বসে থাকলে খাবার আসবে না। কাজ করেই খেতে হবে। কাজ না করলে ভিক্ষা করে খেতে হবে। মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করতে আব্দুর রশিদ মিয়ার লজ্জা করে। তাই তো জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও হাল ছাড়েননি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গুতিয়াবো গ্রামের আব্দুর রশিদ (৯০)। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও প্রতিদিন সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে তিনি শুরু করেন জীবনের লড়াই। চন্ডীতলা এলাকার এক বকুল গাছের নিচে পড়ে থাকা ফুল কুড়িয়ে তিনি নিজেই মালা গেঁথে বাজারে বিক্রি করেন।
এত ব্যবসা থাকতে ফুল বিক্রি করেন কেন জানতে চাইলে মুচকি হেসে বলেন, একটা সময় আমিও ফুল খুব ভালবাসতাম। আজ সে ভালবাসা পেটের দায়ে টাকায় বিক্রি করি। বাবাগো এত শুধু ফুল বিক্রি না, ভালোবাসা বিক্রি করি, জীবন সংগ্রামের নামে আমি ভালোবাসা বিক্রি করি। ভালোবাসার প্রতিক ফুল। আজো মানুষ ভালোবাসে তাই ফুল কিনা ভালোবাসার মানুষকে দেয়, আমারও ভালো লাগে। আয়ও মন্দ না, চলে যায় মোটামুটি।
প্রতিটি মালা মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি করেন তিনি। দিনের পরিশ্রম শেষে প্রায় এক হাজার থেকে বারোশো টাকা আয় হয় তার। তবে সবদিন সমান যায় না—কখনো বিক্রি কম হয়, আবার কখনো ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে ভালো দামও পান। আব্দুর রশিদ নিজেই স্মৃতিচারণ করে বলেন, “পূর্বাচল ৩০০ ফিট এলাকায় একদিন আমি দুইটা মালা নিয়ে গিয়েছিলাম। একজন ক্রেতা খুশি হয়ে আমাকে ৭০০ টাকা দিয়েছিলেন। তখন মনে হয়েছিল, এখনও মানুষ ভালোবাসা দিতে জানে।
৯০ বছরের এই বৃদ্ধের সংসারে রয়েছে দুই ছেলে ও চার মেয়ে। ছেলেরা নিজের মতো কাজকর্ম করেন, তবে সংসারের খরচ টানতে আব্দুর রশিদ এখনো নিজের শ্রমে নির্ভরশীল। রাজধানীর খিলক্ষেত, বসুন্ধরা, পূর্বাচল ৩০০-ফিট, গাউছিয়া—এসব এলাকার রাস্তা ঘুরে ঘুরে তিনি ফুল বিক্রি করেন।
জীবনের কঠিন বাস্তবতা সত্ত্বেও আব্দুর রশিদের মুখে নেই কোনো অভিযোগ। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, শরীর যতদিন সায় দেবে, ততদিন নিজের হাতেই উপার্জন করে খাবো।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুর রশিদ একজন পরিশ্রমী ও সৎ মানুষ। তার বয়সকে অতিক্রম করে কাজ করার ক্ষমতা দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হন। জীবনের সংগ্রাম আর শ্রমের মধ্য দিয়েই তিনি যেন এক জীবন্ত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন—কষ্টকে জয় করার অদম্য শক্তি নিয়েই তিনি পথ চলছেন।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, এত বয়সেও উনি কাজ করেন, এ জন্য উনাকে আমার পক্ষ থেকে স্যালুট জানাই। আমার সাথে যোগাযোগ করলে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করে দিব। অন্যান্য সুযোগ থাকলে তাও দেখব।
পাবনার সাধুপাড়ায় পূর্ব শত্রুতা জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (০১ অক্টোবর) গেল রাত এক টার দিকে সদর উপজেলা দোগাছি ইউনিয়ন দক্ষিণ চর-সাধপাড়া ব্রিজের পাশে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রায়হান শেখ আকাশ (২৩) পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সে দক্ষিণ চর-সাধপাড়া এলাকার মো: সোহেল শেখ ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মুক্তারের স্ত্রী কাজ করে বাড়ি ফেরার পথে মিল্লাত নামে এক যুবক উত্তপ্ত করলে আকাশ তার প্রতিবাদ করে। এ নিয়েই বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল রাতে মিল্লাত আব্দুল রশিদ, রাজু পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে কুপিয়ে গুরুতর যখন করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তৃবরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে ।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ উদ্ধার করে থানার মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবেল হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে আব্দুল গফুর শেখ (৪১) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন।
বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার মতিগঞ্জ লইয়ারকুল ব্রিজের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল গফুর ওই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন। তিনি শ্রীমঙ্গল উপজেলার মুসলিমবাগ এলাকার বাসিন্দা।
আহতরা হলেন— লক্ষীনারায়ণ সিং এর ছেলে অজয় সিং (৪২), নিউ পূর্বাসা এলাকার বাসিন্দা, এবং মো. তানভীর হোসেন (জনি), রেলগেইট এলাকার বাসিন্দা। অজয় সিং বর্তমানে মৌলভীবাজার লাইফ লাইন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর তানভীর হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে সিলেটে প্রেরণ করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার মো. নাজিম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।
শ্রীমঙ্গল সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শারমিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আজ বুধবার (১ অক্টোবর) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার চতুর্থ দিন। আজ মহানবমী, দেবীর বিদায়ক্ষণ শুরু। দশমীতে কৈলাশে (স্বামীর বাড়ি) ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা।
জানা গেছে, নবমীতে বিশেষ কোনো পর্ব না থাকলেও সকালে তর্পণে দুর্গার মহাস্নান হবে, ষোড়শ উপচারে পূজা করা হবে। নবমীর সন্ধ্যায় দেবীদুর্গার ‘মহাআরতি’ করা হয়। মহানবমীতে বলিদান ও নবমী হোমের রীতি রয়েছে। এদিন ১০৮টি নীলপদ্মে পূজা হবে দেবীদুর্গার। পূজা শেষে যথারীতি থাকবে অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ।
নবমী তিথি শুরুই হয় সন্ধিপূজা দিয়ে। সন্ধিপূজা হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিটজুড়ে। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা হয় এই সময়ে। ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও ১০৮টি পদ্মফুল নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে। আর ঠিক এই কারণে পূজার মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।
মহানবরাত্রিতে দেবীদুর্গার আরাধনার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। যদিও সারা বছর ধরে যে উৎসবের জন্য অপেক্ষা করা হয়, তার বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় এই নবমী নিশি। তাই নবমী নিশিকে সবাই ধরে রাখতে আকুতি জানায়। বাজতে থাকে একটাই সুর ‘ওরে নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান’।
পুরোহিতদের মতে, মহানবমীতে ভক্তদের দেওয়া ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজা হবে দেবীদুর্গার। এছাড়া আজ নীলকণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে মহানবমীর বিহিতপূজা হবে।
মহানবমীর দিনে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবীদুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হবে। ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীদুর্গাকে বিদায় জানাবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রাজধানী ঢাকায় রাত থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ঝরছে। ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে করে ঢাকাবাসীর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যদিও আজ সরকারি ছুটি।
তবু অনেকেই প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে গিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সড়কে জমে থাকা পানিতে রিকশাসহ অন্যান্য যান চালাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মিরপুরের কাজীপাড়া ও কালশী, মতিঝিল, বিজয়নগর, মগবাজার, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকার কিছু অংশ, ও ধানমণ্ডি এলাকায় পানি জমে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বেশ কিছু স্থানে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইভেট কার বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে থাকায় পথচারীদের হেঁটে চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকে কাদা-পানি মাড়িয়ে গন্তব্যে ছুটতে বাধ্য হচ্ছেন।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই বৃষ্টি হঠাৎ কোনো স্বাভাবিক আবহাওয়া নয়। এটি একটি শক্তিশালী মৌসুমি বৃষ্টিবলয়ের অংশ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দল (বিডব্লিউওটি) পূর্বেই সতর্ক করেছিল, ‘প্রবাহ’ নামের এই বৃষ্টিবলয়টি ৩০ সেপ্টেম্বর রাত থেকে দেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে, যা ৫ অক্টোবর পর্যন্ত এর প্রভাব থাকতে পারে।
জানা গেছে, এটি চলতি বছরের ১৩তম বৃষ্টিবলয় এবং একটি ‘প্রায় পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয়’। তবে এটি সারা দেশে সমানভাবে সক্রিয় না হয়ে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটাবে। বিশেষ করে দেশের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে প্রবাহটি বেশি সক্রিয় থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দুপুর পর্যন্ত এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির সেই স্কুলছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষায় কোনো ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা চিকিৎসক।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের পরীক্ষায় রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীর শরীরের ভেতরে ও বাইরে ধর্ষণের কোনো চিহ্ন মেলেনি।
২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে সদর থানায় মামলা করেন। পর দিন ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে (১৯) গ্রেপ্তার করে।
মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বাধীন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. জয়া চাকমা বলেন, ধর্ষণের আলামত শনাক্ত করার ১০টি সূচকের সবগুলোই স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে তার সঙ্গে স্বাক্ষর করেছেন আরও দুই চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের আহমেদ জানান, প্রতিবেদনটি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সেনা রিজিয়ন কমান্ডাররা অভিযোগ করেছেন, ইউপিডিএফ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড় অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ বলেন, ধর্ষণের ঘটনাকে পুঁজি করে ইউপিডিএফ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, যা বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পেছনে ইউপিডিএফ দায়ী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ডাকে। তবে দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের আশ্বাসে তা আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
গত কয়েকদিনের সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ স্থানীয়রাও আহত হয়েছেন। সহিংসতায় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি অফিস, দোকানপাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল। বর্তমানে খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ৪ দিনের ছুটিতে গেলেন সরকারি কর্মচারীরা। আজ বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। ছুটি শেষে আগামী রোববার থেকে কর্মস্থলে ফিরবেন তারা।
২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ১ অক্টোবর (বুধবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি। আর ২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সাধারণ ছুটি। পরের দুদিন ৩ ও ৪ অক্টোবর (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। সবমিলিয়ে ১ থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪ দিনের ছুটি পেয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা।
সাধারণত সরকারি কর্মচারীদের ঈদে তিন দিন করে ও দুর্গাপূজায় একদিন ছুটি থাকে। তবে কোনো কোনো বছর নির্বাহী আদেশে তা বাড়ানো হয়। ২০২৫ সালের দুই ঈদ মিলিয়ে মোট ১১ দিন ছুটি এবং শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি দুই দিন অনুমোদন করে উপদেষ্টা পরিষদ। গত বছরের ১৭ অক্টোবর ছুটির তালিকা অনুমোদন করা হয়। সে অনুযায়ী ছুটির তালিকা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এদিকে এই ছুটিতে খোলা থাকবে জরুরি সেবাগুলো। এর মধ্যে- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতাবহির্ভূত থাকবেন। চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটি ভোগ করবেন না। একইসঙ্গে জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো এই ছুটির আওতাবহির্ভূত থাকবে।
মন্তব্য