তারা দুজন পৃথিবীর দুই প্রান্তের বাসিন্দা। আছে বয়সের ব্যবধানও। জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতির ফারাক আছে। সত্যরঞ্জন রক্ষিত আর কাঞ্চির প্রেমে তা এত দিন কোনো বাধাই হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
কিন্তু এবার ভিন্ন এক বাধার মুখোমুখি এই প্রেমিক যুগল।
গুরুতর অসুখে ভুগছেন কাঞ্চি। সত্যরঞ্জন শিল্পী মানুষ। টাকাপয়সা কোনোকালে সঞ্চয় করা হয়ে ওঠেনি। ফলে স্ত্রী কাঞ্চির চিকিৎসার খরচ জোগাতে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
তবে আরও অসংখ্য প্রেমময় হাত এগিয়ে এসেছে তাদের দিকে। অসুস্থ কাঞ্চির চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে এগিয়ে এসেছেন দুই বাংলায় তাদের পরিচিতজনেরা। ‘প্রেমিকার জন্য গান’ নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন তারা।
সত্যরঞ্জন রক্ষিত গান করেন, লেখালেখি করেন। ছবিও আঁকেন। ফেসবুক বন্ধুদের অনেকের কাছে তিনি ‘কুয়াশা মূর্খ’ নামে পরিচিত। ফেসবুকের মাধ্যমেই একদিন পরিচয় হয় কাঞ্চির সঙ্গে। কাঞ্চি স্লোভেনিয়ার নাগরিক। তার পুরো নাম ওলগা জেহাফ। প্রায় সাত বছর আগে অনলাইনে তাদের পরিচয়।
২০১৬ সালে একটি স্ট্রিট শো করতে ভারতের কেরালায় যান সত্য। স্লোভেনিয়া থেকে সেখানে আসেন কাঞ্চি। এই তাদের প্রথম দেখা। এরপর দুজন মিলে ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, শহর থেকে শহরে।
বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশে আসেন কাঞ্চি। এরপর গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ে করেন সত্য ও কাঞ্চি। প্রেমে, অভিমানে, আড্ডায় ভালোই কাটছিল তাদের সংসার।
পটুয়াখালীতে নিজের গ্রামের বাড়িতে ‘মহানন্দালয়’ নামে একটি খামার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন সত্য। দুজন মিলে সেখানে কৃষিপণ্য উৎপাদনে মনোযোগী হন।
এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন কাঞ্চি। প্রথমে তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। মাসখানেক আগে ভর্তি করা হয় ঢাকার হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে প্রায় এক মাস চিকিৎসা নিচ্ছেন কাঞ্চি। এবার তার কিডনিতেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
স্ত্রীর দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সত্য। এ অবস্থায় তিনি ফেসবুকে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, প্রেমিকার চিকিৎসার জন্য ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় গান গাইবেন।
সত্যের এই ফেসবুক পোস্ট ছুঁয়ে যায় তার বন্ধু-পরিচিতজনদের মন। কাঞ্চির চিকিৎসার সহায়তায় ‘প্রেমিকার জন্য গান’-এর আয়োজন করেন তার বন্ধুরা। এই বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলাতেও ‘প্রেমিকার জন্য গান’ নিয়ে রাস্তায় নামেন বন্ধুরা।
কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এলাকায় গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেন তারা। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়ও ‘প্রেমিকার জন্য গান’-এর আয়োজন করে একদল তরুণ। এ ছাড়া ফেসবুকের মাধ্যমেও অর্থ সংগ্রহ করছেন কেউ কেউ।
সত্যরঞ্জন বলেন, ‘আমি আগে স্ট্রিট শো করতাম। এ কারণে দুই বাংলার অনেকের সঙ্গেই আমার পরিচয় রয়েছে। আমার সেসব বন্ধুরাই গান গেয়ে ও বিভিন্ন চ্যারিটির মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার সংগঠন “উজান মানুষের গান”-এর ব্যানারে ও বিভিন্ন সংগঠনের হয়ে এক যুগের বেশি সময় মানুষের পাশে, মানবতার সঙ্গে থেকেছি। আমি নিজের স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য কারও কাছে আবেদন করছি না, তবে প্রেমের পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
স্ত্রীর চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসা সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সত্য।
সিলেটে সত্যর এক বন্ধু ফেসবুকের মাধ্যমে কাঞ্চির জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়ন না করায় আপিল বিভাগে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।
সোমবার সকালে আপিল বিভাগে হাজির হয়ে তারা এ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ রায় বাস্তবায়নে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়।
আদালতে কর্মকর্তাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আর আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মাদ ইব্রাহিম খলীল। আদেশ বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে সকালে আপিল বিভাগে হাজির হন আইজি প্রিজনস ও সুরক্ষা সচিব।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘গত ২০ নভেম্বর এ দুই কর্মকর্তাকে তলব করে আপিল বিভাগ। আজকে তারা সে রায়ের আংশিক কার্যকর করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শুনানিতে রায় আংশিক কার্যকর করা হয়েছে; আদালতকে জানালে আদালত পূর্ণাঙ্গ রায় বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আবার মামলাটির তারিখ ধার্য করে দিয়েছে। এই কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।’
ঘটনার বিবরণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছরের ৭ এপ্রিল আপিল বিভাগ রিভিউ আবেদনের রায়ে ছয়জন কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে সিনিয়র জেল সুপার পদে পদোন্নতি দেয়ার নির্দেশ দেয়। এ ছয়জন হলেন মো. গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, ইকবাল কবির চৌধুরী, মো. আনোয়ারুজ্জামান, মনির আহমেদ, মো. বজলুর রশিদ আকন্দ ও মো. নুরুননবী ভূঁইয়া।
‘দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়ন না করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী ও আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়।’
আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৬ নভেম্বর পদোন্নতির রায় বাস্তবায়নের জন্য বিবাদীদের দুই সপ্তাহ সময় দেয় আপিল বিভাগ।
‘এরপর দুই সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ায় সে রায় বাস্তবায়ন না করায় আদালত তাদের তলব করে।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে।
সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান নিয়ে বলা হয়, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এতে বলা হয়, এটি সোমবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫১০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
বন্দরে সতর্ক সংকেত নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিএনপি ও সমমনা বিরোধীদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের প্রথম দিনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় বোরবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসীর বরাতে পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে ইউসুফ পরিবহনের একটি বাস টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে চন্দ্রা এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় এক নারীসহ ১০ থেকে ১২ জন অল্প বয়সের যাত্রী ওই বাসে ওঠেন। পরে যাত্রী নিয়ে গাড়িটি যাত্রা শুরু করার একটু পরেই চন্দ্রা ফ্লাইওভার এলাকা পার হওয়ার আগে বাসে থাকা নারী আগুন আগুন বলে চিৎকার করেন। আগুন দেখে তাৎক্ষণিকভাবে সব যাত্রী ও চালক বাস থেকে নেমে যান। পরে বাসে ওঠা যাত্রীরাই এ আগুন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান জানান, খবর পেয়ে কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আগুনে সম্পূর্ন বাসটি পুড়ে যায়। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান বলেন, ‘আগুনে বাসটি পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার গোয়ালবাথান এলাকায় রডবোঝাই চলন্ত একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় চালক ও তার হেলতার অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও তারা দুজনই আগুনে দ্বগ্ধ হন।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহ সদরে বাসে আগুন দেয়ার ‘প্রস্তুতির সময়’ পেট্রলবোমাসহ তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সাহেব কাচারী বাজারের রাঘরপুর এলাকা থেকে রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মহানগরীর বাঘমারা এলাকার ৩০ সুমন চন্দ্র দেবনাথ, চর গোবদিয়া এলাকার ৩০ বছর বয়সী খাইরুল, ও বাদেকল্পা এলাকার ২৪ বছর বয়সী আকরাম হোসেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে ময়মনসিংহ সদরের সাহেব কাচারী বাজারের রাঘরপুর এলাকায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। মিছিল থেকে বাসে আগুন দেয়ার প্রস্তুতির সময় হাতেনাতে পেট্রলবোমাসহ ছাত্রদলের তিননেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আগামী ১৭ ডিসেম্বরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম রোববার মাদারীপুরে তার বড়িতে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে তিনি বলেন, আগে-পরে অনেক বলা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ১৭ ডিসেম্বরের পর সিদ্ধান্ত জানাবেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এবারের নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে এবার ২৯টি দলের দুই হাজারের ওপর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, তবে বিএনপি না আসায় কিছুই করার নেই। নির্বাচনে বিএনপির অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী নৌকায় নির্বাচনও করছেন। এতে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ থাকবে না।
এ সময় মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গার কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, অগাামী ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থী ছাড়াও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্বতন্ত্রভাবে ভোটে যেতে অনুমতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও একই ঘোষণা দিয়েছেন।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তৃতীয় দিনে দিনাজপুরের ৬টি আসনের ৩৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
জেলা রিটার্নিং অফিসার রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এ তথ্য জানান।
এ সময় দিনাজপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আবু হোসাইন বিপুর মনোনয়নপত্রে সমর্থকের তালিকায় ত্রুটি পাওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। একই অভিযোগে দিনাজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ, দিনাজপুর-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হক ও দিনাজপুর-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনেওয়াজ ফিরোজ শাহের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার শাকিল আহমেদ বলেন, ‘দিনাজপুরের ৬টি সংসদীয় আসনের মোট ৩৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এ সময় ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ ছাড়া ৩০ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ রয়েছে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের মধ্যে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. সফিকুল ইসলাম রোববার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমানের নেতৃত্বে শনি ও রোববার দুদিন মিলে ১১টি সংসদীয় আসনের ১০৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন ত্রুটি ধরা পড়ায় ২৪ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহমেদ খান, ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে মোহাম্মদ আবু বক্কর ছিদ্দিক, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে এ.কে.এম আবদুর রফিক, মোশাররফ হোসেন আজাদ, ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে বদর উদ্দিন আহমেদ, মো. নজরুল ইসলাম, মো. ফয়জুর রহমান, ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ডা. খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আবদুল মান্নান আকন্দ, জাহাঙ্গীর আলম খান ও সেলিমা বেগম। ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল আহমেদ, আবুল মনসুর, মো. হাবিবুর রহমান খান ও মুক্তিজোটের বাদশা দেওয়ান, ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী খিজির হায়াত খান, কানিজ ফাতেমা ও একেএম ওয়াহিদুজ্জামান, ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার আহমদ ও মোহাম্মদ আবুল হোসেন এবং ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে স্বতন্ত্র মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ, মো. আ. রহমান ফকির, তরিকত ফেডারেশনের মো. কায়কোবাদ হোসেন ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি এবিএম জিয়া উদ্দিন।
এর আগে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। ময়মনসিংহের ১১টি আসনে মোট ১০৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১১, দুই সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র ২৯, জাতীয় পার্টির ১১, জাসদের ৭, তৃণমূল বিএনপির ৬, বিএনপির সাবেক দুই এমপিসহ স্বতন্ত্র ৯ এবং অন্য দলের ৩৪ প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য