হইচই, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন, বঙ্গবিডিসহ ওভার দ্য টপ (ওটিটি) মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব নির্দেশ দেন।
আগামী তিন মাসের মধ্যে নীতিমালার খসড়া করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে আদালতে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার থেকে দুটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। বিটিআরসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্ল্যাটফর্ম থেকে তাদের কোনো রাজস্ব আদায় হয় না। কোনো ধরনের রেগুলেশন না থাকায় সেটি আদায় হচ্ছে না।
‘একইভাবে সাইবার পুলিশ সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইন থাকলেও প্ল্যাটফর্ম থেকে অশ্লীলতা রোধে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নাই, যার ফলে সবসময় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এ কারণে যদি এই ধরনের একটা নীতিমালা হয়, তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সুবিধা হবে। এসব বিষয়ে বিবেচনায় নিয়ে আদালত একটি খসড়া নীতিমালা করে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
নেট ফ্লিক্স, হইচইসহ ইন্টারনেট মাধ্যমে (ওটিটি প্ল্যাটফর্ম) ছড়িয়ে পড়া ওয়েব সিরিজের ‘অনৈতিক, নিন্দনীয় ও আইন-বহির্ভূত ভিডিও’র অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট।
এ ছাড়াও নেটফ্লিক্সের মতো অন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে কীভাবে সরকার রাজস্ব সংগ্রহ করে তা এক মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
ওই দিন বিটিআরসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টারকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ দুটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এর আগে গত বছরের ১৫ জুলাই ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে (ওটিটি প্ল্যাটফর্ম) ছড়িয়ে পড়া ওয়েব সিরিজের ‘অনৈতিক, নিন্দনীয় ও আইন-বহির্ভূত ভিডিও’র অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পাশাপাশি এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এর আগে ১৪ জুন বাংলাদেশি ওয়েব সিরিজের ‘বিতর্কিত’ অংশ বাদ দিতে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে তিনি ১২ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন।
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জুলাই শহীদদের প্রকৃত সম্মান হবে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়া।
তিনি জানান, ন্যায়বিচার, যথাযথ স্বীকৃতি ও দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই শহীদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হবে।
শহীদ পরিবারগুলোকে সম্মান জানানো, আহতদের তালিকা চূড়ান্ত করে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নাগরিক হত্যার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে-এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।
সোমবার (১৪ জুলাই) নারায়ণগঞ্জে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে নির্মিত দেশের প্রথম ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধনকালে তাঁর বক্তৃতায় পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগই আজকের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভিত্তি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের শেখায়—গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্ভীকভাবে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। এই স্মৃতিস্তম্ভ কেবল অতীতের স্মরণ নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা তৈরি করে। তিনি বলেন, সকলে মিলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে শহীদের স্মরণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগের কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞাসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিশিষ্টজনেরা।
উপদেষ্টাবৃন্দ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খোঁজখবর নেন ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। পরে উপদেষ্টা শহীদদের স্মৃতিতে বৃক্ষরোপণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যুবদের জনসম্পদে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উপলক্ষে আজ সোমবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের আহ্বানে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, শিল্পক্ষেত্রে বহুমুখী শ্রমের চাহিদা পূরণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অধিকসংখ্যক শ্রমিকের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে দক্ষ জনশক্তি অপরিহার্য। পরিবর্তিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটে আমাদের যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করতে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের বিকল্প নেই। এ প্রেক্ষিতে ইউনেস্কো-ইউনেভোক নির্ধারিত দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল দক্ষতার মাধ্যমে যুবদের ক্ষমতায়ন’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, দেশবিদেশের শ্রমবাজারের চাহিদার ভিত্তিতে যুবদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি আগামী দিনে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানিতে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে বলে আমি মনে করি। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) সরকারি-বেসরকারি অংশীজনদের সঙ্গে নিয়ে একটি দক্ষতা উন্নয়ন ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। দক্ষ যুবসম্পদ তৈরিতে প্রতিষ্ঠানটির সকল কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য আমি আহ্বান জানাই।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, একটি আধুনিক উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে তাদেরকে পরিবর্তনশীল কর্মক্ষেত্রের উপযোগী ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস, ২০২৫’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধান উপদেষ্টা ‘বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। আগামী ৫ আগস্ট জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি চলছে।
সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকায় গণভবনে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৫ আগস্ট জুলাই স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করা হবে। তবে জাদুঘরটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে আরো পরে’।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, একজন দর্শনার্থী জাদুঘরে প্রবেশ করার পর তিনি যেন উপলব্ধি করতে পারেন- কেন হলো জুলাই বিপ্লব , আওয়ামী লীগের দুঃশাসন এবং অভ্যুত্থানের স্মৃতি। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের অপরাধের বিচার আদালত করবে কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য হলো একজন দর্শনার্থী জাদুঘরে এসে যেন শেখ হাসিনার অপরাধের বিচার নিজের বিবেক দিয়ে করতে পারেন।
জুলাই স্মৃতি জাদুঘর পরিচালনার জন্য একটি আইনি কাঠামো দাঁড় করানো হবে বলেও জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে জুলাই আন্দোলনের স্থিরচিত্র, বিভিন্ন স্মারক, নানা উপকরণ, শহীদদের জামাকাপড়, চিঠি, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, ওই সময়ের পত্রিকার কাটিং, অডিও-ভিডিওসহ বিভিন্ন স্মৃতি স্মারক থাকবে।
এছাড়া সেখানে বিশেষ স্থান পাচ্ছে স্বৈরাচার ও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও। এ জাদুঘর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরেরই একটি অংশ।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত জুন-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৬ কোটি ৯ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৪ কেজি ৩৩৮ গ্রাম স্বর্ণ, ১৩,৩৭২টি শাড়ী, ৩,৫০০টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ৫৪৮টি তৈরী পোশাক, ২,১৪৭ মিটার থান কাপড়, ২,২৫,০৯৬টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৪,৫৭৮টি ইমিটেশন সামগ্রী, ৬,৬৪,৫০৮টি আতশবাজি, ৬,৩৪৫ ঘনফুট কাঠ, ৪,৯০৩ কেজি চা পাতা, ৩১,৯৭৪ কেজি সুপারি, ১৭,৭৬৯ কেজি সার, ১০,৫৪০ কেজি কয়লা, ১৯,২০৪ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ১,৩২৮টি মোবাইল, ১,৮৫০টি মোবাইল কভার, ৩৭,৫৪১টি মোবাইল ডিসপ্লে, ১৫,৫১৯টি চশমা, ২,১৮২ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫,৮৪৪ কেজি ভোজ্য তেল, ১,০০০ লিটার ডিজেল, ৩,১৮২ কেজি জিরা, ১,৩৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৭,৪৯২ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ১,১৫০ কেজি কফি, ৫,৪৭,২৪৬ পিস চকোলেট, ৭৭৭টি গরু/মহিষ, ১টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৩টি বাস, ১০টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৩টি পিকআপ/মাহেন্দ্র, ৭টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ১৩৮টি নৌকা, ২৭টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৪টি মোটরসাইকেল এবং ৩৯টি বাইসাইকেল।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি দেশীয় একনাল বন্দুক, ৩টি শটগান, ৩টি মর্টার শেল, ১৯টি গুলি এবং ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১২,৬৮,০১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭ কেজি ৯২৫ গ্রাম হেরোইন, ১ কেজি ৪৩০ গ্রাম কোকেন, ৮,২৭২ বোতল ফেনসিডিল, ১০,৯৪০ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯৩.৫ লিটার বাংলা মদ, ১,৪৩৫ বোতল ক্যান বিয়ার, ১,৬৯৮ কেজি ৭০৭ গ্রাম গাঁজা, ১,২৪,৫৮৭ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ২,৬৪৯ কেজি তামাক পাতা, ৫৩,৯৩৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,৭৭০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১৭ বোতল এলএসডি, ১২,৩৭৬টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৯,৬১,০৩৩ টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৭ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৫৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ৭ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৩৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৩ জুলাই (রবিবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সৈকত রায়হান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -জয়দেবপুর, জোবিঅ -টংগী -এর আওতাধীন দাউদপুর, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৪০০ টি বাড়ির ৫০০ টি আবাসিক ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ২" ব্যাসের আনুমানিক ১,০০০ ফুট লাইন পাইপ ও ১/২" ব্যাসের আনুমানিক ৩০০ ফুট হোস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ -সোনারগাঁও -এর আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোনের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ৩ টি অবৈধ চুনা কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ১.৫" ব্যাসের আনুমানিক ১২০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও ১.৫" পিভিসি পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পানি স্প্রে করে চুনা ভাট্টির মালামাল নষ্ট করা হয়েছে এবং এক্সকেভেটরের মাধ্যমে মালামাল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১৩ জুলাই, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৭৪টি শিল্প, ২৭৩টি বাণিজ্যিক ও ৪৬,৬১৯টি আবাসিকসহ মোট ৪৭,১৬৬টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,০০,৬৬৭টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ১৯৩ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, চব্বিশের জুলাই মাসে ফ্যাসিবাদবিরোধী যে সংগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মাধ্যমে সূচনা হয়েছিল, ১৪ জুলাইয়ের ঘটনাপ্রবাহ সে আন্দোলনকে নতুন মোড় দেয়।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতেই পথে নেমে এসেছিলেন। নারীদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর সেই অপমানের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে বেগবান করেছিল এবং সকলের প্রতিরোধের মুখে ফ্যাসিবাদী শাসন ক্রমাগত পশ্চাদপসরণে বাধ্য হয়েছিল।
সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৩তম দিনের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে মর্যাদা দিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে ১৪ জুলাইকে ‘জুলাই নারী দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, রাষ্ট্র বিনির্মাণে নারীদের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। এই প্রাতিষ্ঠানিক রূপের মাধ্যমেই রাজনীতিতে, রাষ্ট্র গঠনে এবং আইন প্রণয়নে নারীদের মর্যাদার সঙ্গে অংশগ্রহণের পথ তৈরি হবে। তিনি এ বিষয়ে এক জায়গায় পৌঁছে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। আজ নারী প্রতিনিধিত্ব এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা—এই দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) সামনে নৃশংস হত্যার শিকার ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হিন্দু দাবি করে ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
রোববার রাতে প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেক তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত বিবৃতিতে এসব তথ্য জানায়। সেখানে বলা হয়, ‘এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ডব্লিউআইওএনসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যম নিহত মো. সোহাগ ওরফে লাল চাঁদকে হিন্দু হিসেবে হিসেবে উপস্থাপন করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাস্তবে তিনি একজন মুসলিম ব্যবসায়ী।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, লাল চাঁদের পিতার নাম মো. আইয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। তার স্ত্রীর নাম স্ত্রী লাকি বেগম। এই দম্পতির দুই সন্তান। ফাতেমা ও সোহান।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে দুর্বৃত্তরা লাল চাঁদকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। মৃত্যুর পরও তার মরদেহে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। মর্মস্পর্শী এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
হত্যার ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৭ জনকে হেফাজতে নিয়েছে। নিহত সোহাগকে গত শুক্রবার তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের বান্দারগাছিয়া গ্রামে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়।
প্রেস উইং আরো জানায়, ‘ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো শিরোনামে সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করলেও প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা ব্যক্তিগত পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।’
বিবৃতিতে প্রেস উইং অভিযোগ করেছে, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
মন্তব্য