জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার ৬১তম জন্মদিন আজ ২ ডিসেম্বর বুধবার। দিনটি সামনে রেখে গতকাল মঙ্গলবার কথা হয়েছে তার স্বামী বদরুল আনাম সৌদের সঙ্গে। সুবর্ণাকে তিনি কীভাবে দেখেন, তা জানিয়েছেন নিউজবাংলাকে।
সৌদ বলেন, ‘সুবর্ণার জন্মদিন। কিন্তু দিনটি নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করার সুযোগ নেই। এবার করোনা বলে নয়, গত ছয়-সাত বছর ধরে তার জন্মদিন উদযাপিত হয় না। সুবর্ণা পছন্দও করেন না। সুবর্ণার প্রিয় ও কাছের মানুষদের জন্য রাত ১২টায় সারপ্রাইজ দেয়াটা তো একেবারেই মানা।
‘কিন্তু আমার জোরাজুরি কে থামায়? শেষমেশ আমার কথা রাখতেই পাঁচ-সাত জন বন্ধু ও প্রিয়জন মিলে কিছু আড্ডা, কিছু খাওয়া-দাওয়া হয়। করোনার কারণে এ বছর তাও হবে না।’
অভিনেত্রীর জন্মদিনে ঘরোয়া আয়োজন নিয়ে তার স্বামী বলেন, ‘সুবর্ণার জন্মদিনে ঘরে রান্নাটা হয় বেশ। আমাদের দুই জনের সংসার হলেও অনেকেই থাকেন আপন মানুষের মতো। আমরা সবাই মিলে স্বাভাবিক স্বরে উদযাপন করি সুবর্ণার জন্মদিন।
‘জন্মদিন একটা উপলক্ষ, এর আড়ালে এই যথার্থ শিল্পীকে মূলত সম্মান জানাই আমি। জানি, মনে মনে অনেকেই শ্রদ্ধা জানান তাকে; ছুঁড়ে দেন ভালোবাসা।’
বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর শিল্পী সত্তা নিয়ে তার নির্মাতা স্বামী বলেন, ‘এক জন সুবর্ণা মুস্তাফা, যাকে আমি বলি প্রকৃত শিল্পী। যারা সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন আর্টের সঙ্গে জড়িত, তাদের আমরা পারফর্মার বলে থাকি। সুবর্ণাও একটা সময় পারফর্ম করেছে, যার পরিবেশনায় মুগ্ধ ছিল তিন প্রজন্ম, যারা হতে চেয়েছেন সুবর্ণার মতোই।
‘কিন্তু এখনকার সুবর্ণা তার চিন্তায়, মননে ও সত্তায় এক জন শিল্পী। এক জন নিরেট লোভহীন মানুষ। বৃহৎ অর্থে এক জন পুরিপূর্ণ সৎ মানুষ।’
টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও মঞ্চ অভিনেত্রীর নির্মোহতার প্রশংসা করে সৌদ বলেন, ‘সুবর্ণা তার অবস্থান থেকে বিভিন্ন সময় অনেক সুযোগ-সুবিধাই নিতে পারতেন। কিন্ত তা তিনি কখনই করেননি। তেমন কোনো কিছু তার ভাবনাতেও থাকে না। এক জন সুবর্ণা মুস্তাফা, যে বেঁধে রাখতে জানে। সুবর্ণা কখনোই একা বাঁচতে চায়নি।
‘একা অনেক ভালো থাকার চেয়ে সবাই মিলে মোটামুটি বাঁচাটা সুবর্ণার কাছে বেশি পছন্দের। তাই একসঙ্গে থাকা ও সেই যাত্রায় ভালো থাকার ক্ষেত্রে আমাদের ভাবনাটা মিলে গেছে। এই কারণেই হয়তো আমাদের বন্ধন ওভার দ্য ইয়ার এগিয়ে যাচ্ছে। দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতি আমার রেসপেক্ট বাড়ছে।’
দুজনের সম্পর্ক নিয়ে এ চিত্রনাট্যকার বলেন, ‘বিয়ের পর যে কখনো আমাদের সমস্যা হয়নি, তা কিন্তু না। মিথ্যে বলছি না আমি। মানুষটিকে একটু একটু করে চিনেছি আর তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য উন্মোচন হয়েছে, হচ্ছে।
‘কোনো প্রেম যখন শুরু হয় তখন এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করে। ধীরে ধীরে সেটা স্তিমিত হয় বা শান্ত হয়। সুবর্ণার ক্ষেত্রে আমার যেটা হয়েছে সেটা হলো- ভালোবাসাটা হয়তো শান্ত হয়েছে। কিন্তু সম্মানটা বেড়েছে।’
সুবর্ণার প্রতি কর্তব্যবোধের বিষয়টি তুলে ধরে সৌদ বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সুবর্ণার ৫০ বছর কেটে গেছে। তার এই প্রগাঢ় শিল্পী সত্তাকে কাজে লাগাতে হবে আমাদেরই। সে নিজেকে প্রমাণ করে ফেলেছে। আমরা তাকে কতটুকু ব্যবহার করতে পারব- সেটাই এখন আমাদের দায়িত্ব।
‘জন্মদিনে সুবর্ণাকে আমি বলতে চাই, এমনিতে কখনও কখনও হয়তো বলি, ভালোবাসি। সে হয়তো গুরুত্বটা বোঝে। কিন্তু তারপরও কখনও কখনও মনে হয়, সুবর্ণা না থাকলে আমি নিজের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাই না। এ কথা হয়তো সেভাবে বলা হয়ে ওঠে না। শুভ জন্মদিন সুবর্ণা।’
কানাডার আদালতে মামলা খারিজ হওয়ার পরও দেশের সবচেয়ে বড় সেতু প্রকল্পটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই থাকবে বিএনপি।
সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ না থাকলেও দলটির নেতারা দাবি করে আসছেন, এই সেতু নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে। যত টাকা ব্যয় হয়েছে, তার চেয়ে কম টাকায় করা সম্ভব ছিল।
এই ধারণার পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-উপাত্ত না দিলেও সেতু নির্মাণের প্রাথমিক বরাদ্দ ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল, সেটিই বিএনপির বক্তব্যের প্রধান উপজীব্য। শেষ পর্যন্ত সেতুটি নির্মিত হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকার আশপাশে।
যখন নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার কোটি টাকা রেখে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়, তখন চার লেনের একটি সড়ক সেতু করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে সিদ্ধান্ত পাল্টে স্টিলের দ্বিতল সেতু করা হয়, যাতে সড়ক সেতুর নিচ দিয়ে রেল চলাচলের ব্যবস্থা করা যায়।
জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের নীতিমালাও পাল্টানো হয়। জমির বাজারদরের তিন গুণ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় ক্ষতিগ্রস্তদের। নদীশাসনেও ধারণার চেয়ে বেশি খরচ করতে হয়।
‘পদ্মা সেতু কি কারও পৈতৃক সম্পত্তি? কারও নিজের জমিদারি? এটা তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় হয়েছে। তাহলে এই সেতুতে উঠবেন কি না এমন কথা আসছে কেন?’
শেষ পর্যন্ত নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সমালোচনা করেছি এই সেতু নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেই দুর্নীতির বিষয়ে। আমাদের তো এখনও কনসার্ন যে, এই যে সেতুটা হলো, তার জন্য সামনে আরও কত টাকা গুনতে হবে এই দেশের জনগণকে।’
পদ্মা সেতু ইস্যুতে বেগম খালেদা জিয়া ও ড. ইউনূসকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখার পরদিন বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে তার জবাব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: নিউজবাংলা
সরকারি দলের নেতাদের নানা বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পদ্মা সেতু কি কারও পৈতৃক সম্পত্তি? কারও নিজের জমিদারি? এটা তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় হয়েছে। তাহলে এই সেতুতে উঠবেন কি না এমন কথা আসছে কেন?’
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সেতু কি আপনার পারসোনাল অ্যাসেট? আপনি জিজ্ঞাসা করার কে? বলতে যদি হয়, এটা বলেন যে এই সেতু নির্মাণে কত টাকা পকেটে ঢুকিয়েছেন?’
সেতু উদ্বোধনের দিন বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর কথাও জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তবে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কোনো ইচ্ছা যে দলটির নেই, সেটি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই নিশ্চয় জানেন, আগামী ২৬ মে আমরা ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি রেখেছি। আমাদের চেয়ারপারসনকে নিয়ে যে হুমকি দেয়া হয়েছে, সেটার প্রতিবাদেই এই বিক্ষোভ সমাবেশ। আমার মনে হয়, এই বিক্ষোভের ঘটনাতেই বিএনপির মনোভাব স্পষ্টতর।’
বিএনপির আক্রমণ ছিল শুরু থেকেই
এই সেতুর পরিকল্পনা নেয়ার সময় থেকেই নানা দিক থেকে সরকারের সমালোচনা করতে থাকে বিএনপি। বিশ্বব্যাংক সেতুর পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ আনার পর দলটি সরকারের পদত্যাগ দাবি করে।
২০১৩ সালে বিশ্বব্যাংক যখন এই সেতু থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে ফেলে, তখন বিএনপির বক্তব্য ছিল, সরকার দুর্নীতি করতে গিয়ে দেশের সম্মান ডুবিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পর সরকার যখন নিজ অর্থে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়, তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বক্তব্য আসে এমন যে, দুর্নীতি করতে পারবে না বলে বিদেশি অর্থায়ন নিতে চায় না সরকার। আর এত বড় প্রকল্প নিজ অর্থে করলে অন্য উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ কমে যাবে।
নানা জটিলতায় সেতু নির্মাণে পরিকল্পনার চেয়ে যখন বেশি সময় লাগছিল, তখন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা একটি উক্তি নিয়ে সম্প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করতে পারবে না। আর জোড়াতালি দিয়ে যদি একটি সেতু বানায়ও, তাহলেও সেই সেতু ভেঙে পড়বে। দলীয় নেতা-কর্মীদের তিনি সেতুতে না ওঠার পরামর্শও দেন।
বিএনপিকে ঘিরে আওয়ামী লীগের আক্রমণ এখন এই বিষয়টি নিয়েই। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বিএনপির ধারণা ছিল না নিজের টাকায় সেতু করা সম্ভব নয়, এটা সরকার মিথ্যা প্রমাণ করেছে। আর কানাডার আদালতের রায়েই প্রমাণ হয়েছে, এই সেতু নিয়ে তোলা অভিযোগের পেছনে ছিল ষড়যন্ত্র।
বিশ্বব্যাংক যে অভিযোগটি তোলে, তখনও পদ্মা সেতুর কোনো অর্থ ছাড় করা হয়নি। কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিন এই কাজ পেতে আগ্রহী ছিল। একটি উড়োচিঠির ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক দাবি করে, এই কাজ পাওয়ার পেছনে ঘুষ লেনদেনের পরিকল্পনা ছিল। এমনকি একটি কথিত ডায়েরি পাওয়ার কথা জানানো হয়, তাতে কাকে কত টাকা দেয়া হবে, তা উল্লেখ ছিল।
বিশ্বব্যাংকের দাবি ছিল সে সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি জানিয়ে রাজি হয়নি দুর্নীতি দমন কমিশন।
পরে বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে এসএনসি লাভালিনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে, যে মামলার রায় প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে।
অভিযোগের পক্ষে কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংক কোনো তথ্যপ্রমাণ দিতে না পারার পর বিচারক আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে এই অভিযোগকে ‘গালগপ্প’ আখ্যা দেয়।
এর পরও পেরিয়ে গেছে আরও পাঁচটি বছর। সেতুর সব কাজ শেষে ঠিক এক মাস পর উদ্বোধনের তারিখ যখন ঘোষণা হয়েছে, তখন আওয়ামী লীগের আক্রমণের মুখে বিএনপি।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহ্মুদ এমনও বলেছেন, বিএনপি ক্ষমা চেয়ে এই সেতুতে উঠতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী যা বলেছিলেন
গত ১৮ মে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের দলীয় এক আলোচনায় শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক যেন সরে যায়, সে জন্য ড. ইউনূস, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক নানা সক্রিয় চেষ্টা চালিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, এই সেতু ভেঙে পড়ে যাবে- এই ধরনের বক্তব্য রাখায় খালেদা জিয়ার প্রতিও ক্ষোভ জানান শেখ হাসিনা।
নানা বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি পদ্মা সেতুবিরোধীদের সেতুতে নিয়ে চোবানোর কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার উক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বলেছে, স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে, সেটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেয়া। পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, তাতে চড়া যাবে না, চড়লে সেটা ভেঙে যাবে। তার সঙ্গে ছিল তার কিছু দোসররা। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’
ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যিনি (ড. ইউনূস) এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর মতো টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও আবার পদ্মা নদীতে নিয়ে দুটি চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেয়া উচিত, মরে যাতে না যায়। পদ্মা নদীতে দুটি চুবানি দিয়ে সেতুতে উঠিয়া নেয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।’
পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংকের সরে যাওয়ার পেছনে ড. ইউনূস ছাড়াও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের ভূমিকা ছিল বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘প্রতিহিংসা নেয় ড. ইউনূস এবং যেটা আমরা শুনেছি মাহফুজ আনাম। তারা আমেরিকায় চলে যায়, স্টেট ডিপার্টমেন্টে যায়। হিলারির কাছে ই-মেইল পাঠায়। বিশ্বব্যাংকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিস্টার জোয়েলিক তার শেষ কর্মদিবসে কোনো বোর্ডসভায় না, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেন।’
পরদিন মাহফুজ আনাম তার পত্রিকা দ্য ডেইলি স্টারে এক ব্যাখ্যায় বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, আমি এ ধরনের উদ্দেশ্য নিয়ে কখনও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাইনি, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাইনি, কখনও হিলারি ক্লিনটনকে কোনো ই-মেইল পাঠাইনি, ওয়াশিংটনে বা বিশ্বের অন্য কোনো জায়গায় বা শহরে পদ্মা সেতুর অর্থায়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত কোনো বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠক বা যোগাযোগ করিনি।
‘বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমার বিষয়ে করা মন্তব্য তথ্যভিত্তিক নয়।’
আরও পড়ুন:টেরাকোটা, মূর্তি, মাটির তৈরি বড় কড়াইয়ের আংটা, কড়ি, চাল, ইটের মতো আরও অসংখ্য নিদর্শন একে একে বেরিয়ে এসেছে। খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের রেজাকপুর গ্রামে প্রত্নতাত্তিক খননের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসে হাজার বছরের পুরোনো এসব নিদর্শন।
গত ১২ মার্চ থেকে শুরু করে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এই খননকাজ চলে। খননে বেরিয়ে আসা প্রত্নতাত্ত্বিক ওই স্থানটির নাম দেয়া হয়েছে ‘কপিলমুনি ঢিবি’।
খননকাজে নিয়োজিত দলটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা।
তিনি বলেন, ‘রেজাকপুর গ্রামে আমরা যে নিদর্শনগুলো পেয়েছি, ধারণা করা হচ্ছে তা এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ বছরের পুরোনো।’
তিনি জানান, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা অঞ্চলে আগেও অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। সেসব নিদর্শনের সঙ্গে কপিলমুনি ঢিবির নিদর্শনের অনেক মিলও রয়েছে। বিশেষ করে যশোর জেলার কেশবপুরের ভরতভায়নার নিদর্শনের সঙ্গে অনেক মিল। সেখানকার ইটগুলোর সঙ্গে কপিলমুনিতে পাওয়া ইটগুলোর খুবই সাদৃশ্য রয়েছে।
খুলনা শহর থেকে সড়কপথে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের ওই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটিতে গিয়ে দেখা গেছে, ২৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮০ মিটার প্রস্থজুড়ে খননকাজ হয়েছে। সমতল থেকে মাটির প্রায় ৭ ফুট গভীরে খনন করা প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাটি ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।
ওই ঢিবিতে একটি বর্গাকার স্থাপত্যকাঠামো আবিষ্কৃত হয়েছে। বর্গাকার এই স্থাপনার চারপাশে দেয়ালঘেরা একটি প্রদক্ষিণ পথও রয়েছে।
এখানে পাওয়া বিভিন্ন মাটির পাত্র ও পাত্রের ভাঙা অংশের মধ্যে হাঁড়ি, কলস, বাটি, থালা, বদনা, কড়াই, প্রদীপ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও পোড়ামাটির ফলকের ভাঙা অংশ, পোড়ামাটির প্রতিমার ভগ্নাংশ, অলঙ্কৃত ইট, কড়িসহ বিভিন্ন ধরনের প্রত্নতাত্ত্বিক উপকরণও পাওয়া গেছে।
বর্গাকার স্থাপত্যকাঠামোর উত্তর-পশ্চিম কোণ ও উত্তর-পূর্ব কোণের প্রদক্ষিণ পথের বাইরের দেয়ালসংলগ্ন মাটিতে মিশ্রিত অবস্থায় এক ধরনের কালো রঙের চাল পাওয়া গেছে। একে পোড়া চাল বলছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
এই চাল নিয়ে গবেষণা করলে এখানকার প্রাচীন আমলের ধানের প্রজাতিসহ প্রকৃতি-প্রতিবেশ সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে বলে তাদের ধারণা।
এই ঢিবি এলাকা এখন ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তি। বহুকাল ধরেই স্থানীয়রা এখানকার টালিসদৃশ বিশেষ ইট নিজেদের কাজে ব্যবহার করেছেন।
কপিলমুনি ও সংলগ্ন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার একাধিক জায়গায় এমন আরও ঢিবি রয়েছে। এ থেকে অনুমান করা হচ্ছে, এখানে আরও অনেক নিদর্শন পাওয়া যেতে পারে।
তবে হাজার বছর আগে এই অঞ্চলটিতে কারা বসবাস করেছিল, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে আফরোজা খান মিতা বলেন, ‘এখনও নিশ্চিত না হওয়া গেলেও যেসব স্থাপনা ও নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে- সেখানে এমন কোনো জনগোষ্ঠী ছিল যাদের সঙ্গে বৌদ্ধ ধর্মের নিবিড় সংযোগ ছিল।’
সুন্দরবনসংলগ্ন এই অঞ্চলে বহুদিন আগে থেকেই মানুষের বসতি বলে ধারণা করা হয়। মহাকাব্য রামায়ণে কপিলেশ্বর মুনি ও বিশাল জলাভূমি বনের উল্লেখ রয়েছে।
এ ছাড়া সতীশচন্দ্র মিত্রের শত বছরের পুরোনো গ্রন্থ ‘যশোহর-খুলনার ইতিহাস’-এ কপিলমুনিতে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও স্থানের উল্লেখ রয়েছে। এই এলাকায় একাধিক ঢিবি থাকার কথাও অনেকে জানিয়েছেন।
অতীতে একটি পুকুর খননের সময় এই অঞ্চলে একটি বুদ্ধ প্রতিমা পাওয়া গিয়েছিল। আর কপিলমুনি বাজারের মন্দিরে থাকা বিষ্ণু মূর্তিটিও ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ বছরের পুরোনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কপিলমুনি ঢিবিতে খনন শুরুর পর থেকে এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, গবেষকসহ বিদেশি প্রতিনিধিদলও ঘুরে গেছেন।
স্থানীয় ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে অনুসন্ধিৎসু পাঠক, আইনজীবী বিপ্লব কান্তি মণ্ডলও কিছুদিন পর পর ওই খননস্থলটিতে ঘুরতে যান। তিনি বলেন, ‘অনেক পরে হলেও রেজাকপুরে খননকাজ করে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ একটি যথাযথ কাজ করেছে। তবে এই খননকাজটি আরও অনেক বিস্তৃত হওয়া উচিত। এত দিনে অনেক নিদর্শন হারিয়ে গেছে। যা আছে, তা রক্ষা করতে হবে।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানো সম্ভবত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা এবং আমাদের সভ্যতা সম্ভবত টিকতে পারবে না। ইউক্রেনে সাম্প্রতিক রুশ সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে এমনটাই মন্তব্য করেছেন হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত বিলিয়নেয়ার, ইনভেস্টর জর্জ সোরোস।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে বক্তব্য দিতে গিয়ে জর্জ সরোস বলেন, যদি মস্কোকে দ্রুত ইউক্রেনে পরাজিত করা না যায়, তবে সভ্যতা বাঁচাতে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাকে পশ্চিমারা শনাক্ত করতে পারবে না।
এ ছাড়া রাশিয়া ও চীনে বর্তমান যে শাসন-পদ্ধতি রয়েছে এবং তাদের বৈশ্বিক কর্মকাণ্ডমুক্ত সমাজের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করেন সরোস।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের বর্তমান লড়াই ও সংঘাতকে তিনি দেখছেন মুক্ত সমাজ ও বদ্ধসমাজের শাসন-পদ্ধতির দ্বন্দ্ব হিসেবে। তবে চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, পরিস্থিতি আর আগের পর্যায়ে ফিরবে না।
জর্জ সরোস হলেন হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত একজন হাঙ্গেরীয় বিলিয়নেয়ার। যিনি ১৯৩০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি একজন হলোকাস্ট সার্ভাইভার।
৯১ বছর বয়সী সরোস প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের মালিক। ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে এ পর্যন্ত তিনি ৩২ বিলিয়ন ডলার দান করেছেন। ফোর্বসের ম্যাগাজিনে তার বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘সবচেয়ে উদার দানশীল’।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে চলা যুদ্ধ চলতি বছরের শেষের দিকে থামতে পারে বলে মনে করছেন ইউক্রেনের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল কিরিলো বুদানভ।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যুদ্ধ কবে নাগাদ শেষ হতে পারে, এ নিয়ে এই প্রথমবারের মতো কথা বললেন ইউক্রেনের কোনো কর্মকর্তা। অবশ্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ প্রসঙ্গে এখনও কোনো মন্তব্য আসেনি।
গোয়েন্দাপ্রধান কিরিলো বলেন, ‘আগামী আগস্টের মধ্যভাগে একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে পরিস্থিতি। আর বছর শেষে যুদ্ধ হয়ে যাবে। অধিকাংশ অভিযানই এ বছরের শেষের দিকে শেষ হবে।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষে আমরা আবার দোনবাস, ক্রিমিয়াসহ সব জায়গাতেই আমাদের ক্ষমতা ফিরে পাব।’
রাশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে জানিয়ে এই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়া যুদ্ধে হেরে গেলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান হবে। এটি এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে।’
গোয়েন্দা কর্মকর্তা কিরিলো বলেন, ‘পুতিন এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে খুব খারাপ অবস্থায় আছেন। তার শরীর খুবই খারাপ।’
শিগগিরই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইউক্রেন যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে, তখন এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল জয়ের পরও যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে রাশিয়া।
পূর্বাঞ্চল দখলের চেষ্টারত রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনীয়দের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা এমন বার্তা দেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
যদি মস্কোকে দ্রুত ইউক্রেনে পরাজিত করা না যায় তবে সভ্যতা বাঁচাতে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাকে পশ্চিমারা শনাক্ত করতে পারবে না।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য লাখো তরুণ-তরুণীর প্রস্তুতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একে একে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করছে।
কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সূচি ঘোষণা করেছে। কোনো কোনোটি প্রাথমিক একটি ধারণা দিয়ে পূর্ণাঙ্গ সূচি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে।
এরই মধ্যে সেনাবাহিনী পরিচালিত ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস ভর্তি পরীক্ষা শেষ করেছে। তবে এখনও ফল প্রকাশ হয়নি। দেশের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনও কমপক্ষে এক মাস সময় রয়েছে প্রস্তুতির জন্য।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। করোনার মধ্যে সীমিতসংখ্যক বিষয়ে নেয়া পরীক্ষায় এবার পাসের হারে হয়েছে রেকর্ড। ৯৫ শতাংশের বেশি পাসের হারের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এবার চাপ থাকবে বেশি।
এই মুহূর্তে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫২টি। এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজেও ভর্তির সুযোগ আছে।
দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়েছে ১০৮টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সবগুলোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভর্তি পরীক্ষা অবশ্য হয় না। আর এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে বছরে দুটি সেমিস্টারেই ভর্তির সুযোগ থাকে।
২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর যেসব বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছিল, তার মধ্যে এখন দৃশ্যত আর কিছুই নেই। ফলে এবার ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে পুরোপুরি স্বাভাবিক পরিবেশে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র পরীক্ষা ছাড়াও এবারও দেশের ২০টি গুচ্ছভুক্ত সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে ৩ জুন। ওই দিন বাণিজ্য অনুষদ তথা ‘গ’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে।
পরের দিন হবে কলা অনুষদ তথা ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষা। ১০ জুন হবে বিজ্ঞান অনুষদ বা ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ বা ‘ঘ’ ইউনিুটের ভর্তি পরীক্ষা হবে ১১ জুন। চারুকলা অনুষদের লিখিত (অঙ্কন) পরীক্ষা হবে ১৭ জুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা যথাসময়ে হবে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করেছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
রাজধানী লাগোয়া সাভারের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক সূচি প্রকাশ করলেও কোন অনুষদে কবে পরীক্ষা হবে, সেই বিষয়টি জানানো হয়নি এখনও। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত।
এই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্র বাছাইয়ে লিখিত পরীক্ষা নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খুব শিগগিরই ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত সূচি প্রকাশ করা হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ আগস্ট থেকে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। কয়েক শিফটে ভর্তি পরীক্ষা চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত।
বিজ্ঞান অনুষদ তথা ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৬ ও ১৭ আগস্ট। বাণিজ্য অনুষদ বা ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষার ১৯ আগস্ট।
এর বাইরে কলা অনুষদ তথা ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ২০ ও ২১ আগস্ট, সমাজবিজ্ঞন অনুষদ বা ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা ২২ ও ২৩ আগস্ট হবে।
‘বি ১’ উপইউনিটের পরীক্ষা ২৪ আগস্ট সকাল পৌনে ১০টা এবং ‘ডি ১’ উপইউনিটের পরীক্ষা ২৪ আগস্ট দুপুর পৌনে ২টায় শুরু হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগের নিয়মেই এবারের ভর্তি পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
উত্তরের জনপদের সবচেয়ে প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হবে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে।
বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির জন্য ছাত্র বাছাইয়ে এই পরীক্ষা হবে ২৫ জুলাই। কলা, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান, চারুকলা, শিক্ষা ও গবেষণার ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ২৬ জুলাই। বাণিজ্যের ‘বি’ ইউনিটে পরীক্ষা হবে আগামী ২৭ জুলাই।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
দেশে প্রকৌশল শিক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এবার পরীক্ষা হবে দুই ভাগে। ৪ জুন হবে শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা (প্রিলিমিনারি পরীক্ষা)। চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা হবে ১৮ জুন।
১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। এতে থাকবে না পাস নম্বর। পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছয় হাজার শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে এই তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
গুচ্ছভুক্ত ২০ বিশ্ববিদ্যালয়
এককভাবে পরীক্ষা না নিয়ে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে পরীক্ষা নিয়ে মেধাক্রমের ভিত্তিতে ছাত্র বাছাই করবে এবারও। একে বলা হচ্ছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা।
এই পদ্ধতিতে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৩ সেপ্টেম্বর। ১০ সেপ্টেম্বর মানবিক অনুষদ আর সবশেষ ১৭ সেপ্টম্বর হবে বাণিজ্য অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা।
গুচ্ছভুক্ত ২০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ ছাড়া রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
গুচ্ছে তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়
গুচ্ছ পদ্ধতিতে একটি মাত্র ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র বাছাই করবে দেশের তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ও। এই তিন বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেবে আগামী ৬ আগস্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট)।
সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি, তবে খুব শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহিদুর রশিদ ভূঁইয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
এর বাইরে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঠিক করা হয়েছে আগামী ১২ আগস্ট।
আরও পড়ুন:চীনের উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ শিনকিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কিছু ছবি ও তথ্য ফাঁস হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের শিনকিয়াং সফরের সময় ছবিগুলো হ্যাক হয়েছিল। ছবিগুলোতে চীন সরকারের ‘কারাবন্দি কর্মসূচির’ চিত্র প্রকাশ্যে আসে।
এই ছবিগুলো হাতে পেয়েছে বিবিসি। এতে তথাকথিত ‘পুনঃশিক্ষা’ শিবিরসহ উইঘুরদের গণআটকের প্রমাণ আবারও স্পষ্ট হলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, হ্যাক করা ফাইলগুলোতে পুলিশের তোলা পাঁচ হাজারের বেশি উইঘুরের ছবি আছে। তাদের মধ্যে দুই হাজারের বেশি বন্দি সশস্ত্র রক্ষীর কড়া পাহারায় আছেন।
উইঘুরদের বেশির ভাগই মুসলিম। চীনের উত্তর-পশ্চিমের শিনকিয়াং অঞ্চলে অন্তত এক কোটি উইঘুর সম্প্রদায়ের লোক বাস করে।
আত্মপরিচয়ের বেলায় তারা নিজেদের সাংস্কৃতিক ও জাতিগতভাবে মধ্য এশিয়ার লোকজনের কাছাকাছি বলে মনে করেন। তাদের ভাষা তুর্কির কাছাকাছি।
গত কয়েক দশকে চীনের সংখ্যাগুরু হান জাতি সেই অঞ্চলে বাস করতে শুরু করে। এতে উইঘুর সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
তিব্বতের মতো শিনকিয়াং কাগজে কলমে স্বায়ত্তশাসিত এলাকা হলেও, বেইজিং-এর বাইরেও তারা নিজেদের মতো করে অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এই দুই এলাকা চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়।
চীন সরকারের বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ আছে। যদিও এসব প্রত্যাখ্যান করতে দেরি করে না বেইজিং।
তথ্যগুলো প্রকাশের পর বিষয়টি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক কথা বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে। আলাপে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই ছবিগুলোতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আটক দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের বয়স ১৫ বছর; সবচেয়ে বয়স্ক নারী ৭৩ বছর বয়সী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকজনকে মুসলিম হওয়ার কারণে এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সফরের কারণে আটক করা হয়েছে।
Detainee photos and ‘shoot-to-kill’ policy revealed in China hackhttps://t.co/JTnXjiPuuI
— BBC News (World) (@BBCWorld) May 24, 2022
“১০ হাজারের বেশি ছবি ও তথ্য হাতে পেয়েছে বিবিসি। সেই সঙ্গে চীনের শীর্ষ নেতাদের ‘বিশেষ বক্তব্য’, পুলিশের ব্যক্তিগত তথ্য এবং তাদের প্রতি নির্দেশনামূলক ডকুমেন্ট রয়েছে।”
বিবিসি আরও জানিয়েছে, শিনকিয়াংয়ের পুলিশের সার্ভার থেকে ২০১৮ সাল থেকে সংরক্ষণ করা ফাইলগুলো হ্যাক হয়েছিল। এগুলো চীন সরকারের বরখাস্ত কর্মকর্তা অ্যাড্রিয়ান জেনজের তত্ত্বাবধানে ছিল।
পুলিশের প্রতি নির্দেশনায় বলা আছে, আটক ব্যক্তিদের কেউ হাতকড়া বা শিকলসহ পালানোর চেষ্টা করলে সরাসরি ‘গুলি করে হত্যা’ করতে পারবে রক্ষীরা।
আরও পড়ুন:চার লাখ টাকা দাদন নিয়ে নতুন ট্রলার আর জাল দিয়ে সাগরে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন মো. জাকির হাওলাদার। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ইলিশের বিনিময়ে দাদন পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল তার। এ জন্য দিন-রাত পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এবার। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আবার সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞার জন্য এখন মহাদুশ্চিন্তায় জাকির। পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মৃত সামু হাওলাদারের ছেলে তিনি।
কোনো প্রশ্ন করার আগেই ৫০ বছরের জাকির বলে উঠলেন, ‘তুফানের বাড়ি খাই আমরা আর চাউল পায় আইরারা।’
অর্থাৎ ট্রলার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় জেলেদের। অথচ নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তা থেকে বঞ্চিত হন তারা।
জাকির হাওলাদার বলেন, ‘কী কমু কন। টাহার চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না। পাঁচজনের সংসার। মরণ ছাড়া উপায় নাই। গত কয়েক দিন কিছু ইলিশ পাইছি, হয়তো কয়দিন পরে বৃষ্টি হইলে আরও অনেক পাইতাম। কিন্তু এহন দিল নিষেধাজ্ঞা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।’
জাকির মনে করেন, মাছ ধরায় সাগরে ঘন ঘন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহযোগিতা না পেলে অনেকেই এই পেশাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খালের পাড়ে তুলে রাখা ট্রলারের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও বেশ কয়েকজন জেলে নিজেদের হতাশার কথা জানান।
রাঙ্গাবালীর ভাঙনকবলিত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন। উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এই ইউনিয়নে বিবিরহাওলা গ্রামের ২০-২৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরেন। গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি গাছের নিচে বসেছিলেন তাদেরই একজন রিপন মিয়া।
নোঙ্গর করা নিজের ট্রলার দেখিয়ে রিপন বলেন, ‘তিন দিন আগে বাজার-সদাই নিয়া সাগরে গেছিলাম। খরচ হইছিল ১৭ হাজার টাহা। গতকাইল আইছি। মাছ পাইছি মাত্র আট হাজার টাহার। এহন আবার ৬৫ দিন ঘরে বইয়া থাকতে অইবে। সাতজন শ্রমিক রাখছি, অগ্রিম টাহা দিয়া। ওগো তো ছাড়তেও পারমু না।’
রিপন বলেন, ‘এইডাই মোগো জীবন। এ আর নতুন কিছু না। এই যে দেহেন নদীর ঢেউ রাস্তার পাশে আইসা পড়ে, আবার ভাডার টানে সব শুকায় যায়। মোগো জীবনও এমন। যহন মাছ পাই, তহন আল্লার নামে খালি পাইতেই থাহি। আর যহন পাই না, তহন খালি হাতেই ফিরতে হয়।’
নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারি খাদ্যসহায়তার বিষয়ে রিপন বলেন, ‘মোর ট্রলারে মোরা আটজন। এর মধ্যে চারজনে চাউল পাই। হেই চাউল আনতে আনতে মোগো জান শেষ। আর বাকি চাইরজনের তো হেই সুযোগও নাই।’
তবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন রিপন।
বিবিরহাওলা গ্রামের ওই লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমটিার দূরে চরলতা গ্রাম। সেই গ্রামেই কথা হয় আইয়ুব গাজী নামে আরেক জেলের সঙ্গে।
আইয়ুব বলেন, ‘সবেমাত্র মাছ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগরে অবরোধ দিল। এর কোনো মানে অয়? ১২ লোক মোর ট্রলারে। আগেই হেগো টাহা-টোহা দিয়া রাখছি।’
আইয়ুব জানান, গত বছর অবরোধের আগে ভালো মাছ পাওয়া গেলেও এবার তেমন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধইরা এই পেশায় আছি। ইচ্ছা করলেই ছাড়তে পারমু না। সরকারি আইন মেনেই মোরা মাছ ধরা বন্ধ রাখছি। আল্লাহ ভরসা। ৬৫ দিন যেভাবেই হোক ধারদেনা করে হলেও চালাইতে অইবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেহি না।’
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কেন?
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এর আওতায় ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ২৫ হাজার স্থানীয় ট্রলার ও নৌকাকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘মূলত হারিয়ে যাওয়া কিছু মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের অবাধ প্রজননের জন্যই এই অবরোধ। এত বছর শুধু ইলিশ মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানকে অভয়াশ্রম হিসেবে চিহ্নিত করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো। এতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রতি বছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি জানান, অতীতের সফলতা মাথায় রেখেই মৎস্য গবেষকদের পরামর্শে গভীর সাগরে দেশীয় জলসীমায় ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই উদ্যোগে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালী জেলায় বিভিন্ন নদনদী এবং সাগরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকলেও জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ৬৭ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৫ জন। নিষেধাজ্ঞা চলার সময় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি চাল সরকারি খাদ্যসহায়তা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:চলতি শতকের শুরুতে রাজধানীবাসীকে বায়ুদূষণ থেকে বাঁচাতে সড়ক থেকে টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনের সব যানবাহন তুলে দিয়ে চালু করা হয় ফোর স্ট্রোক ইঞ্জিন বাহন। পাশাপাশি বাস বা ব্যক্তিগত গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে পেট্রল-ডিজেলের পরিবর্তে শুরু হয় কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস বা সিএনজির ব্যবহার। এতে নগরীর বায়ুদূষণ পরিস্থিতিতে রাতারাতি পরিবর্তন আসে।
২০০০ সালের আগের ঢাকার বাতাস ছিল গাড়ির কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। নাক-কান জ্বালা করা কিংবা শ্বাসজনিত নানা রোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। জ্বালানি হিসেবে সিএনজির ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এসব সমস্যা অনেকাংশে কমে আসে।
দুই দশক পর রাজধানীতে আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে সেই কালো ধোঁয়া। কয়েক বছর ধরে বাস, ট্রাকসহ বেশকিছু যানবাহনের সিএনজি ছেড়ে ডিজেলে ফেরার প্রবণতাকে এ জন্য দায়ী মনে করা হচ্ছে।
পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জ্বালানি হিসেবে সিএনজি ব্যবহার করলে বায়ুদূষণ কমে আসে। তবে এতে গাড়ির ইঞ্জিনের আয়ুষ্কালও একই সঙ্গে কমে যায়। পাশাপাশি ডিজেল এবং সিএনজির দামে পার্থক্যও অনেক কম। এ কারণে বাণিজ্যিকভাবে যেগুলো বড় পরিবহন হিসেবে পরিচিত, যেমন: বাস বা ট্রাক, এ বাহনগুলোতে ডিজেল ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে।
জ্বালানি হিসেবে পেট্রোলিয়ামের পরিবর্তে সিএনজি ব্যবহার করলে কালো ধোঁয়ার পাশাপাশি বায়ুদূষণ কমে। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/ নিউজবাংলা
তেলচালিত এসব বাহন ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় এগুলো বাতাসে ক্ষতিকর কালো ধোঁয়া ছড়াচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে সড়কে চলাচল করা বাস, ট্রাক, পিকআপ বা সরকারি মালিকানাধীন গাড়িগুলোই কালো ধোঁয়ার প্রধান উৎস।
২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর টু-স্ট্রোক বেবি ট্যাক্সিসহ পুরাতন যানবাহন বন্ধের পর এক দিনে ঢাকার বায়ুতে দূষণের মাত্রা কমে যায় প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে ২০১৩ সাল থেকে তা আবারও বাড়তে থাকে। গত নয় বছরে সেই দূষণ বাড়তে বাড়তে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে রাজধানীর বায়ুদূষণের অন্তত ৪০ ভাগের জন্য দায়ী এই কালো ধোঁয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ও বায়ুদূষণ বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক আবদুস সালাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বায়ুদূষণের একটি বিরাট অংশ যানবাহন থেকে আসে। আমরা যে তিনটি মেজর সোর্স ধরি বায়ুদূষণের তার মধ্যে কালো ধোঁয়া, একটি ব্রিক ফিল্ড এবং কনস্ট্রাকশন। গাড়ির কালো ধোঁয়া থেকে যেটা আসে এটা প্রায় ৪০ শতাংশ।’
কালো ধোঁয়া কী এবং কেন বের হয়?
গাড়ির ইঞ্জিন মূলত জ্বালানি তেল পুড়িয়ে শক্তি উৎপন্ন করে যেটি দিয়ে গাড়িটি চলে। কালো ধোঁয়া হলো এই জ্বালানির না পোড়া অংশ। সাধারণত গাড়ি পুরাতন হয়ে গেলে এবং এটিকে ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করা হলে এই কালো ধোঁয়া উৎপন্ন হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, ‘কালো ধোঁয়া মূলত দুই কারণে বের হয়। গাড়ি যত পুরাতন হতে থাকে এর কর্মক্ষমতাও কমতে থাকে। গাড়িতে যে তেল ব্যবহার করা হয় সেটা থেকে তার এনার্জি তৈরি হয়। কিন্তু গাড়ির কর্মক্ষমতা কমে গেলে এই তেলটা কমপ্লিট বার্ন হয় না বা কনভার্সন হয় না। যখনই এটা হয় না, তখনই তার একটি অংশ একজস্টের সাথে বের হয়ে আসে। এটাকে বলে ইনকমপ্লিট কনভার্সন।
‘গাড়ির একটি রেগুলার মেইনটেন্যান্স প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি হলে নিয়মিত প্রতি ৩ হাজার কিলোমিটার চলার পর মোবিল পরিবর্তন করা। এটা করা হয় না। এ কারণে গাড়ির যে লুব্রিকেটিং ফাংশন, এটা ঠিকভাবে কাজ করে না। সেখান থেকে পলিউশন হয়।’
অনেক সময় তেলের পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেলের গুণগত মান ঠিক না থাকলেও কালো ধোঁয়া তৈরি হতে পারে। অধ্যাপক সালাম বলেন, ‘আবার যে জ্বালানি ব্যবহার করা হয়, সেটাও অনেক সময় ভালো মানের থাকে না। এটাও দূষণের কারণ। মুলত এই তিন কারনে কালো ধোয়াটা তৈরি হয়।
‘কালো ধোঁয়ার একটি বড় অংশ হলো টক্সিক কার্বন। এটা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং মানুষের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। এতে থাকে অনেকগুলো ক্ষতিকর উপাদান যেমন হাইড্রো কার্বন, কাবন মনোঅক্সাইড এবং জ্বালানি তেলের আনবার্ন্ট কিছু অংশ। এগুলো প্রত্যেকটাই খুব ক্ষতিকর।’
কালো ধোঁয়ার ক্ষতি রোধে বেশ কয়েকটি পরামর্শও দেন এই গবেষক। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন যেটা করতে হবে, গাড়ির জ্বালানিটি কোয়ালিটি ধরে রাখতে হবে এবং গাড়ি নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করতে হবে। মূলত পুরাতন গাড়িই এর জন্য দায়ী।
‘আমাদের এখানে নিয়ম আছে যে ২০ বছরের পুরাতন গাড়ি রাস্তায় চলতে পারবে না। এখন এটা ঠিক মতো মেইনটেইন করা হয় কিনা জানি না। পাশাপাশি আইনের প্রয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।’
কালো ধোঁয়া যে ক্ষতি
আপাত দৃষ্টিতে নিরীহ মনে হলেও কালো ধোঁয়া মুলত মানুষের ফুসফুস ক্যান্সারের একটি বড় কারণ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি নারী ও পুরুষের বন্ধ্যাত্বের একটি বড় কারণ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কালো ধোঁয়া মানেই হলো কার্বন মনোঅক্সাইড, ডাই-অক্সাইড এবং ধাতব পদার্থ– মূলত সিসা। এগুলো মানুষের শরীরে গেলে ফুসফুসের ক্ষতি হয়, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয় এবং এক ধরনের প্রদাহ তৈরি করে। এর ফলে আমাদের শ্বাসতন্ত্রীয় রোগগুলো বেড়ে যায়।
‘এর মধ্যে হাঁপানি কাশি ও কারও কারও অ্যাজমাটিক সমস্যাও হতে পারে। দীর্ঘদিন এটি গ্রহণে আমাদের ফুসফুসে ক্যান্সারের আশঙ্কা বেড়ে যায়। কার্বন মনোক্সাইড শরীরে শোষিত হয়ে আমাদের লিভার ও কিডনিতে জটিলতা তৈরি করে এবং নারী পুরুষের বন্ধ্যাত্ব তৈরি করতে পারে। বায়ু দূষণের একটি বড় উপাদান এই কালো ধোঁয়া। শিশুদের জন্য এর প্রভাব মারাত্মক। এটি আমাদের বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ এফেক্ট বাড়িয়ে দেয়। এর কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়ে, জলবায়ূ পরিবর্তনে প্রভাব রাখে।’
দায় এড়াচ্ছেন পরিবহন মালিক ও ট্রাফিক বিভাগ
কালো ধোঁয়ার ক্ষতি জানার পরেও এটি ছড়ানোর দায় নিতে চায় না পরিবহন মালিকরা। তাদের দাবি, গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিতই সদস্যদের তাগাদা দেয়া হয়।
পরিবহন মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সতর্কতার কথা সব সময় বলা হয়। এটা তো মালিকের বিষয় না। পাম্পের তেলের সমস্যার কারণে অনেক সময় কালো ধোঁয়া হয়।
‘কালো ধোঁয়া পেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও অনেক সময় ব্যবস্থা নেয়। বাসে কোনো কালো ধোঁয়া নেই। ম্যাক্সিমাম গাড়ি তো খারাপ অবস্থায় থাকতে পারে না। কয়েকটি গাড়ি দিয়ে তো সবগুলোকে মূল্যায়ন করা যায় না। আমরা সব সময় বলি গাড়ি ঠিক রাখার জন্য। যারা করবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেক। আমরা সব সময়ই বলে থাকি।’
দেশের মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ধোঁয়া নির্গত হলে তা জরিমানাসহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অবশ্য খালি চোখে কালো ধোঁয়ার সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও ধোঁয়া পরিমাপক যন্ত্রের অপেক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না ট্রাফিক বিভাগ। তাদের দাবি, কালো ধোঁয়া পরিমাপক যন্ত্র না থাকায় চাইলেও কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী কোনো যানকে জরিমানার আওতায় আনা যাচ্ছে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যানবাহনের কালো ধোঁয়ার কারণে অ্যাকশন নিতে হলে আমাদের ধোঁয়া পরিমাপক যন্ত্র লাগবে, সেটা আমাদের দেশের ট্রাফিক বিভাগের কাছে নেই। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ধোঁয়ার নির্ণয়ক মান নির্ধারণ করে দেয়া আছে, কিন্তু আমরা তো খালি চোখে সেটা মাপতে পারব না।
‘তাই দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে আমরা এই ব্যাপারে একেবারেই নিরুপায়। তবে ধোঁয়া ডিটেকটরের জন্য ট্রাফিক বিভাগ ইতোমধ্যেই সরকারের কাছে আবেদন করে রেখেছে। এটা পেলেই আমরা কালো ধোঁয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করতে পারব।’
২০২১ সালের হিসাবে, দেশে নিবন্ধিত মোটরযান আছে ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৯৩টি। এর মধ্যে রাজধানীতে রয়েছে ১৬ লাখের বেশি গাড়ি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য