কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শোকযাত্রা-পরবর্তী সমাবেশ জনারণ্যে রূপ নিয়েছে। সমাবেশে বক্তারা একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, আগামী রোববারের মধ্যে এসব দাবি মানা না হলে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচি শুরু হবে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণজমায়েত থেকে এই ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগিব নাইম। এ সময় সেখাানে কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত ছিল।
এর আগে বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে ছাত্র-জনতার শোকযাত্রা শুরু হয়। এ ময় সেখানে বক্তব্য দেন এই শোকযাত্রার সভাপতি অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ।
গণগ্রেপ্তার বন্ধ, আটক শিক্ষার্থী-জনতার মুক্তি, কারফিউ প্রত্যাহার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া ও অসংখ্য শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এই শোকযাত্রার আয়োজন করা হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে ছাত্র-জনতার এই শোকযাত্রা দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি ও টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছে।
এ সময় শোকযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং বিভিন্ন দাবি সংবলিত প্লাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন।
শহীদ মিনারে সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগিব নাইম বলেন, ‘আগামী রোববারের মধ্যে গণগ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে, রোববারের মধ্যে আটক শিক্ষার্থী-জনতাকে মুক্তি দিতে হবে, কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
‘আর অবশ্যই শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। যদি আমাদের এই দাবি পূরণ না করা হয় তাহলে আগামী রোববার বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে ছাত্র-জনতার গণমিছিল শুরু হবে।’
সমাবেশে ড. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমাদের কথা খুব পরিষ্কার। অবিলম্বে শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আটক সব ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দিতে হবে। কারণ আপনারা সরকার পরিচালনায় অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আর আপনারা পদত্যাগ করতে ব্যর্থ হলে আমাদের ইতিহাসে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। আপনাদেরও একই পরিণতি হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সাতরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে আশপাশের এলাকাগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা।
‘টেকনিক্যাল স্টুডেন্ট মুভমেন্ট’-এর ব্যানারে ছয় দফা দাবি আদায়ে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে প্লাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের কারণে ফার্মগেট থেকে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত বাস, প্রাইভেটকার ও অটোরিকশাসহ সব ধরনের গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি গাজী শামীমুর রহমান ইউএনবি-কে বলেন, ‘অবরোধের কারণে সড়কের দুপাশে যানবাহন আটকা পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। অবরোধকারীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সড়ক অবরোধকালে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে- ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া সব ‘বিতর্কিত’ কারুশিল্প প্রশিক্ষককে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান থেকে অবিলম্বে বদলি করা, ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চার বছর মেয়াদি নিশ্চিত করা এবং প্রতিটি সেমিস্টার পূর্ণ মেয়াদের অর্থাৎ ছয় মাসের করা।
তারা আরও দাবি করেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে (দশম গ্রেড) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ব্যতীত অন্য কেউ আবেদন করতে পারবেন না এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে। এছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংস্কার করে কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত কোনো জনবল থাকতে পারবে না।
শিক্ষক সংকট দূর করতে শিক্ষার্থীরা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে সব শূন্য পদে কারিগরি জনবল নিয়োগের দাবি জানান।
এছাড়াও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ আসন নিশ্চিত করার দাবি তাদের।
আরও পড়ুন:ভয়াবহ বন্যায় জেলায় ৮৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা দপ্তরের ৩৮ কোটি ৭২ হাজার ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করে নষ্ট হয় বই ও আসবাবপত্র। বানের জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মোটর পাম্প, কম্পিউটার ও প্রিন্টারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত পানিবন্দি থাকায় মেঝে ও বারান্দায় গর্তের সৃষ্টি হয়। আবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতিতে গত ২০ আগস্ট থেকে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায় জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ৯২০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এর মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৫৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৩টি, মাদ্রাসা ১২৮টি, কলেজ ৩০টি, কারিগরি, ডিপ্লোমা ও প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট ১০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় জেলার ছয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস ও আওতাধীন প্রায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে তলিয়ে গিয়ে আনুমানিক আট কোটি ৭১ লাখ ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে ছাগলনাইয়ায় আনুমানিক এক কোটি ১১ লাখ ৯০ হাজার টাকার, ফেনী সদর উপজেলায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার, দাগনভূঞা উপজেলায় ১ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার, ফুলগাজী উপজেলায় ১ কোটি ৮১ লাখ ৫০০ টাকার, পরশুরামে ২৭ লাখ টাকার এবং সোনাগাজী উপজেলায় ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানান, বন্যায় উপজেলার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। দপ্তরের বিভিন্ন সরঞ্জাম পানিতে ডুবে আনুমানিক ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। সব মিলিয়ে বন্যায় জেলার প্রাথমিক শিক্ষা খাতে ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৫০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যায় জেলার ৩৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাও কলেজ পানিতে তলিয়ে যায়। এতে বই, আসবাবপত্র, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। সব মিলিয়ে আনুমানিক ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দোলন কৃষ্ণ সাহা বলেন, বন্যায় কলেজের বিভিন্ন আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ৪৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এখন সবকিছু পরিষ্কার করে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফীউল্লাহ জানান, বন্যায় জেলার ৩৫৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসাও কলেজ প্লাবিত হয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে এরই মধ্যে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও দ্রুত পরিচ্ছন্নতা শেষে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসরাত নুসরাত সিদ্দিকা জানান, ৩৫৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৬টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর আসবাবপত্র, ভবন, সীমানা প্রাচীর ও মাঠসহ ২৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাস নয়, শুধু আবাসিক ও একাডেমিক স্থানগুলোতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিসহ ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে ইউনিভার্সিটি রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইউআরআই)।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলেও থাকতে পারবে। তবে সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে না।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মুখপাত্র শহীদুল্লাহ্ হলের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আদনান মুস্তারি এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী রাফিয়া রেহনুমা।
সংগঠনটির পক্ষে আদনান মুস্তারি আটটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
প্রস্তাবনাগুলো হলো-
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক স্থান (হল, হোস্টেল প্রভৃতি) ও একাডেমিক স্থানে (অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট প্রভৃতি) সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি (সভা-সমাবেশ, মিছিল, মিটিং, সম্মেলন, শোভাযাত্রা, শোডাউন প্রভৃতি) নিষিদ্ধ করা হবে।
২. কোনো প্রকার রাজনৈতিক পরিচয় বা সংশ্লিষ্টতা ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উল্লিখিত স্থানগুলোতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা, কোনো সুযোগ-সুবিধা আদায় বা বিশেষ বিবেচনালাভের প্রচেষ্টা চালাতে পারবে না।
৩. কোনো শিক্ষার্থী যদি উল্লিখিত কর্মকাণ্ডগুলোতে জড়িত হয় তবে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এই মর্মে সিন্ডিকেটে আইন পাস করতে হবে।
৪. উল্লিখিত স্থানগুলোতে কোনো দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের প্রচেষ্টা ব্যতিরেকে ব্যক্তিগত পরিসরে কেউ কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলে বা নিজস্ব মত প্রকাশ করলে তাকে কোনো শাস্তির আওতাভুক্ত করা হবে না।
৫. দ্রুততম সময়ের মধ্যে হল ও কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। স্নাতক পর্যায়ের বৈধ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ভর্তি হওয়ার সেশন থেকে বর্তমান শিক্ষাবর্ষের পার্থক্য ছয়ের বেশি হবে না। যেমন- ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের প্রথম বর্ষ ধরে নিয়ে ২০১৭-১৮ সেশনের সব বৈধ শিক্ষার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। একইভাবে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভর্তি সেশনের সঙ্গে বর্তমান সেশনের পার্থক্য দুইয়ের বেশি হতে পারবে না।
৭. ডাকসু বা হল সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। সব প্রার্থীকে স্বতন্ত্রভাবে নিজস্ব ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে। কোনো প্যানেল হিসেবে কেউ নির্বাচনে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
৮. ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে অভিজ্ঞ প্যানেল তৈরি করে ডাকসুর সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার সুপারিশমালা প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের সংশোধনী বাস্তবায়ন করতে হবে।
হলে রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবেন কি-না এমন প্রশ্নে আদনান মুস্তারি বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। আমরা কারও সাংবিধানিক অধিকার বঞ্চিত করার পক্ষে না। রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারবেন। তবে সেখানে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের শিক্ষার্থী তামিম মুনতাসির, ফজলুল হক মুসলিম হলের আনোয়ার ইব্রাহীম বিপ্লব, বিজয় একাত্তর হলের জোবায়ের হোসেন শাহেদ, ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের রেদওয়ানুল হাসান শান্ত প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল অবৈধভাবে দখল করে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী।
বিএনপির ছাত্রসংগঠনটির নেতারা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের কয়েকটি কক্ষ দখল করেছেন। অবৈধভাবে দখলে নিতে অপর পক্ষকে কক্ষ থেকে নামিয়ে দেয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। আধিপত্য বিস্তার করতে ছাত্রলীগকেও কাছে টানছেন তারা।
এদিকে হল দখল করা নিয়ে ছাত্রদলের একাধিক পক্ষের আধিপত্য বিস্তার ও বিভাজনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসছে৷ এর একটি পক্ষের নেতৃত্বে ববি শাখার সভাপতি মো. রেজা শরীফ। পর পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ববি শাখার ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক জান্নাতুল নওরিন ঊর্মি।
ছাত্রদলের উভয় গ্রুপের বিরুদ্ধেই আবাসিক হলে অবৈধভাবে কক্ষ দখল ও ছাত্রলীগকে প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতোদিন ছাত্রলীগ আধিপত্য বিস্তার করে রাখা কক্ষগুলো ছাত্রদল দখলে নিতে শুরু করেছে।
শেরে বাংলা হলের ২০০৬, ৫০২০, ২০০৭ নম্বরসহ আরও কিছু কক্ষের সিট দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাতে ছাত্রলীগের সহায়তা নিয়েই ছাত্রদলের নেতারা কক্ষগুলো দখলে নেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন তাদেরকেও সহায়তার প্রমাণ মিলেছে ছাত্রদলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে, আধিপত্য বিস্তার করতেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন ছাত্রদল নেতারা।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। তারপরও হল দখলে নিয়ে ক্যাম্পাসে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন ছাত্রদল নেতারা।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ছাত্রদলের এই কমিটি গঠিত হয় ২০২১ সালের এপ্রিলে। এই কমিটির অধিকাংশ নেতারই ছাত্রত্ব শেষ হয়ে গেছে। বিগত দুই থেকে তিন বছর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কোন অস্তিত্ব ও কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তার সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ছাত্রদল নেতা বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম, আরিফ হোসেন শান্ত ও সাব্বির হোসেনের বিরুদ্ধে কক্ষ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিনহাজুল শেরে বাংলা হলের ২০০৬ ও ৫০২০ নম্বর কক্ষ দখল করেন। ২০০৬ নম্বর কক্ষটি বৃহস্পতিবার রাতেই ছেড়ে দিলেও ৫০২০ নম্বর কক্ষ তার এক অনুসারীকে দিয়ে দখলে রেখেছেন।
তবে কক্ষ দখলের খবরটি ভিত্তিহীন দাবি করে মিনহাজুল বলেন, ‘ছাত্রদলের সদস্য মোশাররফের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের শিহাব-মঞ্জু রুম ভেঙে দখলের চেষ্টা করে। আমি সেটা প্রতিহত করি।’
অপরদিকে জান্নাতুল নওরিন ঊর্মির অনুসারী ছাত্রদল নেতা আরিফ হোসেন শান্ত ২০০৭ নম্বর কক্ষে এক শিক্ষার্থীকে উঠান। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সভাপতি রেজা শরিফের অনুসারী শান্তর লোককে জোরপূর্বক নামিয়ে নিজের লোক উঠানোর চেষ্টা করেন।
সাব্বির হোসেন ও আরিফ হোসেন শান্ত একে অপরের বিরুদ্ধে কক্ষ দখলের অভিযোগ করেছেন।
সাব্বির ছাত্রদলের কোন সদস্য না হলেও সভাপতির অনুসারী পরিচয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন ক্যাম্পাসে। মো. মোশাররফ হোসেন ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা হলেও ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত তার ছাত্রলীগের মূল ধারার নেতাদের সঙ্গে সখ্য ছিলো।
এ সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে নওরিন ঊর্মি বলেন, ‘আমার অবস্থান স্পষ্ট। যদি কেউ আমার নাম ভাঙিয়ে হল দখলসহ কোনো ধরনের দখলদারত্ব করতে যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর আমাদের মধ্য কোনো বিভাজন নেই, আমরা এক আছি।’
ছাত্রদল ববি শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান আল হাসিব বলেন, ‘আমাদের কাছে হল দখলের এমন সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ছাত্রলীগ কর্মীরা এখন ছাত্রদলে অনুপ্রবেশ করছে কতিপয় নেতার প্রশ্রয়ে। আমরা তাদের ব্যাপারে খোঁজ রাখছি। প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রেজা শরীফ বলেন, ‘ছাত্রদলের নাম করে ক্যাম্পাসে কেউ দখলদারি শুরু করলে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেয়া হবে না৷ ছাত্রলীগের নির্যাতনকারী নেতাকর্মীদের যদি ছাত্রদলের কেউ প্রশ্রয় দেয় তাহলে প্রমাণ পেলে তাকে বহিষ্কার করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীনের কাছে হল দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানি না। তবে এমন কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহীদ নজরুল ইসলাম আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে কক্ষ দখলে নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বাকি কক্ষগুলোও দখলে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে শুক্রবার শহীদ নজরুল ইসলাম হলের ১০৪ নম্বর কক্ষে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের বের করে কক্ষ দখল করে তালা দেয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসে অবস্থানরত শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। এরপর হলটিতে অবস্থান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা নিজেদের অর্থ ব্যয় করে হলটি বসবাসযোগ্য করে তোলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুম থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এ সময় শাখা ছাত্রদলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুর রহমান দুর্জয়, মাশফিকুর রাইন ও মনিরুজ্জামান; ১১ ব্যাচের শামীম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৭ ব্যাচের মাহমুদুল হাসান নাইম, বাংলা বিভাগের ১৮ ব্যাচের আশরাফুল, ১৭ ব্যাচের ফাইনান্স বিভাগের সৈকত মাহমুদসহ ১৫/২০ জন নেতাকর্মী হল দখল করেন। পরে ১০৪ নম্বর কক্ষটি দখলে নিয়ে তারা তালা দেন। বাকি কক্ষগুলোও ছাত্রদল দখল করবে বলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন তারা। হলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ঠাঁই নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন হল দখলকারীরা।
ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাফিজুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে জিনিসপত্রসহ বের করে দেন।
ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা এত বেশি এগ্রেসিভ ছিল যে ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলার পরিবেশ ছিল না। আমি সিনিয়র হলেও তারা জুনিয়র নিয়ে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বই-খাতা, টেবিল ও চৌকি বাইরে বের করে দেয়।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রায়হান হোসেন অপু বলেন, ‘রুম ফাঁকা ছিল, ওখানে কেউ ছিল না। এজন্য কয়েকজনকে তুলে দিয়েছি। রুম থেকে কাউকে বের করে দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাকি সব অভিযোগ মিথ্যা।’
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, ‘আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই। ফেসবুকে এমন একটা পোস্ট দেখলাম। শুনেছি ওখানে একজন ছাত্রদলের পরিচয় দিয়ে হলটা কন্ট্রোল করে। বাস্তবেই ছাত্রদলের কেউ এমনটা করে থাকলে আমরা সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতন ও শহীদদের আত্মত্যাগ স্মরণে এক মাস পূর্তি উদযাপনে ছাত্র-জনতা ব্যানার এবং শহীদ ও আহতদের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বৃহস্পতিবার মিছিল-সমাবেশ করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (এডিএস) সমন্বয়কারীরা শহীদি মার্চ থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন।
দাবিগুলো হলো- গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার, যত দ্রুত সম্ভব নিহতদের পরিবারকে অর্থনৈতিক ও আইনি সহায়তা দেয়া, প্রশাসনিক খাতের দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা, গণভবনকে (প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন) ‘জুলাই-স্মৃতি জাদুঘর’ ঘোষণা করে দ্রুত রাষ্ট্র সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘রক্ত দিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারকে অপসারণ করেছি এবং এর জন্য আমাদের রক্ত ঝরাতে হয়েছে। যদি ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার চেষ্টা করে তাহলে প্রয়োজনে আবার আমরা রক্ত দেব। যেমনটি আমরা আগে দিয়েছি। কোনো ধরনের অনিয়ম, সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি থাকবে না। শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না।’
কেন্দ্রীয় ‘শহীদি মার্চে’ মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে এবং শহীদদের প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে স্লোগান দেযন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৃথকভাবে সাধারণ জনগণ ও শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন।
বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, হাসিব আল ইসলাম, আবু বকর মজুমদার, আবদুল হান্নান মাসুদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণ থেকে কেন্দ্রীয় পদযাত্রাটি শুরু হয়।
স্কুল শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘আজ আমি এখানে এসেছি শহীদি মার্চের কর্মসূচিতে যোগ দিতে। এটা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। প্রথম স্বাধীনতা আমাদের ভূমি দিয়েছে। আর দ্বিতীয় স্বাধীনতা থেকে আমরা আমাদের মৌলিক চাহিদা এবং অধিকারগুলো সংরক্ষণের প্রত্যাশা করছি। এই লড়াইয়ে আমরা বাংলাদেশি ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়েছি এবং সেই লড়াইয়ে জিতেছি। ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে সব ত্যাগ বৃথা যাবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জরুরি।’
বন্ধুদের নিয়ে মিছিলে যোগ দিতে আসেন মাদরাসাছাত্র খালিদ মারুফ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সময় আমরা যাত্রাবাড়ীর মোড়ে ছিলাম। আমার কয়েকজন ভাই ও সহকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। কেউ কেউ এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’
তিনি বলেন, ‘আগের সরকারের আমলে আমরা আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আসতে পারিনি। মনের কথা স্বাধীনভাবে বলতে পারতাম না। আমাদের ট্যাগ করা হয়েছিল এবং সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছিল।
‘এখন আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তা কখনোই ছিল না। রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। আর ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয়ভাবে স্মরণ ও স্বীকৃতি দিতে হবে।’
যারা একটু দেরি করে কেন্দ্রীয় পদযাত্রায় যোগ দিতে পারেননি, তারা প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় অবস্থান করেন এবং পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দুর্নীতি, অপরাধ, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী স্লোগান দেন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের গণহত্যার বিচার চান।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ড. কামরুল আহসানকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০তম ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ অনুযায়ী অধ্যাপক কামরুল আহসানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে উপাচার্য পদে পাঁচ শর্তে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
শর্তগুলো হলো- উপাচার্য পদে এ নিয়োগ যোগদানের তারিখ হতে কার্যকর হবে। উপর্যুক্ত পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ-সংশ্লিষ্ট অন্য সুবিধা ভোগ করবেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন এবং রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
এর আগে গত ৭ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ উল্লেখ করেছিলেন। তিনি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে পদত্যাগের আগ পর্যন্ত ভিসি পদে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য