বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই হতাশার মধ্যে দিয়ে কাটান বলে আঁচল ফাউন্ডেশনের এক জরিপে উঠে এসেছে। হতাশার বিভিন্ন উপসর্গ, যেমন: ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া, কোনো কিছু উপভোগ না করা, ঘুমের ধরনের পরিবর্তন, আত্মহত্যার চিন্তা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তাদের যেতে হয়েছে বলে জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে।
শুক্রবার ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ’ শীর্ষক সমীক্ষা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত করা এ জরিপে সারা দেশের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১ হাজার ৫৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপের তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ৭৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাদের হতাশার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মাত্র ২০ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন যে তাদের এই ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি।
হতাশার উপসর্গ তুলনা করতে গিয়ে দেখা গেছে, ৬৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী আগের তুলনায় বেশি সময় হতাশার উপসর্গ নিজের মাঝে অনুভব করেছেন। এর মধ্যে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী বিষণ্ণতার উপসর্গগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বাকি ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের মাঝে হতাশার উপসর্গ দেখা যায়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৭৯ দশমিক ৯ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা হতাশার উপসর্গগুলো অনুভব করেছেন। অন্যদিকে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এই ধরনের উপসর্গের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা
এদিকে, ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের হতাশার বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে জরিপে। মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। বিভিন্ন কারণে নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করার কারণে হতাশায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন জরিপে অংশ নেয়া মোট শিক্ষার্থীর ১৬ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিয়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, হল বা আবাসিক পরিবেশ নিয়ে ৯ শতাংশ, সহপাঠী বা শিক্ষকের দ্বারা বুলিংয়ের কারণে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং উপর্যুক্ত সবগুলো কারণের জন্য ১ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও আরও ৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা অন্যান্য কারণে হতাশায় ভুগছেন।
এদের মধ্যে সহপাঠী, সিনিয়র কিংবা শিক্ষকের দ্বারা ক্যাম্পাসে শারীরিক বা মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩১ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী; যার মাঝে বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হননি ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
বিভিন্ন ধরনের হয়রানিতে আক্রান্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহপাঠী বা সিনিয়র দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ, শিক্ষক কর্তৃক ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, স্টাফ কর্তৃক ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং অন্যান্যদের দ্বারা ৫ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়েছন।
হয়রানির ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর, মোটামুটি প্রভাব পড়েছে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর এবং কোনোরূপ প্রভাব পড়েনি ৮ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে পুরোপুরি অসন্তুষ্ট ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, মোটামুটি সন্তুষ্ট ৫৮ দশমিক ১ শতাংশ এবং পুরোপুরি সন্তুষ্ট মাত্র ৮ দশমিক ৪ শতাংশ।
নিজেকে প্রকাশ
জরিপের ৫৯ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা মন খুলে কথা বলার মত কোনো শিক্ষক পাননি। এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী নিজের শিক্ষকদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা খুব সহজে নিজ বিভাগের শিক্ষকদের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং ৪১ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভাগের অন্যান্য সদস্যদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।
হলের পরিবেশ
হলের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টির ক্ষেত্রে ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা পুরোপুরি অসন্তুষ্ট। সন্তুষ্টির কথা বলেছেন মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকিরা জানিয়েছেন তারা মোটামুটি সন্তুষ্ট।
অসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী থাকার পরিবেশকে দায়ী করেছেন। অনুন্নত খাবারকে দায়ী করেছেন ৭ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। গ্রন্থাগার সংকট মনে করছেন ৩ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং সবগুলো কারণকেই দায়ী করছেন ৬৮ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়াও ১০ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য কারণকে অসন্তুষ্টির জন্য দায়ী করছেন। ৭০ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, হলের পরিবেশ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
ক্যারিয়ার ভাবনা
জরিপের তথ্যানুসারে, ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার হিসেবে সরকারি চাকরি করতে চান, ৯ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, মাত্র ৭ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি চাকরি করতে চান।
বাকি শিক্ষার্থীরা এখনও কোনোরূপ ক্যারিয়ার ভাবনা ঠিক করেননি, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২২ শতাংশ।
আত্মহত্যার প্রবণতা
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তায় এসেছে, কিন্তু আত্মহত্যার চেষ্টা করেননি ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তা এসেছে ও উপকরণও জোগাড় করেছেন ৭ দশমিক ৩ শতাংশ এবং কখনও মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা আসেনি ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা এসেছে। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায়, ১৬ দশমিক ২ শতাংশ বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমানের ফলে, ৯ দশমিক ৭ শতাংশ প্রেমঘটিত বিষয়ে, ৯ শতাংশ অর্থনৈতিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে, অন্যরা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং ৩০ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর অন্যান্য বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করার চিন্তা মাথায় এসেছে বলে জানিয়েছেন।
মানসিক স্বাস্থ্য
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বিপক্ষে মত দিয়েছেন। আর ২৬ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা এ সম্পর্কে জানেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির দূরীকরণে সংগঠনটি বেশকিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে।
এগুলো হলো- ক্যাম্পাসে কাউন্সিলিং ইউনিটের ব্যবস্থা করা, মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা, ক্যাম্পাসে কেউ যেন বুলিং এর শিকার না হয় তা মনিটরিং করা, নিরাপদ বাসস্থান ও উন্নতমানের খাদ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করা, প্রয়োজনে বৃত্তি ও প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদান করা।
এ ছাড়াও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্মান ও আস্থার সম্পর্ক উন্নয়ন, প্রয়োজনে কাউন্সিলিং করানো; মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা; সেমিনার ও মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা; মনোবিজ্ঞানী বা বিশেষজ্ঞদের এসব সেশনে বিভিন্ন সমস্যা ও এগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো এবং দেশের সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট (মনোবিদ), এডুকেশনাল কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেয়ার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ২৫১ জন, যা মোট শিক্ষার্থীর ১৬ শতাংশ, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ২৫৪ জন (১৬ দশমিক ২ শতাংশ), তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ৩৬৯ জন (২৩ দশমিক ৪ শতাংশ), চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন ৩৪০ জন (২১ দশমিক ৭ শতাংশ), মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন ৩৪১ জন (২১ দশমিক ৭ শতাংশ) এবং সদ্য গ্র্যাজুয়েট ছিলেন ১৫ জন (এক শতাংশ)।
আরও পড়ুন:১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।
সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।
সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।
Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।
এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি)-এর ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় ‘লেদার ক্রাফট এক্সিবিশন ২০২৫’। ৬৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই প্রদর্শনীটি ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা চামড়াজাত পণ্য ডিজাইন ও কারুশিল্প বিষয়ক একটি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সফল পরিসমাপ্তির ফসল।
প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি নানান রকমের সৃজনশীল ও ব্যবহারিক চামড়াজাত পণ্য স্থান পায়। এতে তাদের দক্ষতা, শৈল্পিকতা এবং বাস্তব জীবনের শিল্প জ্ঞান ফুটে ওঠে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউএফটি’র ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’র সহযোগী অধ্যাপক জনাব উত্তম কুমার রায় এবং বিইউএফটি’র জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ ইমতিয়াজ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী।
কর্মশালাটি আয়োজন ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ফাহিমা আখতার। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিইউএফটি তার শিল্পভিত্তিক ও বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পাশাপাশি, দেশের চামড়াশিল্পে উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার প্রসারেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। প্রদর্শনীটি তরুণ ডিজাইনারদের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে যা ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত দক্ষতা গঠনে সহায়ক হবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের (টিএনই) বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফুলার রোড অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে নীতিনির্ধারক, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষা খাতের অংশীজন, অ্যাকাডেমিক কমিউনিটি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন এবং ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের (টিএনই) বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর স্যালভাডোর কারবাজাল লোপেজ গবেষণা প্রতিবেদনের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে টিএনইয়ের প্রসার সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ সুগম করবে।
‘টিএনই মানসম্মত উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে আমরা আমাদের অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করে এ প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রচেষ্টার আমি সত্যিই প্রশংসা করি। এটি অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করছে।
‘এ সম্পর্ক জোরদার করা উভয় দেশের জন্যই উপকারী হবে, যা উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, জ্ঞান বিনিময় এবং এই খাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘ব্রিটিশ কাউন্সিলের ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন রিসার্চ রিপোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন বৈশ্বিক শিক্ষা অংশীদারত্বের মাধ্যমে শিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে দারুণ সুযোগ তৈরি করছে।’
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের সম্ভাবনা ও সামাজিক মূল্য’ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
সেশনটি পরিচালনা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স।
প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি জেনারেল ইশতিয়াক আবেদিন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাউথ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর সালভাদর কারবাজাল লোপেজ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল নিয়োজিত আন্তর্জাতিক যোগ্যতা মূল্যায়ন সংস্থা ইক্টিস গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা করেছে।
১. টিএনই প্রদানকারীদের জন্য নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াগুলো সহজ করা ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা
২. ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ব্রিজিং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রাম চালু করা
৩. রিমোট ও অনলাইন লার্নিংকে সহায়তা করতে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত করা
৪. মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াগুলোতে স্বচ্ছতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করা
৫. বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে লক্ষ্যভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ
৬. মধ্যম আয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বৈত ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগ গ্রহণ
অনুষ্ঠানে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) ২০২৫ অনুদানের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি নির্বাচিত ইউকে-বাংলাদেশ পার্টনারশিপ তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৫ হাজার পাউন্ড করে অনুদান পাবে।
বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজ্যাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ, নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বার্মিংহাম সিটি ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি–বাংলাদেশ।
এ ছাড়াও রয়্যাল হলোওয়ে, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে কাজ করবে, এবং কীল ইউনিভার্সিটি এফআইভিডিবির সঙ্গে অংশীদারত্ব করবে।
এ অনুদানগুলো ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন উদ্যোগের মাধ্যমে অ্যাকাডেমিক ও গবেষণামূলক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালীর উদ্দেশে প্রদান করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য।
সম্পূর্ণ রিপোর্টটি ব্রিটিশ কাউন্সিলের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
আরও পড়ুন:প্রাথমিক শিক্ষার জেলা ও বিভাগের টাস্কফোর্স কমিটি সংশোধন করে পুনর্গঠনের নির্দেশনা এবং এর কার্যপরিধি পুনর্নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষার বিভাগীয় উপপরিচালককে সদস্য সচিব করে বিভাগীয় টাস্কফোর্স এবং জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সদস্য সচিব করে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইসরাত জাহান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি, বেসরকারি, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার ও শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার সার্বিক অবস্থা ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে বিভাগীয় টাস্কফোর্স।’
জেলার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা টাস্কফোর্স কমিটিকে।
বিভাগীয় বা মহানগরের প্রাথমিক শিক্ষা টাস্কফোর্স কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অদিদপ্তরের প্রতিনিধি, এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (সার্কেল) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, বিভাগভুক্ত সব জেলায় জেলা প্রশাসক এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (সার্কেল) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
এ টাস্কফোর্স সরকারি, বেসরকারি, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার ও শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করবে।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে টাস্কফোর্স। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের যথাযথ বাস্তবায়নের তদারকি করবে এটি।
টাস্কফোর্স প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য নতুন নতুন ধারণা ও উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রয়োগ করবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে ঝরে পড়া রোধ, শিখন শেখানো কাজের উন্নয়ন, যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিরূপণ ও দূরীকরণে কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন:মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ড. ইহতেসাম উল হক এ বি এম রেজাউল করীমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আগের ডিজি অবসরে যাওয়ার এক মাসের বেশি সময় পর এ পদে নিয়োগ দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৪ জানুয়ারি চাকরি শেষ করে অবসরে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক রেজাউল করীম।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট মাউশির মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাগনে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
তার পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে শুধু শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার।
এ ছাড়া নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করা হয়েছে।
পাশাপাশি জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নারায়াণগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বলে ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
আরও পড়ুন:রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বোর্ডে অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম, যশোর বোর্ডে অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান, সিলেট বোর্ডে অধ্যাপক শামছুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি এ চার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. নিজামুল করিম, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু তাহের ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলিউর রহমান।
দেশের ১১ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সাধারণ ৯টি। এগুলো হলো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, সিলেট, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।
বাকি দুটি বোর্ডের একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। ১১ বোর্ডে কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য