শিক্ষক-কর্মচারী মিলে বিদ্যালয়টির চাকুরে সাকল্যে চারজন। আর শিক্ষার্থীর সংখ্যাটা ৪৫। তবে এসব শিক্ষার্থীও বলতে গেলে নামেই। কেননা ওদেরকে শিক্ষাদানের জন্য বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী ছাড়া আর কেউই বলতে গেলে উপস্থিত থাকেন না। তিনজন শিক্ষক সপ্তাহে একবার স্কুলে গিয়ে হাজিরাটা দিয়ে আসেন মাত্র। শিক্ষার্থীদের উপস্থিত দেখাতে শিক্ষকরাই ছাত্র-ছাত্রীদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে দেন।
এটি নিছক কোনো বানানো গল্প নয়। বাস্তবিক এভাবেই চলছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত চর কাপাসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মা-বাপ ছাড়া সন্তানের মতোই অনাদর-অবহেলার শিকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে বিদ্যালয়টির অবস্থান হওয়ায় শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজর নেই। বলা যায়, বিদ্যালয়টির ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথাই নেই। এমনকি বিদ্যালয়ের এমন হালের কথা নাকি জানেনই না উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা!
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এমন গা-ছাড়া আচরণের সুযোগ নিয়ে চলেছেন শিক্ষকরা। দপ্তরি কাম প্রহরীও যেন অনেকটা ঠেকায় পড়ে স্কুলে আসেন। কেননা তার রাতে থাকার আবাস এই স্কুল ঘর। শিক্ষকদের এমন চরম দায়িত্বহীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে বিদ্যালয়টির কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
সোমবার (৯ অক্টোবর) স্কুলটির ব্যাপারে অভিযোগ শুনে সত্যান্বেষণে যায় নিউজবাংলা। গিয়ে অভিযোগের সত্যতা তো মেলেই, সঙ্গে দেখা যায় আরও কিছু অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা।
বিদ্যালয়ে অনুমিতভাবেই কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী ছিলেন না। জাতীয় পতাকা টানানোর ফুরসতও হয়নি দপ্তরির। নির্জনের কোনো হানা বাড়ির মতো পড়ে আছে বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ভাঙা ঘরের আসবাবপত্র, কাশিয়ার (এক ধরনের বড় ঘাস) মূল ও অন্যান্য আবর্জনায় ভর্তি।
বেলা ১১টার দিকে হেলতে-দুলতে স্কুলে আসেন দপ্তরি। এসে একটি কক্ষ খুলে জাতীয় পতাকা টানান তিনি।
দপ্তরির পিছু পিছু বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় এ প্রতিবেদকের। কোথায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী? বেঞ্চের ওপর রাজ্যের ধূলা, একটি কক্ষের বেঞ্চের ওপর তো স্তূপ করে রাখা হয়েছে ভাঙা টিন, কাঠ আর বাঁশের টুকরো।
একমাত্র অফিস কক্ষটির অবস্থাও তথৈবচ। চেয়ার-টেবিল এলোমেলো। বেশ কিছুদিন যে সেখানে মানুষের পা পড়েনি, মেঝে ও চেয়ার-টেবিলের ওপর জমা ধূলার আস্তর দেখে তা বেশ বোঝা যায়।
আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ বিদ্যালয়টি পরিদর্শনে আসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। ওইদিন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি, সামগ্রিক কার্যক্রমে অবহেলা ও বিভিন্ন অসঙ্গিত ধরা পড়ে মন্ত্রীর চোখে। ফলে ‘সাময়িক’ অব্যাহতি দেয়া হয় প্রধান শিক্ষক হুজ্জাজুল ইসলামকে। তবে দু’বছর পেরুলেও প্রধান শিক্ষকের সেই ‘সাময়িক অব্যাহতি’ আজও চলছে।
বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী শিক্ষক নুরুল হুদা সরকার।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি অক্টোবরের ৯ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা। হাজিরা খাতায় এই সময়ের কোনো স্বাক্ষর তার ছিল না। একমাত্র সহকারী শিক্ষক আবু তাহের সরকার অবশ্য অক্টোবরের প্রথম দুদিন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন। তবে পরের দিনগুলোতে আর সেটা করে ওঠা হয়নি তার।
শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা খুলে দেখা যায়, বিদ্যালয়টিতে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫ জন। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ৬, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১২, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০, চতুর্থ শ্রেণিতে ১০ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৭ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। ৯ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সবাই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।
বিদ্যালয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে এই প্রতিবেদকের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন স্থানীয়রা। তারা জানান, এই বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকই নিয়মিত স্কুলে আসেন না। তারা হঠাৎ দুই-একদিন স্কুলে আসেন। এ কারণে শিক্ষার্থীরাও আর স্কুলে যায় না। শিক্ষকরা যদি হঠাৎ আসেন, তাহলে তারা জানবে কীভাবে? ফলে তাদের পড়ালেখা শিকেয় উঠেছে, ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থী। অথচ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে বড় নৌকা।
বিদ্যালয়ের এমন দুরবস্থার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা। তারা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি পরিচালনায় শিক্ষকদের অনুপস্থিতি, চরম অবহেলা, অনিয়ম ও নানা অসঙ্গিতর অভিযোগে মন্ত্রী যেখানে প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিলেন, তারপরও কারও টনক নড়েনি। আগের মতোই অনিয়ম-অবহেলা করে যাচ্ছেন বাকি দুই শিক্ষক।’
দেশের অন্য সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো এই বিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন তারা। ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের পথ সুগম করতে তারা আবারও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসার অভিযোগটি অকপটে স্বীকার করেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্যারেরা মূলত সপ্তাহে দুই-একদিন বিদ্যালয়ে আসেন। স্কুলটি নদীবেষ্টিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও এখানে আসতে ভয় পায়।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয় বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা সরকারের সঙ্গে। অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই প্রসঙ্গ ঘোরানোর চেষ্টা করেন তিনি। বলেন, ‘আমার চোখে অপারেশন হয়েছে দুদিন হলো। চিকিৎসক আমাকে নড়াচড়া করতে নিষেধ করেছেন।’
তার দাবি, তিনি মৌখিকভাবে’দুই দিনের ছুটিতে আছেন। সহকারী শিক্ষক আবু তাহেরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ‘বলতে পারছি না’ বলে ফোনের লাইন কেটে দেন তিনি।
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আসলে আমাকে কেউ জানায়নি।
‘সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে বিষয়টি খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করছি। সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তবে বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য