মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউিনিভার্সিটিতে ‘লিটারেচার ফেস্ট ও গেট-টুগেদার-২০২৩’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলশান ক্যাম্পাসের সেমিনার হলে রোববার ইংলিশ ক্লাবের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। আয়োজনের মধ্যে ছিল কুইজ, কবিতা আবৃত্তি ও গান গাওয়ার প্রতিযোগিতা, মঞ্চ নাটক পরিবেশন ও পুরস্কার বিতরণী।
ইংরেজি বিভাগের প্রধান আহমেদ মাহবুব-উল-আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের ডিন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেজিস্ট্রার ড. মো. মোয়াজ্জম হোসেন।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিন ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান ড. নারগিস সুলতানা চৌধুরী, সিএসই বিভাগের প্রধান শারমিনা জামান, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারজানা জামান, তাসমিয়া মোসলেহ উদ্দীন, সিজিইডির কোঅর্ডিনেটর ড. মোহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ইংলিশ ক্লাবের (গুলশান) মডারেটর মোহাম্মদ আফসার কাইয়ুম, মাহবুবা সুলতানা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. মুহাম্মদ ফায়জুল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ইংরেজি বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকালে সাহিত্য সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন- কবিতা আবৃত্তি, কুইজ ও গান গাওয়া অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। মধ্যাহ্ন বিরতির পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সবশেষে বিকেলে ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’-এর ওপর ইংরেজি বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে মঞ্চ নাটক অনুষ্ঠিত হয়।
২০২০ সালের শেষ প্রান্তিক। দেশজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির থাবা। বেসরকারি অন্য অনেক খাতের মতো সংবাদমাধ্যমেও চরম অনিশ্চয়তা আর উদ্বেগ। ঠিক এমন সময়ে ‘খবরের সব দিক, সব দিকের খবর’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে আবির্ভাব হয় নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
ওই বছরের পয়লা অক্টোবর যাত্রা শুরু করা সংবাদমাধ্যমটি আজ পা রাখল চতুর্থ বছরে। দিবসের হিসাবে হাজার দিনের মাইলফলক অতিক্রম করেছে নিউজবাংলা। মহাকালের পরিক্রমায় একে অতি দীর্ঘকাল বলা না গেলেও সংবাদমাধ্যমের বাস্তবতায় নিজেকে জানান দেয়ার জন্য যথেষ্ট সময় হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সেই সময়ে অসীম চ্যালেঞ্জের মধ্যে অমিত সম্ভাবনার পথে চলার চেষ্টা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
স্লোগানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা শুরু থেকেই কোনো খবরের আদ্যোপান্ত জানানোর চেষ্টা করেছি পাঠকদের। সংবাদের পূর্ণাঙ্গ একটি গল্প বলেই আমরা দায়িত্ব শেষ করিনি; সেই সংবাদে নতুন মাত্রা যোগ হলে তা পাঠককে জানানোর তাগিদ অনুভব করেছি। আমাদের প্রতি আস্থা রেখে সেই প্রচেষ্টার প্রতিদান দিয়েছেন পাঠকরা।
সংবাদ পরিবেশনে পেশাদারত্ব ছিল সবসময়ই আমাদের প্রাধান্যের শীর্ষে, যে কারণে আগে দেয়ার উত্তেজনা সামলে দেরিতে হলেও সঠিক সংবাদটি পাঠকদের জানাতে চেয়েছি। এ মনোভাব পাঠকের কাছে অনেক সংবাদমাধ্যমের তুলনায় আমাদের ভিন্ন ভাবমূর্তি তৈরি করেছে।
যেকোনো সংবাদের গল্পের খণ্ডিত চিত্রের পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ দিক তুলে ধরার চেষ্টা ছিল বরাবরই, যা পাঠক মহলে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা ও পেশাদারত্বকে তুলে ধরেছে।
পেশাদারত্বের অংশ হিসেবে আমরা প্রথম দিন থেকেই রোজকার জনদুর্ভোগ, সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তিগুলোকে তুলে ধরেছি ধারাবাহিকভাবে। আমাদের এসব সংবাদে টনক নড়েছে দায়িত্বশীল মহলের, তৈরি হয়েছে ভোগান্তি কমার পথ।
সংকট ও সম্ভাবনা নিয়েই আমাদের জগৎ। বিষয়টি মাথায় রেখে দেশের আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সম্ভাবনাগুলো আমরা তুলে ধরেছি। আমাদের রিপোর্টারদের বিরামহীন প্রচেষ্টায় অনুপ্রেরণা জোগানো অদম্য মানুষদের কথা উঠে এসেছে একের পর এক।
প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিনিয়তই বিপুলসংখ্যক মানুষের ভোগান্তির কারণ হচ্ছে। আমরা সেসব অনিয়ম, দুর্নীতি তুলে ধরেই দায়িত্ব শেষ মনে করিনি; সেসব অনিয়মের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা চালিয়েছি।
কৃষিপ্রধান দেশে কৃষিকেন্দ্রিক উদ্যোগগুলোকে তুলে ধরাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। শুরু থেকেই চাষি ও কৃষি উদ্যোক্তাদের সংকট ও সম্ভাবনাগুলোকে ধারাবাহিকভাবে আমরা সামনে এনেছি। স্থানীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ নিয়মিতই উঠে এসেছে আমাদের সংবাদ গল্পগুলোতে।
সুস্থ মানুষ ছাড়া উন্নত জাতি গড়া যায় না বলে আমরা বিশ্বাস করেছি। সুস্থতার জন্য প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধকে জরুরি মনে করা অনেক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে একমত হয়ে সেই দিকটিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করেছি। বিভিন্ন রোগের কারণ, লক্ষণ নিয়ে আমরা একের পর এক কনটেন্ট পরিবেশ করেছি। পাশাপাশি প্রতিকার নিয়েও কথা বলেছি।
স্বাধীনতার পর দেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেও সমাজে উঁচু-নিচুর ভেদাভেদ এখনও বাস্তবতা। আমরা তা ভাঙার চেষ্টা করেছি। আমরা কথা বলেছি জেন্ডার নিয়ে, সচেতন করার চেষ্টা করেছি পাঠকদের। আমরা অনেকের কাছে ‘ট্যাবু’ হয়ে থাকা নারী স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক ও যৌনতা নিয়ে কথা বলেছি। এ ধরনের কনটেন্ট পাঠক মহলে আমাদের ভিন্নতা তৈরি করেছে।
একটি দেশের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি তার অর্থনীতি। আমরা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে পাঠকদের নিয়মিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আমরা উন্নয়নের মহাযজ্ঞগুলো যেমন তুলে ধরেছি, তেমনি বাধাগুলোও সামনে এনেছি।
সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব প্রচলিত ভুলগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জয়জয়কারের যুগে অসত্য তথ্যকে সত্য হিসেবে চালিয়ে দেয়া নতুন বিষয় নয়। আমরা সেসব অসত্যকে চ্যালেঞ্জ করে সত্য তথ্যটা পাঠকদের দেয়ার চেষ্টা করেছি।
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই আমাদের সংবাদে স্থান পেয়েছে। আমরা শিশুদের প্রতিভা বিকাশে সহায়ক শক্তি হওয়ার চেষ্টা করেছি। তরুণদের কর্মসংস্থানসহ অন্য সমস্যাগুলো নিরসনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের তাগিদ অনুভব করেছি। বৃদ্ধদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়-অনিয়ম নিয়ে কথা বলাকে করণীয় মনে করেছি।
আমাদের চলার এ পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ভাইরাসজনিত মহামারির রেশ না কাটতেই ইউক্রেন যুদ্ধে ভাঙতে থাকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক বিন্যাস। আমরা সেই কঠিন সময়ে ঝড়ের মুখে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছি। প্রতিটি সংকটকে সম্ভাবনায় রূপান্তরের চেষ্টা ছিল আমাদের। চেষ্টায় কতটা সফল হয়েছি, সেই বিবেচনার ভার পাঠকের হাতে ছেড়ে দিয়েছি।
শুরুর পর থেকে আমরা ধীরে ধীরে এক হাজার দিনের মাইলফলক পেরিয়েছি। এ যাত্রায় আমরা টিকে ছিলাম পাঠকের আস্থায়। আমরা টিকে আছি তাদের ভালোবাসায়। আমরা বহু দূর যেতে চাই পাঠকের ভরসায়।
লেখক: ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, নিউজবাংলা ও দৈনিক বাংলা
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে এই দেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ, সব ধর্মের মানুষের এখানে সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাসের অধিকার আছে, এই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধরে রাখতে হবে- এমন মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
শুক্রবার সকালে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় আত্রাই সার্বজনীন রাধা-গোবিন্দ মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সব ধর্মের মূল বাণী মানুষের কল্যাণ উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আদিকাল থেকেই এ দেশে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সব সময় বলেন ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। তাই দেশের জন্য সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেদের সংখ্যালঘু না ভেবে বাঙালি ভাবতে হবে। দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি। ভয় পেলে চলবে না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করে সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে হবে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন করেন সনাতন ধর্মের মানুষ নৌকায় ভোট দেয় কেন? আমি বলি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক-বাহিনী ও তাদের দোসরদের অত্যাচারে সনাতন ধর্মের মানুষ হয় যুদ্ধে গিয়েছিল বা জীবন বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। স্বাধীনতা লাভের পরে আওয়ামী লীগ সরকারই আবার তাদের দেশে ফিরিয়ে এনেছিল। সনাতন ধর্মের মানুষ বেইমান না তাই নৌকায় ভোট দেন।’
আলোচনা সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী মন্দির প্রাঙ্গণে চারাগাছ রোপণ করেন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে ঝিনাইদহে জন্ম নেয়া ২০ শিশুর পরিবারকে দেয়া হয়েছে উপহার।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে এ উপহার দেয়া হয়।
রাতে শহরের শামীমা ক্লিনিক, হাসান ক্লিনিক, আল-আমিন ক্লিনিকসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুর স্বজনদের কাছে এ উপহার তুলে দেয়া হয়।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহরিয়ার করিম রাসেল, সহসভাপতি কাজী ফিরোজ সালাহউদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিপন, অমিয় মজুমদার অপু, দপ্তর সম্পাদক সোহেল রানা, প্রচার সম্পাদক ইমরান হোসেন, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা (সিটি), পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ অধিকারী মানিক, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম মাজেদসহ অনেকে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহরিয়ার করিম রাসেল বলেন, ‘২৮ সেপ্টেম্বর আমাদের আস্থার ঠিকানা, বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। এ উপলক্ষে ঝিনাইদহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর নির্দেশে ২৮ তারিখে ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জন্য কিছু উপহার পৌঁছে দিচ্ছি। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া কামনা করছি।’
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের কুমার নদে শুক্রবার বিকেলে এ আয়োজন করা হয়।
ওই ইউনিয়নের হোগলাকান্দি ও চকবোনদোলা গ্রামবাসীর উদ্যোগে মহেশপুর সেতু থেকে চকবোনদোল সেতু পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালগঞ্জ, নড়াইল, ফরিদপুরের নগরকান্দা, বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা থেকে আগত এ বাইচে অংশ নেয় ২৫টি নৌকা। প্রতিযোগিতা চলে বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
আবহমান গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নিজস্বতা ধরে রাখতে হাজার প্রাণের আনন্দ উচ্ছ্বলতায় মেতেছিলেন ওইসব এলাকার লোকজন। নৌকায় ও ট্রলারে করে নৌকাবাইচ দেখতে নারীদেরও উপস্থিতি ছিল।
হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজে সন্ধ্যায় এ নৌকাবাইচ শেষ হয়। বিভিন্ন বয়সের মানুষ নদের দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে নৌকাবাইচ উপভোগ করে।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে হোগলাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে লোকজ মেলা বসে। মেলায় শতাধিক দোকান বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে। কিছু দোকানে বাঁশ-বেত, মৃৎ শিল্প, তৈজসপত্র খেলনা বিক্রি করা হয়।
ওই সময় দুই পাড় থেকে হাত নেড়ে অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ দিতে দেখা যায় দর্শনার্থীদের।
প্রতিযোগিতায় যৌথভাবে প্রথম স্থান অর্জন করে স্থানীয় হোগলাকান্দি গ্রামের ওসমান শেখ ও বরকত মোল্লার নৌকা। চকবোনদোলা গ্রামের উকিল মিনার নৌকা দ্বিতীয় ও রাব্বির নৌকা তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
পরে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহামন লুথু মিয়া।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘১৯৭৫-এর পরে বিএনপি অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করেছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে মাদক, জঙ্গিবাদসহ যুব সমাজের যে অধঃপতন, তা এ কারণেই হয়েছে।
‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশের সংস্কৃতিকে আবার পুনরুজ্জীবিত করেছেন। এখন দেশের প্রতিটি জেলার গ্রামগঞ্জে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আগামীতেও এমন খেলা বা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।’
নৌকাবাইচ আয়োজক কমিটির প্রধান গিয়াস উদ্দিন গালিব বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা নৌকাবাইচের আয়োজন করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরও আয়োজন করেছি। খুব আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো আজকের এ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। আগামীতেও এ বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।’
আয়োজন দেখতে আসা রাকিব নামের এক যুবক বলেন, ‘নৌকাবাইচ দেখতে পাশের গ্রাম থেকে এসেছি। খুবই ভালো লেগেছে। আগামীতেও এমন বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে, এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।’
আয়োজক কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক সালাহউদ্দিন রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের যুবসমাজকে মাদক ও জঙ্গিবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে এ ধরনের সংস্কৃতির আয়োজন করতে হবে। আগামীতে এমন বাইচের আয়োজন করা হবে।’
আরও পড়ুন:রাস্তার দুই পাশে সারি সারি অসংখ্য তালগাছ। জায়গার নাম ঘুঘুডাঙ্গা তাল সড়ক। প্রায় তিন কিলোমিটার এ রাস্তাজুড়ে তালগাছের নিছে বসেছে তালের পিঠা মেলা।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার হাজীনগর ইউনিয়নে শুক্রবার বিকেল থেকে তিন দিনব্যপী এ মেলা শুরু হয়। প্রথম দিনেই সেখানে সমাগম ঘটেছে হাজারো মানুষের।
শীত আসার আগমুহূর্তে প্রতি বছরই এ সময় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের আয়োজনে এখানে মেলার আয়োজন করা হয়। দর্শনার্থীরা সড়কটির সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি স্বাদ নিতে পারেন বাহারি সব তালের পিঠারও।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মেলার উদ্বোধন করেন। ওই সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ মোরশেদ।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, এ বছর তালের গোলাপ পিঠা, ঝিনুক পিঠা, মাংস পিঠা, পাটিসাপটা, তালের জিলাপি, তালের বড়া, ক্ষীর, তালের কফি, তালের আমতা, তালের নাড়ুসহ অন্তত ২৫ ধরনের পিঠা পাওয়া যাচ্ছে এ মেলায়।
অন্যদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।
সাপাহার উপজেলা থেকে আসা দোকানি ইসফাত জেরিন মিনা বলেন, ‘আমার স্টলে ১২ থেকে ১৫ রকমের পিঠা আছে। বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
‘অনেক মানুষের সমাগমও ঘটেছে পিঠা মেলায়। কেউ পিঠা খাচ্ছে, কেউ বা বাড়ির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’
নিয়ামপুরের স্থানীয় দোকানি সেফালী বেগম বলেন, ‘আমার স্টলে আট থেকে ১০ রকমের তালের পিঠা আছে। কেউ স্টল ঘুরে দেখছেন আবার কেউ কিনে খাচ্ছেন পছন্দের পিঠাগুলো। তিন দিনব্যাপী এই আয়োজন চলবে। আশা করছি অনেক মানুষ আসবে পিঠা খেতে।’
জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দর্শনার্থীরাও। এমন মেলায় আয়োজন করায় তারাও খুশি।
নওগাঁ শহরের উকিলপাড়া থেকে মেলায় আসা আবদুল মান্নান জানান, অনেকদিন ঘুরাফেরা করা হয় না তার। তাই পিঠা মেলায় এসেছেন।
আরেক দর্শনার্থী লুবনা আক্তার বলেন, ‘আমিসহ আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে বদলগাছী থেকে এসেছি। আগে থেকেই জানতাম পিঠা উৎসব হবে। অনেক রকমের পিঠা।
‘বেশ কয়েকটি পিঠা খেয়েছি। দারুণ লেগেছে। সব মিলিয়ে আয়োজনটি অনেক সুন্দর।’
১৯৮৬ সালের দিকে স্থানীয় হাজিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন তালগাছগুলো রোপণ করেছিলেন বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তার উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয়দের বজ্রপাত থেকে রক্ষার পাশাপাশি শোভা বাড়ানো।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘কালের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এখন অনেকেই পিঠা বাজার থেকে কিনে এনে খায়। এতে কোনো আনন্দ থাকে না।
‘ব্যস্তময় জীবনে এখন প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে পিঠা খাওয়ার উৎসব। প্রতি বছর বর্ণিল আয়োজনে এ সময়ে মেলা বসানো হয়। মূলত নতুন প্রজন্মের কাছে বিভিন্ন ধরনের গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী তালের পিঠা পরিচিত করে দেয়ার জন্যই এমন আয়োজন।’
আরও পড়ুন:কবি নির্মলেন্দু গুণের সেই লাইনগুলো মনে আছে? দু এক লাইন কবিতা পড়েছেন, এমন কারোও মনে থাকার কথা অবশ্য। ‘আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের দরোজা খুলে দিক। কেউ আমাকে কিছু খেতে বলুক। কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করুক: তোমার চোখ এত লাল কেন?’
ভালোবাসাবাসির ব্যাপার তো বটেই ঘর সামলে রাখার দায়িত্বে থাকা এক মহিয়সী নারী হলেন স্ত্রী। কখনো কখনো আবার ঘর-বাইরে দুই-ই সামলাতে হয় তাকে। এত দায়িত্ব, এতকিছু করছেন যিনি, এ জগত সংসারে তাকে প্রতিদিনই প্রশংসা করা উচিত।
তবু একটা দিন নির্ধারিত হয়েছে ‘বিশেষ’। সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় রোববার এই বিশেষ দিন। সারা বিশ্বে আজকের এদিন উদযাপন হয় ‘স্ত্রীর প্রশংসা করা দিবস’। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৬ সালে প্রথম দিবসটি উদযাপিত হয়। এখন অনেক দেশে উদযাপন করা হয় এ দিবস।
কীভাবে এসেছে এ দিবস, এ নিয়ে বিস্তারিত না জানা গেলেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যানুযায়ী, একজন স্ত্রী তার স্বামীর জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে স্ত্রীরা তাদের জীবনকে আরও ভালো করে তোলেন তা বোঝানোর জন্য এই দিবস উদযাপন করা হয়।
ডেইজ অফ দ্য ইয়ার বলছে, কত বছর বিয়ে করেছেন, কতদিনের সংসার-এসব কোনো বিষয় না। স্ত্রী যে আপনার জন্য কিছু করছেন, এর প্রশংসা করা দরকার। কেউ কেউ হয়তো প্রশংসা এমনিতেই করেন, তবে যারা এতে অভ্যস্ত নন তারা আজকের দিনটি বেছে নিতে পারেন।
প্রশংসার পাশাপাশি এদিন স্ত্রীকে বাসার কাজ থেকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারেন। ফুল-চকলেট দিতে পারেন তাকে। খাবার খেতে তাকে নিয়ে যেতে পারেন কোনো ভালো রেস্টুরেন্টে। বইও উপহার দিতে পারেন স্ত্রী। সবমিলিয়ে স্ত্রীর প্রশংসা করা দিবসের দিনে তাকে একটু হলেও বোঝান তিনি আপনার জীবনের কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
যার সঙ্গে ‘পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি’ তার জন্য রাখুন একটি দিন। ‘নিয়তি আমাদের যা দান করে তার মধ্যে সবচেয়ে আশ্চর্য দান হলো স্ত্রী’- এ কথা মাথায় রেখে আজ উদযাপান করুন ‘স্ত্রীর প্রশংসা করা দিবস’।
আরও পড়ুন:কেউ কফি ভালোবাসেন, কেউ বা আইসক্রিম। কেউ কেউ আছেন এ দুটোই ভালোবাসেন। একই সঙ্গে কফি ও আইসক্রিম যারা ভালোবাসেন, আজকের দিনটা তাদের জন্য। অন্য দিন তো বটেই, ইচ্ছে হলে আপনি সারাটা দিনই খেতে পারেন ‘কফি আইসক্রিম’। কারণ বিশ্ব ‘কফি আইসক্রিম’ দিবস উদযাপন হচ্ছে ৬ সেপ্টেম্বর।
বহু বছর ধরে এ পৃথিবীতে ভোজন রসিকদের খাবার তালিকায় রয়ে গেছে কফি ও আইসক্রিম। এভাবে দেখলেই অবশ্য খুব সহজে অনুমান করা যায়, কফির সঙ্গে আইসক্রিম মেশালে তা কত সুস্বাদু হতে পারে।
কীভাবে এলো আজকের এই দিবস, এর পেছনের ইতিহাসই বা কী- এ নিয়ে তথ্য দিয়েছে ডেইস অফ দ্য ইয়ার।
বিশ্বে কফির ইতিহাস দীর্ষ সময়ের। মধ্যপ্রাচ্যের সংস্কৃতি অংশ কফি পান। সপ্তম থেকে নবম শতাব্দির মধ্যে কফি পান এ অঞ্চলে সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে। এরপর অন্য দেশগুলোতেও মানুষ এর সঙ্গে পরিচিত হতে থাকে।
তবে ১৬০০ শতকের আগে পর্যন্ত ইউরোপের মানুষ কফির সঙ্গে পরিচিত ছিল না। ১৭ শতাব্দির মধ্যভাগে এসে ব্যাপকভাবে ইউরোপে কফির পরিচিত বাড়ে। এরপর তা তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
অটোমানদের সঙ্গ ফরাসি সম্পর্কের মাধ্যমে বিশ্বে কফি নিয়ে আসে সমাজের উঁচু শ্রেণি বিশেষ করে রাজপরিবারগুলো। এরপর কফির বিস্তার ঘটেছে সব জায়গাতে।
আইসক্রিমের মতো খাবারের উৎসের প্রথম সন্ধান মেলে সম্ভবত খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে। একজন রোমান নেতা পাহাড়ে কর্মী পাঠিয়েছিলেন বরফখণ্ড আনার জন্য। মধু, বাদাম এবং ফল যুক্ত করে তখন খাওয়া হতো আইসক্রিমের মতো খাদ্যপণ্য।
তবে আধুনিক আইসক্রিমের শুরুটা হয় ১৮ ও ১৯ শতকে। ফ্রুট আইসক্রিম তখন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যজুড়ে জনপ্রিয় হতে থাকে।
১৮৬৯ সালের দিকে জনপ্রিয় হতে থাকে ‘কফি আইসক্রিম’। কফির সঙ্গে আইসক্রিম মিশিয়ে খাওয়া শুরু করে মানুষ। এর জন্য আসতে থাকে নানা রেসিপিও।
এই খাবারটি বিশ্বজুড়েরই এখন বেশ জনপ্রিয়। এরই ধারবাহিকতায় এক পর্যায়ে শুরু হয় ‘কফি আইসক্রিম’ দিবস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য