অ্যাসোসিয়েশন অফ টিচার্স অফ লিটারেচার ইন ইংলিশ বাংলাদেশ (অ্যাটলেব) একটি সাহিত্য সংগঠন। স্বেচ্ছাসেবী, অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংগঠনটি বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে নতুন। এর সদস্যরা শিক্ষক হিসেবে বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে তৃতীয় স্তরে ইংরেজিতে সাহিত্য পড়াচ্ছেন।
করোনা মহামারির সময়ে ২০২১ সালের জুলাই মাসে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অ্যাটলেব গঠিত হয়। আর ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ‘টিচিং, থিংকিং লিটারেচার্স’ প্রতিপাদ্য ও ইংরেজিতে সাহিত্যের তৃতীয় স্তরের শিক্ষকদের মধ্যে স্থায়ী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।
অ্যাটলেব-এর লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে- ইংরেজি সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ এবং উৎসাহ সৃষ্টি করা এবং বাংলাদেশে ইংরেজি সাহিত্য অধ্যয়নকে অনুপ্রাণিত করা; ইংরেজিতে বাংলাদেশি লেখা এবং বাংলাদেশের কম প্রতিনিধিত্বশীল সম্প্রদায়ের সাহিত্যের ওপর গবেষণার প্রচার করা; সাহিত্যকর্মের ইংরেজি থেকে এবং অনুবাদে উৎসাহিত করা এবং এই দক্ষতাগুলো বিকাশের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে সহায়তা করা।
লক্ষ্য এবং দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য অ্যাটলেব সাহিত্য সমাবেশ, সম্মেলন (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক), প্রশিক্ষণ/ওয়ার্কশপ, অনুবাদ, জার্নাল প্রকাশনা এবং সহযোগিতামূলক গবেষণার ব্যবস্থা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পেশাদার নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অ্যাটলেব প্রায় দুই বছর ধরে কাজ করছে। আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য রয়েছেন।
ওয়ার্কিং কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ফায়েজা হাসানাত (ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা), নেভিন ফরিদা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), জেরিন আলম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), মো. রেজাউল হক (সেন্ট জন ইউনিভার্সিটি), মাসউদ আক্তার (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), মো. সাবিহা হক (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়), ফারহানাজ রব্বানী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অসীম দত্ত (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
আরও রয়েছেন- আবদুল্লাহ আল মামুন (যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), এম সাখাওয়াত হোসেন (নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়), সানজিদা হোসেন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), সাদিয়া আফরিন (ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি), মাহাবুবা রহমান (শাহজালাল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি), মোহাম্মদ নুরুল হক (ইডেন মহিলা কলেজ), মো. নাদিমুল হক (সরকারি তিতুমীর কলেজ), খাদিজা আক্তার (বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়), মো. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আখন্দ (ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি) ও কাজী ফখেরা নওশীন (কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়)।
চারজন সিনিয়র শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি উপদেষ্টা বোর্ড সংগঠনের সামগ্রিক কার্যকারিতার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান এবং তত্ত্বাবধান করেন। তারা হলেন- অধ্যাপক নিয়াজ জামান, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক কায়সার হামিদুল হক, অধ্যাপক ফকরুল আলম, অধ্যাপক কাজী মোস্তাইন বিল্লাহ, অধ্যাপক মোহিত উল আলম, অধ্যাপক শফি আহমেদ ও অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম। দেশ-বিদেশের তৃতীয় পর্যায়ের শতাধিক শিক্ষক এর সদস্য।
আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই অ্যাটলেব ‘টিচিং ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড ইন্টারডিসিপ্লিনারিটি’ (ইংরেজি সাহিত্য এবং আন্তঃবিষয়ক শিক্ষাদান) শীর্ষক দুদিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে। সম্মেলনটি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
সম্মেলনের মূল বক্তারা হলেন- প্রফেসর ক্লেয়ার চেম্বার্স, ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্ক, যুক্তরাজ্য ও প্রফেসর রাজীব এস পাটকে, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুর।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। ২০২২ সালে চলচ্চিত্র শিল্পের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য বিবেচনায় শিল্পী ও কলাকুশলীদের সৃজনশীলতা এবং অভিনয়শৈলীর স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩২টি ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পুরস্কার পেলেন যারা
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’।
প্রধান চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘হাওয়া’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন।
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন যৌথভাবে জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু। ‘বিউটি সার্কাস’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জয়া এবং ‘শিমু’ চলচ্চিত্রের জন্য রিকিতা নন্দিনী শিমু এই পুরস্কার পান।
এছাড়া আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেতা খসরু ও অভিনেত্রী রোজিনা। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হয়েছে যৌথভাবে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘ঘরে ফেরা’। শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন। পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন মোহাম্মাদ নাসির উদ্দিন খান (পরাণ চলচ্চিত্র)।
পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হয়েছেন আফসানা মিমি (পাপ-পূণ্য)। শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রে পুরস্কার পেয়েছেন সুভাশিষ ভৌমিক (দেশান্তর)। শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা সাইফুল ইমাম। শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী যৌথভাবে হয়েছে বৃষ্টি আক্তার ও মুনতাহা এমিলিয়া। শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ফরজিনা আক্তার। শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক মাহমুদুল ইসলাশ খান (রিপন খান)।
শ্রেষ্ঠ গায়ক হয়েছেন যৌথভাবে বাপ্পা মুজুমদার ও চন্দন সিনহা। শ্রেষ্ঠ গায়িকা আতিয়া আক্তার আনিসা। শ্রেষ্ঠ গীতিকার রবিউল ইসলাম (জীবন)। শ্রেষ্ঠ সুরকার শওকত আলী ইমন।
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হয়েছেন যৌথভাবে ফরিদুর রেজা সাগর ও খোরশেদ আলম খসরু। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার মোহাম্মাদ আব্দুল কাইউম।
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা এস এ হক অলিক। শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সুজন মাহমুদ। শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক হিমাদ্রি বড়ুয়া। শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক আসাদুজ্জামান মজনু। শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক রিপন নাথ। শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা তানসিনা শাওন। শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান মোহাম্মাদ খোকন মোল্লা।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর সরকারের নয়, বরং বিএনপিরই পতন যাত্রা শুরু হবে এবং সহসাই তাদেরকে নির্বাচন-পরবর্তী আন্দোলনের ঘোষণা দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি) সদস্যদের সন্তানদের মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএসইসি সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়ের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার এবং পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি কিছুদিন আগে বলেছিল যে অক্টোবর মাসে ফাইনাল খেলা। তারপর বলল, পূজার পর। আবার বিএনপি মহাসচিব গতকাল বলেছেন, ২৮ তারিখ তারা সরকারের পতনের দাবিতে সমাবেশ করবেন। আর আজ নাকি তার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
‘মানুষ এখন হাস্যরস করে বলে, এটা এবারের ২৮ তারিখ নাকি আগামী বছরের নাকি তার পরের বছরের। কারণ গত প্রায় ১৫ বছর ধরে আমরা এই আন্দোলনের হুমকির মধ্যে আছি। বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপির কর্মীরা ছাড়া জনগণের সেখানে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
রাজনীতির শান্তিপূর্ণ চর্চার উদাহরণ তুলে ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘গতকাল ঢাকা শহরে একই সময়ে দুটি বড় সমাবেশ হয়েছে, যার মাঝে দূরত্ব ছিলো মাত্র দুই কিলোমিটার। কিন্তু এ নিয়ে ঢাকা শহরে বিন্দুমাত্র গণ্ডগোল হয়নি। রাজনীতির চর্চাটা এরকমই হওয়া প্রয়োজন।’
ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গাজায় হাসপাতালে হামলায় শিশুসহ ৮শ’ মানুষ নিহত হয়েছে। তাদেরকে কবর দেয়ার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। পুরো পৃথিবী প্রতিবাদ করেছে। ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী গতকাল এবং এর আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রথম থেকেই এই হত্যাযজ্ঞ-যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
‘শুধু বিএনপি এ প্রসঙ্গে একটি কথাও বলেনি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক, আশ্চর্যজনক। প্রতিবাদ না জানিয়ে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতা, এই শিশুহত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে, ইসরায়েলের পক্ষ অবলম্বন করেছে। এ ব্যাপারে কারা কী করছে তা নিয়ে জনগণকে জানানোর নৈতিক দায়িত্ব সাংবাদিকদের বলে আমি মনে করি।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশে জামায়াত স্লোগান দেয়, ‘আল্লাহর আইন চাই এবং সৎলোকের শাসন চাই। অথচ আজকে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতও চুপ। অর্থাৎ এরা আসলে ধর্মটাকে ব্যবহার করে মানুষের কোমল হৃদয়ে আঘাত হানার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার সোপান হিসেবে। এরা হচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ী।”
অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীদের হাতে মেধাবৃত্তি ও সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় বৃত্তিপ্রাপ্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জীবনটাকে সংগ্রাম হিসেবে নিতে হবে। জীবন সংগ্রামে তোমরা অন্যদের পথপ্রদর্শক হবে। তোমরা নিজেরা স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছবে এবং তোমাদের হাত ধরে দেশও স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবে।’
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গা পূজা। শনিবার শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেছে এই শারদীয় উৎসব। প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
এপার ও ওপার বাংলায় বড় বড় দুর্গা মন্দির ও এসব মন্দিরের মণ্ডপগুলোতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয় বিভিন্ন থিমে নানা আদলে। তবে এবারের দুর্গোৎসবে প্রতিমা তৈরিতে ব্যতিক্রমী চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) ভেতরের পূজা মন্দিরে। এখানে মণ্ডপে তৈরি করা হয়েছে রোবটিক প্রতিমা।
সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের আয়োজনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, লাভ ফর ন্যাচার’ স্লোগানকে সামনে রেখে পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা সাজানো হয়েছে।
রোববার এই পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা রংকরণের কাজ শেষ পর্যায়ে। চলছে সাজসজ্জার কাজ। এছাড়া মন্দির তৈরি ও এর সাজসজ্জায় আনা হয়েছে গ্রামীণ পরিবেশের আদল। পুরো পূজা মণ্ডপ পরিবেশবান্ধব করে তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
এদিকে মন্দির তৈরির শেষ দিকের কাজও শেষ করে আনার পথে। মন্দির সাজাতে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ ও শীতল পাটি। চলছে গেট ও লাইটিংয়ের কাজ।
এই মন্দিরের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে যাচ্ছে রোবটিক দুর্গা প্রতিমা। মহিষাসুর বধের সচল চিত্র তুলে ধরা হবে এই প্রতিমার মধ্য দিয়ে। ইতোমধ্যে মহালয়ার মধ্য দিয়ে মা দুর্গাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এই মন্দির কর্তৃপক্ষ।
রোবটিক দুর্গা থিমের চিন্তা ও তৈরির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ’র কাছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সংঘের একটি প্রযুক্তিগত টিম আছে। সে সঙ্গে আমার ছেলে বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফাইনাল ইয়ারে পড়ে। ওর একটা টিম আছে। সবাই মিলে এটা তৈরি করেছে। বরাবরই আমাদের এই টিম নতুন নতুন প্রযুক্তিগত দিক নিয়েই মন্দির সাজিয়ে এসেছে। পূজা শুরুর ৬ মাস আগে থেকেই তারা এটা নিয়ে কাজ করে থাকে।
রোবটিক থিমের দৃশ্যে কী থাকছে জানতে চাইলে এই কৃষিবিদ বলেন, ‘মহিষাসুর বধের দৃশ্যটাকে আমরা কিছু সচলরূপে তুলে ধরতে যাচ্ছি। পড়ে শেখার থেকে দেখে শিখলে হৃদয়ে ধারণ হয় বেশি। সেই চিন্তা থেকে চাক্ষুস দেখানোর জন্য এবার আমরা রোবটিক সিস্টেমের আয়োজন করেছি।’
সমীর চন্দ বলেন, “মা দুর্গা যখন ত্রিশূল দিয়ে মহিষাসুরকে বধ করবেন, তখন মহিষাসুর তীব্র যন্ত্রণায় মা দুর্গার কাছে দুই হাত তুলে ক্ষমা চাইবে। তখন মা দুর্গা তার মুখ দিয়ে বলবেন, ‘যুগে যুগে আসুরিক শক্তি দমনে আমার এই জগতে আগমন।’ সঙ্গে ব্যকগ্রাউন্ড মিউজিক থাকবে।
“সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যারা বিত্তবান তারা আগে দুর্গা পূজায় কোলকাতায় চলে যেতেন। এখন সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের আয়োজনে এই শারদীয় দুর্গা পূজার উৎসব কোলকাতার আদলে ভালো পূজা হয় বলে তারা আর আগের মতো কোলকাতায় যান না।”
এমনকি কোলকাতার সম্ভ্রান্ত হিন্দুরা এখন পূজা করতে ঢাকায় আসেন বলে দাবি করেন কৃষিবিদ সমীর চন্দ।
তিনি বলেন, সমাজে আসুরিক শক্তি প্রকট আকার ধারণ করলে যুগে যুগে মা দুর্গার এই ধরায় আবির্ভাব হয়েছে। এখন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আসুরিক শক্তির প্রভাব জনগণ অনুভব করছে। মা দুর্গা এই আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে বাংলাদেশের মানুষের বুকে শান্তি দিয়ে যাবেন এমনটা প্রত্যাশা।’
নিরাপত্তায় ১০০ সিসিটিভি ক্যামেরা ও আড়াইশ স্বেচ্ছাসেবক
ভক্ত ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সমীর চন্দ বলেন, সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘের এই শারদীয় দুর্গোৎসবে সরকারি নিরাপত্তা বেষ্টনীর পাশাপাশি আমরা আমাদের পূজা মণ্ডপকে ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রিত করব। এছাড়া আড়াই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ওয়াকিটকি নিয়ে নিরাপত্তা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার উৎসবে পরিণত করার জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে আশা করি। সর্বোপরি আমাদের পূজা মণ্ডপের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে।’
পূজার তারিখ ও দেশে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা
ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে ২০ অক্টোবর দুর্গা পূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে। আর শেষ হবে ২৪ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে।
পঞ্জিকামতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে পৃথিবীতে আসবেন। দেবী বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায়। যার ফল হচ্ছে, এ বছর ফসল ও শস্যহানি হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, এ বছর সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। গত বছর পূজা হয়েছিল ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে। অর্থাৎ এবার ২৪০টি মণ্ডপ বেড়েছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৪৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন থাকছে, যা গতবার ছিল ২৪২টি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম শহরে কর্মরত জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের নির্বাচিত সাংবাদিকদের নিয়ে ‘অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে ইউনেস্কো ঢাকা কার্যালয় ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দিনব্যাপী এই কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রশিক্ষক মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা (বদরুদ্দোজা বাবু)।
কর্মশালায় অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কলাকৌশল, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির জন্য গল্প বলার কৌশল, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ ও তা নিরসনের উপায় এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক জাতিসংঘের অ্যাকশন প্ল্যান ও দায়মুক্তি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
কর্মশালার উদ্বোধনে ড. সুজান ভাইজ বলেন, “গণমাধ্যম, সাংবাদিকতা, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের উন্নয়ন সূচক, সাংবাদিকতার উৎকর্ষ সাধনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ইউনেস্কোর কাজের বিশেষায়িত ক্ষেত্র। যখন থেকে ইউনেস্কো শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা শুরু করেছে তখন থেকেই তথ্যের অবাধ প্রবাহ ত্বরান্বিতকরণ নিয়ে কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে ‘ইউএন প্ল্যান অফ অ্যাকশন অন সেফটি অফ জার্নালিস্ট’ গ্রহণ করেছে এবং তার বাস্তবায়নে কাজ করছে।’’
সমাপনী আয়োজনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “টিআইবি সাংবাদিকদের উৎকর্ষ সাধনে যে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, তারই ধারাবাহিকতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এবারের কর্মশালায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা অন্তর্ভুক্ত করায় এর ব্যাপ্তি বেড়েছে।
‘পৃথিবীর সব দেশেই সাংবাদিকতা পেশায় ঝুঁকি আছে। এই ঝুঁকি বাংলাদেশেও আছে; একই ঝুঁকি সিভিল সোসাইটির ক্ষেত্রেও আছে। তারপরও সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।
‘আমি আশা করি, বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাধীন মতপ্রকাশের যে অধিকার আছে সেটি নিশ্চিত করা হবে। তাতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।’
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যের অভাব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করে কাজ করতে পারলে ঝুঁকি অনেক কমে আসবে।’
কর্মশালায় চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের ২৯জন তরুণ সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারী সবাইকে সনদ দেয়া হয়।
এ সময় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম ও সমন্বয়ক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সহ-সমন্বয়ক জাফর সাদিক এবং ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের কমিউনিকেশন অফিসার নূরে জান্নাত প্রমা উপস্থিত ছিলেন।
নারান্দিয়া টিআরকেএন উচ্চ বিদ্যালয়। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়ায় প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু ১৯৫৮ সালের প্রথম দিনটিতে। দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে স্কুল ঘর। পূর্বদিকে বাজার ও লোকালয়। মাঝে বিশাল খেলার মাঠ। উত্তর পাশ ঘেঁষে জনচলাচলের পথ।
স্কুল ভবন থেকে উত্তরে দৃষ্টি দিলেই সামনে বিস্তীর্ণ নিচু জলাভূমি আর সবুজে ঘেরা ফসলের মাঠ। তারই একপাশে ভীত-সন্ত্রস্ত শিশুর মতো হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিদ্যালয়টির অবস্থা আর আগের মতো নেই। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে চারপাশের অনেক কিছুই বদলে গেছে; বদলেছে বিদ্যালয়ের চেহারাও। কালের আবর্তে নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘অ্যান্ড কলেজ’।
মহাকালের অমোঘ ডাকে সাড়া দিয়ে হারিয়ে গেছে বিদ্যালয়টির পুরনো অনেক ঐতিহ্য। দিন বদলের পরিক্রমায় ভোল পাল্টে হয়েছে আধুনিক। উত্তরের দিগন্ত বিস্তৃত সেই মাঠ, জলাভূমি হারিয়েছে নতুন ভবনের আড়ালে। আগের সেইসব মানুষের অনেকে হারিয়ে গেছেন কালের গর্ভে।
জীবনের তাগিদে এলাকা ছেড়ে অনেকেই হয়েছেন বিস্মৃত। তাদেরই অনেকেই জীবন-জীবিকাকে কেন্দ্র করে হয়েছেন রাজধানী ঢাকা বাসিন্দা। পুনর্মিলনীর ব্যানারে সেই মানুষগুলো একসঙ্গে হয়ে আবেগে ভাসলেন।
হ্যাঁ, মুছে যাওয়া দিনগুলির পিছুডাক উপেক্ষা করতে না পেরে স্মৃতির কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ঢাকায় বসবাসরত নারান্দিয়া স্কুলের বিভিন্ন ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকেই ধানমণ্ডির স্টার কাবাব হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষ পরিণত হয়েছিল স্মৃতির অতল গহ্বর থেকে উঠে আসা বিশাল ব্যাপ্তির এক প্যানোরামায়।
পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠানের পুরোটা জুড়ে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে ২০০৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মিলনে এক লম্বা পরিসরের জীবন্ত হয়ে ওঠা চিত্র প্রদর্শনী যেন চলল কক্ষটিতে। সাদাকালো থেকে ক্রমেই বর্ণিল হয়ে ওঠা অপূর্ব এক চলচ্চিত্র চলল যেন। আর তা তৃতীয় নয়ন দিয়ে প্রাণভরে উপভোগ করলেন উপস্থিত সাবেকরা।
শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই সপরিবারে স্টার কাবাবে উপস্থিত হতে থাকেন বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থীরা। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টায় শুরু হয় অনুষ্ঠান।
প্রায় ৮০টি পরিবারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের শুরুটা হয় নারান্দিয়া টিআরকেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সে সময়ের শিক্ষকদের স্মরণের মধ্য দিয়ে। শ্রদ্ধেয় সেসব শিক্ষকের অধিকাংশই আজ আর বেঁচে নেই।
বরেণ্য সেই শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধান শিক্ষক জহুরুল হক, সহকারী প্রধান শিক্ষক সেকান্দার আলী ও মো. আব্দুল হামিদ, মোজাফ্ফর হোসেন তালুকদার, প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান, অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল খালেক, সহকারী শিক্ষক বিশ্বেশ্বর তালুকদার, মো. মকবুল হোসেন, মো. মফিজুর রহমান, মো. ফজলুল হক, রামেন্দ্রনাথ মজুমদার, মো. মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ ফজলুল হক, সহকারী শিক্ষক মনোয়ার হোসেন, মৌলভী মো. জামসেদ আলী, মুজিবর রহমান, মৌলভী ওয়ারেছ হোসেন আনসারী, প্রাণগোপাল বিএসসি।
তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন শেষে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। একইসঙ্গে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের মাঝে যারা আজও বেঁচে আছেন তাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
এর পর শিক্ষকদের নিয়ে জ্যেষ্ঠ সাবেক শিক্ষার্থীরা তাদের স্মৃতিচারণ করেন। সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে সবাই যোগ দেন হালকা চা-নাশতার টেবিলে।
মাঝে নামাজের বিরতি দিয়ে এরপর শুরু হয় পরিচিতি পর্ব। এই পর্বে এসে জানা যায়, নারান্দিয়া টিআরকেএন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা একেকজন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। বিচারক, সেনা কর্মকর্তা, বিসিএস ক্যাডার, চিকিৎসক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, ব্যাংকার, প্রকৌশলী- একে একে উঠে আসে একেকজনের বর্ণিল কর্মজীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা আর সাফল্যের চিত্র।
আলোচনা আর পরিচিতি পর্বে সাবেকরা বার বার হারিয়ে যাচ্ছিলেন তাদের প্রিয় বিদ্যালয়ের স্মৃতিঘেরা অতীতে। আবেগে কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসছিল কারও কারও। নিঃশব্দে কারও কারও চোখের ধার বেয়ে আসে নোনা জলের স্রোত। শিরা-উপশিরায় বিদ্যুৎগতিতে বয়ে যাচ্ছিল রুধির ধারা। আবেগের এই বিচ্ছুরণে পরিবারের এই প্রজন্মের নবীন সদস্যদের চোখে ছিল অবাক দৃষ্টি। অনুভূতি আর বিহ্বলতার মিশেলে সে এক দেখার মতো পরিবেশ।
অনুষ্ঠানের শেষে ছিল র্যাফেল ড্র। পুরস্কার হিসেবে তুলে দেয়া জিনিসটির দাম ছাপিয়ে একেকটি নগণ্য উপহারও পঞ্চাশ/ষাটোর্ধ্ব মানুষগুলোর আনন্দ-উচ্ছ্বাসে হয়ে উঠছিল অমূল্য। নিজেদের সন্তান, এমনকি নাতি-নাতনিদেরও অবাক করে দিয়ে তাদের সামনেই যেন চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর বয়স কমে একেকটি শিশু-কিশোরে পরিণত হচ্ছিলেন তারা।
জীবনের রঙ্গমঞ্চে কর্মব্যস্ততা আর গম্ভীর অভিভাবকের ভূমিকা পালন করা মানুষগুলো যে এতটা আমোদপিয়াসী, তাদের শিশুসুলভ হাসি আর প্রাণবন্ততা দেখে নতুন প্রজন্মের চোখ বড় বড় হয়ে যাচ্ছিল বার বার।
পুরো আয়োজনে সবটুকু সময়েই তারা বার বার ফিরে যাচ্ছিলেন স্কুল জীবনের সেই উদ্দাম-উচ্ছল শৈশবে। গভীর অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন যেকোনো মানুষই দেখতে পারত, তাদের চোখের সামনে ভাসতে থাকে স্কুলের সেই দিনগুলোর স্মৃতিময় নানা ঘটনা- উত্তরের দিগন্ত বিস্তৃত সেই মাঠ, জলাভূমি আর হাওয়ায় দোল খাওয়া কচি ধানপাতার দৃশ্য। সাবেক শিক্ষার্থীরা সেসব দিনের স্মৃতি আজও বুকে লালন করেন। তাদের আলাপচারিতায় উঠে আসে তা বার বার।
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনার কেন্দ্রে ছিলেন জ্যেষ্ঠ জেলা জজ ইসমাইল হোসেন। আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা সবুর হোসেন চৌধুরী ও সহ-আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেন। ৮০’র ব্যাচের এই সাবেকদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজন ও তা সর্বাঙ্গীন সুন্দররূপে সমাধা হওয়ার পেছনে আরও অনেকের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। তাদের নাম লিখতে গেলে তালিকাটা বেশ দীর্ঘই হবে।
সব মিলিয়ে ১৯৭২ ব্যাচের শিক্ষার্থী থেকে ২০০৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী- সবাই যার যার অবস্থান থেকে এই আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতে আরও হওয়া উচিৎ বলে অনুষ্ঠানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ডিসেম্বরে বৃহত্তর কলেবরে ফ্যামিলি-ডে করার পরিকল্পনাও নেয়া মৌখিকভাবে।
সবশেষে ছিল ভুরিভোজের আয়োজন।
ঢাকায় এ অনুষ্ঠানে আসতে চেয়েও যাদের হতাশ হতে হয়েছে, তাদের কথা বিবেচনা করেই আরও বড় পরিসরে আনন্দ ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন নারান্দিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অতীত ধারণ করে ভবিষ্যৎকে হাতে ধরে গড়ে তোলা তারুণ্যে ভরপুর একদল সাবেক শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন:দেশের প্রথম একক শিল্পমেলা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপো-২০২৩’ শেষ হয়েছে।
তিন দিনব্যাপী এই শিল্পমেলার আয়োজনে ছিল ওয়ালটন। দেশি-বিদেশি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই আয়োজন। সার্বিকভাবে সফলতা পেয়েছে এটিএস এক্সপো।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কুড়িলে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) হল-১ এ আয়োজিত ‘এটিএস এক্সপো-২০২৩’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে এমন তথ্য জানায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।
এটিএস এক্সপো’র সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ওয়ালটন লাসভেগাসের ফেয়ারে অংশগ্রহণ করেছে, জার্মানিতে পণ্য রপ্তানি করেছে। এসব সংবাদ যখন শুনি তখন খুব গর্ববোধ করি। আগে ভাবতাম জাপান, চীন এসব দেশ টেকনোলজি পণ্য ও কম্পোনেন্টস তৈরি করতে পারবে; আমরা পারবো না।
‘কিন্তু এটিএস এক্সপোতে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশও ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্ট ও টেকনোলজি পণ্য তৈরির সক্ষমতা দেখিয়েছে। ওয়ালটনের সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিশাল ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। ওয়ালটন এই এক্সপোতে সেই ক্ষমতা দেখালো। জাপান, জার্মানি, আমেরিকা, ভারত- সব দেশের সঙ্গে সমানতালে বাংলাদেশকে সম্মানের সঙ্গে এগিয়ে নেয়ার অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ওয়ালটন।’
এটিএস এক্সপোতে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২১টি স্টলে ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হয়।
এসবের অধিকাংশই প্রায় সব ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে প্রধান কাঁচামাল ও কম্পোনেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও টেস্টিং সলিউশনস প্রদানের মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশীয় শিল্পের ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে ওয়ালটন।
আরও পড়ুন:বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেছেন, ‘ওয়ালটন বাংলাদেশের আইকন। আমাদের কাছে একটা বিষ্ময় ও আলোকবর্তিতা। এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রনিক পণ্য নেই যা ওয়ালটন তৈরি করছে না। ওয়ালটনের জন্য দেশের বিলিয়ন ডলারের আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। ব্যাপকসংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের রপ্তানি আয় ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ওয়ালটন আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি এক্সপো (এটিএস) ২০২৩’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশি-বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তা ও ক্রেতাদের কাছে ওয়ালটন উৎপাদিত ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, টেস্টিং ল্যাব ও ফ্যাসিলিটি তুলে ধরার লক্ষ্যে তিনদিনব্যাপী এই আয়োজন চলবে শনিবার পর্যন্ত।
এটিএস এক্সপোতে চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২১টি স্টলে ওয়ালটনের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হচ্ছে।
প্রধান অতিথি হিসেবে ফিতা কেটে এটিএস এক্সপো’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম ও নিশাত তাসনিম শুচী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার, ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল. আউসান জেআর, পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রমুখ।
এটিএস এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটনের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। সঞ্চালনায় ছিলেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, ওয়ালটনের উচ্চ প্রশিক্ষিত দক্ষ প্রকৌশলীরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারিজে ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস তৈরি করছেন। এসব কম্পোনেন্টস দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানও যেন কাজে লাগাতে পারে সেজন্য এটিএস এক্সপো আয়োজনের এই উদ্যোগ।
ওয়ালটনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম একক কোনো বাংলাদেশী ব্র্যান্ড তার টেকনোলজি ও সলিউশন দিয়ে সক্ষমতা প্রদর্শনের আয়োজন করেছে। এটিএস এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প খাত, দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা তুলে ধরা হচ্ছে।’
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিতে বাংলাদেশের যে উত্থান তার পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে ওয়ালটন। তারা দেশে হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কারিগরি ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য এখন দেশের ভেতরেই কর্মসংস্থান তৈরি করেছে ওয়ালটন। উদ্ভাবন ও গবেষণায় ওয়ালটন আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে বলে আমি আশাবাদী।’
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে। দেশে ব্যবসা-বান্ধব পলিসি এবং শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করা হয়েছে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ ওয়ালটন। সরকারের ব্যবসা-বান্ধব পলিসির কারণেই ওয়ালটনের মতো প্রতিষ্ঠান এই পর্যায়ে আসতে পেরেছে। ওয়ালটন দেশের চাহিদা মিটিয়ে অনেক দেশে তাদের পণ্য রপ্তানি করছে। এটা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।’
ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, “ওয়ালটন এখন দেশের শীর্ষ ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স ব্র্যান্ড। তারা দেশেই ইলেকট্রনিক্স পণ্য, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস ও সলিউশনস উৎপাদন করছে। তারা দেশের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প খাতেও সার্ভিস দিচ্ছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটনের প্রবৃদ্ধি গর্ব করার মতো। বিশ্ববাজারে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত পণ্যের পরিচিতিতে বিশেষ অবদান রাখছে ওয়ালটন।”
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ওয়ালটন ৫০ হাজারের বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস তৈরি করছে তা সত্যিকার অর্থে এক বিশাল ব্যাপার। বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি ওয়ালটনের হাত ধরে আরো বহুদূর এগিয়ে যাবে।’
ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল. আউসান জেআর বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ব্যবসা সম্প্রসারণ করছে ওয়ালটন।
ফিলিপাইনের বাজারেও ওয়ালটনের ব্যবসা সম্প্রসারণের আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য