× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

শিক্ষা
9 69 pass in Arts Law and Social Science Unit of DU
google_news print-icon

ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে পাস ৯.৬৯%

ঢাবির-কলা-আইন-ও-সামাজিক-বিজ্ঞান-ইউনিটে-পাস-৯৬৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ফল বুধবার প্রকাশ করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা
ইউনিটটিতে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১ লাখ ১৫ হাজার ২২৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১ হাজার ১৬৯ জন। ইউনিটটিতে ২ হাজার ৯৩৪টি আসন রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।

ইউনিটটিতে পাসের হার ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১ লাখ ১৫ হাজার ২২৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১ হাজার ১৬৯ জন। ইউনিটটিতে ২ হাজার ৯৩৪টি আসন রয়েছে।

বুধবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল শ্রেণিকক্ষে ফলাফল প্রকাশ করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান৷

গত ৬ মে ইউনিটটির পরীক্ষা হয়৷

কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছে ঢাকা কলেজের ছাত্র সৌম্যদিপ্ত মন্ডল।

তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮৩। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলসহ ১০৩ নম্বর পান।

মানবিক বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছে বরিশালের অম্রিতলাল দে কলেজের ছাত্র অয়ন চক্রবর্তী। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৮৪ পান। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলসহ নম্বর পেয়েছেন ১০৪।

বাণিজ্য বিভাগে প্রথম হয়েছেন ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র আশিকুজ্জামান। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় ৬৮ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলসহ নম্বর পেয়েছেন ৮৮।

ইউনিটটিতে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (https://admissions.eis.du.ac.bd) থেকে ফলাফল জানতে পারছেন৷

এ ছাড়া মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠিয়েও ফলাফল জানা যাবে।

উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ১৮ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম পূরণ করতে হবে৷

কোটায় আবেদনকারীদের ৮ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ফরম কলা অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে৷

উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষার জন্য ৮ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত ফি দিয়ে কলা অনুষদের ডিন কার্যালয়ে আবেদন করা যাবে৷

আরও পড়ুন:
বর্তমান সংসদের মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানোর দাবি ঢাবি শিক্ষকের
ঢাবির আইন বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে আসনপ্রতি পরীক্ষার্থী ৩৯
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেন লক্ষাধিক শিক্ষার্থী
ছিনতাইয়ের অভিযোগে ঢাবির দুই ছাত্র গ্রেপ্তার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

শিক্ষা
New polarization in Jabir teacher politics

জাবির শিক্ষক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ

জাবির শিক্ষক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার। ফাইল ছবি
‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের’ আহ্বায়ক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতির যে অভিযোগ তারা করছে আমি তাদের শুধু বলতে চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কি কোন নিজস্ব অস্তিত্ব নাই? আমি কি শুধুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের ভাই হিসেবে পরিচিত।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আসন্ন সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক রাজনীতিতে নতুন করে ভাঙন সামনে এসেছে।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ ও ‘স্বজনপ্রীতির’ অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ নামে নতুন সংগঠনটি আত্নপ্রকাশ করেছে।

সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নতুন এই শিক্ষক সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।’

জাবি সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে ৩৩ জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। যা ভেঙেই নতুন এ সংগঠনটির সৃষ্টি।

নতুন এ সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) অধ্যাপক মোতাহার হোসেন ও সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী।

এছাড়াও কমিটিতে আছেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, আইবিএ-জেইউ এর অধ্যাপক আইরিন আক্তার এবং একই ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মালিহা নার্গিস আহমেদ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন জলি, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুদা পারভীন এবং জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম।

সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর কতিপয় সুবিধাবাদী শিক্ষকের ইন্ধনে আওয়ামীপন্থি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের না নিয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে গত বছরের ১১ অক্টোবর বিতর্কিতদের দিয়ে সংগঠনটির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করেন। এতে তিনি নিজের ব্যক্তি ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে সংগঠনটিকে ব্যবহার করতে চরম স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ‘দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতেই উপাচার্য বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি দেখান ও বিতর্কিতদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগে বিতর্কের বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়, গত এক বছরে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে উপাচার্য ভীষণভাবে বিতর্কিত হয়েছেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ও বাইরে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

এছাড়া উপাচার্যের পেশাদারিত্ব নিয়ে বলা হয়, সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিলে তিনি সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নির্বাচনী বোর্ডে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে একাডেমিক ইথিকস ও পেশাদারিত্বের অভাব দেখিয়েছেন।

উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাবের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এ ধরণের বক্তব্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, উপাচার্য পদ ও সরকারের জন্য ভীষণ অসম্মানজনক ও বিব্রতকর।

আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা যে, এ অভিযোগ সত্য। তবে উপাচার্য নিয়োগে অনৈতিক প্রভাবের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য আমরা রাষ্ট্রের যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

এতে আরও বলা হয়, যাদেরকে কখনো জাতীয় রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি তারাই তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য উপাচার্যকে ক্রীড়নকে পরিণত করেছে। সর্বোপরি বিশেষ সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ও উপাচার্যের এসকল বিতর্কিত কর্মকান্ড জাতীয় অঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ও বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।

এ বিষয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’র আহ্বায়ক অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা বিজ্ঞপ্তিতে সকল কারণ উল্লেখ করেছি।’

‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের’ আহ্বায়ক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতির যে অভিযোগ তারা করছে আমি তাদের শুধু বলতে চাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কি কোন নিজস্ব অস্তিত্ব নাই? আমি কি শুধুই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের ভাই হিসেবে পরিচিত?

‘আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলাম, সিনেট প্যানেলে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছি, গত শিক্ষক সমিতির সদস্যপদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছি। তাহলে আমার পরিচয় কি শুধুই উপাচার্যের ভাই হিসেবে না আমার অন্য কোন পরিচয় আছে? নতুন সংগঠনের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি যেহেতু সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে একজন প্রার্থী। তাই নিবাচন প্রাক্কালে নতুন এ সংগঠন নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাই না।’

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৮ সালে আওয়ামীপন্থীরা ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ নামে সংগঠন গঠন হয়েছিলো।

মন্তব্য

শিক্ষা
6 students expelled for ragging and vandalizing medical center in EB

ইবিতে মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৬ ছাত্র বহিষ্কার

ইবিতে মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৬ ছাত্র বহিষ্কার ইবিতে মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় বহিষ্কার হওয়া ছয় ছাত্র হলেন ওপরে বাম দিক থেকে কাব্য, ইমন, শুভ আর নিচে বাম দিক থেকে পুলক, সাকিব, আকিব। কোলাজ: নিউজবাংলা
ইবির ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন বলেন, ‘অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের এ শাস্তি দেয়া হয়েছে।’

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেডিক্যাল সেন্টার ভাঙচুর ও নবীন শিক্ষার্থীকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় তিনজন ছাত্রকে স্থায়ী এবং বাকি তিনজন ছাত্রকে এক বছর করে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উপাচার্যের কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া তিন ছাত্র হলেন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর ইমন ও শুভ এবং আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিকী কাব্য।

আর এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়েছে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ২০২১-২২ বর্ষের আকিব, সাকিব ও পুলককে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন, আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান সহ ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা।

সভা শেষে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ।

তিনি জানান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমানকে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে মিজানুর ইমন ও শুভর অধিকতর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় বলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং বাকি তিনজন আকিব, পুলক ও সাকিবের সংশ্লিষ্টতা কম থাকায় তাদের এক বছর করে বহিষ্কার করা হয়।

তিনি আরও জানান, এ ছাড়া গত ১০ জুলাই মেডিক্যাল ভাঙচুরের ঘটনায় আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রেজোয়ান সিদ্দিক কাব্যের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিক্ষার্থী সালমান আজিজ, আতিক আরমান কাব্যের সঙ্গে থাকলেও সরাসরি সংশ্লিষ্ট না থাকায় তাদের সতর্ক করা হয়েছে, তবে সর্বক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।

এ বিষয়ে ইবির ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন বলেন, ‘অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের এ শাস্তি দেয়া হয়েছে।’

ইবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া পরিবেশ থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা সহাবস্থানে একে অপরের সহযোগিতা করবেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা শিক্ষাবান্ধব এবং র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছি।’

র‍্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থী তাহমিন ওসমান বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রশাসন সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তারা এগ্রেসিভভাবে আমাকে র‍্যাগ দিয়েছিল। তাই আমি মনে করি, সঠিক সিদ্ধান্তই হয়েছে। আমি চেয়েছিলাম আমার সাথে যা হয়েছে, আর কেউ যেন এর শিকার না হয়, তাই আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। এই সময়টাতে পরিবার আমার পাশে ছিল।’

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর র‍্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেয় ওই শিক্ষার্থী। ঘটনা তদন্তে ১০ সেপ্টেম্বর ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির আহ্বায়ক ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডীন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম।

আরও পড়ুন:
সাইবার নিরাপত্তা আইনে কেবল খোলস পাল্টানো হয়েছে: টিআইবি
ইবিতে ৩১টি বিভাগেরই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নেই
ইবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস ২ সেপ্টেম্বর, র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রশাসন
‘ন্যায়বিচার’ পেয়ে সন্তুষ্ট ফুলপরী
ফুলপরীকে নির্যাতন: ইবি’র ৫ ছাত্রী স্থায়ী বহিষ্কার

মন্তব্য

শিক্ষা
The National Conference on Journalism Media and Communication is starting tomorrow

জাবিতে সাংবাদিকতা,গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল

জাবিতে সাংবাদিকতা,গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক সম্মেলনের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় এ সম্মেলন সম্পর্কে সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন,  ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার স্থান, আর গবেষণাকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিতে কনফারেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি মূলত জ্ঞানের আদান-প্রদান। শিক্ষক, গবেষক এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এখানে তাদের জ্ঞান বিনিময় করবেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের আয়োজনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের নতুন কলা ভবনের চতুর্থ তলায় সোমবার সকাল নয়টায় সম্মেলনটি শুরু হবে। দুই দিনব্যাপি চলা সম্মেলনটি শেষ হবে বুধবার।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে।

সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। তাছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন ড.মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, এবং এমআরডির পরিচালক হাসিবুর রহমান।

মুখ্য আলোচক হিসেবে থাকবেন জিআইজেএন বাংলার সম্পাদক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।

এ জাতীয় সম্মেলনে মোট ২৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ এ প্রবন্ধগুলো উপস্থাপন করবেন।

সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় এ সম্মেলন সম্পর্কে সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার স্থান, আর গবেষণাকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিতে কনফারেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি মূলত জ্ঞানের আদান-প্রদান। শিক্ষক, গবেষক এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এখানে তাদের জ্ঞান বিনিময় করবেন।

‘কনফারেন্সে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে জ্ঞানের আদান-প্রদান হয়, জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা, জ্ঞান চর্চা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব।’

সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আলোচক এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দেশবরেন্য শিক্ষক,গণমাধ্যম কর্মী ও গবেষকেরা।

মন্তব্য

শিক্ষা
Demonstration demanding the resignation of the Provost in Jabi Hall

জাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

জাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ জাবির শহীদ সালাম-বরকত হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে রোববার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন হলের ছাত্ররা। ছবি: নিউজবাংলা
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমি হলের সমস্যাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু সেখান থেকে বাজেট দেয়া হয়নি। তাই হলের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছি না।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন হলের আবাসিক ছাত্ররা।

হলের প্রধান ফটকের সামনে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ওই সময় হল অফিসে তালা মেরে দেন বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো আগামী দুই দিনের ভেতর হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডুর পদত্যাগ করা ও হলের সব সমস্যা সমাধান করা।

বিক্ষোভ সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের ছাত্র সাজ্জাদ সৌভিক বলেন, ‘আমাদের হলের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না। হলের সামনে পানি জমে থাকে। সিয়াম চত্বরে পানির কারণে বসা যায় না। খেলার মাঠের অবস্থা ভালো না। বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই। আমরা এ প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই।’

দর্শন বিভাগের ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘যে প্রভোস্টের কাছে ছাত্ররা সমস্যার কথা নিয়ে গেলে তার সময় নষ্ট হয় বলে মনে করেন, সে প্রভোস্টকে আমাদের হলে দরকার নেই। আমাদের দাবি হলো দুই দিনের ভেতর প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে হবে ও হলের সব সমস্যা সমাধান করতে হবে।’

ওই সময় বিক্ষোভ সমাবেশে হলের প্রায় দুই শ ছাত্র উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমি হলের সমস্যাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু সেখান থেকে বাজেট দেয়া হয়নি। তাই হলের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছি না।’

আরও পড়ুন:
জাবিতে স্নাতক পরীক্ষায় সেরাদের বৃত্তি দেবে বিসিএস ফোরাম
বোনকে বাঁচাতে গিয়ে আহত জাবি ছাত্রীর মৃত্যু
বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা জাবি ছাত্রীকে
জাবির জার্নালিজম বিভাগের ফ্যাক্ট-চেকিং কর্মশালা
শোক দিবস উপলক্ষে জাবি বিসিএস অফিসার্স ফোরামের আলোচনা ও দোয়া

মন্তব্য

শিক্ষা
Banks dont give money to entrepreneurs even if they give loans to buy Mercedes Naufel

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল শনিবার চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

বর্তমানে পুঁজির অভাবে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন বলে মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়া যে কী কষ্ট, পুঁজি সংগ্রহ করা যে কী কঠিন! আমি এই জেনারেশনের অংশ হিসেবে জানি, ব্যাংক আমাদের ৫ লাখ টাকাও লোন দেয় না। এটাই বাস্তবতা। এখন আমি যদি সারাদিন আপনাদের বলি উদ্যোক্তা হন, সেক্ষেত্রে ছাত্র হিসেবে আপনাকে কে টাকা দেবে?’

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যার রেঞ্জ রোভার গাড়ি আছে তাকে মার্সিডিজ কেনার জন্য ব্যাংক টাকা দেবে। কিন্তু ব্যাংক উদ্যোক্তাদের কোনো টাকা পয়সা দেবে না।’

শনিবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে একসময় ১০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডও দেয়নি ব্র্যাক ব্যাংক। তারপর যখন সরকারের মন্ত্রী হয়েছি, তখন ২০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডের জন্য তারা নিজেরাই রাজি হয়েছে। কারণ তখন তারা জানে, আমি যদি ঋণখেলাপী হই, নির্বাচন করতে পারব না কখনও। তাই তারা বিনা সিকিউরিটিতে ক্রেডিট কার্ড দিতে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে, আমার জনগণের যে সঞ্চিত অর্থ, বিনিয়োগের নামে তা গুটিকয়েক ব্যাবসায়ীর হাতে তুলে দিচ্ছি। সাধারণ উদ্যোক্তারা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। এখন আমি ৫ লাখ টাকাই পেলাম না, ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করব কোথা থেকে? তাই আমি বলব, ওই পুঁজির দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। আমরা যদি দক্ষ হই, তবেই আত্মনির্ভরতা সম্ভব।’

এ সময় ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করার একটা আন্তর্জাতিক প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানে। অনেকে অর্থ খরচ করে সেই উচ্চশিক্ষা নেয়ার জন্য, সেটি যেভাবেই হোক।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইংরেজি ভাষাভাষী দেশ নিজেরা একটা র‍্যাঙ্ক টেবিল বানিয়েছে নিজেদের কিছু পত্রিকাকে দিয়ে। সেই র‍্যাঙ্কিং তারাই করে, সেখানে ইংরেজি ভাষার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুব কম স্থান দেয় তারা। সেখানে পড়তে গেলে আমাদের শতকোটি টাকা ব্যয় হয়ে যায়। তারা মনে করে, তারা একটা উচ্চশিক্ষার বাজার সৃষ্টি করেছে।’

শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনে দিকেও জোর দেয়ার তাগিদ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাখ লাখ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হচ্ছে প্রতিবছর। বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে শুধু দেশের অর্থনীতির জন্য প্রস্তুত করার কথা নয়, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তৈরি করার কথা। গ্লোবাল সিটিজেন হওয়ার জন্য মানসিকতা থাকতে হবে সবার। আমাদের দৃষ্টিসীমা সেভাবেই নির্ধারণ করতে হবে। এই ভূখণ্ডে আমি নিজেকে আবদ্ধ রাখব না, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে সারা বিশ্ব আমার কর্মক্ষেত্র হবে। সেখানে আমি যেন কাজ করতে পারি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যথেষ্ট নয়।’

‘যথেষ্ট নয় এজন্য যে, আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

এ সময় সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘স্ট্যানফোর্ডে স্টিভ জবস স্নাতকদের উদ্দেশে বলেছিলেন- অন্যকে নকল করতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত এই জবন নষ্ট করো না। তোমার মনে যা আসে তাই করবে। তোমার বিবেক যা বলবে তাই করবে। তোমার মস্তিষ্ক যা চিন্তা করে তাই করবে। আজকের স্নাতকদের প্রতিও আমার একই আহ্বান।’

আরও পড়ুন:
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ২২ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ

মন্তব্য

শিক্ষা
The administration does not know the need to install AC in the workplace
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন এসিতে ভরে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও বিভিন্ন অফিস কক্ষ। ছবি: নিউজবাংলা
জবির প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বেড়েই চলছে অনুমোদনহীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই চলছে এসি লাগানোর মহোৎসব। পরিকল্পনা ছাড়াই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসির ব্যবহারে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। এতে বাড়ছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।

সরকারি নিয়মানুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইন্সটিটিউট পরিচালক, দপ্তর প্রধান ও এর সমমানের পদধারীদের অফিস কক্ষে এসি ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে। তবে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জবির বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষ, শ্রেণিকক্ষ, এমনকি বিভিন্ন দপ্তরেও এসি লাগানো হচ্ছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো এসব এসির কারণে তৈরি হয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মচারী বলেন, ‘বিভাগের প্রয়োজনেই এসি লাগানো হয়ে থাকে। বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে কোম্পানি থেকে সরাসরি এসিগুলো কেনা হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আর রিকুইজিশন দেয়া হয় না। ফলে প্রকৌশল দপ্তরও বিষয়গুলো জানে না।

‘কোম্পানির লোকজনই এসে এসিগুলো লাগিয়ে দিয়ে যায়। কোনো সমস্যা হলে বা এসি নষ্ট হলে কোম্পানির লোক বা বাইরে থেকে এসির মিস্ত্রি এনে সারানো হয়।’

তবে বিষয়টি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কনসার্নেই হয়ে থাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষে ও শ্রেণিকক্ষে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এসি লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস কক্ষ, সেমিনার কক্ষসহ অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষেও এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকের ব্যক্তিগত রুমেও চলছে এসি।

এ ছাড়াও গণিত বিভাগের অফিস কক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষ, সেমিনার কক্ষ ও শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। মনোবিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের সেমিনার কক্ষসহ শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের শ্রেণিকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীরা না থাকার পরও এসি, লাইট, ফ্যান চালু থাকতে দেখা যায় প্রতিনিয়তই। ছুটির দিন কিংবা অফ টাইমে শ্রেণিকক্ষগুলোতে বিনা কারণে লাইট-ফ্যান জ্বলতে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই এক হাজার টনের বেশি এসি রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া গণিত ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন মিলিয়ে প্রায় চারশ’ টনের বেশি এসি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই একটি মাত্র সাব-স্টেশন থেকে পুরো ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। সেটির কার্যক্ষমতা কমতে কমতে বর্তমানে প্রায় ১২০০ কেভিতে নেমেছে, যা কোনোভাবেই ভবনগুলো বৈদ্যুতিক লোড নিতে পারত না। পরে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের জন্য সাব-স্টেশনটি ২০০০ কেভি ধারণক্ষমতার করা হয়েছে।

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসব এসি ব্যবহারে দৈনিক যে পরিমাণ বিদুৎ খরচ হয়, তার যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে নতুন স্থাপনকৃত বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনটিও। ফলে কিছুদিন পরপরই ক্যাম্পাসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে চলতি বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবলগুলোর আংশিক পরিবর্তন করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন
কোলাজ: নিউজবাংলা

এর আগে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন লাইন ও সাব-স্টেশনের সঙ্গে ডরমিটরির লাইনের তারের লুজ কানেকশনের জন্য তা ঝলসে গিয়ে পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়৷ লাইনের তার জোড়া দেয়ার কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসেই তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের লোড নিতে না পেরে চারবার শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে ও দপ্তরে ত্রুটিপূর্ণ ও ভাঙা এসি এবং অ্যাডজাস্ট ফ্যানের কারণে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবারাহের ক্যাবলগুলো বেশ পুরনো হয়ে যাওয়ায় সেগুলো থেকে নিয়মিত শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বর্ষাকালে অল্প বৃষ্টিতে এই ক্যাবলগুলোতে আগুন ধরে যেতে দেখা যায়। এতে তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়।

এদিকে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই ৫টি ত্রুটিপূর্ণ এসি ও ১০টির অধিক ভাঙা অ্যাডজাস্ট ফ্যান রয়েছে। এতে যেমন বেড়েছে বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিমাণ, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা নয়, অনুমোদনহীন এসব এসি ব্যবহারে প্রতি মাসে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলও গচ্চা দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকার বিদুৎ বিল পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত মাত্রায় অনুমোদনহীন এসির ব্যবহারের ফলে এর পরের তিন মাসে তা প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে সতেরো লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ২০২২ সালের ৪ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসি, লাইট, ফ্যান না চালানোর নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না কেউই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এসি লাগিয়েছে। এতে তারগুলোর ওপর লোড আরও বেড়েছে। যার ফলে শর্ট সার্কিটসহ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার পরিমাণও বেড়েছে। আমরা বারবার বলার পরও তারা শোনেনি। এখন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানানো হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে
জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা জবি ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
দরজা ভেঙে জবি ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

শিক্ষা
The administration is silent on the beating of the Chhatra League leader in the torture cell of Jabi Hall

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর হলের কক্ষ দখল করে প্রতাপ চালিয়ে যাচ্ছেন আরমান খান যুব। ছবি: নিউজবাংলা
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনের ওপর এই নির্যাতন চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। একইসঙ্গে চালাচ্ছেন মাদকের কারবার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে এবার নির্যাতন চালানো হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে। প্রহারের পর ভুক্তভোগীর শরীরে মদ ঢেলে তাকে মাদকাসক্ত সাজানোরও চেষ্টা করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা এই নির্যাতন চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। চালিয়ে যাচ্ছেন মাদকের কারবার।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনকে ক্যাম্পাসে মওলানা ভাসানী হলে নিজের ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে দফায় দফায় মারধরের পাশাপাশি ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। একইসঙ্গে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে ঘটনা প্রকাশ না করার হুমকি দেয়া হয়।

বুধবার ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতা। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে ফল হয়েছে উল্টো। অভিযুক্তদের দ্বারা ম্যানেজ হয়ে গেছেন প্রক্টর।’

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে প্রক্টরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে ফোন ধরে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর থেকে তিনি আর সাড়া দেননি।

ভুক্তভোগী জাহিদ হাসান ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের বাসিন্দা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ইমন। ছবি: নিউজবাংলা

বুধবার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী (২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ) আরমান খান যুব ছাড়াও রয়েছেন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের আরাফাত, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের তুষণ ও অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তি।

এদের মধ্যে আরমান খান যুব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ক্যাম্পাসে ‘র‌্যাগের রাজা’ নামে তার পরিচিতি রয়েছে। কয়েক বছর আগে ছাত্রত্ব শেষ হলেও তিনি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের একটি কক্ষ দখল করে রেখেছেন।

আরমান খান যুব’র বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের সিন্ডিকেট ও মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ‘টর্চার সেল’ পরিচালনার অভিযোগ বেশ পুরনো। মাদক কারবারি ও বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করার ঘটনাও অনেকের মুখে মুখে।

জাহিদ হাসান ইমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘১৩ আগস্ট সাভারের রেডিও কলোনির বউবাজার এলাকার ভাড়া বাসার মালিকের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমার মনোমালিন্য হয়। ওই ঘটনার জের ধরে আমাকে ফোন দিয়ে আরমান খান যুবর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন বাড়ির মালিকের পূর্বপরিচিত আরাফাত।

‘আমি যুবর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে আমাকে মওলানা ভাসানী হলের সামনে যেতে বলা হয়। রাত ১২টার দিকে সেখানে গেলে আমাকে মোটরসাইকেল হলের ভেতরে রেখে ১২৬ নম্বর কক্ষে যেতে বলেন যুব।’

ইমন বলেন, ‘আমি কক্ষে ঢুকতেই ঘুষি মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দেন যুব। আমি যাতে চিৎকার করতে না পারি সেজন্য কাপড় দিয়ে আমার মুখ বেঁধে ফেলেন আরাফাত। পরে যুব ও আরাফাতসহ সেখানে উপস্থিত অন্যরা আমাকে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন।

‘আমাকে এক দফা মারধরের পর ইয়াবা সেবন করেন যুব। পরে সবাই মিলে আবারও অমানুষিক নির্যাতন শুরু করেন। এছাড়া আমার শরীরে মদ ঢেলে উল্লাস করতে থাকেন ওরা।’

ইমন জানান, দফায় নির্যাতনের পর রাত ৩টার দিকে তাকে হলের দ্বিতীয় তলার ২২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাকে পরিষ্কার-পরিছন্ন হয়ে আসতে বলেন তুষণ। এরপর ‘ইমন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেন। এমনকি মোবাইল ফোনে তার ভিডিও ধারণ করে রাখেন তুষণ। পরে তাকে ফের ১২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় মারধরের ঘটনা কাউকে না জানাতে ইমনের পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেন অভিযুক্তরা। কিছুক্ষণ পর আকতারুজ্জামান সোহেল ওই কক্ষে গিয়ে ইমনকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেও ইমনকে আশ্বাস দেন।

ভুক্তভোগী ইমন বলেন, ‘ঘটনার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে বিষয়টির ব্যাপারে আগে থেকে অবহিত করেছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পরদিন সকালে প্রক্টরের বাসায় যাই। তবে সেখানে গিয়ে দেখি যে আকতারুজ্জামান সোহেল প্রক্টরের বাসায় অবস্থান করছেন।

‘আমাকে ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে (গেস্টরুম) গিয়ে বসতে বলেন তিনি। এ অবস্থায় প্রক্টরের ওপর ভরসা না পেয়ে আমি চলে আসি। এরপর মারধরের বিষয়টি আল নাহিয়ান খান জয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি।’

ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘মারধর-পরবর্তী নানা ঘটনায় প্রক্টরের ওপর আমার ভরসা উঠে গেছে। নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেইনি। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি। তবুও ঘটনার বিচার করতে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বিচার না পেয়ে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছি। কারণ ওই রাতের ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরমান খান যুব ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুসাইন মো. সায়েম বলেন, ‘হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে সাবেক শিক্ষার্থীরা থাকে, বিষয়টি আমি জানি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে ফোন করলে তিনি ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন:
জাবিতে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা, অবরুদ্ধ উপাচার্য

মন্তব্য

p
উপরে