রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে তাকে আটক করে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হাসিবুল ইসলাম শান্ত রাবির শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও নাটোর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক বলেন, ‘মঙ্গলবারে আটক প্রক্সিদাতাদের তথ্য অনুযায়ী আমরা নগরীর কাটাখালি এলাকা থেকে হাসিবুল ইসলাম শান্তকে গ্রেপ্তার করি।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন পরীক্ষায় জালিয়াতি ও অন্যের হয়ে প্রক্সি দেয়ার অভিযোগে সাতজনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বুধবার সকালে ছাত্রলীগ নেতা শান্তসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নগরীর মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে মামলাগুলো করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম। তাদের মধ্যে নয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হাসিবুল ইসলাম শান্ত প্রক্সিদাতাদের সঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেয়ার চুক্তি করেন। মঙ্গলবার আটক প্রক্সিদাতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানলাম। যদি তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অছাত্র ও বহিষ্কৃতের সোমবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসন।
রোববার সন্ধ্যায় বিশ্বিবদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদের স্বাক্ষর করা এক জরুরি বিজ্ঞতিতে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষ ও তার আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষ স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় এ সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা এখনো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন আবাসিক হলসমূহে অবস্থান করছে তাদেরকে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ দেয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যারা বহিস্কারাদেশের আওতায় রয়েছে তাদেরকেও আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
এ সময়ের পর এ ধরনেরর কাউকে হলে অবস্থানরত অবস্থায় পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সজ্জন ও সচ্চরিত্রবানদের দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
রোববার বিকালে নিউজবাংলাকে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুরে চবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা কমিটি দেব। ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে যারা সজ্জন, সচ্চরিত্রবান তাদেরকে আমরা শীর্ষ নেতৃত্বে আনবো।‘
স্মার্ট ছাত্রলীগ ধারণার সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যক্রম সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না জানতে চাইলে ইনান বলেন, ‘বাংলাদেশ স্মার্ট হচ্ছে, ছাত্রলীগ স্মার্ট হচ্ছে। সুতরাং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকেও স্মার্ট হতে হবে। এটার ব্যতয় ঘটানোর সুযোগ নেই।‘
বৃহস্পতিবার দুই কর্মীর কথা কাটাকাটির জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের দুই উপ গ্রুপ সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ছয় কর্মী আহত হয়। এ ঘটনার পরই থমথমে অবস্থা বিরাজ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
পরদিন শুক্রবার দুপুরেও দুই গ্রুপের কর্মীরা একে অপরকে উদ্দেশ্য করে স্লোগান দিতে থাকে। সন্ধায় ফের বাধে সংঘর্ষ।
একই সময়ে লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইটে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের আরেকাংশ (সভাপতি গ্রুপ)। এদিন আরও ৪ কর্মী আহত হয়।
ঘটনার জের না কাটতেই শনিবার দিনভর ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করে৷ রাতে বিজয় গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। এ ঘটনায় সংঘর্ষের শঙ্কা থাকলেও পুলিশ ও প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
একই সময়ে শাহ জালাল হলে সিক্সটি নাইন ও শাহ আমানত হলে সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা একে অপরকে উদ্দেশ্য করে মুহুর্মুহু শ্লোগান, স্লেজিং ও বাজি ফুটাতে থাকে।
শেষে প্রশাসন ও পুলিশ দুই হলে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে রোববার ক্যাম্পাসে কর্মরত এক সাংবাদিকের ওপরও হামলার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘সাংবাদিককে মারধর এটা অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ। আমরা খতিয়ে দেখে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবো।‘
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের তিন গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর আরও দুটি আবাসিক হলে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি। এ সময় রামদাসহ বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কেউ আটক হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবদুর রব হল ও স্যার এ এফ রহমান হলে রোববার বিকেল ৪টার দিকে অভিযান শুরু হয়। প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট ও পুলিশ সদস্যরা এই অভিযান চালান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘আমরা পুলিশের সহযোগিতায় দুটি হলে তল্লাশি চালিয়েছি। এ সময় দুই হলের বেশ কয়েকটি কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল। এ অবস্থায় দরোজায় লাগানো তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ৮টি রামদা, ১০টি লোহার রড, ১৬/১৭টি পাইপ, বিপুল পরিমাণে লাঠিসোঁটা ও পাথর উদ্ধার করা হয়। তবে কাউকে আটক করতে পারিনি। অনেকে কক্ষ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।’
এর আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ জালাল ও শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালিয়ে পাঁচ বহিরাগতকে আটক করা হয়। এ সময় দুই হল থেকে রড-রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার থেকে চবি শাখা ছাত্রলীগের তিন গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ভিন্ন ঘটনায় রোববার পর্যন্ত থেমে থেমে চলে সংঘর্ষ। সংবাদ প্রকাশের জের ধরে রোববার ক্যাম্পাসে কর্মরত এক সাংবাদিকের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মী-সমর্থকরা ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠে।
সবশেষ রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত মোট ৫২ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা অনুদান দেয়া হয়েছে।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্গত মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা অনুদানের চেক তুলে দেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের অসহায়, দুস্থ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ৫২টির অধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অনুদান প্রদান করা হয়। প্রতি বছর এ খাতে সরকারের প্রায় ২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অদম্য। তারা নানা প্রতিকূলতাকে জয় করে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের শিক্ষা জীবন সুন্দর হোক আমি এই শুভকামনা রাখছি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে আজকে যে ৫২ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে অনুদান দেয়া হলো এ অর্থ সামান্য হলেও আপনাদের জন্য এটি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করছি।’
ভবিষ্যতে এ খাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করাসহ এরূপ অনুদান প্রদান অব্যাহত রাখা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “তোমরা দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী তাই তোমরা য-ই শুনো না কেন সেটা বিশ্বাস না করে যাচাই করবে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সবাইকে তথ্যকে যাচাই করতে হবে নাহলে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্ধী বলি না, আমরা বলি ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী’। সমাজ বিনির্মানের একটি দিক হলো তোমরা এতজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছ।”
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীও তোমাদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন। এই মানবিক উদ্যোগগুলো এসডিজি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এসবের জন্য প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিকভাবে সম্মাননা স্বীকৃতিও লাভ করছেন।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরুর সময় বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অবস্থান নেন তারা। এই নেতা-কর্মীদের অবস্থান নেয়ার ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং উপাচার্য তার নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এর আগে রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইস-এর একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টা থেকে। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে প্রার্থীদের উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং নিয়োগ বোর্ড যাতে না বসে সে লক্ষ্যে উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী অবস্থান নেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক প্রার্থী জানান, নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। তারা যথাসময়ে উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষে বসেছিলেন। এরপর শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে বলেন, আজকে নিয়োগ বোর্ড বসবে না এবং তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তারপর থেকেই তারাা উপচার্য অফিসের বাইরে প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন।
নিয়োগ বোর্ডে বাধা প্রসঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলম গোলদার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী এমন কারো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ হোক তা আমরা চাই না৷ আমাদের দাবিটি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কয়েকবার জানানো হলেও তিনি তা আমলে নেননি। উপাচার্য স্যার আজকে আমাদের অপারগ হয়ে জানিয়েছেন, তিনি চান কিন্তু অনেকের চাপে তা সম্ভব হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘উপাচার্য বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী লোকদের শিক্ষক হিসেবে নেবেন না এবং তাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিতে কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই।’
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে নবনিযুক্ত প্রভাষকরা বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ দেয়া হয়নি৷ এ ঘটনার জের ধরে উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯ ব্যাচ, ৪২ ব্যাচ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী৷ তারা প্রত্যেকেই নিজ বর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে চতুর্থ ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিস্কৃত ও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এদিকে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিবার্য কারণবশত রোববারের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের তারিখ এখনো চূড়ান্ত নয়, চূড়ান্ত হলে এরপর জানিয়ে দেয়া হবে।
ইন্সটিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং-এর পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘প্রশাসন কাকে নিয়োগ দিবে সে বিষয়ে আমাদের কোনো মত নেই৷ সাধরণ শিক্ষার্থী নিয়োগ পেলে আমাদের সমস্যা নাই, কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী কেউ যেন নিয়োগ না হয়৷ এ ছাড়া নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বিষয়টি যেন প্রত্যাহার হয় সেটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী কারো নিয়োগ না দেয়ার দাবিকে আমরা সমর্থন করি৷ আমরা চাই না মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে আসুক।’
ছাত্রলীগের এ ধরনের বাধা ভবিষ্যতে নিয়োগ বোর্ডকে প্রভাবিত করবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ড কখনো প্রভাবিত হবে না। নিয়োগ বোর্ড নিয়ম মোতাবেক চলবে।’
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশে (সিইউবি) চলতি বছরের ফল সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদের ভর্তি মেলা শুরু হয়েছে।
রোববার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা আগামী ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর প্রগতি সরণিতে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে চলবে এ ভর্তির কার্যক্রম।
এই ভর্তি মেলায় এইচএসসি ও এ লেভেলের শিক্ষার্থী-র জন্য ভর্তি ফি ৪,০০০ টাকা, ডিপ্লোমাধারীদের জন্য ভর্তি ফি ৩,০০০ টাকা এবং এমবিএ, এক্সিকিউটিভ এমবিএ ও মাস্টার্স ইন মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস এর জন্য ভর্তি ফি ৬,০০০ টাকা।
সিইউবি কর্তৃপক্ষ জানায়, ১২ দিনের এ মেলায় বিশেষ ছাড়ে ভর্তি হতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। মেলায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা টিউশন ফির ক্ষেত্রে সব প্রোগ্রামে পাবেন কমপক্ষে ৪০ শতাংশ ছাড়।
এই মেলায় গ্রুপ এডমিশনে তিন বা ততোধিক শিক্ষার্থী একসাথে ভর্তি হলে ‘গ্রুপ ওয়েভার’ হিসেবে টিউশন ফিতে আরও ৫ শতাংশ ছাড় পাবেন।
এছাড়াও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে টিউশন ফির ওপরে সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি থাকবে। যাদের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ঐচ্ছিক বিষয় ছাড়া পৃথকভাবে জিপিএ ৫ রয়েছে, তারা টিউশন ফিতে শতভাগ ছাড় পাবেন।
সিইউবি কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতক পর্যায়ে রয়েছে বিবিএ, ইইই, সিএসই, ইংরেজি, এলএলবি, মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম এবং শিপিং এ্যান্ড মেরিটাইম সায়েন্স প্রোগ্রাম।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে রয়েছে মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস, এমবিএ এবং এক্সিকিউটিভ এমবিএ। এ ছাড়া প্রথমবারের মত এমবিএ ডিগ্রি প্রত্যাশীদের জন্য রয়েছে বিজনেস ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ডাটা এনালিটিক্স প্রোগ্রামে মেজর করার সুযোগ। পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে মেজর নিয়ে এমবিএ করার সুযোগ।
ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (www.cub.edu.bd) পাওয়া যাবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ফোন করা যাবে ০১৭০-৭০৭০২৮০, ০১৭০-৭০৭০২৮১, ০১৭০-৭০৭০২৮৪ নম্বরে। কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ক্যাম্পাসের ঠিকানা: প্লট-খ, ২০১/১, প্রগতি সরণী, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ।
দফায় দফায় সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
রোববার দুপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্তির কথা জানানো হয়।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও মার্কেটিং বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আড়াই বছর পর বিলুপ্ত করা হলো।
কমিটি গঠনের পর দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, বগি রাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধ করে হল ভিত্তিক রাজনীতি চালু করা, অনুষদ কমিটি গঠনসহ নানা প্রতিশ্রুতি দেন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। তবে এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারলেও এ কমিটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে বছরজুড়ে।
নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সাড়ে তিন বছরে একটি বর্ধিত সভা করতে পারেনি এই কমিটি। হল ও অনুষদ কমিটির আশ্বাস দিয়ে পার করেছে বছরের পর বছর।
সর্বশেষ শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপের মধ্যে ভিন্ন ঘটনায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজন আহত হন।
পূর্বরোষের জেরে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের (সহ-সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা। অন্যদিকে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে নেতার লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের আরেকাংশের (সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরসহ এসব ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ প্রচারের ঘটনায় রোববার মারধর করা হয়েছে প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ শাহকে। মারধরের সময় তাকে ছাত্রলীগ নিয়ে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য