ফরম ফিলাপের সময় টাকা বকেয়া রাখায় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারল না শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. শামীম। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হকের অসহযোগিতার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি ওই শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শামীম ঝিনাইগাতী উপজেলার জুলগাও গ্রামের কৃষক মৃত আব্বাস আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগীর স্বজনদের ভাষ্য, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের জন্য তিন হাজার টাকা করে নেন প্রধান শিক্ষক নুরুল হক, কিন্তু শামীম দিয়েছিল দুই হাজার টাকা। সে পরে আরও এক হাজার টাকা দিতে চায়। পরীক্ষার আগে সব পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দিয়ে দিলেও শামীমের প্রবেশপত্র দেননি প্রধান শিক্ষক।
পরীক্ষার্থী শামীম মিয়া বলে, ‘ আমার বাবা নাই তাই এক হাজার টাকা ফরম ফিলাপের সময় কম দিছিলাম। কিন্তু স্যার কম নিতে রাজি না হয় নি। তাই টাকা পরে দিতে চাই। পরে এডমিট কার্ড নিতে গেছি। ওই দিন বলছে, টাকা আনসস? পরে না বলায়, স্যার বললো তুই পরীক্ষা দিবার যাইস তখন দিমুনি। পরীক্ষা দিতে যাইয়া দেখি স্যার আসে নাই। ’
মা শিরিনা বেগম বলেন, ‘ আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অনেক কষ্ট করে ভাইয়ের বাড়িতে থেকে পোলাডারে পড়াইতাছিলাম। কিন্তু স্যার আমার পোলাডার সর্বনাশ করে দিছে। আমি ওই শিক্ষকের বিচার চাই। ’
এ অভিযোগ পাওয়ার পর ওই স্কুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘শামীম নামের ছেলেটার ফরম ফিলাপ বা প্রবেশপত্র পাওয়ার বিষয়টা আমাকে কেউ জানায়নি। আমি বিষয়টা জানলে পরিষদ বা ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করতাম। এ ঘটনাটি যদি প্রধান শিক্ষক করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রসাশনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাই।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘ আমাকে এ বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানোর পরে ভুক্তভোগীর পরিবারকে উপজেলায় এসে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো তারা কোনো অভিযোগ দেয় নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিলেটে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই বেড়েছে। এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯, যা গত বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। গত বছর পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ৬২।
এদিকে গত কয়েক বছর সিলেটে জিপিএ-৫ কম থাকলেও এ বছর রেকর্ড ৬ হাজার ৬৯৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন এক হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ফল প্রকাশ করেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. জাকির আহমদ। পরে বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ১৫৬ জন অংশ নিয়ে ৭১ হাজার ১২জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সিলেট বোর্ডের অধীনে এইচএসসির ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে ছাত্রীরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা। এবার ৪৯ হাজার ৩৫৪ ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪২ হাজার ৬৬১ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক শূন্য ৪৪। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৮২৯ জন।
এদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮৫। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩৩ হাজার ৮১১ জন ছাত্র। এর মধ্যে পাস করেছেন ২৮ হাজার ৩৫১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন দু’হাজার ৮৬৯ জন।
এবার এইচএসসি ও সমমানের সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। কিছু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিছু বিষয়ের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। বাতিল পরীক্ষাগুলোর নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং করে)। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে ফলাফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ড।
আরও পড়ুন:সবাইকে অটোপাস করিয়ে দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ যে শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হয়েছে তাদের ফলকে অবমূল্যায়ন করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
সোমবার গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার আসন্ন ফলাফলের বিষয়ে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে একটা দাবি উঠেছে শুনেছি যে, সবাইকে পাস করাতে হবে। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এবারের এইচএসসির বাকি পরীক্ষাগুলো নিতে পারলেই ভালো হতো উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘সচিবালয়ে একটা অনভিপ্রেত পরিস্থিতির মধ্যে কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক পরীক্ষাগুলো বাতিলের ঘোষণা দিতে হয়েছিল।
‘বোর্ড কর্তৃপক্ষ এখন আগের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে এইচএসসির যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাতিল হয়েছিল; তার সঙ্গে এসএসসি সম্পর্কিত বিষয়ের ফলাফল সমন্বয় করে চূড়ান্ত ফলাফল তৈরি করেছে বলে আমাকে জানিয়েছে।’
এসএসসিতে যারা কোনো বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হওয়ার কারণে পরবর্তী বছরে আবার পরীক্ষার সুযোগ নিয়েছে সে ফলাফলও নেয়া হয়েছে। কাজেই চূড়ান্ত ফলাফলে যারা উত্তীর্ণ হবে না, তারা বঞ্চিত হয়েছে বলা যাবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘সবাইকে এখন অটোপাস করিয়ে দিলে বিপুলভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ যে শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হয়েছে, তাদের ফলাফলকে অবমূল্যায়ন করা হবে। কাজেই এ ধরনের দাবির কোনো যৌক্তিকতা দেখি না।’
আরও পড়ুন:এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার। বেলা ১১টায় নিজ নিজ শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানগণ এই ফল প্রকাশ করবেন।
প্রতিবারের মতো এবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে।
এইচএসসির ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষাবোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে 2024 লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল চলে আসবে।
এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট www.dhakaeducationboard.gov.bd, www.educationboardresults.gov.bd এবং www.eduboardresults.gov.bd -এ Result কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের EIIN এন্ট্রি করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে। রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মাধ্যমেও রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে।
এবারের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে। যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে। বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা রয়েছে।
এ পদ্ধতিতে একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফল প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয় ৩০ জুন। এবার পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। আটদিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্থগিত পরীক্ষা না নিতে আন্দোলনে নামেন পরীক্ষার্থীদের অনেকে। এক পর্যায়ে আন্দোলনের মুখে বাতিল করা হয় পরবর্তী পরীক্ষাগুলো।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যলয়ে (শেকৃবি) প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ ইস্যুতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ দুটি পদে নিয়োগের জন্য পাঠানো সামারিতে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হিসেবে উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. বেলাল হোসেন এবং ট্রেজারার হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রফেসর আবুল বাশারের নাম প্রস্তাব করে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি বরাবর সামারি পাঠানো হয়েছে।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক এবং ছাত্র কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা উল্লিখিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে তাদেরকে নিয়োগে যোগ্যতার প্রশ্ন তুলেছেন।
তারা বলছেন, ড. বেলাল হোসেন ও আবুল বাশার বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে জুনিয়র শিক্ষক। তার ওপর আবুল বাশারের কোনো পিএইচডি ডিগ্রি নেই। তাছাড়া চাকরিতে যোগদানের সময় তার বয়স ৩০ বছরের বেশি থাকার অভিযোগ থাকায় বিষয়টি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংসের আওতায় ছিল।
এমন জুনিয়র শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একাধিক শিক্ষক। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শেকৃবি এলামনাই সদস্য সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘নীতিনির্ধারণী পদে এমন জুনিয়র ও যথাযথ যোগ্যতাহীন শিক্ষক নিয়োগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্ষেত্রেই অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারে।
‘অনেক যোগ্যতম শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও পিএইচডি না থাকা শিক্ষক বা এতটা জুনিয়র শিক্ষক তদবিরের জোরে এই সুযোগটা পাওয়াটা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিয়োগ ব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আশা করি এসব ক্ষেত্রে সিনিয়রিটি বিবেচনায় নিয়ে যোগ্যতম ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।’
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনসহ ১২ জন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার পিএসসি সচিবের কাছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
পিএসসির এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পিএসসির মোট সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। তাদের মধ্যে পদত্যাগ করেছেন ফয়েজ আহম্মদ, ও এন সিদ্দিকা খানম, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা, জাহিদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মুবিনা খোন্দকার, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, কে এম আলী আজম, মো. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মো. মাকছুদুর রহমান, ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খাতুন ও অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।
বাকি দুই সদস্য হেলালুদ্দিন আহমদ ও মোহা. শফিকুল ইসলাম পদত্যাগ করেননি।
এ বিষয়ে পিএসসি সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার যারা পদত্যাগপত্র জমা দেননি তারা আগামীকালের মধ্যে তা জমা দেবেন। যারা জমা দিয়েছেন তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে।
শনিবার পিএসসির সংস্কার নিয়ে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘এ সপ্তাহের মধ্যে পিএসসি সংস্কার করে চাকরি প্রত্যাশীদের চাকরির পরীক্ষাগুলো শুরু করতে হবে। যে তরুণ প্রজন্ম এই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক তাদের প্রায়োরিটির কথা ভুলে গেলে চলবে না।’
২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি সরকারের সাবেক সিনিয়র সচিব।
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মো. সোহরাব হোসাইন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ১৫ অক্টোবর। ওই দিন সকাল ১১টায় স্ব স্ব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানেরা এই ফল প্রকাশ করবেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার সোমবার বিকেলে বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে টেলিফোনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের কার্যক্রম উদ্বোধন করতেন। তবে এবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তা করছেন না। এবার স্ব স্ব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানরাই ফল প্রকাশ করবেন।’
চলতি বছরের ৩০ জুন সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। নয় হাজার ৪৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগরি বোর্ডের মোট ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন শিক্ষার্থী দুই হাজার ২৭৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন।
আট দিনের পরীক্ষা শেষে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আরও তিনবার পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
অবশেষে সব পরীক্ষা স্থগিত করে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচি প্রকাশ করা হয়। সে অনুযায়ী গত ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গত ২৪ আগস্ট এইচএসসির বাকি সব পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেদিন সচিবালয়ে কিছু শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত আবরার ফাহাদের নামে শের-এ-বাংলা হল প্রাঙ্গণে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতিফলক’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ১১টায় এই স্মৃতিফলকের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. বদরুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আবরার ফাহাদের বাবা ও তার পরিবারবর্গের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি যে আপনারা সন্তানকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কিন্তু আমরা তাকে রাখতে পারিনি। আল্লাহর কাছে একটিই দোয়া, ঘরে ঘরে যেন আবরার ফাহাদের মতো সন্তান আসে- যারা সত্য বলতে ভয় পাবে না, যারা দেশের জন্য লড়বে।’
তিনি বলেন, ‘আবরারের জীবন থেকে আমরা এই শিক্ষাই নেব। ভবিষ্যতে আর যেন কারও আবরারের মতো জীবন দিতে না হয়। এই স্মৃতিফলক তৈরি করতে যা কিছু প্রয়োজন শের-এ-বাংলা হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা কাজ করে যাব।’
দীর্ঘদিন ধরেই আবরার ফাহাদের নামে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্মৃতিফলক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে কমিটি গঠনের মাধ্যমে স্মৃতিফলকের নকশা নির্বাচন করে হল প্রাঙ্গণেই এই স্মৃতিফলক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়।
শেরেবাংলা হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার ঘোষণা দেয়া হয়।
এ সময় বুয়েটের ডিনবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ, বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন দপ্তর-পরিদপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, উপদেষ্টামণ্ডলী, হল প্রভোস্ট, সহকারী প্রভোস্টবৃন্দ ও শের-এ-বাংলা হল অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দসহ হলের ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য