ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্রভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ১০ মে। বৃহস্পতিবার ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার জানান, নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা কমিটির মিটিং শেষে সব ডিন ভর্তি বিজ্ঞপ্তির জন্য স্বাক্ষর করেন। এটি অনুমোদনের জন্য উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়। বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, ‘ক’ ইউনিটে রয়েছে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ ও জীববিজ্ঞান অনুষদ। এছাড়া ‘খ’ ইউনিটে কলা অনুষদ, আইন অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ; ‘গ’ ইউনিটে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ; ‘ঘ’ ইউনিটে ধর্মতত্ত্ব ও ইসলাম শিক্ষা অনুষদ এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব ছাত্র-ছাত্রী ২০২১-২২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং যাদের ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লিখিত যোগ্যতা থাকবে, কেবল তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। একইসঙ্গে ভর্তি নির্দেশিকায় উল্লেখ করা শর্ত অনুযায়ী কোটায় আবেদন করতে পারবেন।
‘ক’ ইউনিটে আবেদন ফি ৮৫০, ‘খ’ ইউনিটে ১০৫০, ‘গ’ ইউনিটে ৬০০ এবং ‘ঘ’ ইউনিটে ৫০০ টাকা। ১০ মে ভর্তি আবেদন শুরু হয়ে চলবে ২৭ মে পর্যন্ত। প্রতি ইউনিটে ৮০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। উত্তরপত্রে প্রতিটি ভুলের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে।
আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে যারা দেশের বাইরে অভিভাসন, চাকরি বা পড়ালেখা করতে যেতে চান, তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এলো ব্রিটিশ কাউন্সিল। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার এই পরীক্ষায় এতদিন কোনো একটি বিষয়ে আশানুরূপ ফল না আসলে আবার সব বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে হতো পরীক্ষার্থীদের। তবে সেই সমস্যার সমাধান করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এখন থেকে শোনা, পড়া, বলা ও লেখা- কোনো একটি বিভাগে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনে ব্যর্থ হলে শুধু ওই বিভাগের জন্য পরীক্ষা দিতে আবেদন করা যাবে। ওয়ান স্কিল রিটেক নামের এই পরীক্ষা ব্যবস্থা ভারত, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে চালু থাকলেও এতদিন সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীরা। এটি চালুর ফলে একদিকে যেমন কমবে খরচ, অন্যদিকে সব বিভাগে পরীক্ষার প্রস্তুতির ঝামেলা থেকেও মিলবে মুক্তি।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতি সেকশনের ফরম্যাট ও সময় স্বাভাবিক আইইএলটিএস পরীক্ষার মতোই থাকবে। তবে, বাকি তিনটি সেকশনের দক্ষতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা কাটিয়ে অনেকটা সময় বাঁচাতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে আইইএলটিএস অ্যাট দ্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘গ্রাহকদের ফিডব্যাক অনুযায়ী এই ওয়ান স্কিল রিটেক ফিচারটি চালু করা হয়েছে। আমরা জানি, সঠিক প্রস্তুতি এবং সহায়তার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা সেরা স্কোর অর্জন করতে পারবেন। তবুও যদি কেউ মনে করে থাকেন যে প্রথম চেষ্টায় ইংরেজি দক্ষতার সঠিক মূল্যায়ন পাননি, তারা ওয়ান স্কিল রিটেকের মাধ্যমে শুধু একটি স্কিলে পুনরায় পরীক্ষা দিতে পারবেন। আমাদের বিশ্বাস, এতে করে পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ান স্কিল রিটেক গ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো আবেদনকারীর মানের সঙ্গে আপস না করেও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি আরও সহজ করে তুলতে পারবেন। পরীক্ষার্থীদের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ নিয়ে আইইএলটিএস অংশীদাররা গর্বিত।’
আইইএলটিএস ওয়ান স্কিল রিটেক দেয়া পরীক্ষার্থীরা একটি দ্বিতীয় টেস্ট রিপোর্ট ফর্ম পাবেন, যা অভিবাসন ও পড়ালেখার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। অর্জনকৃত স্কোরের ভিত্তিতে পুরনো অথবা নতুন টেস্ট রিপোর্টের মধ্যে যেকোনোটাই বেছে নিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
মূল পরীক্ষার ৬০ দিনের মধ্যে আইইএলটিএস ওয়ান স্কিল রিটেক বুক করা যাবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশশা বলেন, ‘নতুন এ ফিচার যুক্ত করার ফলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইইএলটিএস টেস্ট এখন একমাত্র প্রধান হাই-স্টেকস টেস্ট, যার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের আইইএলটিএস পরীক্ষার্থীদের সেরা স্কোর অর্জনে সহায়তা করব। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহযোগিতা করে আমাদের প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করে তুলতে পেরে আমরা গর্বিত।’
আরও পড়ুন:জ্ঞানভিত্তিক পেশাদারিত্ব, ট্রেনিং এবং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগ, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করার অনন্য কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ট্রেইনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএসটিডি) কলকাতা চ্যাপ্টারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ রিজিওনাল কনফারেন্সে ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ভারতের কলকাতা শহরের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় এই কনফারেন্স।
১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত আইএসটিডি এশিয়ান সাবকন্টিনেন্টে প্রতি বছর বিভিন্ন কনফারেন্স আয়োজন করে আসছে। এ বছরের কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘লেভারেজিং সাসট্যানেবিলিটি থ্র টেকনোলজি ফর এজাইল অরগানাইজেশন”।
এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।
গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট রওশন আলি বুলবুল এবং তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়।
রওশন আলি বুলবুল বলেন, ‘আমরা বই পড়ার, শেখার ও শেখানোর যে আন্দোলন শুরু করেছি তা আমাদেরকে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে। ভালো কাজ তৃপ্তিদায়ক। আর তার জন্যে স্বীকৃতি পাওয়া আরও বেশি আনন্দের কারণ আমাদের ভালো কাজকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আইএসটিডিকে বিশেষ ধন্যবাদ।"
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশ সংগঠন ছিলো কনফারেন্সের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার।
এতে বাংলদেশ থেকে গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের ১৩ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সদস্যরা হলেন রওশন আলী বুলবুল, মোহাম্মাদ ইকরাম হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, শোয়েব মাহমুদ রিয়াদ, মো. এমরান হোসেন, মো. মামুনুর রশিদ, রাহিদুল ইসলাম, মোশতারী বেগম, সুজিত কুমার দাস ও ফারজানা কাদের সহ অনেকে।
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্যরা ব্যক্তিপর্যায়ে নিজেদের এবং প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির জন্যে এসব কনফারেন্সে নিয়মিতই অংশ নিয়ে থাকেন। সংগঠনটি ইতিমধ্যে তাদের বিষয়ভিত্তিক সরাসরি পাঠচক্রের ২২৮ তম সপ্তাহ শেষ করেছে।
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্যরা ব্যক্তিপর্যায়ে নিজেদের এবং প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির জন্যে এসব কনফারেন্সে নিয়মিতই অংশ নিয়ে থাকেন। সংগঠনটি ইতিমধ্যে তাদের বিষয়ভিত্তিক সরাসরি পাঠচক্রের ২২৮ তম সপ্তাহ শেষ করেছে।
দুইদিন ব্যাপী এই কনফারেন্সে প্রথমদিন মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রঞ্জন কুমার মহাপাত্র, এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর এন্ড হেড অব ইন্ডিয়ান অয়েল ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোলিয়াম ম্যানেজমেন্ট।
এছাড়াও কনফারেন্সে ৬ টি প্যানেল ডিসকাশন, ১০ টি পেপার প্রেজেনটেশন এবং স্পিরিচুয়ালিটি এন্ড ওয়েলনেস এর উপর ২ টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
প্যানেল আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- ফিউচার অফ ওয়ার্ক, ব্যালেন্সিং অটোমেশন এন্ড হিউমান ক্যাপিটাল, আনলিশিং দি পাওয়ার অফ হিউমান ক্যাপিটাল থ্র এনালাইটিক্স, দি চ্যালেঞ্জ অফ এডুকেটিং দি নেক্সট জেনারেশন অফ লিডার, মার্শালিং কাটিং এজ টেকনোলজি ফর টুমোরোস ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এসব আলোচনায় ২৪ জনের মতো অভিজ্ঞ এইচআর ব্যক্তিত্ব, স্পেশালিষ্ট এবং ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ছিলেন গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের উপদেষ্টা মোশাররফ হোসেন, প্রফেসর ড. ফরিদ আহমদ সোবহানি এবং ইউসুফ ইফতি।
মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনায় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দিক নির্দেশনা ও তথ্যভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ গ্রীন এইচ আর-এর সদস্যদের অনুপ্রাণিত করেছে যার মাধ্যমে তাঁরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কৌশলগত অবদান রাখতে পারবেন। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তথা দেশের মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনা আরো এগিয়ে যাবে। গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এই সম্মেলনকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরুর সময় বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অবস্থান নেন তারা। এই নেতা-কর্মীদের অবস্থান নেয়ার ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং উপাচার্য তার নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এর আগে রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইস-এর একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টা থেকে। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে প্রার্থীদের উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং নিয়োগ বোর্ড যাতে না বসে সে লক্ষ্যে উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী অবস্থান নেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক প্রার্থী জানান, নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। তারা যথাসময়ে উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষে বসেছিলেন। এরপর শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে বলেন, আজকে নিয়োগ বোর্ড বসবে না এবং তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তারপর থেকেই তারাা উপচার্য অফিসের বাইরে প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন।
নিয়োগ বোর্ডে বাধা প্রসঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলম গোলদার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী এমন কারো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ হোক তা আমরা চাই না৷ আমাদের দাবিটি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কয়েকবার জানানো হলেও তিনি তা আমলে নেননি। উপাচার্য স্যার আজকে আমাদের অপারগ হয়ে জানিয়েছেন, তিনি চান কিন্তু অনেকের চাপে তা সম্ভব হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘উপাচার্য বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী লোকদের শিক্ষক হিসেবে নেবেন না এবং তাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিতে কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই।’
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে নবনিযুক্ত প্রভাষকরা বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ দেয়া হয়নি৷ এ ঘটনার জের ধরে উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯ ব্যাচ, ৪২ ব্যাচ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী৷ তারা প্রত্যেকেই নিজ বর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে চতুর্থ ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিস্কৃত ও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এদিকে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিবার্য কারণবশত রোববারের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের তারিখ এখনো চূড়ান্ত নয়, চূড়ান্ত হলে এরপর জানিয়ে দেয়া হবে।
ইন্সটিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং-এর পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘প্রশাসন কাকে নিয়োগ দিবে সে বিষয়ে আমাদের কোনো মত নেই৷ সাধরণ শিক্ষার্থী নিয়োগ পেলে আমাদের সমস্যা নাই, কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী কেউ যেন নিয়োগ না হয়৷ এ ছাড়া নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বিষয়টি যেন প্রত্যাহার হয় সেটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী কারো নিয়োগ না দেয়ার দাবিকে আমরা সমর্থন করি৷ আমরা চাই না মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে আসুক।’
ছাত্রলীগের এ ধরনের বাধা ভবিষ্যতে নিয়োগ বোর্ডকে প্রভাবিত করবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ড কখনো প্রভাবিত হবে না। নিয়োগ বোর্ড নিয়ম মোতাবেক চলবে।’
আরও পড়ুন:জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছেন পাঠদানে। শিক্ষার্থীদের সফলতাই ছিল তার সাফল্য। শিক্ষকতার ৪০ বছর তিনি বাইসাইকেলেই যাতায়াত করেছেন স্কুলে।
এমন এক শিক্ষকের বিদায় ছিল বৃহস্পতিবার। চিরচেনা সেই ক্লাসে এখন আর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে আসবেন না তিনি।
প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা করলেন ব্যাপক আয়োজন। ফুলে সজ্জিত গাড়ি, সামনে মোটরসাইকেলের শোডাউন। হাত নাড়িয়ে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে ফিরছেন বাড়ি।
এতসব আয়োজন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের বিদায় উপলক্ষে।
৪০ বছরে শিক্ষকতার জীবনের ইতি টেনে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরেন শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি ও সাবেক শিক্ষার্থীরা অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় জানান জাতি গড়ার এ কারিগরকে।
ফুলে সজ্জিত গাড়িতে বিদায়ের আগে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্বশীল শিক্ষকতার প্রশংসা করেন অতিথিরা। স্কুল, ম্যানেজিং কমিটি, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী দেয়া হয় তাকে।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে নাঙ্গলকোটের টুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন আবদুল আউয়াল। ১৯৮৩ সালে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে।
উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাসুদুল হক বলেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী। এমন নম্র, ভদ্র ও জ্ঞানী মানুষ খুব কমই হয়। স্যারের বিদায়ে আমরা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি।’
বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিছ মিয়া বলেন, ‘তিনি আমার ভালো একজন সহকর্মী ছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছি ব্যতিক্রমভাবে তাকে বিদায় দিতে।’
বিদ্যালয় সভাপতি ডা. খায়রুল ইমরান অনি বলেন, ‘তিনি ভালো মানুষ। দায়িত্বের প্রতি ছিলেন আন্তরিক। তার পরবর্তী সময়গুলো ভালো কাটুক।’
৪০ বছর চাকরিজীবন শেষ করে বিদায় অনুভূতি জানাতে গিয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আলহাজ সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল বলেন, ‘এটি আমার জীবনের বড় পাওয়া। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি) বিজনেস ক্লাব-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মিট দ্য মার্কেটিং সুপারস্টার’।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের মার্কেটিং জগতের সুপারস্টার ও মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) ফাস্ট-মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ আলমগীর। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র অধ্যাপক মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক ও সিইউবির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর এস এম আরিফুজ্জামান।
সৈয়দ আলমগীর নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, উপস্থাপনা ও কারিগরি নৈপুণ্যসহ বিভিন্ন সফট স্কিল বা বিষয়গত পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান শুধু কাঠামোগত পাঠ্যসূচির মধ্য দিয়ে অর্জন সম্ভব নয়। এগুলো শিখতে হয় সারাজীবন জুড়ে এবং প্রতিনিয়ত ও প্রাত্যহিক জীবনযাপনের ভেতর দিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেনজীর রহমানের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে সিইউবির বিভিন্ন অনুষদ সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সিইউবি-র শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:বিয়ে করলেন অনলাইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘টেন মিনিট স্কুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক এবং একই স্কুলের জনপ্রিয় ইংরেজি শিক্ষক মুনজেরিন শহীদ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের মসজিদে তাদের আকদ সম্পন্ন হয়। আয়মান ও মুনজেরিন দুজনেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিয়ের শাড়িতে আয়মানের সঙ্গে হাতে হাত ধরা একটি ছবি পোস্ট করেছেন মুনজেরিন। তিনি লিখেছেন, আলহামদুল্লিাহ। আমি আমার তারকাকে পেয়েছি।
একই ছবি দিয়ে আয়মান লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! অনুভূতিটা অদ্ভুত।
এই দম্পতির বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সেনাকুঞ্জে। এরই মধ্যে আমন্ত্রণপত্রও দেয়া হয়েছে অতিথিদের।
অনেক দিন ধরে গুজব থাকলেও সম্প্রতি এই আয়মান আর মুনজেরিনের বিয়ের একটি দাওয়াতকার্ড ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক পর্যায়ে তাদের ঘনিষ্ঠজনরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ শেষ করে ২০১৫ সালে ‘টেন মিনিট স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন আয়মান। ফোর্বসের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা ৩০০ তরুণ উদ্যোক্তার একজন তিনি।
আর মুনজেরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান করে পরে বৃত্তি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন।
নওগাঁবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে জেলার এক জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর চার বছর পর ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এ সংক্রান্ত বিলের খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল-২০২৩’ পাস হয়। এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নওগাঁ শহরের পার্শ্ববর্তী দিঘলীর বিল, নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতড়ার বিল, মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটা (চৌমাশিয়া বাজার) এবং বদলগাছীর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন চারটি স্থান প্রাথমিকভাবে আলোচনায় আসে। তবে শহরের খুব কাছাকাছি নয়, আবার শহর থেকে খুব দূরেও নয় এমন স্থান নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয় সে সময়।
সে হিসেবে দিঘলীর বিলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হলে নওগাঁ শহরের ওপর চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। আর ছাতড়ার বিল সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ততোটা উন্নত না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়বেন। তবে কোথায় হবে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়’, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি নওগাঁর নওহাটায় (চৌমাশিয়া বাজার) স্থাপনের দাবিতে শোভাযাত্রা হয়েছে। সম্প্রতি নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের মহাদেবপুর উপজেলার চৌমাশিয়া বাজারে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘হেল্প লাইন, হ্যালো নওগাঁ’ এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
উপজেলার নওহাটা মোড়ে স্থানীয় সচেতন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দুই শতাধিক মানুষ এই আয়োজনে অংশ নেয়। পরে তারা শোভাযাত্রা বের করে।
এ ছাড়া নওগাঁ শহরের আশপাশে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ঠিকানা শেষ পর্যন্ত ঠিক কোথায় হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাটানি।
জেলার মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটা মোড় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন যৌক্তিক স্থান মনে করেন বলিহার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবু নাছের।
তিনি বলেন, ‘চৌমাশিয়া বাজারটি শহরের খুব কাছাকাছি নয়, আবার শহর থেকে খুব দূরেও নয়। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে। নওহাটা মোড়ের ওপর দিয়ে বিভাগীয় শহর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ নওগাঁর সাতটি উপজেলায় যাওয়া যায়।
‘পার্শ্ববর্তী সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা হবে। নওহাটা বাজারের পাশে প্রায় ৩০০ একর খাস জমি আছে। এখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করলে সরকারের রাজস্ব খাত থেকে জমি অধিগ্রহণের খরচ অনেকাংশেই কমে যাবে।’
সবশেষ যৌক্তিক স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। বুধবার দুপুরে নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে ‘মুভমেন্ট ফর ডেভলপমেন্ট অফ নওগাঁ’র উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মুভমেন্ট ফর ডেভলপমেন্ট অফ নওগাঁর আহ্বায়ক শফিকুর রহমান মামুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধা, খণ্ডকালীন আয়ের উৎস, শিক্ষার পরিবেশ ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা থাকবে, এমন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন। কিন্তু একটি মহল ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্বার্থে জেলা শহরের বাইরে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের চেষ্টা করছে। শিক্ষার জন্য সেখানে উপযুক্ত জায়গা নয়।
‘ছাত্রদের সুবিধার কথা তাদের মাথায় নেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে তারা জমি কিনে ব্যবসা করবেন। অবিবেচকের মতো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। এর ব্যত্যয় হলে কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আমরা জেলা শহরের খুব কাছেই যৌক্তিক স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় চাই। এটাই আমাদের প্রাণের দাবি।’
নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, ‘অষ্টম শতাব্দীর পর একবিংশ শতাব্দীতে আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় পেতে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য একটি গর্বের বিষয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই জেলার ছেলে-মেয়েরা বাইরের জেলায় গিয়ে পড়াশোনা করাটা সত্যিই কষ্টকর ছিল। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে জেলাবাসীর জন্য সুবিধা হবে।
‘এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করা যাবে। কৃষিপ্রধান এই জেলা ধান, আম ও সবজির জেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব নিয়ে গবেষণা করা হলে আর্থ-সামাজিক দিক দিয়েও উত্তরের এই জনপদ এগিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সভ্যতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে এগিয়ে যাবে। আমাদের আরও বেশি মানোন্নয়ন হবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরিসীম প্রয়োজন আছে, যা অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু অনেক পরে হলেও তা হচ্ছে। তবে এমন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় হোক যাতে করে সবার জন্যই সুবিধা হয়।’
সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচনের ব্যাপারে এখনও নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পেলে ইউজিসির কমিটি গঠনের মাধ্যমে পরিত্যক্ত অথবা এক ফসলি জমি নির্ধারণ করা হবে। নওগাঁবাসীর সার্বিক উন্নয়ন এবং শিক্ষা ও গবেষণার উপযোগী পরিবেশসহ সার্বিক বিষয় দেখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘যতটুকু শুনেছি, নওগাঁর স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিরা তাদের পছন্দের জায়গা নির্বাচন করে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তাদের মাঝে স্থান নির্বাচনের ব্যাপারে সমঝোতা না হলে সরকার স্থানীয় প্রশাসন অথবা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থান নির্বাচনের দায়িত্ব দিতে পারে। শিক্ষার্থীদের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, খাদ্যদ্রব্য সব বিবেচনায় নিয়ে স্থান নির্বাচন করা উচিত বলে মনে করছি।’
মন্তব্য