× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

শিক্ষা
DU Vice Chancellor urges people to visit Shaheed Minar following hygiene rules
google_news print-icon

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহীদ মিনারে যাওয়ার আহ্বান ঢাবি উপাচার্যের

স্বাস্থ্যবিধি-মেনে-শহীদ-মিনারে-যাওয়ার-আহ্বান-ঢাবি-উপাচার্যের-
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানসহ অতিথিরা। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘করোনার সময় প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে একজন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারতেন। এবার কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে সুষ্ঠুভাবে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানানো হলো।’

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তিনি।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘করোনার সময় প্রতিটি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তি পর্যায়ে শহীদ মিনারের বেদিতে একজন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারতেন। এবার কোনো সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়নি।

‘তবে সুষ্ঠুভাবে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ জানানো হলো।’

তিনি বলেন, যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে এই দিবস পালনের জন্য বরাবরের মতো এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি এবং বিভিন্ন উপ-কমিটি নানাবিধ দায়িত্ব পালন পালন করছে।

উপাচার্য জানান, রাষ্ট্রাচার অনুযায়ী একুশের প্রথম প্রহরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিমূল প্রস্তুত করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং যথাসময়েই তা সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদীতে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা।

এরপর পর্যায়ক্রমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন তিন বাহিনীর প্রধান, ভাষাসৈনিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, অনুষদের ডিন ও হলের প্রাধ্যক্ষরা।

রোড ম্যাপ সম্পর্কে বলা, সর্বস্তরের জনসাধারণ পলাশী মোড় হয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ও জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে শহীদ মিনারে যাবেন। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে চাঁনখারপুল হয়ে শুধু প্রস্থান করা যাবে, শীহদ মিনারের দিকে আসা যাবে না।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আজিমপুর কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য একটি রুট-ম্যাপও দেয়া হয়েছে। রুট- ম্যাপ যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য সবা প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও একুশে উদ্যাপনে সার্বিক ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে।

২১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ছয়টায় উপাচার্যের নেতৃত্বে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থান এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গমন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

সংবাদ সম্মলেন উপাচার্য বলেন, ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সঙ্গে অমর একুশে পালনের লক্ষ্যে শহীদ মিনার এলাকায় কোনো মিছিল বা সমাবেশ করা যাবে না এবং শহীদ মিনার এলাকায় ব্যানার, পোস্টার বা ছবি টাঙানো যাবে না। প্রবেশপথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিএনসিসি, রেড ক্রিসেন্ট, রোভার স্কাউটস, রেঞ্জার ও স্বেচ্ছাসেবক বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির নেয়া সব কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সব সদস্য, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র‍্যাব, অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং গণমাধ্যমসহ সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছেন উপাচার্য আখতারুজ্জামান।

অমর একুশ উদযাপনের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে গঠিত কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, যুগ্ম-সমন্বয়কারী অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান ও অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা এবং বিভিন্ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
ঢাবি ও অধিভুক্ত কলেজের ১১৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সুপারিশ
অসাম্প্রদায়িক চেতনার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নেতাজি ও বঙ্গবন্ধু: ঢাবি উপাচার্য

মন্তব্য

আরও পড়ুন

শিক্ষা
Banks dont give money to entrepreneurs even if they give loans to buy Mercedes Naufel

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল শনিবার চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

বর্তমানে পুঁজির অভাবে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন বলে মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়া যে কী কষ্ট, পুঁজি সংগ্রহ করা যে কী কঠিন! আমি এই জেনারেশনের অংশ হিসেবে জানি, ব্যাংক আমাদের ৫ লাখ টাকাও লোন দেয় না। এটাই বাস্তবতা। এখন আমি যদি সারাদিন আপনাদের বলি উদ্যোক্তা হন, সেক্ষেত্রে ছাত্র হিসেবে আপনাকে কে টাকা দেবে?’

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যার রেঞ্জ রোভার গাড়ি আছে তাকে মার্সিডিজ কেনার জন্য ব্যাংক টাকা দেবে। কিন্তু ব্যাংক উদ্যোক্তাদের কোনো টাকা পয়সা দেবে না।’

শনিবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে একসময় ১০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডও দেয়নি ব্র্যাক ব্যাংক। তারপর যখন সরকারের মন্ত্রী হয়েছি, তখন ২০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডের জন্য তারা নিজেরাই রাজি হয়েছে। কারণ তখন তারা জানে, আমি যদি ঋণখেলাপী হই, নির্বাচন করতে পারব না কখনও। তাই তারা বিনা সিকিউরিটিতে ক্রেডিট কার্ড দিতে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে, আমার জনগণের যে সঞ্চিত অর্থ, বিনিয়োগের নামে তা গুটিকয়েক ব্যাবসায়ীর হাতে তুলে দিচ্ছি। সাধারণ উদ্যোক্তারা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। এখন আমি ৫ লাখ টাকাই পেলাম না, ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করব কোথা থেকে? তাই আমি বলব, ওই পুঁজির দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। আমরা যদি দক্ষ হই, তবেই আত্মনির্ভরতা সম্ভব।’

এ সময় ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করার একটা আন্তর্জাতিক প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানে। অনেকে অর্থ খরচ করে সেই উচ্চশিক্ষা নেয়ার জন্য, সেটি যেভাবেই হোক।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইংরেজি ভাষাভাষী দেশ নিজেরা একটা র‍্যাঙ্ক টেবিল বানিয়েছে নিজেদের কিছু পত্রিকাকে দিয়ে। সেই র‍্যাঙ্কিং তারাই করে, সেখানে ইংরেজি ভাষার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুব কম স্থান দেয় তারা। সেখানে পড়তে গেলে আমাদের শতকোটি টাকা ব্যয় হয়ে যায়। তারা মনে করে, তারা একটা উচ্চশিক্ষার বাজার সৃষ্টি করেছে।’

শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনে দিকেও জোর দেয়ার তাগিদ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাখ লাখ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হচ্ছে প্রতিবছর। বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে শুধু দেশের অর্থনীতির জন্য প্রস্তুত করার কথা নয়, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তৈরি করার কথা। গ্লোবাল সিটিজেন হওয়ার জন্য মানসিকতা থাকতে হবে সবার। আমাদের দৃষ্টিসীমা সেভাবেই নির্ধারণ করতে হবে। এই ভূখণ্ডে আমি নিজেকে আবদ্ধ রাখব না, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে সারা বিশ্ব আমার কর্মক্ষেত্র হবে। সেখানে আমি যেন কাজ করতে পারি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যথেষ্ট নয়।’

‘যথেষ্ট নয় এজন্য যে, আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

এ সময় সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘স্ট্যানফোর্ডে স্টিভ জবস স্নাতকদের উদ্দেশে বলেছিলেন- অন্যকে নকল করতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত এই জবন নষ্ট করো না। তোমার মনে যা আসে তাই করবে। তোমার বিবেক যা বলবে তাই করবে। তোমার মস্তিষ্ক যা চিন্তা করে তাই করবে। আজকের স্নাতকদের প্রতিও আমার একই আহ্বান।’

আরও পড়ুন:
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ২২ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ

মন্তব্য

শিক্ষা
The administration does not know the need to install AC in the workplace
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন এসিতে ভরে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও বিভিন্ন অফিস কক্ষ। ছবি: নিউজবাংলা
জবির প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বেড়েই চলছে অনুমোদনহীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই চলছে এসি লাগানোর মহোৎসব। পরিকল্পনা ছাড়াই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসির ব্যবহারে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। এতে বাড়ছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।

সরকারি নিয়মানুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইন্সটিটিউট পরিচালক, দপ্তর প্রধান ও এর সমমানের পদধারীদের অফিস কক্ষে এসি ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে। তবে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জবির বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষ, শ্রেণিকক্ষ, এমনকি বিভিন্ন দপ্তরেও এসি লাগানো হচ্ছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো এসব এসির কারণে তৈরি হয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মচারী বলেন, ‘বিভাগের প্রয়োজনেই এসি লাগানো হয়ে থাকে। বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে কোম্পানি থেকে সরাসরি এসিগুলো কেনা হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আর রিকুইজিশন দেয়া হয় না। ফলে প্রকৌশল দপ্তরও বিষয়গুলো জানে না।

‘কোম্পানির লোকজনই এসে এসিগুলো লাগিয়ে দিয়ে যায়। কোনো সমস্যা হলে বা এসি নষ্ট হলে কোম্পানির লোক বা বাইরে থেকে এসির মিস্ত্রি এনে সারানো হয়।’

তবে বিষয়টি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কনসার্নেই হয়ে থাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষে ও শ্রেণিকক্ষে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এসি লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস কক্ষ, সেমিনার কক্ষসহ অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষেও এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকের ব্যক্তিগত রুমেও চলছে এসি।

এ ছাড়াও গণিত বিভাগের অফিস কক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষ, সেমিনার কক্ষ ও শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। মনোবিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের সেমিনার কক্ষসহ শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের শ্রেণিকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীরা না থাকার পরও এসি, লাইট, ফ্যান চালু থাকতে দেখা যায় প্রতিনিয়তই। ছুটির দিন কিংবা অফ টাইমে শ্রেণিকক্ষগুলোতে বিনা কারণে লাইট-ফ্যান জ্বলতে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই এক হাজার টনের বেশি এসি রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া গণিত ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন মিলিয়ে প্রায় চারশ’ টনের বেশি এসি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই একটি মাত্র সাব-স্টেশন থেকে পুরো ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। সেটির কার্যক্ষমতা কমতে কমতে বর্তমানে প্রায় ১২০০ কেভিতে নেমেছে, যা কোনোভাবেই ভবনগুলো বৈদ্যুতিক লোড নিতে পারত না। পরে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের জন্য সাব-স্টেশনটি ২০০০ কেভি ধারণক্ষমতার করা হয়েছে।

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসব এসি ব্যবহারে দৈনিক যে পরিমাণ বিদুৎ খরচ হয়, তার যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে নতুন স্থাপনকৃত বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনটিও। ফলে কিছুদিন পরপরই ক্যাম্পাসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে চলতি বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবলগুলোর আংশিক পরিবর্তন করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন
কোলাজ: নিউজবাংলা

এর আগে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন লাইন ও সাব-স্টেশনের সঙ্গে ডরমিটরির লাইনের তারের লুজ কানেকশনের জন্য তা ঝলসে গিয়ে পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়৷ লাইনের তার জোড়া দেয়ার কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসেই তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের লোড নিতে না পেরে চারবার শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে ও দপ্তরে ত্রুটিপূর্ণ ও ভাঙা এসি এবং অ্যাডজাস্ট ফ্যানের কারণে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবারাহের ক্যাবলগুলো বেশ পুরনো হয়ে যাওয়ায় সেগুলো থেকে নিয়মিত শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বর্ষাকালে অল্প বৃষ্টিতে এই ক্যাবলগুলোতে আগুন ধরে যেতে দেখা যায়। এতে তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়।

এদিকে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই ৫টি ত্রুটিপূর্ণ এসি ও ১০টির অধিক ভাঙা অ্যাডজাস্ট ফ্যান রয়েছে। এতে যেমন বেড়েছে বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিমাণ, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা নয়, অনুমোদনহীন এসব এসি ব্যবহারে প্রতি মাসে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলও গচ্চা দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকার বিদুৎ বিল পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত মাত্রায় অনুমোদনহীন এসির ব্যবহারের ফলে এর পরের তিন মাসে তা প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে সতেরো লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ২০২২ সালের ৪ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসি, লাইট, ফ্যান না চালানোর নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না কেউই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এসি লাগিয়েছে। এতে তারগুলোর ওপর লোড আরও বেড়েছে। যার ফলে শর্ট সার্কিটসহ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার পরিমাণও বেড়েছে। আমরা বারবার বলার পরও তারা শোনেনি। এখন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানানো হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে
জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা জবি ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
দরজা ভেঙে জবি ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

শিক্ষা
The administration is silent on the beating of the Chhatra League leader in the torture cell of Jabi Hall

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর হলের কক্ষ দখল করে প্রতাপ চালিয়ে যাচ্ছেন আরমান খান যুব। ছবি: নিউজবাংলা
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনের ওপর এই নির্যাতন চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। একইসঙ্গে চালাচ্ছেন মাদকের কারবার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে এবার নির্যাতন চালানো হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে। প্রহারের পর ভুক্তভোগীর শরীরে মদ ঢেলে তাকে মাদকাসক্ত সাজানোরও চেষ্টা করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা এই নির্যাতন চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। চালিয়ে যাচ্ছেন মাদকের কারবার।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনকে ক্যাম্পাসে মওলানা ভাসানী হলে নিজের ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে দফায় দফায় মারধরের পাশাপাশি ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। একইসঙ্গে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে ঘটনা প্রকাশ না করার হুমকি দেয়া হয়।

বুধবার ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতা। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে ফল হয়েছে উল্টো। অভিযুক্তদের দ্বারা ম্যানেজ হয়ে গেছেন প্রক্টর।’

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে প্রক্টরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে ফোন ধরে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর থেকে তিনি আর সাড়া দেননি।

ভুক্তভোগী জাহিদ হাসান ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের বাসিন্দা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ইমন। ছবি: নিউজবাংলা

বুধবার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী (২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ) আরমান খান যুব ছাড়াও রয়েছেন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের আরাফাত, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের তুষণ ও অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তি।

এদের মধ্যে আরমান খান যুব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ক্যাম্পাসে ‘র‌্যাগের রাজা’ নামে তার পরিচিতি রয়েছে। কয়েক বছর আগে ছাত্রত্ব শেষ হলেও তিনি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের একটি কক্ষ দখল করে রেখেছেন।

আরমান খান যুব’র বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের সিন্ডিকেট ও মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ‘টর্চার সেল’ পরিচালনার অভিযোগ বেশ পুরনো। মাদক কারবারি ও বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করার ঘটনাও অনেকের মুখে মুখে।

জাহিদ হাসান ইমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘১৩ আগস্ট সাভারের রেডিও কলোনির বউবাজার এলাকার ভাড়া বাসার মালিকের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমার মনোমালিন্য হয়। ওই ঘটনার জের ধরে আমাকে ফোন দিয়ে আরমান খান যুবর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন বাড়ির মালিকের পূর্বপরিচিত আরাফাত।

‘আমি যুবর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে আমাকে মওলানা ভাসানী হলের সামনে যেতে বলা হয়। রাত ১২টার দিকে সেখানে গেলে আমাকে মোটরসাইকেল হলের ভেতরে রেখে ১২৬ নম্বর কক্ষে যেতে বলেন যুব।’

ইমন বলেন, ‘আমি কক্ষে ঢুকতেই ঘুষি মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দেন যুব। আমি যাতে চিৎকার করতে না পারি সেজন্য কাপড় দিয়ে আমার মুখ বেঁধে ফেলেন আরাফাত। পরে যুব ও আরাফাতসহ সেখানে উপস্থিত অন্যরা আমাকে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন।

‘আমাকে এক দফা মারধরের পর ইয়াবা সেবন করেন যুব। পরে সবাই মিলে আবারও অমানুষিক নির্যাতন শুরু করেন। এছাড়া আমার শরীরে মদ ঢেলে উল্লাস করতে থাকেন ওরা।’

ইমন জানান, দফায় নির্যাতনের পর রাত ৩টার দিকে তাকে হলের দ্বিতীয় তলার ২২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাকে পরিষ্কার-পরিছন্ন হয়ে আসতে বলেন তুষণ। এরপর ‘ইমন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেন। এমনকি মোবাইল ফোনে তার ভিডিও ধারণ করে রাখেন তুষণ। পরে তাকে ফের ১২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় মারধরের ঘটনা কাউকে না জানাতে ইমনের পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেন অভিযুক্তরা। কিছুক্ষণ পর আকতারুজ্জামান সোহেল ওই কক্ষে গিয়ে ইমনকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেও ইমনকে আশ্বাস দেন।

ভুক্তভোগী ইমন বলেন, ‘ঘটনার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে বিষয়টির ব্যাপারে আগে থেকে অবহিত করেছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পরদিন সকালে প্রক্টরের বাসায় যাই। তবে সেখানে গিয়ে দেখি যে আকতারুজ্জামান সোহেল প্রক্টরের বাসায় অবস্থান করছেন।

‘আমাকে ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে (গেস্টরুম) গিয়ে বসতে বলেন তিনি। এ অবস্থায় প্রক্টরের ওপর ভরসা না পেয়ে আমি চলে আসি। এরপর মারধরের বিষয়টি আল নাহিয়ান খান জয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি।’

ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘মারধর-পরবর্তী নানা ঘটনায় প্রক্টরের ওপর আমার ভরসা উঠে গেছে। নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেইনি। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি। তবুও ঘটনার বিচার করতে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বিচার না পেয়ে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছি। কারণ ওই রাতের ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরমান খান যুব ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুসাইন মো. সায়েম বলেন, ‘হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে সাবেক শিক্ষার্থীরা থাকে, বিষয়টি আমি জানি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে ফোন করলে তিনি ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন:
জাবিতে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা, অবরুদ্ধ উপাচার্য

মন্তব্য

শিক্ষা
There will be no electricity for two consecutive days

টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে

টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক। ফাইল ছবি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কিট মেরামত এবং ১৩ তলা-বিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবনের এমডিবিতে বৈদ্যুতিক কাজের প্রেক্ষিতে বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে।

সাব-স্টেশন লাইনের ক্যাবল পরিবর্তনসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য আগামী ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বুধবার বিকেলে নিউজবাংলাকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে তার স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কিট মেরামত এবং ১৩ তলা-বিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবনের এমডিবিতে বৈদ্যুতিক কাজের প্রেক্ষিতে বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে।

বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেনারেটরের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বিভিন্ন ল্যাব কক্ষ, ইন্টারনেট সার্ভার রুমসহ কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে। ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেও হলে তা চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ওভারহেড লাইনের বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তনসহ অন্যান্য কাজের জন্য চলতি বছরের ২১ ও ২৮ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন:
জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
প্রাচীর নির্মাণে ধীরগতিতে অপেক্ষা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের
বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা জবি ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

মন্তব্য

শিক্ষা
Legal Notice Says Discriminatory Provisions Without Halls for Married Pregnant Students

জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ

জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটিই জবির একমাত্র ছাত্রী হল। ফাইল ছবি
লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘আমি কারোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে না, সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখার পর আমি নিজে থেকে এই নোটিশ পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালাও যদি এই রকম কিছু থেকে থাকে, তাহলে সেই বিধিমালার সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংঘর্ষিক। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বা বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশটি ‘বৈষম্যমূলক বিধান’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোলায়মান তুষার বুধবার এ নোটিশ ডাক ও ইমেইলে করে পাঠিয়েছেন।

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বিবাহিত ও গর্ভবতী হওয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা-২০২১ এর ১৭ নং ধারা মোতাবেক বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বিধায় তারা অতি দ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায় তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই মর্মে গত ২৫ সেপ্টেম্বর হলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উক্ত বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।’

নোটিশে সোলায়মান তুষার বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা অন্য স্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন। বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের জন্য এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে অন্তরায় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘নোটিশ প্রাপ্তির পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।’

এ বিষয়ে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘আমি কারোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে না, সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখার পর আমি নিজে থেকে এই নোটিশ পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালাও যদি এই রকম কিছু থেকে থাকে তাহলে সেই বিধিমালার সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংঘর্ষিক। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বা বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়।’

জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘আমি এখনও হাতে নোটিশ পাইনি। আর হল থেকে যে নোটিশ দেয়া হয়ছে, তা বিধিমালায় রয়েছে। এর বাইরে তো কিছু করিনি।

‌‘আমি বিবাহিত কিংবা গর্ভবতী যারা তাদের তো সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু আইনি নোটিশ কেন দেয়া হবে বুঝলাম না। যারা বিবাহিত আছে তাদেরকে আবারও নোটিশ দিয়ে হল থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। আর বিষয়টি (আইনি নোটিশ) আমাদের মধ্য থেকেই কেউ করেছে। আমি খুঁজে বের করব।’

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের অতি দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। একই সঙ্গে মাস্টার্সের ফল প্রকাশ হওয়া আবাসিক ছাত্রীদেরও হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ও চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন:
বাসে র‌্যাগিং ঠেকাতে জবি প্রশাসনের অভিনব নির্দেশনা
বিয়ের ২৭ বছর পর আলাদা হওয়ার কথা জানালেন হিউ জ্যাকম্যান
সিনিয়রদের উৎপাতের ভিডিও করায় জাবি শিক্ষার্থীকে মারধর
জবির সেই ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি
জবি’র শিক্ষার্থী না হয়েও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা

মন্তব্য

শিক্ষা
Call for action against those involved in the torture of journalists in Chabi within 24 hours

চবিতে সাংবাদিক নির্যাতন: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

চবিতে সাংবাদিক নির্যাতন: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম মঙ্গলবার চবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন বক্তারা। ছবি: নিউজবাংলা
সিইউজেএন-এর সভাপতি ও দৈনিক আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘এ ক্যাম্পাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ব্যবহার করে ছাত্রলীগ নৈরাজ্য চালাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও জয় বাংলা স্লোগানকে ব্যবহার করে নিয়োগ থেকে শুরু করে সকল অনিয়মে এদের হাত রয়েছে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্য ও দৈনিক প্রথম আলোর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোশাররফ শাহ ও সম্প্রতি একাধিক সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চবিসাস ও চিটাগং ইউনিভার্সিটি এক্স জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (সিইউজেএন)।

মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নেতৃবৃন্দ, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

সাংবাদিকদের ওপর বারবার হামলার পেছনে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বক্তারা। এসময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোরের ডেপুটি এডিটর তপন চক্রবর্তী চবি উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কেন তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকবান্ধব মানুষ। উনি কখনও এ ধরনের ঘটনা মেনে নেবেন না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারেন, আমরা প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। একদিনের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’

চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীরা সবসময় হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। মোশাররফের ওপর হামলা একেবারেই পরিকল্পিত। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় নামকাওয়াস্তে শাস্তি হয়েছে। আপনি (উপাচার্য) যদি শাস্তি দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমরা বুঝে নেব, আপনি তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।’

সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘আজকে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে দাঁড়াতে হয়েছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা রাষ্ট্র- সবার জন্য বিব্রতকর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কাজ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। মোশাররফ শাহের ওপর যে হামলা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনার যাতে আর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই প্রত্যাশা করি।’

চবিতে সাংবাদিক নির্যাতন: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

সিইউজেএন-এর সভাপতি ও দৈনিক আমাদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘এ ক্যাম্পাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে ব্যবহার করে ছাত্রলীগ নৈরাজ্য চালাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও জয় বাংলা স্লোগানকে ব্যবহার করে নিয়োগ থেকে শুরু করে সকল অনিয়মে এদের হাত রয়েছে। শিবির থেকে ছাত্রলীগ- কারও চরিত্র পরিবর্তন হয়নি। আজকে যারা ছাত্রলীগের নামে বিভিন্ন নৈরাজ্য চালাচ্ছে, খবর নিয়ে দেখেন, এরা আগে কোন দলের অনুসারী ছিল।’

সিইউজেএন-এর সাধারণ সম্পাদক, চবিসাসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সবুর শুভ বলেন, ‘গত দুই বছরে চবিতে সাংবাদিকদের ওপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মানবিক আচরণ পেয়েছে।’

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ম. শামছুল ইসলাম বলেন, আজকে আমাদের সহকর্মী মোশাররফ ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। যা কখনোই আমরা আশা করিনি। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো ব্যবস্থা নেয়। অথচ যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাদের বিভাগে শাস্তির নোটিশ যায় না। তারা অনায়াসে পরীক্ষায় অংশ নেন। আজকে বহিষ্কৃত, অছাত্ররা হলে অবস্থান করছে। এতে করে আপনাদের ব্যর্থতা সুস্পষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, আপনারা যদি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চান, তাহলে হতে পারেন। আপনার এ চেয়ার কিছুদিন পরে থাকবে না। কিন্তু আজকে যারা ক্যাম্পাস সাংবাদিক, তারা আরও বড় বড় সাংবাদিক হবে। তারা আপনাদের ছাড়বে না।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক খন্দকার আলী আর রাজি বলেন, ‘মারজান আক্তার, দোস্ত মোহাম্মদ, মোশাররফ শাহ- একে একে আমাদের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। প্রশাসন ন্যূনতম দায়িত্ব পালন করতে পারেনি।’

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ডেইলি স্টারের ব্যুরো প্রধান শিমুল নজরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের দলীয়করণ এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, উনারাও কথা বলতে এবং ব্যবস্থা নিতে সাহস পান না। খুব বেশিদিন নেই যখন আপনাদের ওপরও তারা এমন হামলা চালাতে দ্বিধা করবে না। কারণ আপনারা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য এ উচ্ছৃঙ্খলতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। একদিন তারা আপনাদেরও মাথা ভেঙে দেবে। সেদিনও আমরা লিখব।’

সিউজেএনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সমকালের বিভাগীয় সম্পাদক সারোয়ার সুমন বলেন, ‘এ ক্যাম্পাসে আমাদের আবেগ জড়িয়ে আছে। এখানে আমরাও সাংবাদিকতা করেছি।’

উপাচার্যের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি ছাত্রলীগের মাথা না হয়ে সকল শিক্ষার্থীর মাথা হন। এমন শাস্তির ব্যবস্থা করুন যাতে ভবিষ্যতে কেউ সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলার সাহস না পায়।’

সমাপনী বক্তব্যে চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘যারা মোশাররফ শাহের রক্ত ঝরিয়েছে, তারা দেশের সকল সাংবাদিকদের রক্ত ঝরিয়েছে। সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে। আজকে সাংবাদিকরাই যদি নিরাপদ না হন, তাহলে এখানে শিক্ষার্থীরা কতটুকু নিরাপদ? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই- প্রতিটি ঘটনায় শুধুমাত্র আশ্বস্ত করেছেন, অথচ পরবর্তীতে বিচারের নামে প্রহসন করেছেন।’

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক শাহাব উদ্দিন নিপু, সিইউজেএন-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান, চবিসাসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নবাব আব্দুর রহিম ও সদস্য মারজান আক্তার।

আরও পড়ুন:
অছাত্রদের চবির হল ত্যাগের নির্দেশ
সজ্জন ও সচ্চরিত্রবানদের দিয়ে হবে চবি ছাত্রলীগের কমিটি : ইনান
চবির আরও দুই হলে তল্লাশি, বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
জাবিতে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা, অবরুদ্ধ উপাচার্য
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

মন্তব্য

শিক্ষা
The one year project of Jabis new campus boundary wall has not been completed in two years
কেরানীগঞ্জে জবি’র নতুন ক্যাম্পাস

প্রাচীর নির্মাণে ধীরগতিতে অপেক্ষা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের

প্রাচীর নির্মাণে ধীরগতিতে অপেক্ষা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের
প্রকল্পের মেয়াদের দ্বিগুণ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও জবির নতুন ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রাচীরের কাজ সম্পন্ন হয়নি। ছবি: নিউজবাংলা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার চিঠি দিয়ে আসছি। আমরা ঠিকাদারকে ডেকে পাঠাব। তারা যাতে দ্রুত কাজ শেষ করে সেজন্য আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব।’

‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় ঢাকার কেরাণীগঞ্জের তেঘোরিয়া ইউনিয়নে ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় ২০১৮ সালে। এর তিন বছর পর প্রায় ৫ হাজার মিটার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংডম গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চুক্তির কয়েকদিন পর থেকেই শুরু হয় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ। প্রকল্পের মেয়াদ মাত্র এক বছর হলেও তা পেরিয়ে গেছে দুই বছর। প্রকল্পের মেয়াদের দ্বিগুণ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নানা জটিলতায় সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় আটকে আছে অন্যান্য প্রকল্পের কাজও। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নতুন ক্যাম্পাস পেতে অপেক্ষা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কেরাণীগঞ্জের তেঘোরিয়া ইউনিয়নে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রচীর নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। ক্যাম্পাসের পূর্ব পাশে মুজাহিদনগরের প্রবেশ মুখে জমি অধিগ্রহণ এবং সরকারি গাছ কাটা সংক্রান্ত জটিলতায় এখনও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের প্রাথমিক কাজও শুরু করতে পারেনি। একই অবস্থা ক্যাম্পাসের দক্ষিণ পাশেও।

পদ্মা সেতু রেললাইনের পাশের এই জায়গায় অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ও বড় বড় পুকুর থাকায় সিসি স্ট্রাকচারের কাজও শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উত্তর পাশে মুজাহিদ নগরে প্রবেশের শুরুতেও এখনও শেষ হয়নি প্রাথমিক কাজ। পশ্চিম পাশে অধিকাংশ জায়গায় কাজ শেষ হলেও রাস্তার জন্য অনেক জায়গায় সীমানাপ্রচীর নির্মাণের কাজ বাদ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেক জায়গায় সিসি স্ট্রাকচারের কাজ শেষ হলেও এখনও ইট গাঁথুনির কাজ শেষ হয়নি।

প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানান, পৌনে পাঁচ হাজার মিটার সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য ৩০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের মেয়াদ ছিল এক বছর। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি হওয়ায় এর মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। কিন্তু এক বছর মেয়াদি এই প্রকল্প দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মাত্র দুই-তৃতীয়াংশ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এই সময়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় আটকে আছে নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের অন্যান্য কাজও।

সীমানাপ্রাচীরের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় মাটি ভরাট, প্রকৌশল ভবন নির্মাণসহ অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের কাজও শুরু করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বার বার চিঠি দিলেও কাজে কোনো গতি আসছে না। এতে নতুন ক্যাম্পাস পেতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘতর হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এক বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের দীর্ঘ দুই বছরে মাত্র ৬৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি এর পরিমাণ ৮০ শতাংশেরও বেশি। কাজে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ জটিলতার অজুহাত দিলেও তা মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, অধিগ্রহণ জটিলতায় ছিল মাত্র ১১ একর জমি। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই বছরে বাকি জায়গার কাজও শেষ করতে পারেনি।

এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানান, নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্ল্যানিং ভবন নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডার না পাওয়ায় ক্ষোভে ধীরগতিতে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের টেন্ডার পেতে চুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করলেও টেন্ডার না পাওয়ায় পরে কাজের গতি কমিয়ে দেয় ঠিকাদার। এতে এক বছরের প্রকল্পে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও অগ্রগতি নেই।

প্রাচীর নির্মাণে ধীরগতিতে অপেক্ষা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের
জবির নতুন ক্যাম্পাসের সীমানাপ্রাচীরের কাজ চলছে। ছবি:নিউজবাংলা

প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি সময় লাগায় এবং নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর আবেদন করার কথা ভাবছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, তবে চুক্তির নিয়মানুযায়ী এক বছর মেয়াদি প্রকল্পে ব্যয় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই বলছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কিংডম গ্রুপের ঠিকাদার আনোয়ার ব্যাপারী বলেন, ‘সীমানাপ্রাচীরের প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ। মুজাহিদ নগরের পাশে কিছু এবং রেললাইনের পাশে এক হাজার ফিটসহ আর মাত্র সাড়ে চার হাজার ফিট বাকি আছে। জমি অধিগ্রহণের কিছু সমস্যা থাকায় আমাদের কাজে দেরি হচ্ছে।

‘অধিগ্রহণ শেষ হলেই মোটামুটি তিন থেকে চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। কাজে দেরি হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ব্যয় বাড়ানোর জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটা প্রস্তাব দেব ভাবছি।’ তবে ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের টেন্ডার না পাওয়ায় কাজে ধীরগতি কি না-এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ঠিকাদার আনোয়ার ব্যাপারী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ১১ একর জায়গা অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কিছু ঝামেলা ছিল সে কারণে সেসব জায়গায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি থাকায় অন্যান্য জায়গায়ও তারা কাজ করেনি। এজন্য আরও বেশি দেরি হয়েছে। অধিগ্রহণের ঝামেলা শেষের পথে, আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সীমানা প্রাচীরের কাজ শেষ করতে পারব।’

প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী এই প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধির কোনো সুযোগই নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কোনোভাবেই ব্যয় বাড়াবে না।’

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার চিঠি দিয়ে আসছি। আমরা ঠিকাদারকে ডেকে পাঠাব। তারা যাতে দ্রুত কাজ শেষ করে সেজন্য আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব।’

আরও পড়ুন:
র‌্যাগিং নিয়ে জবি’র সতর্কতা, প্রমাণিত হলেই স্থায়ী বহিষ্কার
জবিস্থ ফেনী জেলা ছাত্রকল্যাণের নেতৃত্বে স্বর্ণা-ফাইয়াজ
ছাত্রী-শিক্ষক শারীরিক সম্পর্ক: তদন্তে চার সদস্যের কমিটি
জবি ছাত্রলীগের ২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ
ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগে জবি শিক্ষককে বিভাগীয় সাজা

মন্তব্য

p
উপরে