ডাকে একটি বেনামি চিঠি পাঠিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
রোববার সকালে বিভাগের চেয়াম্যানের চিঠির বাক্স থেকে তিনি এই চিঠি পান বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
অধ্যাপক মিল্টন জানয়েছেন, চিঠিতে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কলাম লেখার কারণে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, চার পৃষ্ঠার চিঠিটিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার নিয়ে কটূক্তি করাসহ অশ্লীল ভাষায় গাল-মন্দ করে সরকারের সমালোচনা করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ৯টি ছবির ওপর বিভিন্ন লেখা আছে।
এর আগেও ২০১৪ সালে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে কলাম লেখার কারণে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল।
চিঠির বিষয়ে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস বলেন, যারাই এসব কাজের সাথে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মৃত্যুতে ১৬ মার্চ (রবিবার) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেওয়াজ অনুযায়ী তার প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘একজন প্রাক্তন উপাচার্য ও অধ্যাপকের মৃত্যুতে পরিবারের সম্মতিক্রমে জানাজার সময় ও স্থান সম্পর্কে সকলকে অবহিত করার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে মাইকিং, শোকবার্তা প্রকাশ, কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ মোনাজাতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত সকল প্রথা অনুসরণ করা হয়েছে।
‘উল্লেখ্য, পরিবারের সিদ্ধান্তক্রমেই অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ও দাফনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিবারের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অসুস্থ হয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার পরের দিন ৭ মার্চ শুক্রবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান হাসপাতালে তাকে দেখতে যান এবং তার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার পরিবার এবং পারিবারিক বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়।
‘ইন্তেকালের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এবং প্রশাসনের অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ মরহুমের জানাজা ও দাফন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং দাফন প্রক্রিয়ায় সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রায় চার মাস ধরে বন্ধ আছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে পরীক্ষামূলকভাবে জাবিতে কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৬৯৭.৯৬ একরের বৃহৎ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিলো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু তা বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা যাতায়াতে প্যাডেলচালিত রিকশা ব্যবহার করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গত চার মাস আগে জাবিতে অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়, যার কারণে যাতায়াতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে প্রশাসন কিছু প্যাডেলচালিত অটোরিকশা অনুমোদন দিলেও তা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। এ রিকশার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। চলাচলে সময় অপচয়, অত্যধিক ভাড়া আদায়, উঁচু রাস্তায় নেমে যাওয়াসহ আরও নানা সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন ব্যবহারকারীরা।
এ ছাড়া প্রতিদিন রুটিন করে ক্যাম্পাসের ভেতর শাটল বাস চললেও শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। অনেককে দীর্ঘসময় রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয় অথবা বাসে উঠে বসে থাকতে হয়। সময়মতো বাস পাওয়া যায় না, যার ফলে ক্যাম্পাসে ইজিবাইক বা কার্ট গাড়ি চালু করা জরুরি হয়ে পড়ে। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবু রায়হান বলেন, ‘এত বড় ক্যাম্পাসে চলাচল করার জন্য অটোরিকশা লাগে। যাদের বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল আছে, তাদের কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু যাদের এসব নেই, তাদের ভোগান্তির শেষ নেই।
‘দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও রিকশা পাওয়া যায় না। ক্লাস- পরীক্ষায় দেরি হয়; সময় অপচয় হয়। শুনলাম প্রশাসন কার্ট গাড়ি চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’
ক্যাম্পাসে কার্ট গাড়ি চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান গবেষণা কারখানার সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, ‘রমজানে শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি। আমাদের ক্যাম্পাসের রাস্তাগুলো যেহেতু উঁচু-নিচু, তাই পরীক্ষামূলকভাবে ট্রায়াল দেব।
‘এটাতে ৮ থেকে ১০টি সিট থাকে। এটা পরিবেশবান্ধব হওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। আশা করি একটা ভালো ও স্থায়ী সমাধান আসবে।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা মাথায় রেখেই আমরা দীর্ঘদিন থেকে এমন কিছু করার পরিকল্পনা করছিলাম। কয়েকটি মিটিংও করেছি এ ব্যাপারে। এ ছাড়া কয়েকটি গাড়ি কোম্পানির সাথে আমাদের কথাও হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি গাড়ি নিয়ে এসেছি। ভালো ফলাফল পেলে মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ আমরা আরও ১০ থেকে ১৫টি গাড়ি নিয়ে আাসব। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করি আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই আমরা একটা ভালো সমাধান দিতে পারব এবং এই সার্ভিস সম্পূর্ণভাবে চালু করতে পারব।’
গত বছরের ১৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাঁচির অটোরিকশার ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় ক্যাম্পাসে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপনটি রবিবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা, ২০২৩ অনুযায়ী ২৭টি বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হলো।
বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সূত্রাপুর, ঢাকার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে কারকুনবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকার নাম পরিবর্তন করে তাজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৬ নং বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, নারায়ণগঞ্জ পরিবর্তন করে ১৬ নং পাইকপাড়া পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচবাড়িয়া হাসিনা ওয়াজেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ীর নাম পাঁচবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, গাজীপুরের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রাখা হয়েছে।
একইভাবে চর সতরাজ শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাকেরগঞ্জ, বরিশালের নাম পরিবর্তন করে চর সতরাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পিরোজপুরের নাম পরিবর্তন করে পশ্চিম পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধামইরহাট, নওগাঁর নাম পরিবর্তন করে জগৎনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পত্নীতলা, নওগাঁর নাম পরিবর্তন করে নাদৌড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।
অন্যদিকে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পীরগঞ্জ, রংপুরের নাম পরিবর্তন করে সুবর্ণপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলপুর, ময়মনসিংহের নাম পরিবর্তন করে নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুক্তাগাছা, ময়মনসিংহের নাম পরিবর্তন করে ভালুক চাপড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলাউড়া, মৌলভীবাজারের নাম পরিবর্তন করে কুলাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মুজিবাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পার্বতীপুর, দিনাজপুরের নাম পরিবর্তন করে পার্বতীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডোলোপাড়া শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পঞ্চগড়ের নাম পরিবর্তন করে ডোলোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, পঞ্চগড়ের নাম পরিবর্তন করে রাজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাগনভূঞা, ফেনীর নাম পরিবর্তন করে পশ্চিম করমূল্যাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।
মুজিব রাসেল বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাজিরা, শরীয়তপুরের নাম পরিবর্তন করে হরিয়াসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিতারকান্দি বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজিতপুর, কিশোরগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে নিতারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর, কিশোরগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে বত্রিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপালপুর, টাঙ্গাইলের নাম পরিবর্তন করে দক্ষিণ সোনামুই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) ষষ্ঠ সমাবর্তন সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকার শেরে বাংলা নগরের বিসিএফসিসিতে আয়োজিত এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়।
রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনে সভাপতিত্ব ও গ্র্যাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।
সমাবর্তনে বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম শওকত আলী স্বাগত বক্তব্য দেন, যিনি গ্র্যাজুয়েটদের অ্যাকাডেমিক সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান।
উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ আপনারা যে সফলতা অর্জন করেছেন, এতে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, এবং অভিভাবকদের অবদানও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। স্মরণ রাখবেন, সাফল্য একদিনে আসে না; এটি অনেক বছরের পরিশ্রম এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়।
‘আমি বিশ্বাস করি, যেখানেই যান, নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলা, সততা এবং মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখবেন।’
অতিথিদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শামসুল হুদা, এফসিএ।
তিনি তার বক্তব্যে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দেশের ভবিষ্যৎ এবং আমি দৃঢ় বিশ্বাসী যে, আজ যারা ডিগ্রি পাচ্ছেন, তারা সমাজের জন্য ভালো কিছু করবেন। মনে রাখবেন, আপনাদের পথচলা শুধু বিইউবিটির নয়, বরং সমগ্র জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য।’
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা জীবনের এই অর্জন শুধু ব্যক্তিগত কল্যাণেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এটি পুরো সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। জীবনে সফলতা পেতে হলে শিক্ষা, কঠোর পরিশ্রম এবং মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাস রাখা প্রয়োজন।’
সমাবর্তনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল স্নাতকদের আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি প্রদান। এর পাশাপাশি কৃতী শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এবারের সমাবর্তনে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল অর্জন করেন এমবিএর ৪৮তম ইনটেকের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান।
চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ গোল্ড মেডেল লাভ করেন এমএসসি ইন ইকোনমিকসের ৩৮তম ইনটেকের শিক্ষার্থী লাবিবা ফেরদৌস। অন্যদিকে উপাচার্য গোল্ড মেডেল লাভ করেন বিবিএর ৪৫তম ইনটেকের শিক্ষার্থী রাবেয়া আফরিন মীম।
স্বর্ণপদক ও ক্রেস্ট প্রদান শেষে সমাবর্তনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘আজকের এই দিনটি আপনাদের সবার জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। আপনাদের এই অর্জন শুধু অ্যাকাডেমিক সাফল্য নয়; এটি আপনার নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং মানবিক গুণাবলীর ফল।
‘আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে আপনি যেখানে থাকবেন, সেখানে আপনি শুধু নিজের উন্নতির দিকে মনোযোগ দেবেন না, বরং আপনার অর্জিত জ্ঞান এবং দক্ষতা ব্যবহার করে সমাজের উন্নয়ন ও কল্যাণে অবদান রাখবেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী দেখিয়েছেন, এবং আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা দেশের অগ্রগতি ও সাফল্যের জন্য ভবিষ্যতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’
আরও পড়ুন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী।
দেশে ছিনতাই, ডাকাতি বেড়ে যাওয়াসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাত সোয়া একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
ওই সময় শিক্ষার্থীরা ‘জুলাই রক্তের দাম চাই, নিরাপদ দেশ চাই’, ‘সুশীলতার দিন শেষ, বিচার চায় বাংলাদেশ’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হল প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র সাকিব আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা শহরের প্রতিটি অলিগলিতে চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী আর ডাকাতরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এসব প্রতিরোধ করতে না পারার কারণে এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তার চেয়ারে বসার নীতিগত যোগ্যতা হারিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘শুধু এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা না, পুলিশ এবং আর্মি যাদের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে, তাদের গত ছয় মাসের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা আমরা চাই।
‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।’
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র আজিজুল হক বলেন, ‘অব্যাহত খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ আর চাঁদাবাজিতে দেশ ভরপুর হয়ে গিয়েছে। আমরা মধ্যরাতে রাস্তায় নেমেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই অথর্ব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরের পদত্যাগের দাবিতে।
‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে। তার পদত্যাগ নিশ্চিত করেই আমরা ঘরে ফিরব।’
আরও পড়ুন:খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কুয়েটের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন বাদী হয়ে বুধবার রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের জনসংযোগ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
গত মঙ্গলবার কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে ছাত্রদল ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
হামলার শিকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার ব্যর্থতার দায় স্বীকার ও নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়। এ ছাড়াও হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদের দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।
ওই ঘটনার পর বেলা দেড়টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঘটনার বিচারের জন্য চারটি দাবি জানানো হয়। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা এবং যেকোনো অন্যায়ের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেন।
পরবর্তী সময়ে উপাচার্য সময়ক্ষেপণ না করে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য তিনি ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, সব পরিচালক, প্রভোস্টদের নিয়ে বেলা সাড়ে তিনটায় একটি সভা আহ্বান করেন।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত হওয়ার আগেই বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে উপাচার্য, সহউপাচার্যসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে যান এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আটকানোর চেষ্টা করেন।
সংঘর্ষ চলাকালীন কয়েকজন শিক্ষক, ভাইস চ্যান্সেলর, অনেক শিক্ষার্থী ও কর্মচারী আহত হয়ে কুয়েট মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি হন। ওই সময় উপাচার্য়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন:প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, চলতি মাসেই শতভাগ স্কুলে বই পৌঁছে যাবে।
ডিসি সম্মেলনের শেষ দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান গণশিক্ষা উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের ৮৫ ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে। এ মাসেই বাকি স্কুলগুলোতেও বই পৌঁছে যাবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা যুক্ত রয়েছেন। ডিসিরা প্রাথমিক শিক্ষার নানান সমস্যা চিহ্নিত করেছেন, যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ যেন সঠিকভাবে হয়, সে বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিবন্ধন নেই, সেগুলোকে দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছেও বলে জানান উপদেষ্টা।
ওই সময় প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগের আন্দোলনে বিষয় জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা জানান, সুপারিশপ্রাপ্তদের প্রতি তার সহমর্মিতা আছে, তবে বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য