জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বুধবার সকাল ৯টায় শুরু হয়ে ভোট চলবে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।
নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী বিভক্ত নীল দলের দুটি অংশ থেকে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তবে এবারও অংশ নিচ্ছে না বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
নির্বাচনে ছয়টি পদের বিপরীতে মোট ৩০ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ পদে এক জন করে এবং সদস্য পদে ১০ জন শিক্ষক নির্বাচিত হবেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে মোট ভোটার ৬৭৫ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের নীল দলের দুই অংশ দুটি প্যানেলে নির্বাচন করছে। অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও ড. নাফিস আহমদের প্যানেল থেকে সভাপতি পদে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান নির্বাচন করছেন।
এই অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘নীল দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব নির্বাচন করে এবং গঠনতন্ত্র অনুসারেই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। একটা গ্রুপ যারা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে চায় তারাই পরে বিভক্ত হয়ে গেছে। এখন দেখলাম ওখান থেকেও আবার বিভক্ত হয়েছে। এটা তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। গতবারের নির্বাচনে আমরা ১২ টি পদে জয়ী হয়েছিলাম। আমরা কাজ করার চেষ্টা করেছি। শিক্ষকরা যদি সেটা মূল্যায়ন করেন তাহলে ১৫ টি পদেই আমরা জয় প্রত্যাশী।’
এদিকে নীল দলের অপর অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরিমল বালা ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের প্যানেল থেকে সভাপতি পদে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মো. জহির উদ্দিন আরিফ নির্বাচন করছেন।
নীল দলের এই অংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ‘আমরা এবার অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের মিশ্রণে একটি প্যানেল দিয়েছি। যারা সবাই অত্যন্ত উদ্যমী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য সুন্দর গবেষণার পরিবেশ নিশ্চিতে ও সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যেতে যারা বদ্ধপরিকর। আশা করি শিক্ষকরা সেই ভরসা রেখেই এবারের নির্বাচনে এই প্যানেলকে জয়ী করবেন।’
শিক্ষাক্রম নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনো ইস্যু না পেয়ে এখন একটি গোষ্ঠী এর পেছনে লেগেছে।’
শনিবার চাঁদপুর স্টেডিয়ামে শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে আমাদের পুরো পঠন ও শিখন পদ্ধতি সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। সেটির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা আনন্দময় শিক্ষা পাচ্ছে, সত্যিকার অর্থে শিখছে, যেটি তারা সারা জীবন ধারণ করবে, আত্মস্থ ও প্রয়োগ করতে পারবে প্রয়োজন মতো।
এই ডামাডোলের মধ্যে সে বিষয়টি চাপা পড়ে যাচ্ছে। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যে গুণগত পরিবর্তন এসেছে, তারা এটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাচ্ছেন। এর অর্থ হচ্ছে সবাই একটি ভাসা ভাসা জিনিস নিয়ে কথা বলছি। একজন চিৎকার করছেন এবং অন্যজন তার সঙ্গে গলা মেলাচ্ছেন।’
এখন থেকে যারা বই লিখবেন, যেখান থেকে যে তথ্য নিবেন, সেই সূত্র উল্লেখ থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে যারা বই লিখবেন, যেখান থেকে যে তথ্য নেবেন, সেই সূত্র উল্লেখ থাকতে হবে। কোন বইয়ের মধ্যে কখনো সূত্র লেখা থাকে না। আর কোথাও থেকে লেখা নিয়ে থাকলে কৃতজ্ঞতা শিকার করা সাধারণ নিয়ম। এখন মানুষের মাঝে অনেক সচেতনতা এসেছে। কাজেই আমি এখনো থেকে আশা করব, এখন থেকে যারা বই লিখবেন, সূত্র উল্লেখ করে দেবেন।’
চাঁদপুর স্টেডিয়ামে শেখ কামাল আন্তঃস্কুল ও মাদ্রাসা অ্যাথলেটিস প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শনিবার দুপুরে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষাক্রম নিয়ে এত কথা বলা হচ্ছে, যার অধিকাংশই মিথ্যাচার। যেখানে ভুল আছে, অবশ্যই সংশোধন করেছি এবং করব। যেখানে চিহ্নিত হবে ভুল, সেখানে শুদ্ধ হবে। কিন্তু যেসব মিথ্যাচার-অপপ্রচার চলছে, সেটিতো উদ্দেশ্যমূলকভাবে। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনো ইস্যু না পেয়ে একটি গোষ্ঠী পেছনে লেগেছে।’
এর আগে সপ্তম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ে হুবহু চুরি আর গুগলের অনুবাদ নিয়ে যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্য স্পষ্ট হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন, জেলা ক্রীড়া অফিসার তরিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ ক্যান্টিনে খাবারের মধ্যে তেলাপোকা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
শুক্রবার দুপুরে ক্যান্টিনে খাবার খেতে যান হলের রুহিনা রুহি নামে এক শিক্ষার্থী। এ সময় তার পাশে বসে খাবার খাওয়া অনেক শিক্ষার্থী খাবারের মধ্যে তেলাপোকা দেখতে পান। পরে খাবার নিয়ে দেখানো হলে নতুন করে খাবার দেয়া হলেও ক্যান্টিনের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর বিষয়টিকে তেমন পাত্তা দেননি।
আবাসিক ছাত্রীদের অভিযোগ, ডাইনিংয়ের খাবারে প্রায়ই তেলাপোকা ও মাছি পাওয়া যায়। বিষয়টি বার বার জানালেও দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা গুরুত্ব দেন না। এছাড়া খুব নিম্নমানের চাল দিয়ে ভাত রান্নাসহ বাসি ভাত পরিবেশন করা হয়। অন্যদিকে গ্যাস সংকটে নিজেরা রান্না করেও খেতে পারছেন না তারা।
ছাত্রীদের হল ডাইনিংয়ে দুপুর ও রাত মিলে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য খাবার রান্না করা হয়। শুক্রবার খাবার খেতে গিলে খিচুড়ির মধ্যে তেলাপোকা দেখতে পেয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী ফেসবুকে পোস্ট দিলে ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠে আসে।
সমাপ্তি নামে এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলে পানির সমস্যা, গ্যাস নেই, কিচেন নোংরা৷ এখন আবার তেলাপোকা ভর্তাও খেতে হচ্ছে। অভিযোগ জানিয়েও কাজ হচ্ছে না।’
এদিকে চাল বা ডালে পোকা ছিলো না দাবি করে ক্যান্টিন ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রান্নাঘরের উপরে টিনের ছাউনি। সেখানে অনেক ময়লা থাকায় পোকামাকড় আসতে পারে। অনেকদিন ধরে ময়লা সরানো হচ্ছে না, তেলাপোকা তো আসবেই! অনেক সময় ছাত্রীরাও উপর থেকে ময়লা ফেললে ক্যান্টিনের খাবারের ঘরে এসে পড়ে। এসব থেকে তেলাপোকা আসে।’
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম বিষয়টি অবগত হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি হলের ক্যান্টিন কমিটির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব। হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন হাউজ টিউটর ছুটিতে থাকায় একটু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’
গ্যাস সংকটের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা প্রধান প্রকৌশলী এবং বাপেক্সকে চিঠি দিয়েছি। উপাচার্যের সঙ্গেও বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত এটার সমাধান হবে।’
আরও পড়ুন:দেশের কোথাও বই পৌঁছাতে দেরি হয়ে থাকলে সে বিষয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
চাঁদপুর সার্কিট হাউসে শুক্রবার এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই না পাওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যে সকল শিক্ষার্থীর বই দেয়া বাকি ছিল, তাদের ২৫ তারিখের মধ্যে সমস্ত বই দিয়ে দেয়ার কথা ছিল। কাজেই কোথাও যদি বই পৌঁছাতে দেরি হয়ে থাকে, অবশ্যই আমি তা দেখব।’
দীপু মনি বলেন, ‘ওয়েবসাইটে প্রতিটি বই দেয়া আছে। এরপরও যদি কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকে, তাহলে শিক্ষকরা সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারেন। শুধু জ্ঞানভিত্তিক নয়; দক্ষতাভিত্তিক, সফট স্কিল ও মূল্যবোধ শেখার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা স্মার্ট নাগরিক হয়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী, সুখী বাংলাদেশ হব। আর সেটি হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের সমস্ত সেবা, সমস্ত কাজ এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি যা কিছু আছে, সকল প্রযুক্তি নিয়ে মানুষ দক্ষ হয়ে উঠবে।
‘যত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আছে, যত সেবার মান আছে, তা নিশ্চিত হবে। কাজেই স্মার্ট বাংলাদেশ মানে সেই বাংলাদেশ, যেখানে প্রত্যেকটি নাগরিকই স্মার্ট নাগরিক হবেন।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভূইয়া, চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর রনজিত রায় চৌধুরী।
আরও পড়ুন:মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে মেহেরপুর জেলা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ লক্ষ্যে একটি বিল পাস হয়েছে।
অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর বিলের ওপর আনীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
১০ জানুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবঈ পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যেকোনো সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনে আচার্যের অনুমোদন নিয়ে ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। বিজনেস ইনকিউবেটর হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব সহযোগিতা দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব, আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা প্রদান।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই সংস্কারের কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ও ছাত্রা বাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুর ৩টায় জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চনীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস বন্ধ থাকবে ইনস্টিটিউট। এ সময় অনলাইনে ক্লাস নেবেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি আজ রাত ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের চারুকলা ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনাও দিয়েছে সিন্ডিকেট।'
এর আগে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাসবর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎই মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। আন্দোলন নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরদিন অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার থেকে ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হাটহাজারীতে অবস্থিত। ২০১০ সালে চবি চারুকলা বিভাগ এবং চট্টগ্রাম সরকারি চারুকলা কলেজকে একীভূত করার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নগরীর বাদশাহ মিয়া চৌধুরী সড়কে বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের (সিইউবি) প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে মঙ্গলবার। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং শিশু অধিকার কর্মী কৈলাস সত্যার্থী।
রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘এটিই হয়তো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আমার শেষ উপস্থিতি। দেশজ নাম ও ব্র্যান্ডকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এবং গর্বের সঙ্গে নিজেদের পণ্যকে ধারণ করতে হবে।’
আবদুল হামিদ বলেন, ‘কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বহু বছর সাফল্যের সঙ্গে কানাডায় নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। এখন তিনি দেশে ফিরে বিভিন্ন খাতে বিপুল বিনিয়োগ করছেন। আমি প্রবাসী সব ব্যবসায়ীকে আহবান জানাই দেশে বিনিয়োগ করার জন্য।’
সমাবর্তন বক্তা নোবেল বিজয়ী কৈলাস সত্যার্থী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে বলেন, ‘আপনাদের স্বপ্ন দেখতে হবে, নিজেকে আবিষ্কার করতে হবে। যে কোনো ভালো কাজের উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়িত করতে হবে। হয়তো কোনো একদিন এই কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশেরই এক ছাত্র নোবেল বিজয়ী হবে। আমি সেদিন নিজে আসব বিজয় উৎসবে অংশ নিতে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট-২০১০, জাতীয় শিক্ষা নীতি-২০১০, উচ্চ শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশনসহ নানা শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষার হার প্রশংসনীয়ভাবে বেড়েছে। আমরা এখন দক্ষ জনবল সরবরাহ করি। যারা এখন সারাবিশ্বেই তাদের কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বের বুকে স্থান করে নিচ্ছে।’
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ‘গেস্ট অফ অনার’ হিসেবে যোগদান করেন। তিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত তার বক্তব্যে বলেন, ‘কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশে রয়েছে আধুনিক সময়োপযোগী বিভিন্ন বিভাগ। শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে রয়েছে বৃত্তির সুযোগ। ইনফরমেশন সিস্টেমস অডিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।’
মালয়েশিয়ার বিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য যোসেফ আদাইকালাম, অ্যারো বিজনেস এবং জিই গ্যাস পাওয়ারের সিইও দিপেশ নন্দ বিশেষ বক্তা হিসেবে যোগ দেন সমাবর্তনে।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৪৩০ জন গ্রাজুয়েট রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রি গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে চারজন- সামিয়া বিনতে নাঈম, সুমাইয়া সুলতানা, ফারজানা বিন্ত মোহাম্মদ ও মো. সাখাওয়াত হোসেন স্বর্ণপদক পান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য