কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ জন শিক্ষক ও ৫ জন স্টাফ কর্মরত থাকলেও ওই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাত্র চার জন। এর মধ্যে একজন ফেল।
রাজারহাট উপজেলার সুন্দরগ্রাম পুটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। যাদের মধ্যে ১২ জনই ফেল করে। বিদ্যালয়ে ১৫ জন শিক্ষক এবং চার জন স্টাফ।
জেলার অনেক প্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কাছাকাছি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার খামার বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ১৪ জন,স্টাফ ৬ জন কর্মরত আছেন। এই বিদ্যালয়ে ২০২১-২২ সেশনে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করে ৪০ জন শিক্ষার্থী। ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নাম লিখিয়েছে (ফরম ফিল-আপ) ১৬ জন। পরীক্ষায় মাত্র চার জন অংশ নেয়, যাদের সবাই ফেল করেছে।
শতভাগ ফেলের ঘটনা না ঘটলেও সদরের যাত্রাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র প্রায় একই। এই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করে ৫১ জন। এসএসসিতে নাম লেখায় ৪০ জন এবং পরীক্ষায় অংশ নেয় ৩৬ জন। এদের মধ্যে ২০ জন পাস আর ফেল ১৮ জন। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক ১১ জন, স্টাফ ৪ জন।
এই উপজেলার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করে ৪২ জন এবং এসএসসিতে ফরম ফিলাপ করে ৩০ জন। তারা সবাই পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস করে ১৬ জন এবং ১৪ জন ফেল করে। এখানে শিক্ষকের সংখ্যা ৯ জন, স্টাফ চার জন এবং শূন্য পদ আছে চারটি।
সারডোব আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া সাত জনের মধ্যে তিন জন ফেল করে। নন-এমপিও প্রতিষ্ঠান পূর্ব কুমোরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নেয়া তিন জনের মধ্যে ফেল করে একজন।
একতা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জন ফেল করে। নগরাজপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অংশ নেয়া ১৬ জনের মধ্যে ১১ জন ফেল।
আজোটারি মাস্টার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮ জনের মধ্যে ফেল করে ৯ জন। রাঙ্গামাটি সরদার পাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১২ জনের মধ্যে ৭ জন ফেল করে। উত্তর রাবাইতারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২১ জনের মধ্যে ফেল ১৩ জন। এক সময়কার ছিটমহল দাশিয়াছড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ফেল করে ১১ জন। কামালপুর ময়নুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৫ জন অংশ নিয়ে ১২ জন ফেল করে।
শংকর মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ১০ জন। তাদের মধ্যে ৭ জন ফেল করে।
ভীমশর্মা উচ্চ বিদ্যালয় ১৪ জন অংশ নিয়ে ১১ জন ফেল করে। এই বিদ্যালয়ে নিম্ন মাধ্যমিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক সাত জন, স্টাফ একজন।
বটতলা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১০ জনের মধ্যে ৫ জন ফেল।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি।
খামার বড়াইবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক শতভাগ ফেলের কথা স্বীকার করে বলেন, মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। দারিদ্র্যের কারণে ছেলে শিক্ষার্থীরা কাজের জন্য ঢাকায় চলে যায়। তা ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি অভিভাবকদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থী সংকট তৈরি হয়েছৈ। আর এ কারণে ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে।
অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বেগম স্বীকার করেন তার বিদ্যালয়ে ৯ জন শিক্ষক এবং ৫ জন স্টাফ কর্মরত থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মাত্র চার জন। এর মধ্যে একজন ফেল করেছে।
যাত্রাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান জানান, তার বিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনকৃত সকল শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। চরাঞ্চল এবং নদী ভাঙ্গন এলাকা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় স্থানান্তরিত হয়ে গেছে। এতে করে পড়ালেখা ব্যাহত হওয়ায় ফেলের হার বেশি।
ভীমশর্মা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ফেলের হার বেশি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যায় পাঁচ জন ননএমপিও শিক্ষক। তারা ২০০৪ সাল থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।’
খামার বড়াইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সবুজ আলম বলেন, ‘এই স্কুল থেকে যে চার জন পরীক্ষা দিয়েছে, তার মধ্যে দুটি মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। আর দুজন ছেলে ঢাকায় কামলা দিয়ে এসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তারা কেউ নিয়মিত শিক্ষার্থী ছিল না।’
একই এলাকার অভিভাবক শাহেরা বেগম বলেন, ‘স্কুলত ঠিক মতো মাস্টাররা আসে না, ক্লাসও হয় না। তাই দুই কলম শেখানোর জন্য সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিছি।’
দেবিচরণ গ্রামের অভিভাবক দুলাল মিয়া সুন্দরগ্রাম পুটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয় ফেলের হার বেশি হবার জন্য শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করেন। তার মতে, অতিরিক্ত মোবাইল ফোন আসক্তির কারণে পড়ালেখা করেনি শিক্ষার্থীরা। তাই এবার বেশি ফেল করেছে।
আরেক জন অভিভাবক শাবানা বেগম বলেন, ‘অটো পাসের চিন্তা ছেলেমেয়েদের মাথায় ঢোকার কারণে এবার পড়াশোনা করে নাই। অভিভাবকরাও ততটা গুরুত্ব দেয় নাই অটো পাসের চিন্তা করে।
এ শিক্ষক, অভিভাবক, বিদ্যালয় কমিটিসহ কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি ও ফলাফল হতাশাজনক বলে জানান স্থানীয়রা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে একুশে পদকপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন এ জেলায় ফলাফল বিপর্যয় কারণ হিসেবে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের সচেনতাকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘শহরের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে আছে। প্রযুক্তির অপব্যবহার, নজরদারির অভাবে এমন ফলাফল হয়েছে। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করতে হবে।’
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, ‘শিক্ষকের চেয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানে এসএসসি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। শুধু ফলাফল বিপর্যয় হওয়া প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম সেগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা উচিৎ।’
কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৪৪টি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলায় ২০২২ সালে এসএসসি পরিক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল ১৯ হাজার ২০৩ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২০৩ জন। পাস করেছে ১৪ হাজার ৪০৭ জন। জেলায় গড় পাসের হার ৭৫ দশমিক শূন্য ২ ভাগ।
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য