ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বাংলা প্রথমপত্র প্রশ্নের বিতর্কিত অংশ আগেই বাদ দেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন প্রশ্নপত্রটির একজন মডারেটর। তারপরও বিতর্কিত অংশ কীভাবে রয়ে গেল, সে প্রশ্নের জবাব মেলেনি।
এদিকে প্রশ্ন প্রণয়নকারী শিক্ষক প্রশান্ত কুমার পাল এলাকায় নেই। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে, ঝিনাইদহের বাড়িতে তার বৃদ্ধ মা ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কথা হয় বিতর্কিত প্রশ্নপত্রের মডারেটর হিসেবে থাকা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি দাবি করেন, কাসালাং সেটের ১১ নং প্রশ্নের বিতর্কিত অংশ তারা বাতিল করেছিলেন। এর পরেও চূড়ান্ত প্রশ্নে তা থেকে যাওয়ার কারণ অজানা।
রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার চেয়ে সিনিয়র ৩ জন মডারেটর আছেন। আমি সবার জুনিয়র। শোকজ করলে আমরা বিষয়টির জবাব দেবো।
‘মডারেশনের সময় প্রশ্নটি আমরা দেখেই বুঝেছিলাম এতে বিতর্ক হতে পারে। সেজন্য আমরা প্রথমে উদ্দীপক ও প্রশ্ন পরিবর্তন করেছিলাম। আমি নিজেও একটি উদ্দীপক বানিয়েছিলাম। সেখানে হিন্দু-মুসলমান কিছু ছিল না।’
নিজের দায় নাকচ করে তিনি বলেন, ‘ওই প্রশ্নটি (বিতর্কিত প্রশ্ন) ছিল ১০ নম্বরে। আমরা সেটা কেটে দিয়ে (বাতিল করে) ১১ নম্বর প্রশ্ন দিয়েছিলাম। হাতে লেখা প্রশ্ন ফেলে দেয়ার নিয়ম নেই, তাই আমরা যুক্ত করে রেখেছিলাম। কিন্তু কীভাবে বাতিল করা উদ্দীপক ও প্রশ্ন ছাপা হলো, সেটা আমি জানি না।
‘২৪ বছর ধরে চাকরি করছি, এর মধ্যে ১২ বছর ধরে মডারেশন করছি। ভুল করার সুযোগ নেই।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রশান্ত কুমার পালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন বন্ধ রাখার পাশাপাশি তিনি বাড়িতে থাকছেন না। বাড়িতে গিয়ে তার বৃদ্ধ মা ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি।
প্রশান্ত কুমার যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক সেই ড. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মিডিয়ার মাধ্যমে ও শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে ঘটনা জানতে পারি। তবে প্রথমে জানতাম না যে এটি আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের করা প্রশ্ন ছিল।
‘প্রশান্ত কুমার পালের সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) সকালে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন-তিনি এই প্রশ্নটি করেছিলেন, প্রশ্নটি ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষায় সিলেক্ট হয় এবং পরীক্ষায় সেটি এসেছে। একটা ভুল করে ফেলেছেন বলেও তিনি আমাকে জানান।’
অধ্যক্ষ দাবি করেন, ভুলের কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে প্রশান্ত সদুত্তর দিতে পারেননি।
শিক্ষক প্রশান্ত কুমার পাল কবি ও লেখক জানিয়ে অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র বলেন, ‘তার সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি এ রকম কাজ করেছেন জানতে পেরে আমি নিজেই দুঃখ পেয়েছি। সরকার এ ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা আমি প্রতিপালন করবো।’
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র ঘটনার বিষয়ে মডারেটরের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমন হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ তারা প্রশ্ন সিলগালা করে দিয়ে থাকেন, যা পরে লটারির মাধ্যমে প্রেসে পাঠানো হয়।
‘মডারেটর যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটার ব্যবস্থা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে হবে। তাদের বক্তব্য যাচাই করতে হবে। পাণ্ডুলিপিতে তো আছে, কী করা হয়েছে। তারা মুখে বলছেন কেটে দিয়েছি বা বাতিল করেছি, তাহলে নিশ্চয় ওটা কাটা থাকবে।’
প্রশ্ন সরাসরি বিজি প্রেসে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রেসে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। চূড়ান্ত প্রশ্ন বড় খামে ঢুকিয়ে লটারি করা হয়। তারপর এটা সরাসরি বিজি প্রেসে যায়। প্রেসে গেলেও এটা (সংযুক্ত অংশ) ধরা পড়বে। সেই অনুযায়ী ছাপা হবে।’
মডারেটররা সিলগালা করে প্রশ্ন দিয়ে থাকেন, এটা অন্য কারও বদলানোর সুযোগ নেই বলে জানান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন মহল থেকে দেশে যে সাংবিধানিক শূন্যতার কথা বলা হচ্ছে তা ভুয়া বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও সাহিত্যিক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, দেশের সংকট সাংবিধানিক নয়; রাজনৈতিক।
সোমবার মহাখালীতে ‘সংস্কার ও নির্বাচন: নাগরিক ও রাজনৈতিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার এমনটা দাবি করেন। এই সভার আয়োজন করে ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও নৈতিক সমাজ’।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমরা সবাই অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে। আপনারা সাংবিধানিক শূন্যতার যে ধুয়া দিচ্ছেন তা ভুয়া। আমাদের দেশের সংকট সাংবিধানিক নয়। আমাদের সংকট রাজনৈতিক। আমরা রাষ্ট্র গঠন করতে পারিনি। এজন্য এই দুরবস্থা। এর মধ্যে সংবিধানের কোনো ব্যাপার নেই।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে ইন্ডিয়ার প্রভাবে আমাদের রাষ্ট্র গঠনই করতে দেয়া হয়নি। আমাদের সামনে ৬ দফা ছিলো। কিন্তু সেখান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ঢুকিয়ে দেয়া হলো। সেগুলো তো ছয় দফায় ছিলো না।
‘ধর্মীয় নিরপেক্ষতার প্রবেশ মানেই ইসলামবিরোধী রাজনীতি। গণতন্ত্র মানেই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি। তাহলে ধর্মীয় নিরপেক্ষতা বলার দরকার নেই।’
নৈতিক সমাজের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) আ ম স আ আমিন বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই সংস্কার। তার মধ্যে রাজনীতি সংস্কারও আমরা ধরেছি। কোনো সরকারই সব সংস্কার করে যেতে পারবে না। কিন্তু আমরা চাই তারা যেন ভিত্তিটা তৈরি করে দিয়ে যায়।
‘এই সংস্কারের সঙ্গে আপামর জনগণকে আমাদের ঐকমত্যে নিয়ে আসতে হবে, যেন ১০-১৫ বছর সময় লাগলেও ফলপ্রসূ হয় এই আত্মত্যাগ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘১৯৭২-১৯৭৫ এর সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিলো দুর্নীতি। জিয়াউর রহমান আসার পর দুর্নীতি নিয়ে এমনভাবে প্রচার করা হলো যেখানে মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে সবাই খারাপ, শুধু জিয়াউর রহমান ভাল।’
তিনি বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান নতুনভাবে প্রণয়ন করতে চাইলে গণপরিষদ গঠন করতে হবে। কাদের সমন্বয়ে গঠন হবে খোলাসা করতে না পারলে এ সমস্যা নিরোধ হবে না। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সমস্যার সমাধান করুন।’
সাবেক সচিব কাসেম মাসুম বলেন, ‘আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সেজন্য আমাদের আগে সংস্কার করে পরে নির্বাচন করতে হবে।’
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘অনেকেই বলছেন যে পুরনোরা বাদ, আমরা নতুন নেতৃত্ব পেয়ে গেছি। এভাবে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব? যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল তারা তো ইতোমধ্যে বিতর্কিত হয়ে গেছে।’
বিদ্যুৎ খাতে ‘ইনডেমনিটি’ দিয়ে সম্পাদিত চুক্তিগুলোর বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে এ সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনার লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় কমিটি।
ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) বোর্ড রুমে সোমবার কমিটির আহ্বায়ক বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ তথ্য জানান। এর আগে এই কমিটির সদস্যরা প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন।
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ খাত সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়েই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সেগুলো যাচাই-বাছাই ও বিচার-বিশ্লেষণ করা হবে। পরে এই কমিটি সরকারের কাছে করণীয় বা সুপারিশ জমা দেবে। তবে এখন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের বিষয়টিই প্রথম কাজ হিসেবে হাতে নেয়া হয়েছে। বিশেষ বিধানের আওতায় চুক্তিবদ্ধ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তথ্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও পিডিবির কাছে থাকা তথ্য আগামী সাত দিনের মধ্যে জাতীয় কমিটির কাছে জমা দিতে হবে।
কমিটির পরবর্তী বৈঠক আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে কমিটির সদস্য বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হাসিব চৌধুরী, কেপিএমজি বাংলাদেশের সাবেক সিওও আলী আশফাক, ফেলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (এফসিএ), বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ও ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের ফ্যাকাল্টি অব ল’ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের অর্থনীতির অধ্যাপক মোশতাক হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (সংশোধিত ২০২১)-এর অধীন সম্পাদিত চুক্তিসমূহ পর্যালোচনার লক্ষ্যে ৫ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়।
প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকির রয়েছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। আর এই চোরাচালান রোধে কোস্টগার্ডকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদর দপ্তরে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নাবিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নিজস্ব চাহিদা বিবেচনায় সরকার এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে না। তাছাড়া বিদ্যমান ডলার সংকটের মধ্যেও সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ সার আমদানির মাধ্যমে জোগান অব্যাহত রেখেছে।
‘এই প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইলিশ ও সার চোরাচালানের ঝুঁকি রয়েছে। তাই কোস্টগার্ডের মূল দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমুদ্র ও নৌ-পথে ইলিশ, সারসহ বিভিন্ন পণ্যের চোরাচালান বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে নৈতিকতার ক্ষেত্রে স্খলন দেখা দিলেও কেবল কোস্টগার্ড নৈতিকতা বিচ্যুত হয়নি এবং অর্পিত দায়িত্বের ক্ষেত্রে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে।’
কোস্টগার্ড সদস্যদেরকে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানে তাদের অতীত ঐতিহ্য ও সম্মান সমুন্নত রেখে অস্ত্রসহ বিভিন্ন ক্রয় ও সংগ্রহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি এ সময় কোস্টগার্ডের আবাসন, জনবল, অস্ত্র এবং টহল ও উদ্ধারকারী নৌ-যান ক্রয় ও সংগ্রহসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত চাকরিকালীন পদোন্নতিবঞ্চিত আড়াই হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের সুযোগ সুবিধা ফিরে পেতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
সোমবার সচিবালয়ে এক বিফ্রিংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছর যারা বঞ্চিত ছিলেন, নিপীড়িত ছিলেন, তাদের ব্যাপারে সরকার একটি কমিটি করেছে। সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খানকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, গত ১৬ বছর তারা পারিবারিক-আর্থিক ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত হয়েছেন৷ ১৬ বছরে তারা কোনও পদোন্নতি পাননি।
এই সরকার মাত্র ১৩ দিনে তিনটি পদে পদোন্নতি দিয়েছে। তাদের আবেদনের পর কর্মচারীদের পদায়নে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে রিপোর্ট নেয়া হচ্ছে। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ না হলে যাদের চাকরির মেয়াদ বেশি আছে তাদের পর্যায়ক্রমে সচিব করা যেতে পারে। যাদের সময় কম আছে তাদের এই সরকারের এক্সটেনশন অনেক পদে দেয়া যেতে পারে।
মোখলেস উর রহমান জানান, কমিটি যেদিন থেকে কাজ শুরু করবে সেদিন থেকে তিন মাসের জন্য কমিটির মেয়াদ শুরু হবে। তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশমালা এবং কেস টু কেস, তারা কে কোন পদ পাবেন তা জানাবে কমিটি।
তিনি বলেন, ‘আড়াই হাজার আবেদন এসেছে। আবেদনকারীরা দুই থেকে তিনটি দাবি করেছেন। তারা বলেছেন- আমি চাকরিতে থাকলে এই পদে যেতে পারতাম; আমি এতোদিনে এই পদে ফাইন্যান্সিয়াল বেনিফিট পেতাম; আমি পেনশনে চলে গেছি, পিআরএল এমাউন্ট যেটা ছিল সেটা বেড়ে যেত।’
ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে গিয়ে ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে ও লাইভে এসে ভারতবিরোধী কথা বলায় আলমগীর শেখ নামে এক যুবককে আটক করে ভিসা বাতিল করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার লালমনিরহাটে বুড়িমারী স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র: ইউএনবি
আলমগীর শেখ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জুম্মাপাড়া এলাকার নুরু শেখের ছেলে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্র জানায়, ৩ সেপ্টেম্বর ট্যুরিস্ট ভিসায় ভারতে যান আলমগীর। সেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতবিরোধী পোস্ট ও লাইভ করেন। বিষয়টি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নজরে এলে তারা আলমগীরকে চিহ্নিত করেন।
চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে ফেরত আসার সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর ভিসা বাতিল করে বুড়িমারী ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
আলমগীর শেখ ভারতের আগ্রায় তাজমহলে ঘুরতে গিয়ে ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘১৯৭১ সালে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করছেন, পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আমাদের ভাগ করে দিয়েছেন। এবার বাংলাদেশের জনগণ মিলে আমরা ভারতকে ভাগ করতে চাই। মনিপুরের জয় হোক। পাশাপাশি আমার বাংলা আমি ফেরত চাই।’
এছাড়াও লাইভে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্য বাংলাদেশের কাছে ফেরত দিতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল বাংলাদেশে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করছে।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দলকে সত্য উদ্ঘাটন, এ ঘটনায় দোষীদের শনাক্তকরণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ বিশ্লেষণ ও অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও এর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্য সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রণয়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে বিক্ষোভ চলাকালে সংঘটিত সামাজিক গণমাধ্যম বা অন্য কোনো জনপরিসরে নেই এমন সব মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কিত সরাসরি প্রাপ্ত তথ্য প্রদানের জন্য সব ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে তথ্যগুলো OHCHR-FFTB- [email protected] ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘ তদন্তকারী দলটির ভুক্তভোগী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা, চিকিৎসা পেশাজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং কোনো ফৌজদারি তদন্ত নয় এবং এটি কোনো জাতীয় ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়া থেকে পৃথকভাবে পরিচালিত হয়।
ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গোপনীয় এবং তদন্ত চলাকালে দলটি কোনো মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেবে না উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে অনুরোধ করা হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর সরেজমিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পর তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল, উপসংহার ও সুপারিশসহ একটি বিস্তারিত মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পদ্মা নদীর ভাঙনে ভারতীয় সীমান্তে বিলীন হওয়া প্রায় ২০০ একর জমির মালিকানা ফিরে পেতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট জমির মালিকরা।
রোববার অনুষ্ঠিত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সৌজন্য বৈঠকে বিবাদমান জমি নিয়ে আলোচনায় পুনরায় জরিপ করে মালিকানা প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকে বিবাদমান জমি পুনরায় জরিপ করে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
বিবাদমান জমিগুলো ভারত সীমান্তে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীঘেঁষা চল্লিশপাড়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীর ভাঙনে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে চল্লিশপাড়া বর্ডার আউট পোস্টের (বিওপি) পিলার ১৫৭/এমপি থেকে ৮৫/১০-এস এলাকা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সীমানা এলোমেলো হয়ে গেছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের আনুমানিক ২০০ একর জমি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের আনুমানিক ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া যায়।
বিএসএফের আহ্বানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডির জামালপুর বিওপির সীমান্ত পিলার ১৫২/৭-এস থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রোববার দুপুরে। এতে বিবাদমান জমি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও মাদক পাচার রোধে বৈঠকে গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিজিবির পক্ষে কুষ্টিয়ার বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান এবং বিএসএফের পক্ষে রওশনবাগ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট বিক্রম দেব সিং নেতৃত্ব দেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি সার্ভেতে বাংলাদেশের পাওনা প্রায় ২০০ একর জমি ও ভারতের পাওনা প্রায় ৪০ একর জমির গরমিল পাওয়া গেছে। এটা আগামী অক্টোবর মাসে সুবিধাজনক সময়ে উভয় দেশের সার্ভেয়ার, বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে পুনরায় জরিপ করে জমির প্রকৃত মালিকদের কাছে হস্তান্তর করতে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডাররা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূলত সীমান্তের বিবাদমান অংশটি নদী এলাকায়। পদ্মার ভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দুই দেশের সঠিক সীমানা নির্ধারণে জটিলতা ছিল। দুই দেশের প্রচেষ্টায় তা সমাধানে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দ্রুত সঠিক সীমানা নির্ধারণ করা হবে। তবে জমি বুঝে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ তা ব্যবহার করতে পারবে না।’
সীমান্তে বিএসএফকে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান মাহবুব মুর্শেদ।
তিনি বলেন, ‘নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমান্তে আটক না করা, ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ও নিষিদ্ধ কোনো পণ্য যাতে বাংলাদেশে পাচার হতে না পারে এবং আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সীমান্তবর্তী জনসাধারণ যাতে অবৈধভাবে দুই দেশের সীমান্তের পূজামণ্ডপে যাওয়া-আসা করতে না পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য