উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেয়ার যে রীতি তৈরি হয়েছে, সেটা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। সে লক্ষ্যে ডিসেম্বরের মধ্যেই বই মুদ্রণ কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে কাগজের দাম বেড়ে যাওয়া, সরবরাহে ঘাটতি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠ্যবই মুদ্রণের কর্মযজ্ঞ শেষ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মুদ্রণকারীরা।
মুদ্রণ ব্যবসায়ী মনে করছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ বই ছাপানো সম্ভব হবে। আর অবশিষ্ট বই পেতে অপেক্ষায় থাকতে হবে অন্তত আরও ছয় মাস।
মুদ্রণ শিল্প-সংশ্লিষ্টদের এসব যুক্তিকে আমলে নিতে চান না জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। তাদের কথা, এটা অজুহাত। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মুদ্রণকারীদের পাঠ্যবই সরবরাহ করতে হবে। নইলে করোনাভাইরাসে শিখন ঘাটতির পর আরও একবার শিক্ষা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
আগামী বছরের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার পাঠ্যবই ছাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৯ লাখ ৫৩ হাজার এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার পাঠ্যবই ছাপানো হবে।
মুদ্রণ শিল্প সমিতি বলছে, কাগজের সংকট তো আছেই, বেড়েছে কালির দাম। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এলসি করতে না পারায় কাগজ তৈরির মণ্ড (পাল্প) আমদানি করতে পারছেন না মিল মালিকরা। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি (২৯ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক কারণে সংকটের কথা তুলে ধরলে সেখানে উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী তার জবাব দেন। তিনি জানিয়েছেন, পাঠ্যবই মুদ্রণ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে।
‘মন্ত্রী মহোদয়ের আল্টিমেটাম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে শতভাগ বই দেয়া সম্ভব হবে না। বড়জোর ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ বই সরবরাহ করা যাবে ডিসেম্বরের মধ্যে। বাকি বই পুরোপুরি সরবরাহ করতে জুন পর্যন্ত সময় লাগবে।’
কেন সম্ভব হবে না তা জানতে চাইলে মুদ্রণ শিল্পের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘পাল্প (মণ্ড) নেই। এই শিল্প-সংশ্লিষ্ট সবই আমদানি করতে হয়। অথচ ডলারের দাম বেশি। আরেকটি বড় সমস্যা লোডশেডিং।’
শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরের মধ্যে ৩০/৩৫ ভাগ বই ছাপা হলেও সেগুলো কোন শ্রেণির জন্য হবে, এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৩৫ ভাগ বই মানে এমন নয় যে বাকি ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী বই পাবে না। সব মিলিয়ে ৩৫ ভাগ হবে। কোনো শ্রেণিতে সব বই যেতে পারে, আবার কোনো শ্রেণিতে বই নাও যেতে পারে।’
শ্রেণি ধরে পরিষ্কার হিসাব দিতে না পারলেও জহুরুলের দাবি, অষ্টম ও নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ যথা সময়ে শেষ হবে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নির্ভর করে মুদ্রণকারীদের ওপর। যে আগে অর্ডার পাবে সে সেটি আগে দেবে। এখন পর্যন্ত ক্লাস সেভেনের ডামিও হাতে আসেনি মুদ্রণে। আবার প্রাইমারির ডামিও এখনও সব পাস হয়নি। যে বই আগে পাস হবে সেটিই আগে যাবে। অষ্টম ও নবম শ্রেণির ডামি আগে পাস হয়েছে বিধায় এই শ্রেণির বই শতভাগ সরবরাহ হবে।’
মুদ্রণ-সংশ্লিষ্টদের এসব কথা আমলে নিতে চায় না এনসিটিবি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপনি (মুদ্রণ মালিক) যাবতীয় শর্ত মেনে আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তাহলে কেন আপনি জুনের কথা বলবেন? আমরা উনাদের ওইসব শর্ত মানি না। আমরা এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছি। মুদ্রণ শিল্প সমিতি প্রত্যেক বছর শেষদিকে এসে এক-একটা অজুহাত দাঁড় করিয়ে সুবিধা নিতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘তারা এখন কেন বলবে যে মণ্ড পাচ্ছে না। আমরা সেদিন যখন বসলাম তখন মন্ত্রী মহোদয় কাগজ আমদানির কথা বললে তারা জানিয়েছিল লাগবে না। তারা তো সম্মত হয়েছিল। নইলে আমরা তখনই কাগজ আমদানির উদ্যোগ নিতাম।’
এনসিটিবির অনড় অবস্থানে অসন্তুষ্ট মুদ্রণ মালিকরা। এ নিয়ে জহুরুল বলেন, ‘উনারা (এনসিটিবি) তো বাস্তবতা বুঝতে চান না। দায়িত্বশীল পোস্টে যারা আছেন তারা গা বাঁচানোর জন্য সব হয়ে যাবে, সব ঠিক আছে, এ ধরনের কথা বলেন।
‘এবার ৩০ ভাগ দিয়েই শুরু করবে বই উৎসব। বাকি বই আস্তে আস্তে যাবে। এ ছাড়া আমার কাছে কোনো সমাধান নেই। বাকিটা চেয়ারম্যান (এনসিটিবি) সাহেব বলতে পারবেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুদ্রণ ব্যবসায়ী বলেন, ‘এটা একটা জটিল বিষয়। অনেকেই ভাসা ভাসা কথা বলেন। যেখানে কাগজ নেই সেখানে মন্ত্রী বা এনসিটিবি কী বলেন সেটা তো ইস্যু হতে পারে না আমাদের জন্য।’
জহুরুল বলেন, ‘পাঠ্যবই মুদ্রণে প্রয়োজনীয় কাগজ উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে সাতটি পেপার মিল। এর মধ্যে ওয়েস্টেজ পেপার দিয়ে যে মিলগুলো বানাচ্ছে তারা হয়তো কিছু উৎপাদনে আসবে, কিন্তু পাল্পে যারা আছে, সেখানে আমরা ছাড়া কেউ নেই। আর লিপি কিছু বানাচ্ছে। এ ছাড়া সব ওয়েস্টেজ থেকে বানাচ্ছে। আবার দেখা যাচ্ছে ওয়েস্টেজও নেই।
‘কার্যাদেশ অনুযায়ী বই ছাপাতে হলে কাগজের প্রয়োজন হবে এক লাখ ২০ হাজার টন, কিন্তু ৩০ হাজার টনের বেশি কাগজ মিলগুলোর কাছে জোগাড় নেই।’
এমন সমস্যা কী এবারই হয়েছে, নাকি অন্য বছরগুলোতেও এসব সমস্যা থাকে, এমন প্রশ্নের জবাবে জহুরুল বলেন, ‘পাল্পের এমন আকাশচুম্বী দাম ছিল না।’
প্রাথমিকের কোনো বই এখনও ছাপাই শুরু হয়নি। মাধ্যমিকের বই ছাপানোর কাজ অবশ্য চলছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি বই ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু চাহিদা প্রায় ২৫ কোটি। অন্যদিকে প্রাথমিকের চাহিদা ৯ কোটির বেশি।
রাজধানীর মাতুয়াইলে গিয়ে দেখা যায়, প্রেসগুলোতে চলছে পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ, কিন্তু বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ে ছাপায় ব্যাঘাত ঘটছে। এ নিয়ে খুব বিরক্ত মুদ্রণ-সংশ্লিষ্টরা।
কাগজের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও চিন্তিত তারা। মুদ্রণকারীদের দাবি, জিরো জিএসএম কাগজের দাম বেড়েছে প্রতি টনে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। আর ৬০ জিএসএম কাগজের দাম বেড়েছে কয়েক গুণ।
মাতুয়াইলের এক ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে বই সরবরাহ করার। আমরা চেষ্টা করছি, তবে এই সময়ের মধ্যে শতভাগ বই সরবরাহ করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ দেয়া সম্ভব হতে পারে। অন্তত বিদ্যুতের লোডশেডিংটা কমলেও ছাপা কিছুটা বাড়ানো সম্ভব হতো।’
চাহিদামতো কাগজ পাওয়া যায়নি জানিয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা যোগাযোগ করেছি। আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আর মিলগুলো বিদ্যুতের জন্য কাগজ তৈরি করতে পারছে না। আমাদের কাগজের চাহিদা ছিল এক হাজার টন। অথচ পেয়েছি তার অর্ধেক।’
বই সময়মতো না পাওয়ার জন্য মুদ্রণ-সংশ্লিষ্টরা দরপত্র আহ্বান প্র্রক্রিয়ায় দেরি হওয়াকেও কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলছেন, অন্য সময়ে নভেম্বরের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বই ছাপা হয়ে যায়।
এবার দরপত্রের কাজ শেষ হয়েছে মে মাসে। আর এ কারণে এবার মাধ্যমিকের বই ছাপানো অক্টোবরে শুরু হলেও প্রাথমিকের বই ছাপানো শুরুই হয়নি। আবার ওয়েস্টেজ কাগজ ব্যবহারের ফলে বইয়ের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
প্রাথমিকের বই ছাপানো বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইতিমধ্যে কাগজের ছাড় শুরু হচ্ছে। এই সংকট থাকবে না। টেন্ডার মে মাসে হোক আর জুন মাসে হোক এটার সঙ্গে মিল মালিকের সম্পর্ক নেই। তারা কাগজ উৎপাদন করবে। আর আমি টেন্ডারে সময় কম দিয়েছি। সেটা তো বিবেচনা করেছি সময়স্বল্পতা বিবেচনা করেই।’
পেপার মিলগুলো এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে কাগজের দাম বাড়াতে চায় বলে মনে করেন ফরহাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকবার তারা এমন বলে। প্রেস মালিকরা জানেন বই দিতে হবে। তারা জানেন এটা রাজনৈতিক একটি ইস্যু। সরকার বই দিতে চাইবে।
‘আমরা সেই সুবিধা নিতে চাই। এই ধরনের চালাকি তারা প্রতি বছর করে আসছে। এবার দেখি আমরা, আগামীবার তো আবার অনেক রকম সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নেবে, তখন দেখা যাবে।’
শেষ পর্যন্ত ৫০ ভাগ বই সরবরাহ পেলেও ১ জানুয়ারির বই উৎসব ভালোভাবেই সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদী এনসিটিবি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘কোনো স্কুলেই শতভাগ বই দেয়া হয় না। ৪০ ভাগ বই দেয়া হয়। নবম ও দশম শ্রেণিতে তো আরও পরে বই পায়, তবে শেষ পর্যন্ত আমরা ভালো অবস্থানে থাকব। জানুয়ারির ১০ বা ১২ তারিখের মধ্যে শত ভাগ বই দিতে পারব।’
মুদ্রণ সমিতি জানিয়েছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির জন্য চুক্তি হওয়ার কথা ৪ নভেম্বর। নিয়ম অনুযায়ী, চুক্তির মেয়াদ থাকবে আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। তাহলে ডিসেম্বরে সব বইয়ের দাবি কীভাবে করা হয়, তা নিয়েও সমিতি বিস্ময় প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:১৯ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভা বিইউপির বিজয় অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, এমফিল, পিএইচডি।
সভার শুরুতে বিইউপির উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ মাহ্বুব-উল আলম বিদায়ী সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নবনিযুক্ত সদস্যদের স্বাগত জানান। পরে বিইউপির ট্রেজারার এয়ার কমডোর মোঃ রেজা এমদাদ খান, জিইউপি, বিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি), ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট ১৩৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা ও ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের ১৩৪ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
সিনেট সদস্যগণ ট্রেজারার এর বক্তৃতার ওপর আলোচনা করেন এবং সর্বসম্মতিক্রমে বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করেন। এছাড়াও সিনেট সভায় ১৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপিত ও সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। ১৭তম বার্ষিক সিনেট সভাটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন বিইউপির রেজিস্ট্রার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ রাব্বি আহসান, এনডিসি, পিএসসি।
সভায় সিনেট চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মাহ্বুব তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিইউপি বয়সে নবীন হলেও এর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষকগণের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা ভিত্তিক কার্যক্রমের অর্জনসমূহ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুনাম বয়ে আনছে। যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান, গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার লক্ষ্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট Academic Strategic Plan –২০৫০ প্রণয়ন করা হয়েছে।
Academic Strategic Plan এর মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের আধুনিক মান নির্ধারণ, Outcome Based Education (OBE) কারিকুলাম প্রনয়ণ, গবেষণা, উদ্ভাবন, প্রকাশনা ও গবেষণা সহায়তার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মাননীয় উপাচার্য সকলকে অবহিত করেন যে বিইউপি’র গবেষণাভিত্তিক অগ্রযাত্রায় BUP Research Centre (BRC) অংঙ্গীভূত ফ্যাকাল্টি ও অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে গবেষণা, উদ্ভাবন ও পরামর্শমূলক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে কাজ করছে। 'Inspiring Innovation for Advancing Knowledge' শ্লোগানকে ধারণ করে, BUP Research Centre, গবেষকদের মানসম্মত গবেষণায় উৎসাহ দিচ্ছে এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠান ও একাডেমিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষকদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান প্রসারের উদ্দেশ্যে বিইউপি থেকে ৫টি জার্নাল প্রতিবছর নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে যা সকলের মাঝে সমাদৃত। সিনেট চেয়ারম্যান আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুশৃঙ্খল, নৈতিকতা সম্পন্ন সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিইউপি বদ্ধপরিকর এবং সে লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক গুণাবলি ও আত্মিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সকল প্রোগ্রামের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে Need Based Education - কেও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে, আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের মানসম্মত কারিকুলাম ও শিক্ষা পরিবেশের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক সান্নিধ্যের গুরুত্বকে সামনে রেখে বিইউপি'তে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নবপ্রজন্মের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ, সততা, চরিত্র গঠন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, জাতীয় দিবসগুলোর তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য তুলে ধরে বিইউপি’র বিভিন্ন আলোচনা সভা, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা উল্লেখ করেন।
এই সিনেট সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং বিইউপির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি)-এর ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় ‘লেদার ক্রাফট এক্সিবিশন ২০২৫’। ৬৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই প্রদর্শনীটি ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা চামড়াজাত পণ্য ডিজাইন ও কারুশিল্প বিষয়ক একটি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সফল পরিসমাপ্তির ফসল।
প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি নানান রকমের সৃজনশীল ও ব্যবহারিক চামড়াজাত পণ্য স্থান পায়। এতে তাদের দক্ষতা, শৈল্পিকতা এবং বাস্তব জীবনের শিল্প জ্ঞান ফুটে ওঠে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউএফটি’র ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’র সহযোগী অধ্যাপক জনাব উত্তম কুমার রায় এবং বিইউএফটি’র জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ ইমতিয়াজ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী।
কর্মশালাটি আয়োজন ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ফাহিমা আখতার। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিইউএফটি তার শিল্পভিত্তিক ও বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পাশাপাশি, দেশের চামড়াশিল্পে উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার প্রসারেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। প্রদর্শনীটি তরুণ ডিজাইনারদের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে যা ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত দক্ষতা গঠনে সহায়ক হবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের (টিএনই) বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফুলার রোড অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে নীতিনির্ধারক, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিক্ষা খাতের অংশীজন, অ্যাকাডেমিক কমিউনিটি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন এবং ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের (টিএনই) বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর স্যালভাডোর কারবাজাল লোপেজ গবেষণা প্রতিবেদনের মূল তথ্য উপস্থাপন করেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে টিএনইয়ের প্রসার সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করতে সহায়ক হবে এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ সুগম করবে।
‘টিএনই মানসম্মত উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশে আমরা আমাদের অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করে এ প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রচেষ্টার আমি সত্যিই প্রশংসা করি। এটি অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করছে।
‘এ সম্পর্ক জোরদার করা উভয় দেশের জন্যই উপকারী হবে, যা উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন, জ্ঞান বিনিময় এবং এই খাতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, ‘ব্রিটিশ কাউন্সিলের ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন রিসার্চ রিপোর্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি আনন্দিত। ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন বৈশ্বিক শিক্ষা অংশীদারত্বের মাধ্যমে শিক্ষার ভবিষ্যৎ গঠনে এবং যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে দারুণ সুযোগ তৈরি করছে।’
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশনের সম্ভাবনা ও সামাজিক মূল্য’ বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
সেশনটি পরিচালনা করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর প্রোগ্রামস ডেভিড নক্স।
প্যানেলিস্টদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি জেনারেল ইশতিয়াক আবেদিন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের সাউথ এশিয়ার এডুকেশন ডিরেক্টর সালভাদর কারবাজাল লোপেজ।
ব্রিটিশ কাউন্সিল নিয়োজিত আন্তর্জাতিক যোগ্যতা মূল্যায়ন সংস্থা ইক্টিস গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করা করেছে।
১. টিএনই প্রদানকারীদের জন্য নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াগুলো সহজ করা ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা
২. ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ব্রিজিং ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রাম চালু করা
৩. রিমোট ও অনলাইন লার্নিংকে সহায়তা করতে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত করা
৪. মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াগুলোতে স্বচ্ছতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করা
৫. বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে লক্ষ্যভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ
৬. মধ্যম আয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বৈত ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগ গ্রহণ
অনুষ্ঠানে ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) ২০২৫ অনুদানের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি নির্বাচিত ইউকে-বাংলাদেশ পার্টনারশিপ তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২৫ হাজার পাউন্ড করে অনুদান পাবে।
বিজয়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজ্যাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ, নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বার্মিংহাম সিটি ইউনিভার্সিটি এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি–বাংলাদেশ।
এ ছাড়াও রয়্যাল হলোওয়ে, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে কাজ করবে, এবং কীল ইউনিভার্সিটি এফআইভিডিবির সঙ্গে অংশীদারত্ব করবে।
এ অনুদানগুলো ট্রান্সন্যাশনাল এডুকেশন উদ্যোগের মাধ্যমে অ্যাকাডেমিক ও গবেষণামূলক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালীর উদ্দেশে প্রদান করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য।
সম্পূর্ণ রিপোর্টটি ব্রিটিশ কাউন্সিলের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে।
আরও পড়ুন:প্রাথমিক শিক্ষার জেলা ও বিভাগের টাস্কফোর্স কমিটি সংশোধন করে পুনর্গঠনের নির্দেশনা এবং এর কার্যপরিধি পুনর্নির্ধারণ করে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিভাগীয় কমিশনারকে সভাপতি ও প্রাথমিক শিক্ষার বিভাগীয় উপপরিচালককে সদস্য সচিব করে বিভাগীয় টাস্কফোর্স এবং জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে সদস্য সচিব করে জেলা টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইসরাত জাহান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি, বেসরকারি, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার ও শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার সার্বিক অবস্থা ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করবে বিভাগীয় টাস্কফোর্স।’
জেলার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা টাস্কফোর্স কমিটিকে।
বিভাগীয় বা মহানগরের প্রাথমিক শিক্ষা টাস্কফোর্স কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অদিদপ্তরের প্রতিনিধি, এলজিইডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (সার্কেল) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, বিভাগভুক্ত সব জেলায় জেলা প্রশাসক এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (সার্কেল) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
এ টাস্কফোর্স সরকারি, বেসরকারি, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত লার্নিং সেন্টার ও শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করবে।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবে টাস্কফোর্স। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের যথাযথ বাস্তবায়নের তদারকি করবে এটি।
টাস্কফোর্স প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের জন্য নতুন নতুন ধারণা ও উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রয়োগ করবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সম্পৃক্ত ও উদ্বুদ্ধ করবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে ঝরে পড়া রোধ, শিখন শেখানো কাজের উন্নয়ন, যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিরূপণ ও দূরীকরণে কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন:মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ড. ইহতেসাম উল হক এ বি এম রেজাউল করীমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আগের ডিজি অবসরে যাওয়ার এক মাসের বেশি সময় পর এ পদে নিয়োগ দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৪ জানুয়ারি চাকরি শেষ করে অবসরে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক রেজাউল করীম।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট মাউশির মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাগনে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
তার পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে শুধু শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার।
এ ছাড়া নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করা হয়েছে।
পাশাপাশি জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নারায়াণগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বলে ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
আরও পড়ুন:রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বোর্ডে অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম, যশোর বোর্ডে অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান, সিলেট বোর্ডে অধ্যাপক শামছুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি এ চার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. নিজামুল করিম, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু তাহের ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলিউর রহমান।
দেশের ১১ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সাধারণ ৯টি। এগুলো হলো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, সিলেট, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।
বাকি দুটি বোর্ডের একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। ১১ বোর্ডে কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য