দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণার জন্য বাইরের দেশের অনুদান নিতে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি কর্তৃক ১৬টি বিদেশি প্রকল্পের অনুদানের অর্থ গ্রহণ ও ব্যয়-সংক্রান্ত বিষয়ে মঙ্গলবার রাজধানীর ইউজিসি ভবনে এক সভায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ এই আহবান জানান।
বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারি অর্থায়নের পাশাপাশি বৈদেশিক অনুদানে গবেষণাকর্ম পরিচালনায় আরও উদ্যোগী হতে হবে। ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক জোরদার করাও প্রয়োজন।’
একই সঙ্গে গবেষণায় বিনিয়োগে দেশের ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘একটা সময়ে বিদেশি সহায়তায় দেশে অনেক গবেষণা হতো। বর্তমানে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি অনুদানে গবেষণা পরিচালনা করছে। এই বিদেশি সহায়তায় গবেষণা পরিচালনার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্যও উঠে আসছে।’
তিনি দেশের মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে গবেষণা চালিয়ে যেতে গবেষকদের অনুরোধ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি দেশের বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকল্পে ইউজিসি থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া হবে।’
সভায় ইউজিসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মহিবুল আহসান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড, প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সর্বত্তে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ভূমিকা কোনো অংশেই কম নয়। ক্রীড়া আঙ্গিনায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে একই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে। অর্থাৎ শঙ্খচিলের মতো বিশ্বের বুকে নিজেদেরকে মেলে ধরেছে নারীরা।
আর এ ক্ষেত্রে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নারী শিক্ষার্থীরাও কোনো দিক থেকে পিছিয়ে নেই। পরীক্ষার খাতায় যেমন নিজেদেরকে প্রথম তালিকায় রেখেছেন, ঠিক তেমনি ক্রীড়া আঙ্গিনায় নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছেন কুবির নারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে উৎসাহী করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ আগ্রহী করতে ব্যাডমিন্টন, কারাম, ভলি বল, ক্রিকেট-ফুটবল সহ নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস ক্লাব।
সম্প্রতি শেখ হাসিনা হল ও নবান ফয়জুন্নেছা হলে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়া আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টগুলোতে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করতে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করায় ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ দেয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও খেলাধুলায় আগ্রহী হচ্ছে।
মেয়েরা ক্রিকেট, ভলি বল, ব্যাডমিন্টনের মত বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম আবিদা নৌশিন বলেন, ‘আমরা সাধারণত দেখি মেয়েরা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ কম করে, স্পোর্টস স্কলারশিপ দিয়ে এই আগ্রহের জায়গাটা মেয়েদের মাঝে আরও প্রবল হয়েছে। আশা করা যায় সামনের দিনগুলোয় এই প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। আরও অনেক মেয়ে নিজ প্যাশন থেকে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতে চাইবে।’
সম্প্রতি ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ পাওয়া চৈতি চাকমা বলেন, ‘খেলাধুলায় মেয়েদের আগ্রহী করতে বিভিন্ন খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজনের পাশাপাশি ভাইস চ্যান্সেলর স্পোর্টস স্কলারশিপ প্রদানেরও উদ্যোগ নিয়েছেন উপাচার্য তথা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওনার এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা মনে করি।’
ক্রীড়া কমিটির নারী সদস্য রেইজওয়ানা আফরিন রূম্পা বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি শরীরচর্চা ও খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই প্রথম মেয়েদের খেলাধুলার জন্য ক্রীড়া মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। সবগুলো বিভাগ থেকে মেয়েদের ডাকা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও খেলাধুলায় এগিয়ে যাক। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। আশা করছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও এগিয়ে যাবে।’
ক্রীড়া কমিটির আহবায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছর সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতার কারণে ছেলেদের পাশাপাশি খেলাধুলায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশের নারীরাও। এখন খেলাধুলায় আমাদের মেয়েরা ভালো করছে। বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে মেয়েরাও খেলাধুলায় উৎসাহিত হয়ে আন্তঃবিভাগ ও হল কেদ্রিক বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহন করছে। ছেলেদের পাশাপাশি আমাদের মেয়েরাও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ষষ্ঠ উপাচার্য এবং প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে আগামী চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের স্থলাভিষিক্ত হলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫ এর ১০ (১) ধারা অনুযায়ী ড. সাদেকা হালিম, অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ও সাবেক ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ করা হয়েছে। ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে ৪ বছর হবে। তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তিনি নিয়মিত চাকরির বয়সপূর্তিতে মূল পদে প্রত্যাবর্তনপূর্বক অবসরগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন শেষে উক্ত মেয়াদের অবশিষ্টাংশ পূর্ণ করবেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, ভাইস চ্যান্সেলর পদে তিনি তাঁর বর্তমান পদের সমপরিমাণ অথবা অবসর অব্যবহিত পূর্ব পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ নেন। ১৯৮৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
সাদেকা হালিম কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি নেন। পরে কমনওয়েলথ স্টাফ ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-ডক্টরেট সম্পন্ন করেন। তথ্য কমিশনের প্রথম নারী তথ্য কমিশনার ছিলেন তিনি।
পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য ও সিনেট সদস্য ছিলেন। তিনি জাতীয় শিক্ষানীতি কমিটি-২০০৯ এর কমিটিতে সদস্য ছিলেন। তিনি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রথম নারী ডিন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির বহিঃসদস্য হিসেবে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:তফসিল বাতিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিএনপির ডাকা হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মিছিল করেন তারা। মিছিলটি সিএন্ডবি থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএইচ গেটে গিয়ে শেষ হয়। শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব এ মিছিলের নেতৃত্ব দেন।
এ সময় ইব্রাহিম খলিল বিপ্লব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আজ্ঞাবহ আউয়াল কমিশনের ঘোষিত তফসিল বাতিল এবং অবৈধ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হবে।’
মিছিল শেষে সেলিম রেজা বলেন, ‘গনতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সকল কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, সেই কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে আমরা ছাত্রদল মাঠে আছি। বিএনপির এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল মাঠে আছে এবং থাকবে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত ছাত্রদল ঘরে ফিরে যাবে না।’
এছাড়াও মিছিলে শফিকুল ইসলাম, হোসাইন রাশেদ আল বাদল, রাজিব আহমেদ, দেওয়ান আলাউদ্দিন হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন, সাদমান, রফিকুল, রাসেল, জাহিদ হাসান, ইব্রাহিম সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আগের ঘটনার জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি বাসে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।
বুধবার রাত ৮টার দিকে বাসটি কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার টমছম ব্রিজ এলাকার এ ঘটনায় হামলাকারীদের একজনকে তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসমুখী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বহনকারী নীল বাস (কুমিল্লা-স ১১০০-৩২) টমছম ব্রিজ এলাকায় এলে হঠাৎ একটি বলাকা বাস সামনে চলে আসে। সে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয় বাসকে আটকায় এবং বাসটি থেকে ২০-২৫ জন বিভিন্ন লাঠিসোটা নিয়ে নামেন।
তারা বাস ছেড়ে শিক্ষার্থীদের নেমে যেতে বলেন, কিন্তু শিক্ষার্থীরা না নামলে এক পর্যায়ে গিয়ে তারা বাসে ভাংচুর শুরু করেন। পরে শিক্ষার্থীরা বাস থেকে তাদের থামাতে নামলে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। মারামারির এক পর্যায়ে একজনকে বাসে তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা।
হামলার আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ মাসুম, লোকপ্রশাসন বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ, অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের মাহমুদ সাকিব, আবদুল বাসেদ, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আদনান হোসেন সাহেদ, মো. রিফাতুল ইসলাম, আতিক রহমান, রিয়াজন হক সজীব, মো. রাসেল চৌধুরী। এ ছাড়া বাসের হেলপার জহিরুল ইসলাম ও বাস ড্রাইভার সুমন দাস হামলায় আহত হয়েছেন।
বাসে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, আমরা নীল বাসে টমছম ব্রিজ দিয়ে যাচ্ছিলাম। বাস টমছম ব্রিজের অগ্রণী ব্যাংকের সামনে আসার পর হঠাৎ একটি বলাকা বাস দেখতে পেলাম। বাসটি সম্পূর্ণ খালি ছিল। আমি ভাবছিলাম হয়তো ব্রেক করেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই বাসটি আমাদের বাসকে আটকায়।
তিনি বলেন, মুহূর্তের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জন সন্ত্রাসী বাঁশ, রড, স্টিলের পাইপ, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাস ঘেরাও করে আমাদের বাস থেকে নামার জন্য বলে। যখন দেখলো আমরা নামছি না, তখন তারা বাস ভাঙা শুরু করল। বাঁশ এবং রড নিয়ে জানালা দিয়ে আমাদেরকে আক্রমণ করার সময় তারা বাসের হেলপার এবং ড্রাইভারকে নামতে বলে।
বাসে থাকা আরেক শিক্ষার্থী লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৩তম আবর্তনের নাসরিন আক্তার বলেন, আমাদের বাস ড্রাইভারের সাথে ওখানকার স্থানীয় অটো চালকদের বাকবিতণ্ডা হয়েছিল আগেরদিন। সেই ঘটনার ঝেরে তারা আমাদের শিক্ষার্থী বাসে হামলা করে।
আগের ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বাসের হেলপার মো. জহির আহমেদ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের টমছম ব্রিজ থেকে বাস ইউটার্ন নেয়ার জন্য আমি বাস থেকে নেমে সামনের অটোগুলোকে একটু সরতে বলি। তখন তারা কয়েকজন আমাকে ও ড্রাইভারকে বাজে ভাষায় কথা বলে এবং আমার গায়ে হাত তোলে। তখনই বাসে থাকা কিছু শিক্ষার্থী বাস থেকে নেমে আমাকে উদ্ধার করেন। তখনও তারা আমাদেরকে গালি ও হুমকি দিচ্ছিল।
এ বিষয়ে কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস এম আরিফুর রহমান বলেন, যে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি এবং যেই ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীরা তুলে নিয়ে এসেছে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মামলা করে তাহলে আমরা তদন্ত শুরু করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ আহত শিক্ষার্থীদের ও তুলে আনা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশ হেফাজতে রয়েছে তুলে আনা ব্যক্তিটি।
অভিযোগ ও অসামঞ্জস্যতার অভিযোগে ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপের তালিকা স্থগিত করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভাইস-চ্যান্সেলর স্কলারশিপ-২০২৩ ও স্পোর্টস স্কলারশিপ-২০২৩-এর প্রাথমিক তালিকায় কিছু অভিযোগ ও অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হওয়ায় তালিকাসহ পত্র স্থগিত করা হলো। শিগগিরই চূড়ান্ত তালিকা ও বৃত্তি প্রদানের তারিখ প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তালিকা তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, অসামঞ্জস্যতা কিছু আছে। তা দূর করার জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সঙ্গে ক্রস চেক করা হচ্ছে। যারা যোগ্য তারাই স্কলারশিপ পাবে।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্কলারশিপ পাওয়া ৪২৯ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এছাড়া ওইদিন প্রথমবারের মতো স্পোর্টস স্কলারশিপের তালিকাও প্রকাশ করে কুবি প্রশাসন।
দেশের সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
লটারির এ অনুষ্ঠানটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ফেসবুক পেজ এবং টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
মাউশি থেকে জানা যায়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ৬৫৮টি সরকারি ও ৩ হাজার ১৮৮টি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন শুরু হয় গত ২৪ অক্টোবর। এই প্রক্রিয়া চলমান ছিল ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
এ প্রক্রিয়ায় দেশব্যাপী ৩ হাজার ৮৪৬টি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির লক্ষ্যে মোট ১০ লাখ ৬০ হাজার নয়টি শূন্য আসনের চাহিদা পাওয়া যায়। শূন্য আসনের বিপরীতে ৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯২টি আবেদন জমা পড়ে। আবেদনগুলো থেকে ভর্তির লক্ষ্যে শ্রেণিভিত্তিক বণ্টন কার্যক্রমে ডিজিটাল লটারি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
মন্তব্য