বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একসঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা নিতে কয়েক বছর থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হচ্ছে। সেই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ফেরার দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিএনপি-জামায়াত মতাদর্শের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সংগঠনটির নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতারা রোববার বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সঙ্গে দেখা করে এমন দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রুলস-রেগুলেশন, বিধি-সংবিধি প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়ে সাদা দলের নেতারা উপাচার্যের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণে সাদা দলের সহযোগিতা চান।
মতবিনিময় সভায় সাদা দল ৭টি দাবি জানান উপাচার্যের কাছে। এগুলো হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা, সম্মান ও ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে অবিলম্বে সমন্বিত গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ভর্তির ব্যবস্থা নেয়া।
অবিলম্বে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জবিতে সুপারনিউমারারি ও অনারারি অধ্যাপকের পদ সৃষ্টির নীতিমালা প্রবর্তনের মাধ্যমে অবসরে যাওয়া অভিজ্ঞ অধ্যাপকদের বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা করা; প্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা; একমুখী দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে ক্যাম্পাসে অংশগ্রহণমূলক সহাবস্থান নিশ্চিত করা; সব ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতকরণ; নতুন ক্যাম্পাসভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে বর্তমান ক্যাম্পাসকে গুরুত্ব দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যোগ্য, সৎ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়া।
আলোচিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানায় সাদা দল।
এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দল গঠনমূলক ও অর্থবহ যেকোনো বিষয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেয়।
দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব তহবিল গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে এ তহবিল গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’-এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
মুন জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেন- প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে প্রকল্প বাস্তবায়নে তারা নিজস্ব ফান্ড তৈরি করতে পারে।
শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্যদের সরকার প্রধান বলেন, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে দেশের উন্নয়নে কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী। একটু সুযোগ করে দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষ করে বিদেশ থেকেও তারা উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারে।’
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদেরকে আরও দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোনার ছেলে গড়ে তুলতে হবে বলে এ সময় মন্তব্য করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকে সে লক্ষ্যে পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা ও সৃজনশীল কাজের মধ্যে তাদেরকে যুক্ত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুনরায় চালুর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর অস্ত্রের সেই ঝনঝনানি নেই। দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার শিক্ষার উন্নয়ন, গবেষণা, উৎপাদন ও উৎকর্ষতার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখন দেশে শিক্ষার হার ও মান বৃদ্ধি পায়।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে।
উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপাচার্যরা তাদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৪৮টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও বিবিএ প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরু হবে ২২ জানুয়ারি।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিট এবং ‘সি’ ইউনিটের সব আসন প্রায় পূরণ হয়ে গেছে। ‘এ’ ইউনিটে কিছু সংখ্যক সিট ফাঁকা আছে যা অষ্টম মেধাতালিকার মাধ্যমে পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করছি৷
১২ জানুয়ারি থেকে ১৫ বা ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তির টাকা নেয়া হবে। পরবর্তীতে খুব দ্রুতই ক্লাস শুরু করা যাবে।
গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন একটি পদ্ধতি আসলে কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। এটা ঠিক হয়ে যাবে।
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, সেশনজট যাতে না হয় সেজন্য ২২ জানুয়ারি থেকেই প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের চলমান ব্যাচগুলোর সাথে তো নতুন ব্যাচের সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে সেশনজট তৈরি হবে। করোনার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীদের ১ বছর নষ্ট হয়েছে। এখন চেষ্টা থাকবে সেটা দ্রুত কমিয়ে আনার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে ভর্তি শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫৩টি সিট ফাঁকা আছে। তারমধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৩৪১ টি, ‘বি’ ইউনিটে ৪ টি এবং ‘সি’ ইউনিটে ৭ টি ও বিশেষায়িত বিভাগে একটি আসন খালি আছে।
এদিকে চলমান মঙ্গলবারের অনলাইন ক্লাস এখনই বন্ধ হচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেয়া এই সিদ্ধান্ত চলমান সেমিস্টার পর্যন্ত বহাল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সেমিস্টারের পর নতুন সেমিস্টারে সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান উপাচার্য।
তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন সশরীরে ক্লাস বন্ধ রেখে অনলাইনে ক্লাস চলায় ২০ থেলে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সাশ্রয় হয়। এতে প্রতি মাসে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকার বিল কম আসে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা বন্ধ থাকায় আগের থেকে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ খরচ কমেছে।
আরও পড়ুন:নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান বিষয়ে মাধ্যমিকের শিক্ষকদের জন্য পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে শুক্রবার। সারা দেশে ২ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক এ প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য সই করা বিজ্ঞপ্তিতে প্রশিক্ষণের দিন ও সময় জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ৬ জানুয়ারি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে। এ ছাড়া ৭ জানুয়ারি, ১৩ জানুয়ারি, ১৪ জানুয়ারি ও ১৫ জানুয়ারি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রশিক্ষণ হবে।
এর আগে ২০ জানুয়ারি প্রশিক্ষণ পরিচালনার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তা পরিবর্তন করে ১৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন পাঠ্যক্রমের বিস্তারের জন্য ‘Dissemination of New Curriculum’ স্কিমের আওতায় মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানরত সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে প্রশিক্ষণ। দেশের ৪০৮টি উপজেলা ও ২৫টি থানায় এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।
মাউশি জানায়, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন সদ্য প্রশিক্ষণ পাওয়া মাস্টার ট্রেইনাররা। প্রশিক্ষণে ২ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংখ্যা এবং দূরত্ব বিবেচনায় ডাবল শিফটের পরিবর্তে এক শিফট চালুর নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে এই নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এ লক্ষ্যে সিঙ্গেল শিফটে শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক নাসরিন সুলতানার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, যেসব বিদ্যালয়ে বর্তমানে পর্যাপ্তসংখ্যক ব্যবহারযোগ্য শ্রেণীকক্ষ ও শিক্ষক রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ে অবিলম্বে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে। আর বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ বা শিক্ষক নেই বা উভয় ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে এরূপ কাছাকাছি অবস্থিত (সর্বোচ্চ ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে) দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পাঠদানের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত কার্যক্রম চালু করতে হবে।
এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য দূরত্বের বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সংখ্যা এবং বিদ্যালয়ের ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষের তথ্য বিশ্লেষণ করে পাশাপাশি দুটি বিদ্যালয়ে দুই ভাগ করে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান পরিচালনা করতে হবে।
দুটি বিদ্যালয়ের মাঝে শ্রেণি বিভাজনের ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত একটি বিদ্যালয়ে এবং অন্যটিতে তৃতীয় শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন জনবলের মাধ্যমে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিঙ্গেল শিফট চালুর ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন:বিশ্বসেরা গবেষক র্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বিভাগের ৯৫ জন গবেষক। তাদের মধ্যে ৯৩ জন শিক্ষক ও ২ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
অ্যালপার ডগার (এডি) সায়েন্টিফিক ইনডেক্স-২০২৩ এ বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন তারা। তালিকায় দেশের ১৬৮টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৬ হাজার ৩৩৫ জন গবেষক রয়েছেন।
তালিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান, দ্বিতীয় সালেহ আহাম্মেদ ও তৃতীয় স্থানে মো. শরিফুল আলম। তালিকায় বাংলাদেশি শীর্ষ ৫ হাজার গবেষকের মধ্যে জবির ৮৯ জনের নাম রয়েছে।
ইনডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৯তম, আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১৫০৮তম আর বিশ্ব র্যাংকিংয়ে ৪৫৩৩তম।
এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স বিশ্বের ২১৬টি দেশের ১৯৫২৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ লাখ ৪১ হাজার ৫২৩ জন বিজ্ঞানী বা বৈজ্ঞানিক গবেষকের তালিকা করেছে। তাদের সবার গবেষণাসহ বিভিন্ন কর্ম বিশ্লেষণ করে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও দেশভিত্তিক বিজ্ঞানী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করা হয়েছে।
সায়েন্টিফিক ইনডেক্স গবেষকদের গুগল স্কলারের রিসার্চ প্রোফাইলের বিগত পাঁচ বছরের গবেষণার এইচ ইনডেক্স, আইটেন ইনডেক্স ও সাইটেশনের তথ্যের ভিত্তিতে এই র্যাংকিং প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ‘এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স র্যাংকিংয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এটি আমাদের জন্য গর্বের। তবে এ তালিকায় স্থান পাওয়ার যোগ্য আরও অনেক শিক্ষকই আছেন, যারা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন। কিন্তু গবেষণাপত্র অনলাইনে আপলোড না করায় তাদের নাম আসেনি। আমরা আশাবাদী, আগামীতে এই সংখ্যা অনেক বাড়বে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, ‘বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক স্থান পেয়েছেন তাদের অভিনন্দন। ইতোমধ্যে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বুয়েট, ঢাবিসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছি। আগামীতে গবেষণায় আরও ভালো ফল আসবে এবং মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করছি।’
এর আগে ২০২১ সালে প্রকাশিত তালিকায় দেশের মোট এক হাজার ৭৮৮ জন গবেষকের মধ্যে জবির ২১ জন এবং ২০২২ সালে দুই হাজার ৭৭২ জনের মধ্যে ৬৩ জন গবেষক স্থান পেয়েছিলেন।
এদিকে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের তালিকা ও র্যাংকিং প্রকাশ করা এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স লিমিটেডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকার শীর্ষ ১০ বা ১০০-তে বাংলাদেশের কোনো বিজ্ঞানীর নাম নেই। তবে সায়েন্টিফিক ইনডেক্সে বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় বাংলাদেশের ৩ জন ঠাঁই পেয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন এবং আইসিডিডিআর,বির ২ জন রয়েছেন। তাদের মধ্যে শীর্ষে আছেন আইসিডিডিআর,বির বিজ্ঞানী রাশিদুল হক।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলিতে আবারও অনলাইনে আবেদন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার, যা চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এর আগেও অনলাইনে বদলির আবেদন নেয়া হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন সুলতানা স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বদলি সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা (সংশোধিত) ২০২২ জারি হওয়ার পর একই উপজেলায় দ্বিতীয় দফা অনলাইন বদলি আবেদন শুরু হচ্ছে ৩ জানুয়ারি। ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত একই উপজেলার মধ্যে বদলির আবেদন কার্যক্রম চালু থাকবে।
শিক্ষকরা ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ তিনটি বিদ্যালয় পছন্দ করবেন। তবে কোনো শিক্ষক শুধু একটি বা দুটি বিদ্যালয়ও পছন্দ করতে পারবেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলির আদেশ জারি হলে তা বাতিল করার জন্য পরবর্তী সময়ে কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না।
সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একই উপজেলার মধ্যে বদলির অনলাইন আবেদন শুরু হয় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর, যা চলে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরে সময় বাড়িয়ে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়।
এর আগে গত বছরের ৩০ জুন গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অনলাইনে বদলি কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আরও একবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদের ১৪টিতেই জয় পেয়েছে এই সংগঠন।
সমিতির সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।
বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সাদা প্যানেল থেকে কেবল সহ-সভাপতি পদে জয় পেয়েছেন পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভবনে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট গণনা শেষে বিকেল ৫টায় নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালকের দায়িত্বে থাকা ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার।
সভাপতি পদে জয়লাভ করা অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ভোট পেয়েছেন ৮১৯টি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাদা দলের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৮৪ ভোট। আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন পেয়েছেন ১৩২ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা পেয়েছেন ৭১২ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাদা দলের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান পেয়েছেন ৫৮১ ভোট।
কোষাধ্যক্ষ পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু খালেদ মো. খাদেমুল হক নীল দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া ১০টি সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন- টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জেএম শফিউল আলম ভূইয়া, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. চন্দ্র নাথ পোদ্দার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউর রহমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আক্কাছ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো মাকসুদূর রহমান, জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন মুসা। তারা সবাই নীল দলের প্যানেল থেকে জয়ী হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ভোটে এক বছরের জন্য শিক্ষক সমিতির সদস্যরা নির্বাচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অধিকার আদায়, সুযোগ-সুবিধা ও সার্বিক কল্যাণসহ সমিতির নির্বাচিত নেতারা ভূমিকা পালন করে থাকেন।
কয়েক বছর ধরে সমিতির নির্বাচনে নীল দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আসছে। নিয়মিত ভরাডুবির পরও সাদা দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ অব্যাহত রেখেছে। তবে বামপন্থী গোলাপি দল ২০১৬ সালের পর থেকে আর নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য