শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে গবেষণা ও প্রকাশনা মেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২২ ও ২৩ অক্টোবর এই মেলা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে মেলা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ/ইনস্টিটিউট/গবেষণা সেন্টারের উদ্ভাবন, গবেষণা ও প্রকাশনা তুলে ধরা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
উপাচার্য জানান, একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকাশনা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ।
মেলায় অনুষদগুলোর জন্য ১০টি, ইনস্টিটিউটগুলোর জন্য একটি, প্রকাশনা সংস্থার জন্য একটি এবং গবেষণা কেন্দ্রগুলোর জন্য একটিসহ মোট ১৩টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। এছাড়া একটি কেন্দ্রীয় মঞ্চ থাকবে।
মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অ্যালামনাই ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেবেন।
আগামী ২২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
মেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত প্রকাশনাসহ উল্লেখযোগ্য প্রকাশনাসমূহ যেমন, গ্রন্থ, জার্নালের বিশেষ সংখ্যা, গবেষণা প্রকল্প, পোস্টার, ফ্লায়ার, ব্রুশিয়ার প্রদর্শন ও উপস্থাপন করা হবে।
উপাচার্য বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে মেলায় ৫৫টি গ্রন্থ, ২৬টি বিশেষ জার্নাল, ২১৬টি গবেষণা প্রজেক্ট, ৬২৪টি পোস্টার এবং ৮৬টি ফ্লাইয়ার/ব্রুশিয়ার স্থান পাবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং সেন্টার অংশ নেবে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
উপাচার্য জানান, ২২ অক্টোবর উদ্বোধনী দিনে বিকেল ৩টায় কলা, বিজ্ঞান, আইন, বিজনেস স্টাডিজ এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পৃথক উপস্থাপনা থাকবে। ২৩ অক্টোবর সমাপনী দিনে সকাল ১০টায় জীববিজ্ঞান, ফার্মেসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রমেন্টাল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং চারুকলা অনুষদের পৃথক উপস্থাপনা থাকবে।
এ ছাড়া সব ইনস্টিটিউটের পক্ষে একটি এবং গবেষণাকেন্দ্র/ব্যুরোর পক্ষে একটি উপস্থাপনা থাকবে। প্রত্যেক অনুষদের প্যাভিলিয়নের সঙ্গে অনুষদভুক্ত বিভাগসগুলোর একটি করে স্টল এবং ইনস্টিটিউটের প্যাভিলিয়নের সঙ্গে প্রত্যেক ইনস্টিটিউটের একটি করে স্টল থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে কবিতা, রচনা ও ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা এবং শতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত প্রত্যেক জার্নালের বিশেষ সংখ্যার শ্রেষ্ঠ আর্টিক্যাল লেখককে সনদ, ক্রেস্ট ও প্রাইজ-মানি দেয়া হবে।
প্রত্যেক অনুষদ, ইনস্টিটিউট এবং সেন্টারের উপস্থাপিত পোস্টারের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পোস্টার উপস্থাপনকারীকেও পুরস্কার দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:পাঠ্যবইয়ের ভুলভ্রান্তি সংশোধনের পাশাপাশি এর পেছনে কারও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে দুটি কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিগগিরই এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান করা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এম ওয়াহিদুজ্জামানকে। বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এই কমিটি করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বিভিন্ন ভুল পর্যালোচনা করে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি ভুল সংশোধন করবেন।
অন্যদিকে প্রশাসনিক কমিটির প্রধান করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খালেদা আক্তারকে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই কমিটি করা হয়েছে।
পাঠ্যপুস্তকে ভুলের পেছনে কারও গাফিলতি আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে ২৪ জানুয়ারি রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘বইয়ে কী ধরনের ভুল বা বিতর্ক রয়েছে তা যাচাই-বাছাই করার জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আমাদের রিপোর্ট দেবে, আমরা বই সংশোধন করব। পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মতো কোনো বিষয় যেন না থাকে সে জন্য কাজ করব।’
আরও পড়ুন:ডাকে একটি বেনামি চিঠি পাঠিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
রোববার সকালে বিভাগের চেয়াম্যানের চিঠির বাক্স থেকে তিনি এই চিঠি পান বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
অধ্যাপক মিল্টন জানয়েছেন, চিঠিতে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কলাম লেখার কারণে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, চার পৃষ্ঠার চিঠিটিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার নিয়ে কটূক্তি করাসহ অশ্লীল ভাষায় গাল-মন্দ করে সরকারের সমালোচনা করা হয়। এতে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ ৯টি ছবির ওপর বিভিন্ন লেখা আছে।
এর আগেও ২০১৪ সালে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে কলাম লেখার কারণে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল।
চিঠির বিষয়ে অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস বলেন, যারাই এসব কাজের সাথে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করবো।
আরও পড়ুন:আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ হবে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হবে। এরপর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ফল ঘোষণা করবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এর আগে, আগামী ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল শিক্ষা বোর্ডগুলো। সেখান থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে ফল প্রকাশের রীতি মেনে চলে শিক্ষা বোর্ডগুলো। সেই হিসেবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এই সময়সীমা শেষ হতে যাচ্ছে।
বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ৬ নভেম্বর। এতে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে মোট ১২ লাখ তিন হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
এ বছর দুই হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্র ও ৯ হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ১৩ ডিসেম্বর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ও ২২ ডিসেম্বর ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়।
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) দ্বাদশ বাংলাদেশ রসায়ন অলিম্পিয়াড ২০২১ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করা দেশের বিভিন্ন কলেজের ৩৪০ জন শিক্ষার্থী থেকে সেরা ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি ও রসায়ন বিভাগের যৌথ আয়োজনে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে এর মূল পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি অলিম্পিয়াড কার্যক্রমের প্রাইমারি রাউন্ডে ৩৪০ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। তাদের মধ্যে থেকে মূল পর্বের জন্য ৯৯ জন নির্বাচিত হন। ফাইনাল রাউন্ডে পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করে ১০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
তারা হলেন- নটরডেম কলেজের আর্জ কর, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের তামিম মো. রাঈদ, সরকারি তোলারাম কলেজের আহাদ ইসলাম তালুকদার, সোনারবাংলা কলেজের ইরফান আহমেদ, নটরডেম কলেজের সঞ্জয় কুমার, চট্রগ্রাম কলেজের নিলয় দেব, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের লিহান হায়দার, চট্টগ্রাম কলেজের আয়মান রাফী, শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের নিশাত সুলতানা এবং বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের অভিষেক মজুমদার।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সেরা ১০ জনকে সার্টিফিকেট, ক্রেস্ট ও ক্যালকুলেটর উপহার দেয়া হয় এবং প্রথম স্থান অধিকারীর হাতে একটি ট্যাব তুলে দেয়া হয়। এই সেরা ১০ জনের মধ্য থেকে বাছাইকৃত প্রথম ৪ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক রসায়ন অলিম্পিয়াডে পাঠানো হবে।
রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও অলিম্পিয়াডের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শামসুন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান এবং বাংলাদেশ ক্যামিকেল সোসাইটির সভাপতি মো. রজিউর রহমান মল্লিক।
অলিম্পিয়াডের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান।
আরও পড়ুন:বিবর্তনের মাধ্যমে বানর থেকে মানুষ হয়েছে এমন তথ্য পাঠ্যবইয়ে নেই; এটি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ।
চাঁদপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে শুক্রবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ের কোথাও বানর থেকে মানুষ হয়েছে; এমন তথ্য নেই। অথচ একটি গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে। অনেকেই আবার না দেখে মন্তব্য করছেন। আপনারা বই খুলে দেখুন, কোথাও এ কথা নেই। কেউ গুজবে কান দেবেন না।’
দীপু মনি বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুল বেরিয়েছে তার অধিকাংশই ১০ বছর আগের। সেখানে কোনো ভুল যদি থাকে, সেটা অনিচ্ছাকৃত। আর যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভুল করে, তার জন্য আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। ’
২০২৩ সালের ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলনী বইয়ে মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস ব্যাখা করতে গিয়ে ডারউইনের বিবর্তনবাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রসঙ্গ তুলে একজন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার সমালোচনা করেন। এসব নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে ভর্তি ফিতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ।
‘কনভোকেশন স্পেশাল অ্যাডমিশন কার্নিভাল’ নামের ছাড় উৎসবে দুই সপ্তাহব্যাপী এইচএসসি ও এ-লেভেলের শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি ফি ৪ হাজার টাকা এবং ডিপ্লোমাধারীদের জন্য ১ হাজার টাকা থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে টিউশন ফির ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি থাকছে। পাশাপাশি তিন বা তার বেশি শিক্ষার্থী একসঙ্গে ভর্তি হলে টিউশন ফিতে ৫ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে।
এমবিএর শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফিতে ৫০ শতাংশ এবং এক্সিকিউটিভ এমবিএর জন্য ৬০ শতাংশ ছাড় থাকছে। সব বিষয়ে ভর্তিচ্ছুদের জন্য টিউশন ফির ওপর রয়েছে ৪০ শতাংশ ছাড়।
চলতি মাসের শেষের দিনে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শান্তিতে নোবেলজয়ী ও ভারতের শিশু অধিকারকর্মী কৈলাস সত্যার্থী সমাবর্তন বক্তা হিসেবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা বিনিময় করবেন।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে স্নাতক পর্যায়ে বিবিএ, ইইই, সিএসই, ইংরেজি, এলএলবি, মিডিয়া কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম এবং শিপিং অ্যান্ড মেরিটাইম সায়েন্সে পড়ার সুযোগ আছে শিক্ষার্থীদের।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে রয়েছে মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টেশন ও লজিস্টিকস, এমবিএ এবং এক্সিকিউটিভ এমবিএতে অধ্যয়নের সুযোগ।
ইইই ও সিএসইতে রয়েছে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের ভর্তির সুযোগ।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশই দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে ব্লু ইকোনমির অপার সম্ভাবনাময় ‘শিপিং অ্যান্ড মেরিটাইম সয়েন্স’ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেয়া হয়।
ভর্তি সংক্রান্ত সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (www.cub.edu.bd) পাওয়া যাবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য ফোন করা যাবে ০১৭০-৭০৭০২৮০, ০১৭০-৭০৭০২৮১, ০১৭০-৭০৭০২৮৪ নম্বরে। ওই নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ করেও চ্যাট করা যাবে সিইউবির অ্যাডমিশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ ক্যাম্পাসের ঠিকানা: প্লট-খ, ২০১/১, প্রগতি সরণি, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত বছর আন্দোলনে নেমেছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ২৮ শিক্ষার্থী অনশনও শুরু করেন। পরে ২৬ জানুয়ারি ‘সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাসে’ তাদের অনশন ভাঙান এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এরপর আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
‘উচ্চপর্যায়ের’ সেই আশ্বাসের এক বছর পেরিয়েছে এরই মধ্যে। তবে এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি। স্বপদেই বহাল আছেন উপাচার্য । এ ছাড়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা একটি মামলাও এখন পর্যন্ত প্রত্যাহার হয়নি। পুলিশের স্পিল্টারে আহত শিক্ষার্থী সজল কুন্ডুর চিকিৎসাব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
২০২১ সালের জুনে দ্বিতীয় মেয়াদে শাবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন। তার নির্ধারিত চার বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের জুনে। এই সময়ের মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগে সরকারের ‘আশ্বাস’ বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কিত খোদ আন্দোলনকারীরাই।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ করার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। সেই আশ্বাসেই আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু এক বছরেও উপাচার্যের পদত্যাগসহ কয়েকটি দাবি পূরণ হয়নি। এগুলো আদৌ পূরণ হবে কি না এ নিয়ে আমরা নিজেরাই শঙ্কিত।’
তিনি বলেন, ‘গত এক বছরে ক্যাম্পাসে একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকেও আমাদের সঙ্গে আর কোনো ধরনের যোগাযোগ করা হচ্ছে না।’
আন্দোলনের শুরু ও শেষ যেভাবে
সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ দাবিতে গত বছরের জানুয়ারিতে আন্দোলনে নামেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এই দাবিতে ১৬ জানুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদকে আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় পুলিশ টিয়ারসেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে আনে। এ সময় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, পুলিশসহ অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী।
১৬ জানুয়ারি রাতেই সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। পরদিন দুপুরের মধ্যে হল ছাড়তেও শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে এই নির্দেশনা অমান্য করে ওই রাত থেকেই উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯ জানুয়ারি বিকেল থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১ জন শিক্ষার্থীর বাবার অসুস্থতার কারণে অনশন ত্যাগ করেন এবং আরও পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। এক পর্যায়ে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎসংযোগও বন্ধ করে দেন তারা।
২৬ জানুয়ারি ভোররাতে ক্যাম্পাসে আসেন জনপ্রিয় লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমীন হক। তারা দুজনই শাবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়া হবে, তারা দুজন এমন আশ্বাস দিলে ১৬৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন ২৮ শিক্ষার্থী।
ওইদিন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তোমাদের দাবিগুলো দ্রুততম সময়েয় মধ্যে মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। তাদের আশ্বাস না পেলে আমি এখানে আসতাম না। এখন যদি তারা কথা না রাখেন তা কেবল আমার সঙ্গে না দেশের সকল প্রগতিশীল মানুষের সাথেই মিথ্যাচার হবে’।
যেসব দাবি ছিল শিক্ষার্থীদের
শাবি শিক্ষাথীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে এসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি এবং আট দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন।
তাদের দাবিগুলো ছিল- উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সব আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেয়া পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন ও অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ভার বহন।
সেদিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরকে সব দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন এবং উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। এই আশ্বাসের পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এরপর শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডিতে পরিবর্তন আনা হয়, ক্যাম্পাসের সব আবাসিক হল সচল হয়, শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেয়া পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন পান এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
একবছরেও পূরণ হয়নি প্রধান দাবি
একবছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত প্রধান দাবিসহ কয়েকটি দাবি পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘আমাদের প্রথম এবং প্রধান দাবি ছিল দ্রুততম সময়ে ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করে একজন গবেষণামনা, শিক্ষাবিদ ও অবিতর্কিত ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হোক। মন্ত্রী এই বিষয়ে বলেছিলেন, ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ আচার্যের কাছে উপস্থাপন করা হবে। আচার্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু এতদিন পরেও ফরিদ উদ্দিন আহমদ শাবিপ্রবির উপাচার্য পদে বহাল আছেন।’
তিনি বলেন, ‘১৬ জানুয়ারির হামলার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সজল কুন্ডুকে অন্তত ৯ম গ্রেডের একটি চাকরি এবং নগদ ক্ষতিপূরণ দেয়ার স্পষ্ট আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সজল এখনো শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ বা চাকরি কোনোটাই পাননি।
‘উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তিনি যে ক্যাফেটেরিয়াটি চালাতেন সেটিও কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রথম কিছুদিন সরকারী তত্ত্বাবধানে সজলের নিয়মিত চেকআপের ব্যবস্থা করা দুই তিনমাস পর তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
অনশনকারী শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখপাত্র শাহারিয়ার আবেদীন বলেন, ‘জাফর স্যারের সঙ্গে আমাদের মাঝেমাঝে কথা হয়। স্যারও এ বিষয়ে হতাশ। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এখনো স্যারকে আমাদের দাবি পূরণে কাজ চলছে বলে জানানো হচ্ছে।’
দাবির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি বৈঠক আয়োজনে অধ্যাপক জাফর ইকবাল চেষ্টা করছেন বলে জানান শাহারিয়ার।
কথা বলতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও তাদের দাবি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ।
এ বিষয়ে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, ‘তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। এগুলো আমার এখতিয়ারে নেই।
‘ওই ঘটনার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সুন্দর ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সচেষ্ট ছিলাম। তাতে সফলও হয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক অনেক ভালো।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য