ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ স্মারক জাতীয় বিতর্ক উৎসব-২০২২ এর ফাইনাল রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি। রানার-আপ হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বাবা এম এ ওয়াদুদের নামে চাঁদপুর ডিবেট মুভমেন্ট এই বিতর্ক উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ স্মারক জাতীয় বিতর্ক উৎসব-২০২২’।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। দেশের ৩২ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার বিতার্কিক এতে অংশ নেন।
শনিবার সমাপনী দিনে ‘এই সংসদ ভিসামুক্ত বিশ্ব নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেবে’ বিষয়ক প্রতীকী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারি দলের পক্ষে বিতার্কিক ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শামীম রেজা ও যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক মাহফুজ মিশু। বিরোধী দলের বিতার্কিক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মশিউর রহমান, ডা. আব্দুর নুর তুষার প্রমুখ।
এদিন ‘চিকিৎসক ও প্রকৌশলীরা অন্য পেশায় যেতে পারবেন না’ শিরোনামে অন্য একটি রম্য বিতর্কেও অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী।
তাছাড়া সমাপনী দিবসে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘কেমন হবে স্বপ্নের শিক্ষা ব্যাবস্থা’ শিরোনামে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক চর্চা এগিয়ে নিতে বিতর্ক শক্তিশালী সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বিতর্ক আমাদের নিত্যদিনের অনুষঙ্গ। আমাদের তরুণ সমাজ বর্তমান ও আগামী বিশ্বের চালিকাশক্তি এবং নেতৃত্বের কর্ণধার। আসুন আমরা আমাদের চেতনাকে শাণিত করে যুক্তিনির্ভর চিন্তাকে আরও বিস্তৃত করি।’
ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান দীপু মনির সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ডা. আবদুর নূর তুষার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মশিউর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম শামীম রেজা ও নগদ-এর ডাইরেক্টর সোলাইমান সুখন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামান, অধ্যাপক অসিত বরণ দাস ও বাবুরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোশারফ হোসেন।
আরও পড়ুন:কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে দেশের নয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বেলা ১১টায় সারাদেশে একযোগে কৃষিগুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামালের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির এক জুম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দুজন সদস্য, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, ইউজিসির সচিব, সিভাসুর রেজিস্ট্রার এবং ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য কৃষি গুচ্ছের ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
কৃষি গুচ্ছভুক্ত দেশের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া গত ২২ এপ্রিল শুরু হয়ে ৩০ মে পর্যন্ত চলে। এতে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন।
প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত ৩০ মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে তা কয়েক দফা পেছানোর পর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে আয়োজক ভর্তি কমিটি।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া। তবে এটির কর্মপদ্ধতি কী হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতি দ্রুত ক্যাম্পাসে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে অবস্থানকালীন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। আর যেসব শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে তাদেরকে উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন দুই উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়োগ দেয়া হয়।
নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) পদে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান এবং ট্রেজারার পদে গণিত বিভাগের অধ্যাপক এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুর রব।
প্রজ্ঞাপনগুলোতে বলা হয়, এই নিয়োগ চার বছরের জন্য হলেও রাষ্ট্রপতি বা আচার্য যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। তাদের বেতন হবে বর্তমান বেতনের সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-বিধি ছাড়াও ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করবেন তারা। এছাড়াও ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে তাদের।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ওই সরকারের আমলে বিভিন্ন পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা একে একে পদত্যাগ করা শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় ৭ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ১৩ আগস্ট প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং ১৯ আগস্ট প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) ও ট্রেজারার পদত্যাগ করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে মানববন্ধন ও শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেল ৪টায় আবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজকের (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি নিয়ে নয়-ছয় আর নয় আর নয়, ‘ঢাবি রাবি ভিসি পেল, চবি কেন পিছিয়ে গেল’, ‘আর নয় বিজ্ঞাপন, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘ঢাবি রাবি স্বর্গে, চবি কেন মর্গে’, ‘শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য, ভিসি হবে দক্ষ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ভিসি নিয়োগের একটি গুঞ্জন শোনা যায়। রোববার ভিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের সাথে এই প্রজ্ঞাপন-প্রজ্ঞাপন খেলা বন্ধ করুন। ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।’
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ’আমরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি কিন্তু এখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। আমরা কি আন্দোলনই করে যাব শুধু?
‘বাংলাদেশের অন্য সব স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হলেও আমরা এখনো ভিসি পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ অতিসত্বর ভিসি নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার। আমরা শিক্ষার্থী, আমাদের জায়গা হচ্ছে পড়ার টেবিলে। আমাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিন।’
আরও পড়ুন:তরুণ লেখকদের সংগঠন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাজীবকে সভাপতি এবং ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল মাসুম হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি আমজাদ হোসেন হৃদয় ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান উদ্দিন এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ‘সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হোক লেখনীর ধারায়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। তরুণ লেখকদের পরামর্শ দেয়া, পত্রিকায় লেখা প্রকাশে সহযোগিতা করাসহ লেখালেখি বিষয়ক সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।
বর্তমানে দেশের সরকারি, বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সংগঠনের কার্যক্রম চলমান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রাম অনেক হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে। এখন আমাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে হবে এবং পড়ার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।’
রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের সদস্য ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার হচ্ছে এবং রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করতে হবে। প্রতিটি সেক্টরে মেধাবীর প্রয়োজন রয়েছে। কারণ দেশের বাইরের মেধাবী লোকজন এসে চাকরি করছে। আর আমাদের দেশের টাকা নিয়ে যাচ্ছে তারা। এতে করে আমাদের রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে এবং যোগত্যা দিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।’
সারজিস আলম আরো বলেন, একটা সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচর মুক্ত করেছি। আমরা যখন রাষ্ট্রকে গঠন করতে যাব, তখন আমাদের মানসম্মত মেধা দরকার। আর সে মেধার জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। দেশ গঠন করতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধা সম্পন্ন মানুষ লাগবে।
এই সমন্বয়ক বলেন, ‘এতো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা করতে না পারলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। তবে দেশে আবার কোনো রাজনৈতিক দল স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড করতে চাইলে প্রয়োজনে আবারও আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে। তার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত থাকব।’
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল্লা সালেহিন নয়ন, সামিয়া মাসুদ মুমু, মবাশ্বিরু জামান হাসান মৃধা, মেহেরাব হোসেন সিফাত, মুহাম্মদ হৃদয় হোসেন, আদিনা খান. খোন্দকার রায়হা, কাজী ইসমাইল হোসেন রুদ্র ও কাজী জুবায়ের উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাড়ে চার শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য কমন বাথরুম রয়েছে ২৮টি। এর ২৭টিই পুরনো এবং জীর্ণ দশা। কেবল একটি বাথরুমের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।
সম্পূর্ণ টাইলস করা এবং বেসিন ও কমোডসহ বেশ কিছু অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বাথরুমটিতে। প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে গত বছর নতুন করে এসব সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। অত্যাধুনিক ফিটিংস দিয়ে সাজানো বাথরুমটি ব্যবহার করতেন শাখা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। তাই স্বপ্রণোদিত হয়ে বাথরুমটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শায়খুল ইসলাম মামুন জিয়াদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি গঠিত হয় ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর। কমিটি গঠনের পর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু এই হলের ২৩০ নম্বর কক্ষে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ২২৮ নম্বর কক্ষে থাকা শুরু করেন। তারা দুজন হলের ২৩৪ নম্বর বাথরুমটি ব্যবহার করতেন।
নেতাদের তুষ্ট করতে বাথরুমটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেন তৎকালীন প্রাধ্যক্ষ। তিনি বাথরুমটি আধুনিকীকরণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর একটি আবেদনপত্র পাঠান। এই আবেদনপত্রের একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
আবেদনপত্রটিতে বলা হয়েছে, ‘...জরুরি ভিত্তিতে বাথরুমটি আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি। উল্লেখ্য যে, উক্ত বাথরুমটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি ব্যবহার করে থাকেন।’
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর বাথরুমটি আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘হল প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বাথরুমটি আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেই। এ কাজে আনুমানিক দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘বিষয়টিকে মোটেও ভালোভাবে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে মানবেতর জীবনযাপন করে। যেখানে অন্য বাথরুমগুলোর অবস্থা খারাপ সেই পরিস্থিতিতে দুজন বিশেষ ছাত্রনেতার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করে বিশেষ সুযোগ দেয়া অন্যায় এবং বৈষম্য। কারণ এই টাকাগুলো কারও ব্যক্তিগত না; বরং শিক্ষার্থীদের ও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান মুন্না বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে হলগুলোর প্রাধ্যক্ষ হিসেবে তাদেরকেই নিয়োগ দেয়া হতো, যারা ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পারবেন। ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ছাত্রলীগের রাজত্ব বজায় রাখতে পারবেন।
‘বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ শায়খুল কখনোই ছাত্রদের জন্য কিছু করেননি। উল্টো বিভিন্ন সময় ছাত্রদেরকে বিপদে ফেলেছেন তিনি। এমন বাথরুম-সেবা ছাড়াও তিনি সবসময় ছাত্রলীগকে নানামুখী সেবা দিয়ে গেছেন। এমন একজন ব্যক্তির বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার কোনো অধিকার নেই।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ শাইখুল ইসলাম মামুন জিয়াদ বলেন, ‘ওরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এসেছিল। এখানে আমার কিছু করার ছিল না।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক শায়খুল হল প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য