করোনা-পরবর্তী সময়ে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যাকাডেমিক চাপ প্রভাব বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। এর প্রভাবে বেড়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা।
‘মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর অ্যাকাডেমিক চাপের প্রভাব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। আঁচল ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের উদ্যোগে শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আত্মহত্যা করেছে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৭ জন, স্কুলের ২১৯ জন, মাদ্রাসার ৪৪ জন ও কলেজ পড়ুয়া ৮৪ জন। তাদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ২৪২ ও পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন।
করোনা-পরবর্তী সময়ে বেড়ে যাওয়া আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে পরিচালিত জরিপে অ্যাকাডেমিক চাপ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার জন্য কতটুকু দায়ী এবং অন্য কী কী কারণ রয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২৩ দশমিক ৪১ শতাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ২ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে।
এবারের জরিপটিতে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট ১৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মাঝে পুরুষ শিক্ষার্থী ও নারী শিক্ষার্থী ছিলেন যথাক্রমে ৪৩ দশমিক ৯ ও ৫৬ দশমিক ১ শতাংশ।
জরিপে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ৭৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা করোনা-পরবর্তী অ্যাকাডেমিক চাপের কারণে নানামুখী মানসিক ও গঠনমূলক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
লেখাপড়াকেন্দ্রিক চাপের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৪৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ জানান যে আগের তুলনায় করোনা-পরবর্তী সময়ে লেখাপড়ায় তাদের মনোযোগ কমে গেছে। ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের ঘন ঘন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে তারা খাপ খাওয়াতে পারছেন না। পরীক্ষার সময়ের চেয়ে সিলেবাসের আধিক্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর। ২০ দশমিক ৭৩ শতাংশ জানিয়েছেন, স্বল্প সময়ে এত বড় কোর্স শেষ করতে গিয়ে তারা পড়া বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ জানান, লেখাপড়ার চাপের জন্য তারা পরিবারকে সময় দিতে পারছেন না, যা তাদের মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন যে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে।
শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো
করোনা-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের জীবনে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে তা হলো লেখাপড়ার অতিরিক্ত চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারা। ৩১ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা একডেমিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। নিজের বা পারিবারিক অর্থনৈতিক সংকটের চাপে আছেন ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী।
ভালো চাকরি না পাওয়া নিয়ে চাপ বোধ করছেন ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। সহপাঠীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের শিকার হয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগছেন ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এছাড়া পার্টনারের সঙ্গে মনোমালিন্য, বিয়ে নিয়ে অযাচিত চাপ এবং পারিবারিক ঝগড়া বিবাদজনিত চাপে আছেন ১৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা এই চাপের কারণে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছেন।
আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে অশনি সংকেত
করোনা-পরবর্তী সময়ে ১৬৪০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জন বা ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার পথে হেঁটেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা-পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করার চিন্তা মাথায় এসেছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
ডিজিটাল ডিভাইস আসক্তি বাড়াচ্ছে মানসিক সমস্যা
ডিজিটাল ডিভাইস যেমন- মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, আমাদের জীবনকে সহজ করে তুললেও এর ওপর অতিরিক্ত আসক্তি ও নির্ভরতা শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন ৭০ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার হার বেড়েছে
ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন যেমন- হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, বহির্মুখী (এক্সট্রোভার্ট) কিংবা আত্মকেন্দ্রিক (ইন্ট্রোভার্ট) হয়ে ওঠার প্রবণতাও শিক্ষাজীবনকে অনেকাংশে প্রভাবিত করছে বলে জানিয়েছেন ৪৭ দশমিক ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
অভিভাবকের অযাচিত চাপ
সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকের স্বপ্ন বা প্রত্যাশার চাপ ৫৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন পরিবার থেকে তৈরি হওয়া অযাচিত চাপ তাদের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করে তুলছে।
অ্যাকাডেমিক চাপে নাজেহাল ৭৭ দশমিক ০১ শতাংশ
করোনা-পরবর্তী বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত লেখাপড়া ও কম সময় শ্রেণিকক্ষে পাঠক্রম শেষ করার জন্য এক ধরনের চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। ৭৭ দশমিক ০১ শতাংশ শিক্ষার্থীর এই চাপের সম্মুখীন।
ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা
লেখাপড়া শেষ করে সব শিক্ষার্থীই চায় ভালো চাকরি করবে। করোনার প্রভাবে তৈরি হওয়া বিভিন্ন কারণ তাদের প্রত্যাশায় ছেদ টানতে বাধ্য করেছে। ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন চাকরি ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তার কারণে তারা মানসিক চাপে আছেন।
পরীক্ষার ফল ভালো না হওয়ার ভয়
শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সেমিস্টার বা পাঠক্রম ইস্যুতেও এক ধরনের শঙ্কা নিয়ে এগুচ্ছে। পরীক্ষার ফল ভালো না হওয়ার ভয়ে থাকছেন ১২৭৪ জন বা ৭৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
সেশনজটের শিকার ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ
জরিপে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বিভিন্ন মেয়াদে সেশনজটের শিকার হয়েছেন।
মনের কথা বলার মতো শিক্ষক পান না
শিক্ষকদের সঙ্গে নিজের সমস্যা শেয়ার করা যায় কি না জানতে চাওয়া হলে ৭৪ দশমিক ৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা নিজেদের মানসিক সমস্যাগুলো শেয়ার করার এত শিক্ষক পান না। মাত্র ২৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মন খুলে কথা বলার জন্য শিক্ষকদেরকে পাশে পান।
আবার শিক্ষার পরিবেশে অসন্তোষও মানসিক চাপের কারণ। ৫৩ দশমিক ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন লেখাপড়ার জন্য তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিবেশ সহায়ক নয়। এতে তারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন:মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ড. ইহতেসাম উল হক এ বি এম রেজাউল করীমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আগের ডিজি অবসরে যাওয়ার এক মাসের বেশি সময় পর এ পদে নিয়োগ দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৪ জানুয়ারি চাকরি শেষ করে অবসরে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক রেজাউল করীম।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট মাউশির মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাগনে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
তার পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে শুধু শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার।
এ ছাড়া নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করা হয়েছে।
পাশাপাশি জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নারায়াণগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বলে ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
আরও পড়ুন:রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বোর্ডে অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম, যশোর বোর্ডে অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান, সিলেট বোর্ডে অধ্যাপক শামছুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি এ চার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. নিজামুল করিম, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু তাহের ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলিউর রহমান।
দেশের ১১ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সাধারণ ৯টি। এগুলো হলো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, সিলেট, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।
বাকি দুটি বোর্ডের একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। ১১ বোর্ডে কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
আরও পড়ুন:পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ বলেছেন, ‘কাজটা যুদ্ধের মতো হয়েছে। ঠিক কবে নাগাদ সব বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া যাবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারব না।’
বুধবার ‘পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন ও মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলছেন ১৫ জানুয়ারি আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই দেয়া যাবে। আমি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কমিটমেন্ট দেবো না। পাঠ্যবই কবে ছাপা শেষ হবে, তা নিয়ে আমি কিছু বলবো না।’
ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ বলেন, ‘প্রথম সমস্যাটা হলো- আমরা বিদেশে বই ছাপাব না। তারপর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে অনিবার্য কারণে। তাতে বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। যখন কাজ শুরু করা হয়েছিল, সেটা অনেক দেরিতে হয়েছে। অনেক বই পরিমার্জন করতে হয়েছে।
‘রাজনীতিতে নিরপেক্ষ বলে কিছু থাকে না। দলীয় রাজনীতিনিরপেক্ষ সবকিছু যেন বইয়ে থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের কাছে বই যাবে। সেটা ভালো কাগজে ছাপা না হলে তো হয় না। সেজন্য উন্নত মানের ছাপা, উন্নত মানের কাগজ ও মলাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘তাছাড়া এনসিটিবিতে আগে যারা কাজ করেছেন তাদের অনেককে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের বসানো হয়েছে, তারা অভিজ্ঞ। কিন্তু মুদ্রণ শিল্প সমিতির যে নেতা, তাদের সঙ্গে কীভাবে বোঝাপড়াটা করতে হয়, এটা তাদের অভিজ্ঞতায় নেই। বই একটু দেরিতে পেলেও শিক্ষার্থীরা ভালো বই পাবে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে যাবে না।’
পাঠ্যবই নিয়ে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘গল্পের একেবারে শেষে গিয়ে ছাড়া যেমন ষড়যন্ত্রকারী কে তা বোঝা যায় না, এখানেও তেমন। সেটা সরকারের কেউ হোক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হোক, এনসিটিবির হোক, মজুতদার হোক, সিন্ডিকেট হোক। মানে, যে কেউ হতে পারে।
‘তবে এখনই আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে আমরা একচেটিয়া ব্যবসা কমিয়ে আনবো। এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকবে।’
নতুন যে শিক্ষাক্রম আওয়ামী লীগ সরকার করেছিল, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয় জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকে সমালোচনা করছেন- কেন পেছনের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলাম আমরা। আমি মনে করি, যে শিক্ষাক্রম করা হয়েছিল নতুন করে, সেটাতে থাকলে শিক্ষার্থীদের আরও পশ্চাৎপদে নিয়ে যাওয়া হতো।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছর এ শিক্ষাক্রম চালিয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরার উপায় ছিল না। সেটা সহজও হতো না। সেজন্য আমরা সাময়িকভাবে পেছনের শিক্ষাক্রমে গেছি। এটা আবার এগিয়ে নেয়ার কাজ করা হবে।
‘এবার কিছু পরিমার্জন হয়েছে। আগামীতে আরও পরিমার্জন করা হবে, যাতে শিক্ষাক্রমে ধারাবাহিকতার কোনো ঘাটতি না থাকে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম।
আরও পড়ুন:দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আজ বুধবার থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টারের অফলাইন ও অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিজিএমই) মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন নীতিনির্ধারণী মহল সজাগ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, সতর্কতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার নির্দেশনার আলোকে ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সব পর্যায়ে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত মেডিক্যাল কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আর ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
রাজধানীর সরকারি দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মিরপুরের আর সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম হবে ‘লালকুঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর ঢাকা’। আর শেখ কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম হবে ‘আনন্দ নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা’।
গত ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনটি মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা, ২০২৩ অনুযায়ী দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হলো। রাজধানীর মিরপুরের আর সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘লালকুঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর ঢাকা’ এবং একই এলাকা মিরপুরের শেখ কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘আনন্দ নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা’।”
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৩–এর তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৫ জন। অন্যদিকে শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জাবিসাস) ২০২৫ সেশনের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি পদে বণিক বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী মামুন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন মনোনীত হয়েছেন।
সোমবার দুপুর ২টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। পরে বেলা ১টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলে।
কার্যকরী পরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি পদে বায়েজীদ হাসান রাকিব (দৈনিক ইনকিলাব), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জোবায়ের আহমেদ (ডিবিসি নিউজ), কোষাধ্যক্ষ পদে রাজীব রায়হান (প্রতিদিনের বাংলাদেশ) এবং দপ্তর ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে শাহ্ আলম (ডেইলি অবজারভার)।
এছাড়া কার্যকরী সদস্য হয়েছেন- সৈকত ইসলাম (জাগো নিউজ), আশরাফুল মিয়া (দ্য নিউজ) ও রাসেল মাহমুদ (ব্রেকিংনিউজনেট.কম)।
নির্বাচনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইউসুফ হারুন।
মন্তব্য